আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ভেনেজুয়েলার অপরাধচক্র ত্রেন দে আরাহুয়ার সদস্য বলে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের যুক্তরাষ্ট্র থেকে বের করে দেওয়ার জন্য একটি আদেশ জারি করেছিলেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে স্বল্প ব্যবহৃত ১৭৯৮ সালের বহিঃশত্রু আইন (এলিয়েন এনিমিস অ্যাক্ট) ব্যবহার করে ওই বহিষ্কারাদেশ দেওয়ার কারণে শনিবার (১৫ মার্চ) তা স্থগিতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
আদালতের সিদ্ধান্ত আসার কয়েকঘণ্টা আগে হোয়াইট হাউজের পক্ষ থেকে ট্রাম্পের আদেশটি প্রকাশ করা হয়। তিনি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র এমন একটি অপরাধচক্রের হামলার শিকার যারা অপহরণ, চাঁদাবাজি, সংঘবদ্ধ অপরাধ এবং চুক্তিভিত্তিক হত্যাকাণ্ডে জড়িত।
উল্লেখ্য, ফেব্রুয়ারিতে ত্রেন দে আরাহুয়া, সিনালোয়া কারতেলসহ ছয়টি অপরাধী সংগঠনকে বৈশ্বিক সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে মার্কিন প্রশাসন। তবে এই সিদ্ধান্তের ওপর ১৪ দিনের স্থগিতাদেশ জারি করে বিচারক জেমস বোয়াসবার্গ বলেছেন, প্রেসিডেন্টের ঘোষণায় হামলা (ইনভেশন) শব্দটি ব্যবহারের কোনো যৌক্তিকতা নেই। কোনো রাষ্ট্র কর্তৃক যুদ্ধ ঘোষণা করলেই কেবল এই কথা বলা যেতে পারে।
ওই আইনের ভিত্তিতে ট্রাম্প দাবি করেছিলেন, যুক্তরাষ্ট্রকে অস্থিতিশীল করার উদ্দেশে অনিয়মিত যুদ্ধ ও আগ্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছিল অপরাধচক্রটি। ওই ঘোষণার ফলে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানরত ১৪ বছর বা তার বেশি বয়সী ভেনেজুয়েলার নাগরিক, যারা অপরাধচক্রের সদস্য বলে অভিযুক্ত, তাদেরকে বহিঃশত্রু হিসেবে অবিলম্বে আটক, নিয়ন্ত্রিত বা নির্বাসিত করা যেতে পারে। তবে তারা যদি মার্কিন নাগরিকত্ব বা স্থায়ী বসবাসের অনুমতি পেয়ে থাকেন, তাহলে এই আইনের আওতায় পড়বেন না।
এই আইনটি কেবল যুদ্ধকালীন সময়ে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। তবে এই আইন ব্যবহার করে অভিবাসীদের হুমকি হিসেবে তালিকাভুক্ত করার সুযোগ পাওয়া যায়। এতে সাধারণ প্রক্রিয়া এড়িয়ে দ্রুততম সময়ে তাদের দেশ থেকে বের করে দেওয়ার সুযোগ পাবেন ট্রাম্প।
যুদ্ধকালীন একটি আইন ব্যবহার করে ঘোষণা দেওয়ায় সমালোচনার শিকার হচ্ছেন ট্রাম্প। আমেরিকান সিভিল লিবার্টিস ইউনিয়নের আইনজীবী লী জেলার্ন্ট বলেছেন, ট্রাম্প প্রশাসনের এই ঘোষণা সম্পূর্ণ আইন বহির্ভূত। শান্তিকালীন সময়ে যুদ্ধের আইন ব্যবহার করে অভিবাসী বা অন্য কোনো বেসামরিক কাজে ক্ষমতা প্রয়োগ করা সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য বিষয়।
এদিকে, ট্রাম্পের আদেশ স্থগিত করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অ্যাটর্নি জেনারেল প্যাম বনডি। বিচারক বোয়াসবার্গ তার রায়ের মাধ্যমে ত্রেন দে আরাহুয়ার পক্ষ নিয়েছেন বলেও অভিযোগ করেছেন তিনি।
এক বিবৃতিতে তিনি বলেছেন, এই রায়ের মাধ্যমে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সুপ্রতিষ্ঠিত কর্তৃত্বকে প্রশ্নবিদ্ধ করা হয়েছে। পাশাপাশি, ও আইন প্রয়োগ ও জননিরাপত্তাকেও হুমকির মুখে ফেললেন বোয়াসবার্গ।
ইয়েমেনজুড়ে হুথিদের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান চালাচ্ছে মার্কিন সামরিক বাহিনী। ছবি: এপি।