ঢাকা ০৭:৪১ অপরাহ্ন, শনিবার, ০৭ জুন ২০২৫

ইফতারে স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া জরুরি

  • আপডেট সময় : ০৬:০৩:০২ অপরাহ্ন, সোমবার, ১০ মার্চ ২০২৫
  • ৫৪ বার পড়া হয়েছে

প্রত্যাশা ডেস্ক: চলছে পবিত্র মাহে রমজান। আর এই রমজানের পুরো মাসজুড়ে সিয়াম (রোজা) সাধনা করেন ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা। সারা দিন রোজা রাখার পর ইফতারে স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া জরুরি। তেলেভাজা ও মসলাদার খাবার মুখরোচক হলেও নানা অসুখ বাধায়। এ বিষয়ে পুষ্টিবিদরা জানিয়েছেন ইফতারে খাওয়ার মতো কয়েকটি স্বাস্থ্যকর খাবারের কথা। তা হলো-

শরবত কিংবা ফলের রস: পুষ্টিবিদ সুমাইয়া রফিক বলেন, ইফতারে স্বাস্থ্যকর পানীয় রাখাও খুব প্রয়োজন। ফ্রুট জুস বা ফলের রস, লেবু পানি কিংবা ইসবগুলের সঙ্গে টক দই দিয়ে ঘোল বানিয়ে ইফতারের সময় পান করা যেতে পারে। এ ছাড়া যেকোনো ধরনের শরবত রক্তে শর্করা বৃদ্ধি করবে। অ্যাসিডিটি কমাতে শরবতে ইসবগুলের ভুষি রাখতে হবে। যাদের ডায়াবেটিস আছে, তারা লেবু পানি খেতে পারেন।
দেশি ফলের সালাদ: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুষ্টিবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সায়েদুল আরেফিন জানান, ইফতারে ফলের সালাদ রোজাদারদের সতেজ করে তুলতে পারে। রোজা রাখার পর শরীরে ভিটামিনের প্রয়োজন হয়। তাছাড়া ফ্রুট সালাদ খেতে ভালোও লাগে সবার। পেয়ারা ও কলার মতো সাধারণ দেশি ফল দিয়েই সালাদ বানানো যায়। তাজা ফল হলে সবচেয়ে ভালো।
সিদ্ধ কিংবা কাঁচা ছোলা: ভুনা না করে সিদ্ধ কিংবা কাঁচা ছোলা অল্প মসলা দিয়ে মাখিয়ে মুড়ি, শসা, টমেটো, অল্প পরিমাণে সরিষার তেল ও লেবুর রস দিয়ে খাওয়া যেতে পারে। এটি কম ক্যালরিসম্পন্ন সালাদের মতো খাবার। ছোলা ভুনার মতো মসলাদার কিছু খেলে পাকস্থলীতে জ্বালাপোড়ার সমস্যা হয়।
