ঢাকা ০৯:২৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৫ মার্চ ২০২৫

বাম ছাত্র সংগঠনগুলোর গণমিছিল স্থগিত, সংক্ষিপ্ত সমাবেশে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার অপসারণ দাবি

  • আপডেট সময় : ০৪:৩৭:১৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৫ মার্চ ২০২৫
  • ২২ বার পড়া হয়েছে

হত্যা, ধর্ষণ, নিপীড়নের বিচার এবং স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে অপসারণের দাবিতে শনিবার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের পাদদেশে সমাবেশ করেছে বামপন্থী ছাত্র, শ্রমিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো- ছবি সংগৃহীত

নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশে অব্যাহত ধর্ষণ ও হত্যার বিচারের দাবি জানিয়েছেন বাম ছাত্র সংগঠনগুলোর নেতারা। একইসঙ্গে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ‘ব্যর্থ’ মন্তব্য করে তার অপসারণেরও দাবি জানান তারা।

শনিবার (১৫ মার্চ) বেলা সাড়ে ১১টায় রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গণমিছিলের উদ্দেশে জড়ো হন বাম নেতাকর্মীরা। তবে দেশের সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় গণমিছিল স্থগিত করে একটি সংক্ষিপ্ত সমাবেশে সাত দফা দাবি তুলে ধরেন তারা।

তাদের সাত দফা দাবি হলো-দেশে অব্যাহত ধর্ষণ, নিপীড়ন ও হত্যার বিচার করতে হবে; স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টকে অপসারণ করতে হবে; জুলাই আগস্ট হত্যাকাণ্ডের বিচার করতে হবে; মন্দির-মসজিদ, মাজারে হামলাকারীদের বিচার করতে হবে; চট্টগ্রামে আইনজীবী আলিফ হত্যার বিচার করতে হবে; সাগর-রুনি, তনু, আফসানা, মুনিয়াসহ আওয়ামী আমলের সব হত্যার বিচার করতে হবে এবং হিন্দু ও আদিবাসীদের ওপর হামলা ও লুটতরাজের বিচার করতে হবে।

সমাবেশে সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের (একাংশ) কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি মুক্তা বাড়ৈ বলেন, ‘আমরা খুব আকাঙক্ষা নিয়ে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে অংশ নিয়েছিলাম। সেখানে লাখ লাখ নারী অংশ নিয়েছিল একটাই উদ্দেশ্যে। সেটা হলো, বৈষম্যহীনভাবে নারীর পথচলাকে সহজ করা এবং নারীর ওপর যত ধরনের সামাজিক বৈষম্য আছে সেগুলোকে বিলোপ করা, শিক্ষা ব্যবস্থার বৈষম্যকে বিলোপ করা।’

তিনি বলেন, ‘গত ৫ আগস্টের পরে সেই নারীদেরই লাঞ্চিত হতে হচ্ছে। একটা মহল আমার ওড়না ঠিক আছে কিনা, ঠিকমতো হাঁটছি কিনা, কী খেতে পারবো, কীভাবে চলবো সবকিছুই যেন নির্ধারণ করে দিচ্ছে। নারীদের তারা মানুষ হিসেবে নয়, জড়বস্তু বা পণ্য হিসেবে দেখতে চান। আর তার বিরুদ্ধেই আজকে এখানে দাঁড়িয়েছি।’

মুক্তা বলেন, ‘এ দেশে ক্যান্টনমেন্টের ভেতরে তনুকে হত্যা করা হয়েছে, তার বিচার হয়নি। মুনিয়াকে ভুক্তভোগী করে হত্যা করা হলেও বিচার হয়নি। নুসরাতকে জ্বালিয়ে পুড়িয়ে মেরে ফেলার বিচারও আমরা পাইনি। প্রতি ১০ মিনিটে নাকি একটি ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। আমরা অবাক হই, এ জন্যই কি আমরা নারীরা রাস্তায় নেমেছিলাম?’

