ঢাকা ০১:২৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৫

গাজায় যুদ্ধ বন্ধে নেতানিয়াহুকে চাপ ট্রাম্পের!

  • আপডেট সময় : ০৮:১৯:২১ অপরাহ্ন, শনিবার, ১২ এপ্রিল ২০২৫
  • ৯০ বার পড়া হয়েছে

বিদেশের খবর ডেস্ক : গাজায় যুদ্ধ বন্ধ করতে দখলদার ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প চাপ দিচ্ছেন বলে দাবি করেছে ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম ইয়েদিওথ আহরোনোথ। ফিলিস্তিনের সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের সঙ্গে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোর থেকে ইসরায়েলের যুদ্ধ শুরু হয়। এর মধ্যে ওই বছরের নভেম্বরে এক সপ্তাহ এবং চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত আরও ৫০ দিনের বেশি সময় যুদ্ধবিরতি ছিল। বাকি সময়টায় গাজায় বর্বরতা অব্যাহত রেখেছিল হামাস। আর এতে অস্ত্র দিয়ে সবচেয়ে বেশি সহায়তা করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এখন পর্যন্ত প্রকাশ্যে ইসরায়েলকে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে তারা। তবে ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যমটি গত বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) জানায়, গাজা যুদ্ধ নিয়ে ট্রাম্পের ধৈর্য্য কমে আসছে এবং তিনি গাজায় দ্রুত সময়ের মধ্যে যুদ্ধ বন্ধ চান।

গত সপ্তাহে ওয়াশিংটনে নেতানিয়াহুর সঙ্গে বৈঠক করেন ট্রাম্প। এরপর সাংবাদিকদের সামনে নেতানিয়াহুর প্রশংসা করেন তিনি। তবে সংবাদমাধ্যম ইয়েদিওথ আহরোনোথ জানিয়েছে, প্রকাশ্যে নেতানিয়াহুর প্রশংসা করলেও; গাজা যুদ্ধ নিয়ে ট্রাম্পের ব্যক্তিগত যে সংশয় আছে, সেটি বিবেচনা করে তিনি নেতানিয়াহুকে ৩ সপ্তাহের মধ্যে হামাসের সঙ্গে পূর্ণাঙ্গ চুক্তি করার জন্য চাপ দিয়েছেন। যেন জীবিত ও মৃত ৫৯ ইসরায়েলি জিম্মিকে গাজা থেকে ফেরত আনা যায়। ট্রাম্প চান ইসরায়েল এখন হামাসের সঙ্গে এমন চুক্তি করুক যেটির মাধ্যমে সব জিম্মি মুক্তি পাবে এবং গাজায় স্থায়ী যুদ্ধবিরতি হবে।

সংবাদমাধ্যমটি আরও জানিয়েছে, ইসরায়েলি জিম্মিদের পরিবারকে জানানো হয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন নতুন চুক্তি নিয়ে কাজ করছে। ইয়েদিওথ আহরোনোথ আরও জানিয়েছে, গাজা যুদ্ধ বন্ধের বিষয়টি ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য নিয়ে বিস্তৃত পরিকল্পনার অংশ। তিনি চান গাজা যুদ্ধ বন্ধ হোক এবং ইসরায়েলের সঙ্গে সৌদি আরব কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করুক। এছাড়া ইরানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র যে পারমাণবিক আলোচনা শুরু করেছে এটিও ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য পরিকল্পনার অংশ। এদিকে অপর সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইসরায়েল জানায়, গত বৃহস্পতিবার ইসরায়েলি নিরাপত্তা পরিষদের সঙ্গে বৈঠক করেন নেতানিয়াহু। এতে জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। আর এ বৈঠকে যুদ্ধবিরতি ও জিম্মিদের মুক্তির বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। এছাড়া নেতানিয়াহুর দপ্তর থেকে পরবর্তীতে জানানো হয় ইলকানা বোহবোত এবং রোম ব্রাসলাভস্কি নামে দুই জিম্মির পরিবারের সঙ্গে বৈঠক করেন নেতানিয়াহু। ওই সময় তিনি তাদের আশ্বস্ত করেন, তাদের প্রিয়জনদের মুক্তির জন্য আলোচনা চলমান রয়েছে।
যুদ্ধবিরতির আহ্বান হামাসের
এদিকে ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ সংগঠন হামাস যুদ্ধ বন্ধের বিনিময়ে বন্দিমুক্তির আহ্বান জানিয়েছে। এক বিবৃতিতে তারা ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর কড়া সমালোচনা করে বলেছে, ইসরায়েলের অভ্যন্তরে যুদ্ধ থামানো ও বন্দিদের মুক্তির জন্য যেভাবে দাবি উঠছে, তা প্রমাণ করে নেতানিয়াহুই যুদ্ধ দীর্ঘায়িত করছেন— যার ফলে ভুগছে বন্দিরাও, আর কষ্টে আছে আমাদের জনগণ।

