ঢাকা ০৩:৫০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ০৫ মার্চ ২০২৫

সুদানে ২০০-এর বেশি শিশু ধর্ষণের শিকার: ইউনিসেফ

  • আপডেট সময় : ০৭:৪৫:২১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৪ মার্চ ২০২৫
  • ৮ বার পড়া হয়েছে

বিদেশের খবর ডেস্ক : সুদানে যুদ্ধবিধ্বস্ত পরিস্থিতির মধ্যে এক বছরের শিশুসহ আরও শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের শিশু সংস্থা ইউনিসেফ। গতকাল মঙ্গলবার (৪ মার্চ) প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে ইউনিসেফ জানিয়েছে, ২০২৪ সালের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত অন্তত ২২১ জন শিশু, যার মধ্যে ছেলেরাও রয়েছে, সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের দ্বারা ধর্ষণের শিকার হয়েছে। উত্তর আফ্রিকার এই দেশটিতে লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতা প্রতিরোধে কাজ করা সংস্থাগুলোর রেকর্ড অনুযায়ী, এসব ঘটনার ৬৬ শতাংশ ভুক্তভোগী মেয়ে শিশু এবং বাকি ৩৪ শতাংশ ছেলে। ধর্ষণের শিকারদের মধ্যে ১৬ জনের বয়স ছিল পাঁচ বছরের নিচে, যার মধ্যে চারজনের বয়স মাত্র এক বছর।

ইউনিসেফ আরও জানিয়েছে, শিশুদের বিরুদ্ধে যৌন নির্যাতনের আরও ৭৭টি অভিযোগ পাওয়া গেছে, যার বেশিরভাগই ধর্ষণের চেষ্টা সংক্রান্ত। ২০২৩ সালের এপ্রিলে সুদানে সেনাবাহিনী ও প্রতিদ্বন্দ্বী আধাসামরিক বাহিনী র‌্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ)-এর মধ্যে সংঘাত শুরু হয়। রাজধানী খার্তুমসহ দেশজুড়ে চলা এই যুদ্ধে এখন পর্যন্ত অন্তত ২০ হাজার মানুষ নিহত হয়েছে, যদিও প্রকৃত সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে। লড়াইয়ের ফলে ১ কোটি ৪০ লাখের বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে এবং দেশের কিছু অঞ্চলে দুর্ভিক্ষের আশঙ্কা রয়েছে। মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলছে, উভয় পক্ষই যুদ্ধে নৃশংসতা চালিয়েছে, যার মধ্যে যৌন সহিংসতা ও শিশুবিবাহও রয়েছে। ইউনিসেফের তথ্য অনুযায়ী, সংঘাতের কারণে প্রায় ৬১ হাজার ৮০০ শিশু অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত হয়েছে।

অনেক শিশু শহরগুলোর ওপর হামলার সময় ধর্ষণের শিকার হয়েছে। ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক ক্যাথরিন রাসেল বলেছেন, যৌন সহিংসতা ও ধর্ষণকে যুদ্ধের কৌশল হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে, যা আন্তর্জাতিক আইন ও শিশু সুরক্ষা সংক্রান্ত আইন লঙ্ঘন করে। ইউনিসেফের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাদারিফ, কাসালা, গেজিরা, খার্তুম, রিভার নাইল, নর্দার্ন স্টেট, দক্ষিণ কোরদোফান, উত্তর দারফুর এবং পশ্চিম দারফুরে এই ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। ডিসেম্বরে সুদানে থাকা ইনগ্রাম জানান, তিনি এমন ভুক্তভোগীদের সঙ্গে কথা বলেছেন, যারা ভয়াবহ অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে গেছে। কিছু ভুক্তভোগী আত্মহত্যারও চেষ্টা করেছে। সামাজিক লজ্জা, সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর প্রতিশোধের ভয় এবং পরিবারের দ্বারা প্রত্যাখ্যাত হওয়ার আশঙ্কায় অনেক ভুক্তভোগী যৌন সহিংসতার ঘটনা প্রকাশ করতে চায় না। ইউনিসেফ সুদানের সরকার এবং সংঘাতে জড়িত সব পক্ষকে শিশুদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছে এবং যারা নির্যাতনের শিকার শিশুদের সহায়তা দিচ্ছে, তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছে।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

