ঢাকা ০৪:৩৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৬ মার্চ ২০২৫

যুদ্ধবিরতি নিয়ে হামাসের দাবিকে অবাস্তব বলেছে যুক্তরাষ্ট্র

  • আপডেট সময় : ০৮:০০:৩৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৫ মার্চ ২০২৫
  • ৮ বার পড়া হয়েছে

বিদেশের খবর ডেস্ক : গাজা যুদ্ধবিরতির সময়সীমা বাড়ানোর আলোচনা ব্যর্থ হয়েছে বলে জানিয়েছেন এক ফিলিস্তিনি কর্মকর্তা। কারণ যুক্তরাষ্ট্র হামাসের দাবিকে ‘অবাস্তব’ বলে অভিযোগ করেছে। হামাস তাদের দাবি কাতারের যুদ্ধবিরতি আলোচনায় উত্থাপন করেছিল। ইসরায়েল এখনও এ বিষয়ে মন্তব্য করেনি। তবে প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর অফিস জানিয়েছে, গতকাল শনিবার (১৫ মার্চ) সন্ধ্যায় ইসরায়েলের আলোচক দলের কাছ থেকে প্রতিবেদন পাওয়া যাবে।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে। নেতানিয়াহুর অফিস আগে জানিয়েছিল যে ইসরায়েল যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাব গ্রহণ করেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই ফিলিস্তিনি কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ইসরায়েল এবং হামাস যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক প্রতিনিধি স্টিভ উইটকফের প্রস্তাবিত চুক্তির কিছু মূল দিক নিয়ে একমত হতে পারেনি। চুক্তি অনুসারে প্রথম ধাপের যুদ্ধবিরতি ১ মার্চ শেষ হয়েছিল। আলোচকরা পরবর্তী পদক্ষেপের জন্য তৎপর রয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্র প্রথম ধাপটি মধ্য এপ্রিল পর্যন্ত বাড়ানোর প্রস্তাব করেছিল। এর মধ্যে আরও একবার হামাসের হাতে জিম্মিদের মুক্তি এবং ইসরায়েলের হাতে বন্দি ফিলিস্তিনিদের মুক্তি অন্তর্ভুক্ত ছিল।

হোয়াইট হাউজ হামাসকে ‘অবাস্তব’ দাবির জন্য দায়ী করেছে। উইটকফের অফিস এবং মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের পক্ষ থেকে একটি বিবৃতি বলা হয়েছে, হামাস তাদের ‘স্থিতি অটল রেখেছে এবং একটুও ছাড় দেয়নি’ এবং তারা গ্রুপটিকে ‘মানসিক যুদ্ধ এবং মনোভাবের খেলা’ হিসেবে অভিযুক্ত করেছে। প্রস্তাব অনুযায়ী, এপ্রিল পর্যন্ত যুদ্ধবিরতি বাড়ানোর প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। ইসরায়েল এবং হামাস জানুয়ারিতে ১৫ মাসের যুদ্ধের পর তিনটি ধাপে একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে পৌঁছেছিল। প্রথম ধাপে হামাস ২৫টি জীবিত ইসরায়েলি জিম্মি, আটজনের মৃতদেহ এবং পাঁচজন জীবিত থাই বন্দিকে ফিরিয়ে দেয়। বিনিময়ে ইসরায়েল প্রায় ১,৮০০ ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দেয়।

চুক্তি অনুযায়ী, দ্বিতীয় ধাপে গাজার বাকী জীবিত বন্দিরা মুক্তি পাবে, যার বিনিময়ে আরও ফিলিস্তিনি বন্দি মুক্তি পাবে। কিন্তু বর্তমানে উভয় পক্ষ বন্দির সংখ্যা নিয়ে মতবিরোধে রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, হামাস হাতে আরও ২৪ জীবিত ইসরায়েলি জিম্মি এবং ৩৫ জনের মৃতদেহ রয়েছে। এছাড়া তারা গাজার মধ্যে ইসরায়েলি সেনাদের প্রত্যাহারের বিষয়ে একমত হতে পারেনি।
যুদ্ধবিরতির পরও ৯৮ ফিলিস্তিনিকে হত্যা