হামাসের বক্তব্যে ইঙ্গিত করা হয়েছে সম্প্রতি ইসরায়েলের এক হাজারেরও বেশি বিশেষ বাহিনীর রিজার্ভ সদস্যের প্রতি, যারা যুদ্ধ বন্ধের দাবিতে অবস্থান নেওয়া বিমানবাহিনীর রিজার্ভ সদস্যদের প্রতি সংহতি প্রকাশ করেছেন। এসব সদস্যদের সক্রিয় দায়িত্ব থেকে বাদ দেওয়া হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। হামাস আরও বলেছে, নেতানিয়াহুর দুর্নীতির বিচার এড়ানোর চেষ্টা এবং ক্ষমতার লালসার বলি হচ্ছে গাজার শিশু ও আর ইসরায়েলি বন্দিরা। বিবৃতিতে হামাস জানায়, সমীকরণ পরিষ্কার— যুদ্ধ থামালে বন্দিমুক্তি সম্ভব। বিশ্ব এই সমাধানকে সমর্থন করলেও নেতানিয়াহু তা প্রত্যাখ্যান করছেন। এক দিন বিলম্ব মানে নিরস্ত্র আরও জনগণের মৃত্যু, আর বন্দিদের জন্য অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ। এই বিবৃতি এমন সময়ে এলো, যখন গাজার মানবিক পরিস্থিতি চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে এবং যুদ্ধবিরতির সম্ভাব্য সমাধান নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলেও আলোচনার গতি বেড়েছে।

 

 

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : prottashasmf@yahoo.com
আপলোডকারীর তথ্য

গাজায় যুদ্ধ বন্ধে নেতানিয়াহুকে চাপ ট্রাম্পের!

আপডেট সময় : ০৮:১৯:২১ অপরাহ্ন, শনিবার, ১২ এপ্রিল ২০২৫

বিদেশের খবর ডেস্ক : গাজায় যুদ্ধ বন্ধ করতে দখলদার ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প চাপ দিচ্ছেন বলে দাবি করেছে ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম ইয়েদিওথ আহরোনোথ। ফিলিস্তিনের সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের সঙ্গে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোর থেকে ইসরায়েলের যুদ্ধ শুরু হয়। এর মধ্যে ওই বছরের নভেম্বরে এক সপ্তাহ এবং চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত আরও ৫০ দিনের বেশি সময় যুদ্ধবিরতি ছিল। বাকি সময়টায় গাজায় বর্বরতা অব্যাহত রেখেছিল হামাস। আর এতে অস্ত্র দিয়ে সবচেয়ে বেশি সহায়তা করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এখন পর্যন্ত প্রকাশ্যে ইসরায়েলকে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে তারা। তবে ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যমটি গত বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) জানায়, গাজা যুদ্ধ নিয়ে ট্রাম্পের ধৈর্য্য কমে আসছে এবং তিনি গাজায় দ্রুত সময়ের মধ্যে যুদ্ধ বন্ধ চান।

গত সপ্তাহে ওয়াশিংটনে নেতানিয়াহুর সঙ্গে বৈঠক করেন ট্রাম্প। এরপর সাংবাদিকদের সামনে নেতানিয়াহুর প্রশংসা করেন তিনি। তবে সংবাদমাধ্যম ইয়েদিওথ আহরোনোথ জানিয়েছে, প্রকাশ্যে নেতানিয়াহুর প্রশংসা করলেও; গাজা যুদ্ধ নিয়ে ট্রাম্পের ব্যক্তিগত যে সংশয় আছে, সেটি বিবেচনা করে তিনি নেতানিয়াহুকে ৩ সপ্তাহের মধ্যে হামাসের সঙ্গে পূর্ণাঙ্গ চুক্তি করার জন্য চাপ দিয়েছেন। যেন জীবিত ও মৃত ৫৯ ইসরায়েলি জিম্মিকে গাজা থেকে ফেরত আনা যায়। ট্রাম্প চান ইসরায়েল এখন হামাসের সঙ্গে এমন চুক্তি করুক যেটির মাধ্যমে সব জিম্মি মুক্তি পাবে এবং গাজায় স্থায়ী যুদ্ধবিরতি হবে।