ঘরোয়া হালিম: দোকান থেকে না কিনে কম ক্যালরিসম্পন্ন হালিম ঘরেই তৈরি করা যায়। এতে মুরগি কিংবা গরুর মাংস চর্বি ছাড়া দিতে হবে। ওটস ও অল্প মসলা দিয়ে হোমমেড হালিম ইফতারে স্বাস্থ্যকর। এমন খাবারে রোজাদারদের পাকস্থলী পূর্ণ থাকে।
দই-চিড়া: টক দই স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। তাই ইফতারে টক দইয়ের সঙ্গে চিড়া খাওয়া যেতে পারে। এ ছাড়া কলা দিয়ে চিড়া আরেকটি ভালো আইটেম। মানবদেহে ভালো ব্যাকটেরিয়া থাকে। সেটি কমে গেলে হজমে সমস্যা হয়। এসব ব্যাকটেরিয়া ফিরিয়ে আনতে প্রো-বায়োটিক প্রয়োজন। সেটি সাধারণত টক কিংবা মিষ্টি দুই ধরনের দইয়ে পাওয়া যায়।
খেজুর ও আঙুর: ইফতারে খেজুর যেন অপরিহার্য। রোজা রাখার পর খেজুর অনেক উপকারী। সাহ্রীতেও খেজুর খেলে সারাদিন তুলনামূলকভাবে স্বাচ্ছন্দ্যে থাকা যায়। এ ছাড়া ইফতারে সম্ভব হলে আঙুরও খাওয়া যেতে পারে।
কলা-ভাত কিংবা ওটস: ইফতারে কলা-ভাত খাওয়া যেতে পারে। এ ছাড়া ওটসের সঙ্গে দুধ মিশিয়ে খেতে পারেন। তবে কম ক্যালরি সম্পন্ন দুধ হতে হবে। পুষ্টিবিদ সুমাইয়া রফিক জানান, গরুর দুধ জ্বাল দিয়ে সর সরালেই ক্যালরি কমে যায়।
ডিম-খিচুড়ি: ইফতারে অনেকে ভাত বা চালের বিভিন্ন ধরনের রেসিপি পছন্দ করেন। সেক্ষেত্রে খিচুড়ির সঙ্গে ডিম সিদ্ধ খাওয়া যায়। এটিও বেশ স্বাস্থ্যকর। শুধু ডিম খেলেও শরীরে আমিষের চাহিদা মেটে। কেউ চাইলে ইফতারে স্যুপ যেতে পারেন। এটি বেশ শক্তি দেয়।
যেসব খাবার বাদ দিতে হবে: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুষ্টিবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সায়েদুল আরেফিন জানান, ‘যতটা সম্ভব পেঁয়াজু, বেগুনি কিংবা বড় বাপের পোলায় খায়-এর মতো খাবার এড়িয়ে চলতে হবে। এগুলো সহজে হজম হয় না। ফলে অ্যাসিডিটি ও গ্যাস্ট্রিকের কারণে টয়লেটে সমস্যা দেখা দেয়। তাই এগুলো এড়িয়ে যাওয়া উচিত।’

