ঢাকা ০২:১৪ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ০৮ জুন ২০২৫

৮ দিনের মহাকাশ অভিযান শেষ হলো ৯ মাসে

  • আপডেট সময় : ০৫:৪৮:০৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৯ মার্চ ২০২৫
  • ৩৯ বার পড়া হয়েছে

প্রযুক্তি ডেস্ক: নয় মাসের বেশি সময় ধরে মহাকাশে আটকে থাকার পর অবশেষে পৃথিবীতে ফিরলেন নাসার দুই নভোচারী বুচ উইলমোর ও সুনিতা উইলিয়ামস। তাদের ফিরিয়ে আনা হয়েছে স্পেসএক্স ও নাসার এক যৌথ মিশনে।

এরইমধ্যে অনেকের মনে প্রশ্ন আসতে পারে, ৮ দিনের অভিযানে ৯ মাসের বেশি সময় আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে আটকে থাকার কারণে তারা কি মোটা অঙ্কের পারিশ্রমিক পাবেন?

মার্কিন মহাকাশযান নির্মাতা কোম্পানি বোয়িংয়ের তৈরি স্টারলাইনার মহাকাশযানে করে গত জুন মাসে আইএসএসে যান নাসার দুই নভোচারী। যেটি প্রথম মনুষ্যবাহী পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ ছিল বোয়িংয়ের জন্য।

মহাকাশ স্টেশনে যাত্রার সময় ক্যাপসুলটি বেশ কয়েকটি প্রযুক্তিগত সমস্যার মুখে পড়ে ও নভোচারীদের ফিরে আসা অনিশ্চিত হয়ে ওঠে। তাদের পৃথিবীতে ফিরে আসার অপেক্ষা ধীরে ধীরে নয় মাসে গিয়ে দাঁড়ায় এবং অবশেষে তারা ফিরে আসেন।

এতো সময় আইএসএস থাকার জন্য সাধারণ বিবেচনায় মনে হতে পারে মোটা অঙ্কের বেতন তাদের প্রাপ্য। তবে তারা সম্ভবত সেই পরিমাণ অর্থ পাচ্ছেন না।

নাসার অবসরপ্রাপ্ত নভোচারী ক্যাডি কোলম্যান বলছেন, নভোচারীরা তাদের বেতনের বাইরে আসলে তেমন কোনো বিশেষ ওভারটাইম পান না। নভোচারীরা যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল কর্মী হওয়ার কারণে মহাকাশে থাকলেও পৃথিবীতে থাকা সাধারণ কর্মীদের মতোই বিবেচনা করা হয় তাদের কাজকে, যা বেশ হতাশাজনক একটি বিষয়।

কোলম্যান বলেছেন, আনুষঙ্গিক কিছু ঘটনার ক্ষেত্রে আইনগতভাবে আপনাকে অর্থ দিতে বাধ্য হবে নাসা।

তবে এই অর্থের পরিমাণ প্রতিদিন কেবল চার ডলার হতে পারে, যা এখন পর্যন্ত তাদের মহাকাশে কাটানো প্রতিটি দিনের হিসেবে দাঁড়ায় মোট এক হাজার চার ডলার। এ ছাড়াও, যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থাটি জোর দিয়ে বলেছে, নভোচারীরা আইএসএস ঠিক ‘আটকে’ নেই।

‘হার্ভার্ড-স্মিথসোনিয়ান সেন্টার ফর অ্যাস্ট্রোফিজিক্সস চন্দ্র এক্স-রে সেন্টার’-এর জ্যোতির্পদার্থবিজ্ঞানী জোনাথন ম্যাকডোয়েল বলেছেন, এ বিষয়ে নাসার যুক্তি হচ্ছে, নভোচারীরা ঠিক সেভাবে আটকা পড়ে নেই এবং তাদের পরিস্থিতি অনেক বেশি মাত্রায় অতিরঞ্জিত হয়ে গেছে।

তারা ভাল আছেন। তাদের কেবল অতিরিক্ত সময় মহাকাশে থাকতে হয়েছে। আর এ কাজটি করতে তারা ভালোবাসেন। তারা পরবর্তী কোনো না কোনো যাত্রায় বাড়ি ফিরে আসতেন।

মহাকাশে থাকাকালীন বিভিন্ন ছবি ও ভিডিওতে দুই নভোচারীর স্বাস্থ্যে পরিবর্তনের বিষয়টি স্পষ্টভাবেই দেখা গেছে। পাশাপাশি বিভিন্ন প্রতিবেদনে ইঙ্গিত মিলেছে, দীর্ঘস্থায়ী ওজনহীনতার কারণে তৈরি গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যা ঠেকাতে তাদের প্রতিদিন কয়েক ঘণ্টা করে ব্যায়াম করতে হয়েছে।

এরপরও উইলিয়ামস তাদের মিশনের এই অপ্রত্যাশিত সময় বেড়ে যাওয়ার বিষয়ে ইতিবাচক মনোভাব ধরে রেখেছিলেন।

আমরা আইএসএসে আসার সময় ভেবেছিলাম, এখানে আমরা কিছু সময়ের জন্য থাকব এবং আমাদের গবেষণার কাজ করবো। তবে এই অতিরিক্ত সময় আমাদের সব ধরনের বিজ্ঞানভিত্তিক পরীক্ষা নিরীক্ষার সুযোগ করে দিয়েছে, বলেছেন সুনিতা।