সংবাদমাধ্যমটি আরও জানিয়েছে, ইসরায়েলি জিম্মিদের পরিবারকে জানানো হয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন নতুন চুক্তি নিয়ে কাজ করছে। ইয়েদিওথ আহরোনোথ আরও জানিয়েছে, গাজা যুদ্ধ বন্ধের বিষয়টি ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য নিয়ে বিস্তৃত পরিকল্পনার অংশ। তিনি চান গাজা যুদ্ধ বন্ধ হোক এবং ইসরায়েলের সঙ্গে সৌদি আরব কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করুক। এছাড়া ইরানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র যে পারমাণবিক আলোচনা শুরু করেছে এটিও ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য পরিকল্পনার অংশ। এদিকে অপর সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইসরায়েল জানায়, গত বৃহস্পতিবার ইসরায়েলি নিরাপত্তা পরিষদের সঙ্গে বৈঠক করেন নেতানিয়াহু। এতে জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। আর এ বৈঠকে যুদ্ধবিরতি ও জিম্মিদের মুক্তির বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। এছাড়া নেতানিয়াহুর দপ্তর থেকে পরবর্তীতে জানানো হয় ইলকানা বোহবোত এবং রোম ব্রাসলাভস্কি নামে দুই জিম্মির পরিবারের সঙ্গে বৈঠক করেন নেতানিয়াহু। ওই সময় তিনি তাদের আশ্বস্ত করেন, তাদের প্রিয়জনদের মুক্তির জন্য আলোচনা চলমান রয়েছে।
যুদ্ধবিরতির আহ্বান হামাসের
এদিকে ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ সংগঠন হামাস যুদ্ধ বন্ধের বিনিময়ে বন্দিমুক্তির আহ্বান জানিয়েছে। এক বিবৃতিতে তারা ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর কড়া সমালোচনা করে বলেছে, ইসরায়েলের অভ্যন্তরে যুদ্ধ থামানো ও বন্দিদের মুক্তির জন্য যেভাবে দাবি উঠছে, তা প্রমাণ করে নেতানিয়াহুই যুদ্ধ দীর্ঘায়িত করছেন— যার ফলে ভুগছে বন্দিরাও, আর কষ্টে আছে আমাদের জনগণ।

হামাসের বক্তব্যে ইঙ্গিত করা হয়েছে সম্প্রতি ইসরায়েলের এক হাজারেরও বেশি বিশেষ বাহিনীর রিজার্ভ সদস্যের প্রতি, যারা যুদ্ধ বন্ধের দাবিতে অবস্থান নেওয়া বিমানবাহিনীর রিজার্ভ সদস্যদের প্রতি সংহতি প্রকাশ করেছেন। এসব সদস্যদের সক্রিয় দায়িত্ব থেকে বাদ দেওয়া হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। হামাস আরও বলেছে, নেতানিয়াহুর দুর্নীতির বিচার এড়ানোর চেষ্টা এবং ক্ষমতার লালসার বলি হচ্ছে গাজার শিশু ও আর ইসরায়েলি বন্দিরা। বিবৃতিতে হামাস জানায়, সমীকরণ পরিষ্কার— যুদ্ধ থামালে বন্দিমুক্তি সম্ভব। বিশ্ব এই সমাধানকে সমর্থন করলেও নেতানিয়াহু তা প্রত্যাখ্যান করছেন। এক দিন বিলম্ব মানে নিরস্ত্র আরও জনগণের মৃত্যু, আর বন্দিদের জন্য অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ। এই বিবৃতি এমন সময়ে এলো, যখন গাজার মানবিক পরিস্থিতি চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে এবং যুদ্ধবিরতির সম্ভাব্য সমাধান নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলেও আলোচনার গতি বেড়েছে।