ঢাকা ১২:৪৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৩ অগাস্ট ২০২৫

স্বাস্থ্যবিধি উধাও, মাস্ক ব্যবহারে অনীহা

  • আপডেট সময় : ০৮:৫০:১৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২১
  • ১১৭ বার পড়া হয়েছে

বিশেষ প্রতিনিধি : রাজধানী ঢাকায় স্বাস্থ্যবিধি উধাওপ্রায়। সামাজিক দূরত্ব দূরে থাক, বাইরে বাধ্যতামূলক মাস্ক ব্যবহারও করছেননা শতকরা প্রায় ৮০ থেকে ৯০ ভাগ মানুষ। গণপরিবহন এবং শপিংমলগুলোতে মাস্ক পরা মানুষের সংখ্যা কিছুটা বেশি। তাছাড়া বাজারঘাট থেকে শুরু সর্বত্র প্রচ- অনীহা দেখা যাচ্ছে মাস্ক ব্যবহারে। এদিকে সামাজিক দূরত্ব এবং হাঁচি কাশির সংযম মেনে চলার কোনো বালাই দেখা যাচ্ছেনা অধিকাংশক্ষেত্রেই। এসব নিয়ে প্রশ্ন করা হলে অনেকেই বলছেন, করোনা শেষ!
গতকাল শুক্রবার সরেজমিনে কয়েকটি এলাকা দেখার পর একটি সংবাদসংস্থা এক প্রতিবেদনেও এসব তথ্য তুলে ধরেছে।
‘করোনা শেষ তাই মাস্কের ব্যবহারও শেষ’, অনেকটা ঠাট্টার সুরেই কথাটি বললেন খুচরা মাস্ক বিক্রেতা হেলাল মিয়া। গত দেড় বছর ধরে তিনি পথের ধারে মাস্ক বিক্রি করছেন। করোনার শুরুতে তার মাস্কের বিক্রি যতটা ছিল তা এখন চার ভাগের এক ভাগে নেমে এসেছে বলে তিনি জানান। বিক্রি কমে যাওয়ার কারণ জিজ্ঞাস করলে হেলাল মিয়া উত্তর দেন, ‘মানুষ এখন আর মাস্ক পরে না, তাই কেউ কিনে না। বিক্রিও হয় না।’
দুলাল হোসেন, আগে কম্পিউটার ফটোকপির দোকানে কাজ করতেন। করোনাতে স্কুল কলেজ বন্ধ হয়ে যাওয়াই গুলিস্তানের মোড়ে মাস্ক, হ্যান্ড স্যানিটাইজারসহ করোনা সুরক্ষা সরঞ্জামাদির দোকান নিয়ে বসেছেন। খুচরা পাইকারি দুইভাবেই বিক্রি করেন। তিনি জানান, আগে ৭-৮ হাজার টাকার মাল বিক্রি হলেও এখন দুই হাজারও হয় না। বিক্রি অনেক কমে গেছে। বিক্রি কমে যাওয়ার কারণ জিজ্ঞাস করলে তিনি বলেন, ‘মানুষজন এখন বাধ্য হয়ে মাস্ক পরে। অফিসে ঢোকার ক্ষেত্রে বাধ্যবাধকতা থাকে বলেই মাস্ক ব্যবহার করে। অনেকে আবার সামাজিকতা রক্ষা করতে মাস্ক পরে। এমনিতে সচেতনার জন্য কেউ মাস্ক পরে না।’
রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায় মাস্কের খুচরা এবং পাইকারি বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে একই কথা জানা যায়। বর্তমানে তাদের মাস্ক বিক্রির পরিমাণ কমে গেছে। মানুষের মাস্কের ব্যবহার কমে যাওয়াই এর মূল কারণ। রাজধানীর সড়কগুলোতে সরেজমিনে দেখা যায়, করোনার প্রকোপ না কমলেও কমেছে মানুষের মাস্কের ব্যবহার। সরগম স্থানগুলোতে মাস্কের ব্যবহারে অনিহা দেখা গিয়েছে লোকজনের মাঝে।
মাস্কবিহীন ঘুরে বেড়ানো মাসুম নামের এক পথচারীকে বিনা মাস্কে বের হওয়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘মাস্ক পরতে অস্বস্তি লাগে।’ করোনার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমার আশপাশে কারো করোনা হয়নি। আর করোনা ধরলে, মাস্ক পরলেও ধরবে।’
রানা নামের আরেকজন লেগুনাচালককে মাস্ক না পরার কারণ জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, ‘আমি একজনেরও দেখিনি করোনায় মারা গেছেন। তবে শুনেছি নিজের পারসোনাল গাড়ি চালায় এমন একজন মারা গেছেন। আমি যেসব খাওয়া দাওয়া করি, ইনশাল্লাহ আমার করোনা হবে না।’
এত কিছুর মাঝেও ব্যতিক্রম সুর শোনা গিয়েছে বাসে করে ১০ টাকায় ৫টি মাস্ক বিক্রি করা মোহাম্মদ আজিজের মুখে। আগে দিনে ২ হাজার ৫০০ টাকার মাস্ক বিক্রি করলেও এখন বিক্রি করেন ৫০০ টাকার। তাতেও কোনও আক্ষেপ নেই একেক সময় একেক পণ্য বিক্রি করা এই বিক্রেতার মাঝে। বরং তার প্রত্যাশা সবাই সুস্থ হয়ে উঠুক, কারো যেন আর মাস্ক পরতে না হয়।