সুদানে ২০০-এর বেশি শিশু ধর্ষণের শিকার: ইউনিসেফ

আপডেট সময় : ০৭:৪৫:২১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৪ মার্চ ২০২৫

বিদেশের খবর ডেস্ক : সুদানে যুদ্ধবিধ্বস্ত পরিস্থিতির মধ্যে এক বছরের শিশুসহ আরও শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের শিশু সংস্থা ইউনিসেফ। গতকাল মঙ্গলবার (৪ মার্চ) প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে ইউনিসেফ জানিয়েছে, ২০২৪ সালের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত অন্তত ২২১ জন শিশু, যার মধ্যে ছেলেরাও রয়েছে, সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের দ্বারা ধর্ষণের শিকার হয়েছে। উত্তর আফ্রিকার এই দেশটিতে লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতা প্রতিরোধে কাজ করা সংস্থাগুলোর রেকর্ড অনুযায়ী, এসব ঘটনার ৬৬ শতাংশ ভুক্তভোগী মেয়ে শিশু এবং বাকি ৩৪ শতাংশ ছেলে। ধর্ষণের শিকারদের মধ্যে ১৬ জনের বয়স ছিল পাঁচ বছরের নিচে, যার মধ্যে চারজনের বয়স মাত্র এক বছর।

ইউনিসেফ আরও জানিয়েছে, শিশুদের বিরুদ্ধে যৌন নির্যাতনের আরও ৭৭টি অভিযোগ পাওয়া গেছে, যার বেশিরভাগই ধর্ষণের চেষ্টা সংক্রান্ত। ২০২৩ সালের এপ্রিলে সুদানে সেনাবাহিনী ও প্রতিদ্বন্দ্বী আধাসামরিক বাহিনী র‌্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ)-এর মধ্যে সংঘাত শুরু হয়। রাজধানী খার্তুমসহ দেশজুড়ে চলা এই যুদ্ধে এখন পর্যন্ত অন্তত ২০ হাজার মানুষ নিহত হয়েছে, যদিও প্রকৃত সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে। লড়াইয়ের ফলে ১ কোটি ৪০ লাখের বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে এবং দেশের কিছু অঞ্চলে দুর্ভিক্ষের আশঙ্কা রয়েছে। মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলছে, উভয় পক্ষই যুদ্ধে নৃশংসতা চালিয়েছে, যার মধ্যে যৌন সহিংসতা ও শিশুবিবাহও রয়েছে। ইউনিসেফের তথ্য অনুযায়ী, সংঘাতের কারণে প্রায় ৬১ হাজার ৮০০ শিশু অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত হয়েছে।

অনেক শিশু শহরগুলোর ওপর হামলার সময় ধর্ষণের শিকার হয়েছে। ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক ক্যাথরিন রাসেল বলেছেন, যৌন সহিংসতা ও ধর্ষণকে যুদ্ধের কৌশল হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে, যা আন্তর্জাতিক আইন ও শিশু সুরক্ষা সংক্রান্ত আইন লঙ্ঘন করে। ইউনিসেফের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাদারিফ, কাসালা, গেজিরা, খার্তুম, রিভার নাইল, নর্দার্ন স্টেট, দক্ষিণ কোরদোফান, উত্তর দারফুর এবং পশ্চিম দারফুরে এই ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। ডিসেম্বরে সুদানে থাকা ইনগ্রাম জানান, তিনি এমন ভুক্তভোগীদের সঙ্গে কথা বলেছেন, যারা ভয়াবহ অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে গেছে। কিছু ভুক্তভোগী আত্মহত্যারও চেষ্টা করেছে। সামাজিক লজ্জা, সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর প্রতিশোধের ভয় এবং পরিবারের দ্বারা প্রত্যাখ্যাত হওয়ার আশঙ্কায় অনেক ভুক্তভোগী যৌন সহিংসতার ঘটনা প্রকাশ করতে চায় না। ইউনিসেফ সুদানের সরকার এবং সংঘাতে জড়িত সব পক্ষকে শিশুদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছে এবং যারা নির্যাতনের শিকার শিশুদের সহায়তা দিচ্ছে, তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছে।