ঢাকা ০৩:২৩ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৫

যুক্তরাষ্ট্রকে পাল্টা আঘাত চীনের ১০৪ শতাংশের জবাবে মার্কিন পণ্যে ৮৪ শতাংশ শুল্ক আরোপ

  • আপডেট সময় : ০৭:৪৭:০৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ৯ এপ্রিল ২০২৫
  • ৮৬ বার পড়া হয়েছে

বিদেশের খবর ডেস্ক : চীনের ওপর শুল্ক আরও ৫০ শতাংশ বাড়িয়ে ১০৪ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। গতকাল বুধবার (৯ এপ্রিল) থেকেই এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়েছে। ট্রাম্পের এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে এবার পাল্টা ব্যবস্থা নিয়েছে চীন। যুক্তরাষ্ট্র থেকে সমস্ত পণ্যে আমদানির শুল্ক ৩৪ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৮৪ শতাংশে উন্নীত করেছে চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। বুধবার চীনের স্টেট কাউন্সিলের কাস্টমস ট্যারিফ কমিশনের এক বিবৃতিতে বলা হয়, আগামী বৃহস্পতিবার থেকে চীনে আমদানি হওয়া সমস্ত মার্কিন পণ্যের ওপর এই শুল্ক কার্যকর হবে। ট্রাম্পের নতুন করে শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্তকে একতরফা ‘গুন্ডামি’ বলে অভিহিত করে বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘যুক্তরাষ্ট্র আন্তর্জাতিক বাণিজ্য নিয়ম লঙ্ঘন করেছে এবং চীনের অধিকার ও স্বার্থের ক্ষতি করেছে’।

গত ২ এপ্রিল এক ঘোষণায় বিভিন্ন দেশের পণ্যের ওপর সর্বনিম্ন ১০ থেকে সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এই তালিকায় চীনের ওপর ৩৪ শতাংশ অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করা হয়। পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে তার পরের দিনই মার্কিন পণ্যের ওপর ৩৪ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে বেইজিং। একইসঙ্গে কিছু গুরুত্বপূর্ণ খনিজ রপ্তানি সীমিত এবং একাধিক মার্কিন কোম্পানিকে কালো তালিকাভুক্ত করে দেশটি। চীনের এমন পদক্ষেপে ক্ষুব্ধ হয়ে সোমবার নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে পোস্ট করা এক বার্তায় ট্রাম্প হুমকি দেন বলেন, বেইজিং যদি মঙ্গলবার (৮) এপ্রিলের মধ্যে এই শুল্ক প্রত্যাহার না করে— তাহলে সব ধরনের চীনা পণ্যের ওপর রপ্তানি শুল্ক আরও ৫০ শতাংশ বাড়ানো হবে এবং ৯ এপ্রিল বুধবার থেকে তা কার্যকর হবে।

তবে চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ও জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের আরোপিত শুল্কের বিরুদ্ধে শেষ পর্যন্ত লড়বে তারা এবং যুক্তরাষ্ট্রের এই ‘ব্ল্যাকমেইলিং আচরণ’ তারা কখনোই মেনে নেবে না। চীনের অবস্থান হলো- শুল্ক আরোপের এই পরিকল্পনা প্রত্যাহার করা হোক এবং দ্বিপাক্ষিক আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যকার মত-পার্থক্যের সমাধান করা হোক। মন্ত্রণালয় আরও জানিয়েছে, চীন সমস্ত বাণিজ্যিক অংশীদারদের ওপর ‘অতিরিক্ত শুল্ক’ আরোপের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থায় (ডব্লিউটিও) একটি মামলা দায়ের করেছে। যেখানে ওয়াশিংটনকে অবিলম্বে শুল্ক প্রত্যাহার এবং তার বাণিজ্য অংশীদারদের সঙ্গে ‘ন্যায্য ও সমান সংলাপের’ মাধ্যমে যেকোনো বিরোধ নিষ্পত্তি করার আহ্বান জানানো হয়েছে। এদিকে পাল্টা-পাল্টি শুল্কারোপের এই ঘটনায় মাধ্যমে দু’দেশের মধ্যে আবারও বাণিজ্য যুদ্ধ শুরু হলো বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। বৈশ্বিক অর্থনীতিতে এটি নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলেও মনে করছেন তারা। সূত্র: বিবিসি, আলজাজিরা

চীন-মার্কিন অর্থনৈতিক আলোচনা
এদিকে চীনের উপ প্রধানমন্ত্রী হ্য লিফেং এবং মার্কিন থিংক ট্যাংক ব্রুকিংস ইনস্টিটিউশনের চেয়ারম্যান এমিরিটাস জন থর্নটনের মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক হয়েছে। মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) বেইজিংয়ে আয়োজিত এ বৈঠকে দুদেশের অর্থনৈতিক সম্পর্ক এবং সামষ্টিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে মতবিনিময় করেন তারা। চীনা সংবাদমাধ্যম সিএমজি এ খবর জানিয়েছে। হ্য লিফেং বলেছেন, চীন একটি সুসংহত জাতীয় বাজার গড়ে তোলায় জোর দিচ্ছে। পাশাপাশি, নতুন ও মানসম্পন্ন উৎপাদনশীল শক্তি বিকাশের গতি বৃদ্ধি করেছে।

তিনি আরও বলেন, সামগ্রিক সংস্কার প্রক্রিয়াকে জোরদারকরণ, উচ্চ স্তরের উন্মুক্তকরণ সম্প্রসারণ এবং উচ্চমানের উন্নয়নের মাধ্যমে বাহ্যিক পরিবেশের অনিশ্চয়তা মোকাবিলা করছে চীন। দ্বিপাক্ষিক বৈঠক শেষে জন থর্নটন বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের সম্পর্ক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দুই দেশের জনগণের মধ্যে পারস্পরিক যোগাযোগ বৃদ্ধি এবং স্থিতিশীল সম্পর্ক বজায় রাখতে নিজের দিক থেকে যথাসাধ্য চেষ্টা জারি রাখার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন তিনি।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : prottashasmf@yahoo.com
আপলোডকারীর তথ্য

যুক্তরাষ্ট্রকে পাল্টা আঘাত চীনের ১০৪ শতাংশের জবাবে মার্কিন পণ্যে ৮৪ শতাংশ শুল্ক আরোপ

আপডেট সময় : ০৭:৪৭:০৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ৯ এপ্রিল ২০২৫

বিদেশের খবর ডেস্ক : চীনের ওপর শুল্ক আরও ৫০ শতাংশ বাড়িয়ে ১০৪ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। গতকাল বুধবার (৯ এপ্রিল) থেকেই এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়েছে। ট্রাম্পের এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে এবার পাল্টা ব্যবস্থা নিয়েছে চীন। যুক্তরাষ্ট্র থেকে সমস্ত পণ্যে আমদানির শুল্ক ৩৪ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৮৪ শতাংশে উন্নীত করেছে চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। বুধবার চীনের স্টেট কাউন্সিলের কাস্টমস ট্যারিফ কমিশনের এক বিবৃতিতে বলা হয়, আগামী বৃহস্পতিবার থেকে চীনে আমদানি হওয়া সমস্ত মার্কিন পণ্যের ওপর এই শুল্ক কার্যকর হবে। ট্রাম্পের নতুন করে শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্তকে একতরফা ‘গুন্ডামি’ বলে অভিহিত করে বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘যুক্তরাষ্ট্র আন্তর্জাতিক বাণিজ্য নিয়ম লঙ্ঘন করেছে এবং চীনের অধিকার ও স্বার্থের ক্ষতি করেছে’।