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

বাংলাদেশ-মালয়েশিয়া অংশীদারিত্ব আরো গভীর করার অঙ্গীকার

স্বাস্থ্যবিধি উধাও, মাস্ক ব্যবহারে অনীহা

আপডেট সময় : ০৮:৫০:১৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২১

বিশেষ প্রতিনিধি : রাজধানী ঢাকায় স্বাস্থ্যবিধি উধাওপ্রায়। সামাজিক দূরত্ব দূরে থাক, বাইরে বাধ্যতামূলক মাস্ক ব্যবহারও করছেননা শতকরা প্রায় ৮০ থেকে ৯০ ভাগ মানুষ। গণপরিবহন এবং শপিংমলগুলোতে মাস্ক পরা মানুষের সংখ্যা কিছুটা বেশি। তাছাড়া বাজারঘাট থেকে শুরু সর্বত্র প্রচ- অনীহা দেখা যাচ্ছে মাস্ক ব্যবহারে। এদিকে সামাজিক দূরত্ব এবং হাঁচি কাশির সংযম মেনে চলার কোনো বালাই দেখা যাচ্ছেনা অধিকাংশক্ষেত্রেই। এসব নিয়ে প্রশ্ন করা হলে অনেকেই বলছেন, করোনা শেষ!
গতকাল শুক্রবার সরেজমিনে কয়েকটি এলাকা দেখার পর একটি সংবাদসংস্থা এক প্রতিবেদনেও এসব তথ্য তুলে ধরেছে।
‘করোনা শেষ তাই মাস্কের ব্যবহারও শেষ’, অনেকটা ঠাট্টার সুরেই কথাটি বললেন খুচরা মাস্ক বিক্রেতা হেলাল মিয়া। গত দেড় বছর ধরে তিনি পথের ধারে মাস্ক বিক্রি করছেন। করোনার শুরুতে তার মাস্কের বিক্রি যতটা ছিল তা এখন চার ভাগের এক ভাগে নেমে এসেছে বলে তিনি জানান। বিক্রি কমে যাওয়ার কারণ জিজ্ঞাস করলে হেলাল মিয়া উত্তর দেন, ‘মানুষ এখন আর মাস্ক পরে না, তাই কেউ কিনে না। বিক্রিও হয় না।’
দুলাল হোসেন, আগে কম্পিউটার ফটোকপির দোকানে কাজ করতেন। করোনাতে স্কুল কলেজ বন্ধ হয়ে যাওয়াই গুলিস্তানের মোড়ে মাস্ক, হ্যান্ড স্যানিটাইজারসহ করোনা সুরক্ষা সরঞ্জামাদির দোকান নিয়ে বসেছেন। খুচরা পাইকারি দুইভাবেই বিক্রি করেন। তিনি জানান, আগে ৭-৮ হাজার টাকার মাল বিক্রি হলেও এখন দুই হাজারও হয় না। বিক্রি অনেক কমে গেছে। বিক্রি কমে যাওয়ার কারণ জিজ্ঞাস করলে তিনি বলেন, ‘মানুষজন এখন বাধ্য হয়ে মাস্ক পরে। অফিসে ঢোকার ক্ষেত্রে বাধ্যবাধকতা থাকে বলেই মাস্ক ব্যবহার করে। অনেকে আবার সামাজিকতা রক্ষা করতে মাস্ক পরে। এমনিতে সচেতনার জন্য কেউ মাস্ক পরে না।’
রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায় মাস্কের খুচরা এবং পাইকারি বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে একই কথা জানা যায়। বর্তমানে তাদের মাস্ক বিক্রির পরিমাণ কমে গেছে। মানুষের মাস্কের ব্যবহার কমে যাওয়াই এর মূল কারণ। রাজধানীর সড়কগুলোতে সরেজমিনে দেখা যায়, করোনার প্রকোপ না কমলেও কমেছে মানুষের মাস্কের ব্যবহার। সরগম স্থানগুলোতে মাস্কের ব্যবহারে অনিহা দেখা গিয়েছে লোকজনের মাঝে।
মাস্কবিহীন ঘুরে বেড়ানো মাসুম নামের এক পথচারীকে বিনা মাস্কে বের হওয়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘মাস্ক পরতে অস্বস্তি লাগে।’ করোনার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমার আশপাশে কারো করোনা হয়নি। আর করোনা ধরলে, মাস্ক পরলেও ধরবে।’
রানা নামের আরেকজন লেগুনাচালককে মাস্ক না পরার কারণ জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, ‘আমি একজনেরও দেখিনি করোনায় মারা গেছেন। তবে শুনেছি নিজের পারসোনাল গাড়ি চালায় এমন একজন মারা গেছেন। আমি যেসব খাওয়া দাওয়া করি, ইনশাল্লাহ আমার করোনা হবে না।’
এত কিছুর মাঝেও ব্যতিক্রম সুর শোনা গিয়েছে বাসে করে ১০ টাকায় ৫টি মাস্ক বিক্রি করা মোহাম্মদ আজিজের মুখে। আগে দিনে ২ হাজার ৫০০ টাকার মাস্ক বিক্রি করলেও এখন বিক্রি করেন ৫০০ টাকার। তাতেও কোনও আক্ষেপ নেই একেক সময় একেক পণ্য বিক্রি করা এই বিক্রেতার মাঝে। বরং তার প্রত্যাশা সবাই সুস্থ হয়ে উঠুক, কারো যেন আর মাস্ক পরতে না হয়।