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

ইফতারে স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া জরুরি

আপডেট সময় : ০৬:০৩:০২ অপরাহ্ন, সোমবার, ১০ মার্চ ২০২৫

প্রত্যাশা ডেস্ক: চলছে পবিত্র মাহে রমজান। আর এই রমজানের পুরো মাসজুড়ে সিয়াম (রোজা) সাধনা করেন ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা। সারা দিন রোজা রাখার পর ইফতারে স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া জরুরি। তেলেভাজা ও মসলাদার খাবার মুখরোচক হলেও নানা অসুখ বাধায়। এ বিষয়ে পুষ্টিবিদরা জানিয়েছেন ইফতারে খাওয়ার মতো কয়েকটি স্বাস্থ্যকর খাবারের কথা। তা হলো-

শরবত কিংবা ফলের রস: পুষ্টিবিদ সুমাইয়া রফিক বলেন, ইফতারে স্বাস্থ্যকর পানীয় রাখাও খুব প্রয়োজন। ফ্রুট জুস বা ফলের রস, লেবু পানি কিংবা ইসবগুলের সঙ্গে টক দই দিয়ে ঘোল বানিয়ে ইফতারের সময় পান করা যেতে পারে। এ ছাড়া যেকোনো ধরনের শরবত রক্তে শর্করা বৃদ্ধি করবে। অ্যাসিডিটি কমাতে শরবতে ইসবগুলের ভুষি রাখতে হবে। যাদের ডায়াবেটিস আছে, তারা লেবু পানি খেতে পারেন।
দেশি ফলের সালাদ: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুষ্টিবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সায়েদুল আরেফিন জানান, ইফতারে ফলের সালাদ রোজাদারদের সতেজ করে তুলতে পারে। রোজা রাখার পর শরীরে ভিটামিনের প্রয়োজন হয়। তাছাড়া ফ্রুট সালাদ খেতে ভালোও লাগে সবার। পেয়ারা ও কলার মতো সাধারণ দেশি ফল দিয়েই সালাদ বানানো যায়। তাজা ফল হলে সবচেয়ে ভালো।
সিদ্ধ কিংবা কাঁচা ছোলা: ভুনা না করে সিদ্ধ কিংবা কাঁচা ছোলা অল্প মসলা দিয়ে মাখিয়ে মুড়ি, শসা, টমেটো, অল্প পরিমাণে সরিষার তেল ও লেবুর রস দিয়ে খাওয়া যেতে পারে। এটি কম ক্যালরিসম্পন্ন সালাদের মতো খাবার। ছোলা ভুনার মতো মসলাদার কিছু খেলে পাকস্থলীতে জ্বালাপোড়ার সমস্যা হয়।
ঘরোয়া হালিম: দোকান থেকে না কিনে কম ক্যালরিসম্পন্ন হালিম ঘরেই তৈরি করা যায়। এতে মুরগি কিংবা গরুর মাংস চর্বি ছাড়া দিতে হবে। ওটস ও অল্প মসলা দিয়ে হোমমেড হালিম ইফতারে স্বাস্থ্যকর। এমন খাবারে রোজাদারদের পাকস্থলী পূর্ণ থাকে।
দই-চিড়া: টক দই স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। তাই ইফতারে টক দইয়ের সঙ্গে চিড়া খাওয়া যেতে পারে। এ ছাড়া কলা দিয়ে চিড়া আরেকটি ভালো আইটেম। মানবদেহে ভালো ব্যাকটেরিয়া থাকে। সেটি কমে গেলে হজমে সমস্যা হয়। এসব ব্যাকটেরিয়া ফিরিয়ে আনতে প্রো-বায়োটিক প্রয়োজন। সেটি সাধারণত টক কিংবা মিষ্টি দুই ধরনের দইয়ে পাওয়া যায়।
খেজুর ও আঙুর: ইফতারে খেজুর যেন অপরিহার্য। রোজা রাখার পর খেজুর অনেক উপকারী। সাহ্রীতেও খেজুর খেলে সারাদিন তুলনামূলকভাবে স্বাচ্ছন্দ্যে থাকা যায়। এ ছাড়া ইফতারে সম্ভব হলে আঙুরও খাওয়া যেতে পারে।
কলা-ভাত কিংবা ওটস: ইফতারে কলা-ভাত খাওয়া যেতে পারে। এ ছাড়া ওটসের সঙ্গে দুধ মিশিয়ে খেতে পারেন। তবে কম ক্যালরি সম্পন্ন দুধ হতে হবে। পুষ্টিবিদ সুমাইয়া রফিক জানান, গরুর দুধ জ্বাল দিয়ে সর সরালেই ক্যালরি কমে যায়।
ডিম-খিচুড়ি: ইফতারে অনেকে ভাত বা চালের বিভিন্ন ধরনের রেসিপি পছন্দ করেন। সেক্ষেত্রে খিচুড়ির সঙ্গে ডিম সিদ্ধ খাওয়া যায়। এটিও বেশ স্বাস্থ্যকর। শুধু ডিম খেলেও শরীরে আমিষের চাহিদা মেটে। কেউ চাইলে ইফতারে স্যুপ যেতে পারেন। এটি বেশ শক্তি দেয়।
যেসব খাবার বাদ দিতে হবে: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুষ্টিবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সায়েদুল আরেফিন জানান, ‘যতটা সম্ভব পেঁয়াজু, বেগুনি কিংবা বড় বাপের পোলায় খায়-এর মতো খাবার এড়িয়ে চলতে হবে। এগুলো সহজে হজম হয় না। ফলে অ্যাসিডিটি ও গ্যাস্ট্রিকের কারণে টয়লেটে সমস্যা দেখা দেয়। তাই এগুলো এড়িয়ে যাওয়া উচিত।’