বিশেষ সংবাদদাতা : যুক্তরাষ্ট্রের নতুন করে শুল্কারোপের সিদ্ধান্ত তিন মাসের জন্য স্থগিত রেখেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। চীন বাদে বাকি সব দেশের ক্ষেত্রে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। শুধু চীনা পণ্যের ওপর শুল্ক বাড়িয়ে ১২৫ শতাংশ ধার্য করা হয়েছে। ট্রাম্প প্রশাসনের এই স্থগিতাদেশের পরেও স্বস্তিতে নেই বিশ্ব। বরং ট্রাম্পের সর্বশেষে সিদ্ধান্তেও বিশ্বের আর্থিক মন্দা কাটানো যাবে না – এমনটাই মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা। এ বিষয়ে বিশ্বের অন্যতম ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংকিং সংস্থা জেপি মর্গ্যান চেজ দাবি করে, ট্রাম্পের নতুন শুল্কনীতির ফলে বিশ্ব ৬০ শতাংশ মন্দার মুখে পড়তে যাচ্ছে। আন্তর্দেশীয় বাণিজ্য সংক্রান্ত বিভিন্ন নীতিতে বার বার রদ-বদলের প্রভাব পড়তে চলেছে খোদ যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ আর্থিক বিকাশেও। শুধু যুক্তরাষ্ট্রেই নয়; বিশ্বব্যাপী মন্দার জন্ম দিতে পারে বলে শঙ্কা বিশেষজ্ঞদের।
জেপি মর্গ্যানের মতোই সতর্কবার্তা দিয়েছেন মার্কিন পরামর্শদাতা সংস্থা আরএসএম ইউএস-এর প্রধান অর্থনীতিবিদ জো ব্রুসুয়েলাস। তিনিও জানিয়েছেন, শুল্কনীতিতে সাময়িক স্থগিতাদেশ মন্দা রোধ করার জন্য যথেষ্ট না-ও হতে পারে। গোল্ডম্যান স্যাক্সের অর্থনীতিবিদরাও আগামী ১২ মাসে অন্তত ৪৫ শতাংশ মন্দার পূর্বাভাস দিয়েছেন। গত বুধবার (৯ এপ্রিল) রাতে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে জেপি মর্গ্যানের অর্থনীতিবিদরা লিখেছেন, ‘‘অন্য সব বাদ দিয়ে দেখলে ‘মুক্তি দিবসে’ ঘোষিত চড়া শুল্ক প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তটি অবশ্যই ইতিবাচক। তবে অন্য সবকিছু বাদ দেওয়া সহজ নয়। আমরা যেখানে দাঁড়িয়ে আছি, তা এখনও উদ্বেগজনক।
’’ বিশেষজ্ঞদের আরও মত, এখনও ১০ শতাংশ সর্বজনীন শুল্ক আগের মতোই বহাল রয়েছে, যা বিশ্ববাজারে ‘বড় ধাক্কা’ দিতে পারে। এমনকি, এই ধাক্কা হতে পারে ২০১৮-১৯ সালের বাণিজ্যযুদ্ধের ধাক্কার সাড়ে ৭ গুণের সমান! তাছাড়া চীনা পণ্যের ওপর শুল্ক ১২৫ শতাংশ বৃদ্ধি করা প্রায় ৮৬০ বিলিয়ন ডলার কর বৃদ্ধির সমান। এর পরেই প্রতিবেদনে তারা লিখেছেন, ‘মার্কিন বাণিজ্যযুদ্ধ এখনও শেষ হয়নি, বরং এটা কেবল শুরুর শেষ।’