সুলতান আল এনাম, ঝিনাইদহ : ঝিনাইদহে বাংলাদেশ ফলিত পুষ্টি গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট (বারটান) ক্যাম্পাসের সরকারি সম্পত্তির মাটি কেটে রাতের আঁধারে ইটভাটায় ও স্থানীয় এলপিজি ফিলিং স্টেশনে বিক্রি করার অভিযোগ উঠেছে প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা সোনিয়া শারমিনের বিরুদ্ধে।
বাংলাদেশ ফলিত পুষ্টি গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট (বারটান) এর আঞ্চলিক কার্যালয় ঝিনাইদহ সদর উপজেলার পোড়াহাটি ইউনিয়নের টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের সামনে অবস্থিত। সরকারি বিধি মোতাবেক যেকোনো সরকারি সম্পত্তি বিক্রির জন্য দরপত্রের মাধ্যমে তা বিক্রি করতে হবে। এমন বিধান থাকলেও এ নিয়মের কোন তোয়াক্কা করেননি ওই কর্মকর্তা। সরেজমিনে ওই এলাকা ঘুরে দেখা যায়, রাতের আঁধারে বাংলাদেশ ফলিত পুষ্টি গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট (বারটান) ঝিনাইদহ অফিসের মধ্য থেকে মাটি বোঝাই ট্রলি একের পর এক বের হচ্ছে।
মাটি বোঝাই গাড়িগুলো পার্শ্ববর্তী একটি ইট ভাটায় যাচ্ছে। যাচ্ছে কাছাকাছি মেসার্স মনিরুল ইসলাম এলপিজি ফিলিং স্টেশন নামের অপর একটি প্রতিষ্ঠানে। স্থানীয়দের ভাষ্যমতে, রাত গভীর হলে প্রতিষ্ঠানটির মাঠের মধ্যে এস্কাভেটর দিয়ে শুরু হয় মাটি কাটার কাজ, চলে ভোর রাত পর্যন্ত। তারা দিনে মাটিকাটার কাজ থেকে বিরত থাকে। যদি সঠিক নিয়মে মাটি কাটা হতো তাহলে দিনের বেলায় কাটতো।
সরকারি সম্পত্তির মাটিকাটা ও বিক্রি বন্ধ করতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে জোর দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা। মাটি ব্যবসায়ী রোকন মিয়া বলেন, ভিতরে একটি পুকুর আছে, সেটি ভালো করে খনন চলছে। শুনেছি সেখানে হাঁস ও মাছের চাষ করা হবে। এই মাটি কাটার জন্য কোন বাজেট নেই। পুকুর পুনঃখননের বিনিময়ে আমাকে মাটি দিয়ে দিয়েছে। মাটি গুলো আমি স্থানীয় কিছু লোক এলাকার তেল পাম্প ও ইট ভাটায় বিক্রি করছি। জানতে চাইলে বাংলাদেশ ফলিত পুষ্টি গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট (বারটান) ঝিনাইদহ অফিসের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা সোনিয়া শারমিন বলেন, প্রতিষ্ঠানের মধ্যে একটি পুকুর সাত বছর ধরে পড়ে আছে এজন্য পুকুরটি সংস্কার করে মাছ চাষ করতে চেয়েছিলাম।
তবে খননকাজ বন্ধ রাখা হয়েছে। সরকারি জমি থেকে মাটি কেটে বিক্রি করা যাবে কিনা এমন প্রশ্নে সহকারী কমিশনার (ভূমি) ঝিনাইদহ সদর সজল কুমার দাস জানান, যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমতি ব্যতীত কোনো সরকারি জমির মাটি কাটা ভূমি আইন অনুযায়ী বেআইনি। এবিষয়ে বাংলাদেশ ফলিত পুষ্টি গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট (বারটান) এর প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মোঃ আব্দুর রাজ্জাক বলেন, আপাতত খনন ও পুনঃখননের কোন অনুমতি নেই। যদি খনন করে মাটি অপসারণের প্রয়োজন হয় তবে তা যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমতি সাপেক্ষে দরপত্র বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে করতে হবে।