গত ২ এপ্রিল এক ঘোষণায় বিভিন্ন দেশের পণ্যের ওপর সর্বনিম্ন ১০ থেকে সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এই তালিকায় চীনের ওপর ৩৪ শতাংশ অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করা হয়। পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে তার পরের দিনই মার্কিন পণ্যের ওপর ৩৪ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে বেইজিং। একইসঙ্গে কিছু গুরুত্বপূর্ণ খনিজ রপ্তানি সীমিত এবং একাধিক মার্কিন কোম্পানিকে কালো তালিকাভুক্ত করে দেশটি। চীনের এমন পদক্ষেপে ক্ষুব্ধ হয়ে সোমবার নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে পোস্ট করা এক বার্তায় ট্রাম্প হুমকি দেন বলেন, বেইজিং যদি মঙ্গলবার (৮) এপ্রিলের মধ্যে এই শুল্ক প্রত্যাহার না করে— তাহলে সব ধরনের চীনা পণ্যের ওপর রপ্তানি শুল্ক আরও ৫০ শতাংশ বাড়ানো হবে এবং ৯ এপ্রিল বুধবার থেকে তা কার্যকর হবে।

তবে চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ও জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের আরোপিত শুল্কের বিরুদ্ধে শেষ পর্যন্ত লড়বে তারা এবং যুক্তরাষ্ট্রের এই ‘ব্ল্যাকমেইলিং আচরণ’ তারা কখনোই মেনে নেবে না। চীনের অবস্থান হলো- শুল্ক আরোপের এই পরিকল্পনা প্রত্যাহার করা হোক এবং দ্বিপাক্ষিক আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যকার মত-পার্থক্যের সমাধান করা হোক। মন্ত্রণালয় আরও জানিয়েছে, চীন সমস্ত বাণিজ্যিক অংশীদারদের ওপর ‘অতিরিক্ত শুল্ক’ আরোপের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থায় (ডব্লিউটিও) একটি মামলা দায়ের করেছে। যেখানে ওয়াশিংটনকে অবিলম্বে শুল্ক প্রত্যাহার এবং তার বাণিজ্য অংশীদারদের সঙ্গে ‘ন্যায্য ও সমান সংলাপের’ মাধ্যমে যেকোনো বিরোধ নিষ্পত্তি করার আহ্বান জানানো হয়েছে। এদিকে পাল্টা-পাল্টি শুল্কারোপের এই ঘটনায় মাধ্যমে দু’দেশের মধ্যে আবারও বাণিজ্য যুদ্ধ শুরু হলো বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। বৈশ্বিক অর্থনীতিতে এটি নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলেও মনে করছেন তারা। সূত্র: বিবিসি, আলজাজিরা

চীন-মার্কিন অর্থনৈতিক আলোচনা
এদিকে চীনের উপ প্রধানমন্ত্রী হ্য লিফেং এবং মার্কিন থিংক ট্যাংক ব্রুকিংস ইনস্টিটিউশনের চেয়ারম্যান এমিরিটাস জন থর্নটনের মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক হয়েছে। মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) বেইজিংয়ে আয়োজিত এ বৈঠকে দুদেশের অর্থনৈতিক সম্পর্ক এবং সামষ্টিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে মতবিনিময় করেন তারা। চীনা সংবাদমাধ্যম সিএমজি এ খবর জানিয়েছে। হ্য লিফেং বলেছেন, চীন একটি সুসংহত জাতীয় বাজার গড়ে তোলায় জোর দিচ্ছে। পাশাপাশি, নতুন ও মানসম্পন্ন উৎপাদনশীল শক্তি বিকাশের গতি বৃদ্ধি করেছে।

তিনি আরও বলেন, সামগ্রিক সংস্কার প্রক্রিয়াকে জোরদারকরণ, উচ্চ স্তরের উন্মুক্তকরণ সম্প্রসারণ এবং উচ্চমানের উন্নয়নের মাধ্যমে বাহ্যিক পরিবেশের অনিশ্চয়তা মোকাবিলা করছে চীন। দ্বিপাক্ষিক বৈঠক শেষে জন থর্নটন বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের সম্পর্ক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দুই দেশের জনগণের মধ্যে পারস্পরিক যোগাযোগ বৃদ্ধি এবং স্থিতিশীল সম্পর্ক বজায় রাখতে নিজের দিক থেকে যথাসাধ্য চেষ্টা জারি রাখার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন তিনি।