‘৫ আগস্টের পরে শতাধিক মানুষকে মব সন্ত্রাসের মাধ্যমে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। দেশে যেন আইন নাই, বিচার নাই, শাসনব্যবস্থা নাই। একটা সরকার যে আছে, তার নমুনা আমরা দেখতে পাচ্ছি না। সরকার যে আছে, গণ-অভ্যুত্থানের ম্যান্ডেট নিয়ে যে তারা ক্ষমতায় এসেছে, সেটা স্মরণ করিয়ে দেওয়ার জন্যই আমরা এখানে দাঁড়িয়েছি।’

সভাপতির বক্তব্যে কেন্দ্রীয় ছাত্র ইউনিয়ন সভাপতি মাহির শাহরিয়ার রেজা বলেন, ‘আমরা এই কর্মসূচি ঘোষণা করার পর একটি উগ্রবাদী গোষ্ঠী আমাদের কর্মসূচি নস্যাৎ করার, আমাদের এই ধর্ষণবিরোধী আন্দোলনকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্য নানা চক্রান্ত করছে। আমরা এটাও লক্ষ করছি, আমাদের এই ধর্ষণবিরোধী গণ-আন্দোলনকে পুঁজি করে আওয়ামী সন্ত্রাসীরাও পুনর্বাসনের স্বপ্ন দেখছে। আমরা উগ্রবাদী গোষ্ঠী ও আওয়ামী সন্ত্রাসীদের হুঁশিয়ারি করে বলতে চাই, ধর্ষণবিরোধী আন্দোলনকে ব্যবহার করে আপনাদের যে বাসনা; বাংলাদেশের ছাত্র, যুব সমাজ সেটি পূরণ হতে দেবে না।’

‘আমরা যখন ব্যর্থ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার অপসারণ দাবি করছি, তখন একটা স্বার্থান্বেষী মহল নানাভাবে আমাদের ট্যাগ দেওয়ার চেষ্টা করছে। আমরা নাকি আওয়ামী লীগের পুনর্বাসনের জন্য মাঠে নেমেছি। ৫ আগস্টের পর থেকে যে মব সন্ত্রাস চলছে, সেটি বন্ধ করতে হবে। এই মব ভায়োলেন্সের মধ্য দিয়ে যাদের হত্যা করা হয়েছে, তাদের হত্যাকারীদের সুষ্ঠু বিচার করতে হবে।’

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

বাংলাদেশের বিরুদ্ধে বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রচারে জাতিসংঘ মহাসচিবের উদ্বেগ

বাম ছাত্র সংগঠনগুলোর গণমিছিল স্থগিত, সংক্ষিপ্ত সমাবেশে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার অপসারণ দাবি

আপডেট সময় : ০৪:৩৭:১৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৫ মার্চ ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশে অব্যাহত ধর্ষণ ও হত্যার বিচারের দাবি জানিয়েছেন বাম ছাত্র সংগঠনগুলোর নেতারা। একইসঙ্গে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ‘ব্যর্থ’ মন্তব্য করে তার অপসারণেরও দাবি জানান তারা।

শনিবার (১৫ মার্চ) বেলা সাড়ে ১১টায় রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গণমিছিলের উদ্দেশে জড়ো হন বাম নেতাকর্মীরা। তবে দেশের সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় গণমিছিল স্থগিত করে একটি সংক্ষিপ্ত সমাবেশে সাত দফা দাবি তুলে ধরেন তারা।

তাদের সাত দফা দাবি হলো-দেশে অব্যাহত ধর্ষণ, নিপীড়ন ও হত্যার বিচার করতে হবে; স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টকে অপসারণ করতে হবে; জুলাই আগস্ট হত্যাকাণ্ডের বিচার করতে হবে; মন্দির-মসজিদ, মাজারে হামলাকারীদের বিচার করতে হবে; চট্টগ্রামে আইনজীবী আলিফ হত্যার বিচার করতে হবে; সাগর-রুনি, তনু, আফসানা, মুনিয়াসহ আওয়ামী আমলের সব হত্যার বিচার করতে হবে এবং হিন্দু ও আদিবাসীদের ওপর হামলা ও লুটতরাজের বিচার করতে হবে।