 

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

৮ দিনের মহাকাশ অভিযান শেষ হলো ৯ মাসে

আপডেট সময় : ০৫:৪৮:০৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৯ মার্চ ২০২৫

প্রযুক্তি ডেস্ক: নয় মাসের বেশি সময় ধরে মহাকাশে আটকে থাকার পর অবশেষে পৃথিবীতে ফিরলেন নাসার দুই নভোচারী বুচ উইলমোর ও সুনিতা উইলিয়ামস। তাদের ফিরিয়ে আনা হয়েছে স্পেসএক্স ও নাসার এক যৌথ মিশনে।

এরইমধ্যে অনেকের মনে প্রশ্ন আসতে পারে, ৮ দিনের অভিযানে ৯ মাসের বেশি সময় আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে আটকে থাকার কারণে তারা কি মোটা অঙ্কের পারিশ্রমিক পাবেন?

মার্কিন মহাকাশযান নির্মাতা কোম্পানি বোয়িংয়ের তৈরি স্টারলাইনার মহাকাশযানে করে গত জুন মাসে আইএসএসে যান নাসার দুই নভোচারী। যেটি প্রথম মনুষ্যবাহী পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ ছিল বোয়িংয়ের জন্য।

মহাকাশ স্টেশনে যাত্রার সময় ক্যাপসুলটি বেশ কয়েকটি প্রযুক্তিগত সমস্যার মুখে পড়ে ও নভোচারীদের ফিরে আসা অনিশ্চিত হয়ে ওঠে। তাদের পৃথিবীতে ফিরে আসার অপেক্ষা ধীরে ধীরে নয় মাসে গিয়ে দাঁড়ায় এবং অবশেষে তারা ফিরে আসেন।

এতো সময় আইএসএস থাকার জন্য সাধারণ বিবেচনায় মনে হতে পারে মোটা অঙ্কের বেতন তাদের প্রাপ্য। তবে তারা সম্ভবত সেই পরিমাণ অর্থ পাচ্ছেন না।

নাসার অবসরপ্রাপ্ত নভোচারী ক্যাডি কোলম্যান বলছেন, নভোচারীরা তাদের বেতনের বাইরে আসলে তেমন কোনো বিশেষ ওভারটাইম পান না। নভোচারীরা যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল কর্মী হওয়ার কারণে মহাকাশে থাকলেও পৃথিবীতে থাকা সাধারণ কর্মীদের মতোই বিবেচনা করা হয় তাদের কাজকে, যা বেশ হতাশাজনক একটি বিষয়।

কোলম্যান বলেছেন, আনুষঙ্গিক কিছু ঘটনার ক্ষেত্রে আইনগতভাবে আপনাকে অর্থ দিতে বাধ্য হবে নাসা।

তবে এই অর্থের পরিমাণ প্রতিদিন কেবল চার ডলার হতে পারে, যা এখন পর্যন্ত তাদের মহাকাশে কাটানো প্রতিটি দিনের হিসেবে দাঁড়ায় মোট এক হাজার চার ডলার। এ ছাড়াও, যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থাটি জোর দিয়ে বলেছে, নভোচারীরা আইএসএস ঠিক ‘আটকে’ নেই।

‘হার্ভার্ড-স্মিথসোনিয়ান সেন্টার ফর অ্যাস্ট্রোফিজিক্সস চন্দ্র এক্স-রে সেন্টার’-এর জ্যোতির্পদার্থবিজ্ঞানী জোনাথন ম্যাকডোয়েল বলেছেন, এ বিষয়ে নাসার যুক্তি হচ্ছে, নভোচারীরা ঠিক সেভাবে আটকা পড়ে নেই এবং তাদের পরিস্থিতি অনেক বেশি মাত্রায় অতিরঞ্জিত হয়ে গেছে।

তারা ভাল আছেন। তাদের কেবল অতিরিক্ত সময় মহাকাশে থাকতে হয়েছে। আর এ কাজটি করতে তারা ভালোবাসেন। তারা পরবর্তী কোনো না কোনো যাত্রায় বাড়ি ফিরে আসতেন।

মহাকাশে থাকাকালীন বিভিন্ন ছবি ও ভিডিওতে দুই নভোচারীর স্বাস্থ্যে পরিবর্তনের বিষয়টি স্পষ্টভাবেই দেখা গেছে। পাশাপাশি বিভিন্ন প্রতিবেদনে ইঙ্গিত মিলেছে, দীর্ঘস্থায়ী ওজনহীনতার কারণে তৈরি গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যা ঠেকাতে তাদের প্রতিদিন কয়েক ঘণ্টা করে ব্যায়াম করতে হয়েছে।

এরপরও উইলিয়ামস তাদের মিশনের এই অপ্রত্যাশিত সময় বেড়ে যাওয়ার বিষয়ে ইতিবাচক মনোভাব ধরে রেখেছিলেন।

আমরা আইএসএসে আসার সময় ভেবেছিলাম, এখানে আমরা কিছু সময়ের জন্য থাকব এবং আমাদের গবেষণার কাজ করবো। তবে এই অতিরিক্ত সময় আমাদের সব ধরনের বিজ্ঞানভিত্তিক পরীক্ষা নিরীক্ষার সুযোগ করে দিয়েছে, বলেছেন সুনিতা।