এদিকে যুদ্ধবিরতির পরও গাজায় নিয়মিত বিরতিতে বিভিন্ন স্থানে হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল। এতে অবরুদ্ধ উপত্যকাটিতে যুদ্ধবিরতির পর থেকে এখন পর্যন্ত অন্তত ৯৮ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে হামাস ও ইসরায়েল মধ্যে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়। সবশেষ গাজা সিটিতে বিমান হামলা চালিয়েছে দখলদার বাহিনী। এতে অন্তত চার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এদিকে হামাস ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে যুদ্ধবিরতির সফল বাস্তবায়নে ভীত বলে অভিযুক্ত করেছে এবং তার অবরোধের ফলে ইসরায়েলি বাসিন্দা ও বন্দিরা অনাহারে রয়েছেন। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, যুদ্ধে ইসরায়েলের হামলায় মোট ৪৮ হাজার ৫২৫ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন এক লাখের বেশি। অন্যদিকে গাজায় যুদ্ধবিরতির নতুন প্রস্তাব দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ।

মার্কিন সংবাদমাধ্যম এক্সিওস প্রথম বিষয়টি প্রকাশ্যে আনে। তাদের প্রতিবেদনে নির্দিষ্ট দিনের কথা উল্লেখ করা হয়নি। তবে সূত্রের বরাত দিয়ে ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম জেরুজালেম পোস্ট জানিয়েছে, উইটকফ ৫০ দিনের যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব দিয়েছেন। এক্সিওসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হোয়াইট হাউজের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ গাজার যুদ্ধবিরতি চুক্তি কয়েক সপ্তাহ বাড়ানোর জন্য একটি পরিমার্জিত মার্কিন প্রস্তাব উপস্থাপন করেছেন। এ বিষয়ে অবগত চারটি সূত্র নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছে, এই ধাপে হামাস বাকি জিম্মিদের মুক্তি দেবে এবং গাজায় মানবিক সহায়তা পুনরায় চালু করা হবে। পরিমার্জিত এই প্রস্তাবে আরও বলা হয়েছে, ইসরায়েল ও হামাস যুদ্ধবিরতি মেয়াদ বাড়ানোর সময় গাজায় একটি দীর্ঘমেয়াদি অস্ত্রবিরতির ব্যাপারে আলোচনা চালিয়ে যাবে। যদি দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি হয়, তাহলে বর্ধিত যুদ্ধবিরতির শেষ দিনে বাকি জিম্মিদের মুক্তি দেওয়া হবে, যা দীর্ঘমেয়াদি অস্ত্রবিরতির আগে ঘটবে। সূত্র: আল-জাজিরা

 

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

বাংলাদেশের বিরুদ্ধে বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রচারে জাতিসংঘ মহাসচিবের উদ্বেগ

যুদ্ধবিরতি নিয়ে হামাসের দাবিকে অবাস্তব বলেছে যুক্তরাষ্ট্র

আপডেট সময় : ০৮:০০:৩৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৫ মার্চ ২০২৫

বিদেশের খবর ডেস্ক : গাজা যুদ্ধবিরতির সময়সীমা বাড়ানোর আলোচনা ব্যর্থ হয়েছে বলে জানিয়েছেন এক ফিলিস্তিনি কর্মকর্তা। কারণ যুক্তরাষ্ট্র হামাসের দাবিকে ‘অবাস্তব’ বলে অভিযোগ করেছে। হামাস তাদের দাবি কাতারের যুদ্ধবিরতি আলোচনায় উত্থাপন করেছিল। ইসরায়েল এখনও এ বিষয়ে মন্তব্য করেনি। তবে প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর অফিস জানিয়েছে, গতকাল শনিবার (১৫ মার্চ) সন্ধ্যায় ইসরায়েলের আলোচক দলের কাছ থেকে প্রতিবেদন পাওয়া যাবে।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে। নেতানিয়াহুর অফিস আগে জানিয়েছিল যে ইসরায়েল যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাব গ্রহণ করেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই ফিলিস্তিনি কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ইসরায়েল এবং হামাস যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক প্রতিনিধি স্টিভ উইটকফের প্রস্তাবিত চুক্তির কিছু মূল দিক নিয়ে একমত হতে পারেনি। চুক্তি অনুসারে প্রথম ধাপের যুদ্ধবিরতি ১ মার্চ শেষ হয়েছিল। আলোচকরা পরবর্তী পদক্ষেপের জন্য তৎপর রয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্র প্রথম ধাপটি মধ্য এপ্রিল পর্যন্ত বাড়ানোর প্রস্তাব করেছিল। এর মধ্যে আরও একবার হামাসের হাতে জিম্মিদের মুক্তি এবং ইসরায়েলের হাতে বন্দি ফিলিস্তিনিদের মুক্তি অন্তর্ভুক্ত ছিল।