সমাবেশে সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের (একাংশ) কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি মুক্তা বাড়ৈ বলেন, ‘আমরা খুব আকাঙক্ষা নিয়ে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে অংশ নিয়েছিলাম। সেখানে লাখ লাখ নারী অংশ নিয়েছিল একটাই উদ্দেশ্যে। সেটা হলো, বৈষম্যহীনভাবে নারীর পথচলাকে সহজ করা এবং নারীর ওপর যত ধরনের সামাজিক বৈষম্য আছে সেগুলোকে বিলোপ করা, শিক্ষা ব্যবস্থার বৈষম্যকে বিলোপ করা।’

তিনি বলেন, ‘গত ৫ আগস্টের পরে সেই নারীদেরই লাঞ্চিত হতে হচ্ছে। একটা মহল আমার ওড়না ঠিক আছে কিনা, ঠিকমতো হাঁটছি কিনা, কী খেতে পারবো, কীভাবে চলবো সবকিছুই যেন নির্ধারণ করে দিচ্ছে। নারীদের তারা মানুষ হিসেবে নয়, জড়বস্তু বা পণ্য হিসেবে দেখতে চান। আর তার বিরুদ্ধেই আজকে এখানে দাঁড়িয়েছি।’

মুক্তা বলেন, ‘এ দেশে ক্যান্টনমেন্টের ভেতরে তনুকে হত্যা করা হয়েছে, তার বিচার হয়নি। মুনিয়াকে ভুক্তভোগী করে হত্যা করা হলেও বিচার হয়নি। নুসরাতকে জ্বালিয়ে পুড়িয়ে মেরে ফেলার বিচারও আমরা পাইনি। প্রতি ১০ মিনিটে নাকি একটি ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। আমরা অবাক হই, এ জন্যই কি আমরা নারীরা রাস্তায় নেমেছিলাম?’

‘৫ আগস্টের পরে শতাধিক মানুষকে মব সন্ত্রাসের মাধ্যমে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। দেশে যেন আইন নাই, বিচার নাই, শাসনব্যবস্থা নাই। একটা সরকার যে আছে, তার নমুনা আমরা দেখতে পাচ্ছি না। সরকার যে আছে, গণ-অভ্যুত্থানের ম্যান্ডেট নিয়ে যে তারা ক্ষমতায় এসেছে, সেটা স্মরণ করিয়ে দেওয়ার জন্যই আমরা এখানে দাঁড়িয়েছি।’

সভাপতির বক্তব্যে কেন্দ্রীয় ছাত্র ইউনিয়ন সভাপতি মাহির শাহরিয়ার রেজা বলেন, ‘আমরা এই কর্মসূচি ঘোষণা করার পর একটি উগ্রবাদী গোষ্ঠী আমাদের কর্মসূচি নস্যাৎ করার, আমাদের এই ধর্ষণবিরোধী আন্দোলনকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্য নানা চক্রান্ত করছে। আমরা এটাও লক্ষ করছি, আমাদের এই ধর্ষণবিরোধী গণ-আন্দোলনকে পুঁজি করে আওয়ামী সন্ত্রাসীরাও পুনর্বাসনের স্বপ্ন দেখছে। আমরা উগ্রবাদী গোষ্ঠী ও আওয়ামী সন্ত্রাসীদের হুঁশিয়ারি করে বলতে চাই, ধর্ষণবিরোধী আন্দোলনকে ব্যবহার করে আপনাদের যে বাসনা; বাংলাদেশের ছাত্র, যুব সমাজ সেটি পূরণ হতে দেবে না।’

‘আমরা যখন ব্যর্থ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার অপসারণ দাবি করছি, তখন একটা স্বার্থান্বেষী মহল নানাভাবে আমাদের ট্যাগ দেওয়ার চেষ্টা করছে। আমরা নাকি আওয়ামী লীগের পুনর্বাসনের জন্য মাঠে নেমেছি। ৫ আগস্টের পর থেকে যে মব সন্ত্রাস চলছে, সেটি বন্ধ করতে হবে। এই মব ভায়োলেন্সের মধ্য দিয়ে যাদের হত্যা করা হয়েছে, তাদের হত্যাকারীদের সুষ্ঠু বিচার করতে হবে।’