হোয়াইট হাউজ হামাসকে ‘অবাস্তব’ দাবির জন্য দায়ী করেছে। উইটকফের অফিস এবং মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের পক্ষ থেকে একটি বিবৃতি বলা হয়েছে, হামাস তাদের ‘স্থিতি অটল রেখেছে এবং একটুও ছাড় দেয়নি’ এবং তারা গ্রুপটিকে ‘মানসিক যুদ্ধ এবং মনোভাবের খেলা’ হিসেবে অভিযুক্ত করেছে। প্রস্তাব অনুযায়ী, এপ্রিল পর্যন্ত যুদ্ধবিরতি বাড়ানোর প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। ইসরায়েল এবং হামাস জানুয়ারিতে ১৫ মাসের যুদ্ধের পর তিনটি ধাপে একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে পৌঁছেছিল। প্রথম ধাপে হামাস ২৫টি জীবিত ইসরায়েলি জিম্মি, আটজনের মৃতদেহ এবং পাঁচজন জীবিত থাই বন্দিকে ফিরিয়ে দেয়। বিনিময়ে ইসরায়েল প্রায় ১,৮০০ ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দেয়।

চুক্তি অনুযায়ী, দ্বিতীয় ধাপে গাজার বাকী জীবিত বন্দিরা মুক্তি পাবে, যার বিনিময়ে আরও ফিলিস্তিনি বন্দি মুক্তি পাবে। কিন্তু বর্তমানে উভয় পক্ষ বন্দির সংখ্যা নিয়ে মতবিরোধে রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, হামাস হাতে আরও ২৪ জীবিত ইসরায়েলি জিম্মি এবং ৩৫ জনের মৃতদেহ রয়েছে। এছাড়া তারা গাজার মধ্যে ইসরায়েলি সেনাদের প্রত্যাহারের বিষয়ে একমত হতে পারেনি।
যুদ্ধবিরতির পরও ৯৮ ফিলিস্তিনিকে হত্যা

এদিকে যুদ্ধবিরতির পরও গাজায় নিয়মিত বিরতিতে বিভিন্ন স্থানে হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল। এতে অবরুদ্ধ উপত্যকাটিতে যুদ্ধবিরতির পর থেকে এখন পর্যন্ত অন্তত ৯৮ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে হামাস ও ইসরায়েল মধ্যে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়। সবশেষ গাজা সিটিতে বিমান হামলা চালিয়েছে দখলদার বাহিনী। এতে অন্তত চার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এদিকে হামাস ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে যুদ্ধবিরতির সফল বাস্তবায়নে ভীত বলে অভিযুক্ত করেছে এবং তার অবরোধের ফলে ইসরায়েলি বাসিন্দা ও বন্দিরা অনাহারে রয়েছেন। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, যুদ্ধে ইসরায়েলের হামলায় মোট ৪৮ হাজার ৫২৫ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন এক লাখের বেশি। অন্যদিকে গাজায় যুদ্ধবিরতির নতুন প্রস্তাব দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ।

মার্কিন সংবাদমাধ্যম এক্সিওস প্রথম বিষয়টি প্রকাশ্যে আনে। তাদের প্রতিবেদনে নির্দিষ্ট দিনের কথা উল্লেখ করা হয়নি। তবে সূত্রের বরাত দিয়ে ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম জেরুজালেম পোস্ট জানিয়েছে, উইটকফ ৫০ দিনের যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব দিয়েছেন। এক্সিওসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হোয়াইট হাউজের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ গাজার যুদ্ধবিরতি চুক্তি কয়েক সপ্তাহ বাড়ানোর জন্য একটি পরিমার্জিত মার্কিন প্রস্তাব উপস্থাপন করেছেন। এ বিষয়ে অবগত চারটি সূত্র নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছে, এই ধাপে হামাস বাকি জিম্মিদের মুক্তি দেবে এবং গাজায় মানবিক সহায়তা পুনরায় চালু করা হবে। পরিমার্জিত এই প্রস্তাবে আরও বলা হয়েছে, ইসরায়েল ও হামাস যুদ্ধবিরতি মেয়াদ বাড়ানোর সময় গাজায় একটি দীর্ঘমেয়াদি অস্ত্রবিরতির ব্যাপারে আলোচনা চালিয়ে যাবে। যদি দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি হয়, তাহলে বর্ধিত যুদ্ধবিরতির শেষ দিনে বাকি জিম্মিদের মুক্তি দেওয়া হবে, যা দীর্ঘমেয়াদি অস্ত্রবিরতির আগে ঘটবে। সূত্র: আল-জাজিরা