নিজস্ব প্রতিবেদক: সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক পদে ৬ হাজার ৫৩১ জনের নিয়োগ বাতিল করে হাই কোর্টের দেওয়া রায় আপিল বিভাগ স্থগিত করায় উচ্ছ্বসিত প্রার্থীরা আন্দোলন প্রত্যাহার করে যোগদান করতে নিজ নিজ জেলায় ফিরে যাচ্ছেন।
ওই ৬ হাজার ৫৩১ জনের নিয়োগ কার্যক্রম বাতিল করে হাই কোর্টের দেওয়া রায় সোমবার (৩ মার্চ) দুপুরে স্থগিত করে আপিল বিভাগ। সেই সঙ্গে প্রার্থীদের এক মাসের মধ্যে যোগদান করাতে বলা হয়।
ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলার প্রার্থী তালুকদার পিয়াস রায় ঘোষণার পর সংবাদমাধ্যমকে বলেন, রায়ে আমরা খুব খুশি। আমাদের নিয়োগ দেওয়ার দাবি যে ন্যায়সঙ্গত ছিল তা আবারো প্রমাণিত হয়েছে।
আর আন্দোলন নয়। আমরা আন্দোলন প্রত্যাহার করে বাড়ি ফিরে যাচ্ছি। কিছুক্ষণের মধ্যে সংবাদ সম্মেলন করে আন্দোলন প্রত্যাহারের ঘোষণা দেব।
দুঃসময়ে ৬ হাজার ৫৩১ জন প্রার্থীর পাশে থাকায় সংবাদিকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান ফাহাদ নামের তাদের একজন। তিনি বলেন, আমরা ৬ হাজার ৫৩১জন সুপারিশপ্রাপ্ত শিক্ষক সব মিডিয়া ভাইদের প্রতি সারাজীবন চিরকৃতজ্ঞ থাকব, আপনারা সর্বপ্রথম আমাদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন।
আপনাদের উপকারের কথা ৬ হাজার ৫৩১ জন সুপারিশপ্রাপ্ত শিক্ষক কখনো ভুলবে না। মন থেকে দোয়া করি আপনাদের ও আপনাদের পরিবারকে আল্লাহ যেন সবসময় সুস্থ রাখে এবং নেক হায়াত দান করে। এ বিজয়ে আপনাদের ভূমিকা অনেক বেশি, স্যালুট সব মিডিয়া ভাইয়াদের।
গত ৩১ অক্টোবর তিন পার্বত্য জেলা ছাড়া ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগের জন্য ৬ হাজার ৫৩১ জন প্রার্থীকে নির্বাচিত করে তৃতীয় ধাপের চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করা হয়। ২০২৩ সালের ১৪ জুন এ নিয়োগে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছিল।
গত ৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক পদে কোটায় নির্বাচিত হওয়া ৬ হাজার ৫৩১ জনের ফল বাতিল করে হাই কোর্ট। আদালত মেধার ভিত্তিতে নতুন করে ফল প্রকাশের আদেশও দেয়। সেদিন রাত থেকেই আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন নিয়োগ বাতিল হওয়া প্রার্থীরা।
৩০ চাকরিপ্রার্থীর করা এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি শেষে গত ১৯ নভেম্বর হাই কোর্ট বেঞ্চ এ নিয়োগ প্রক্রিয়া ছয় মাসের জন্য স্থগিত করে রুলসহ আদেশ দেয়। তাতে ৬ হাজার ৫৩১ জন উত্তীর্ণ প্রার্থীর নিয়োগ আটকে যায়। এরপর গত ৬ ফেব্রুয়ারি সেই রুলের ওপর রায় দেয় হাই কোর্ট, যাতে ওই প্রার্থীদের নিয়োগ কার্যক্রম বাতিলের সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়।
নিয়োগ বাতিলের রায় ঘোষণার পরদিন গত ৭ ফেব্রুয়ারি দুপুরে প্রার্থীরা নিয়োগ নিশ্চিতের দাবিতে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের দিকে পদযাত্রা করলে পুলিশ লাঠিপেটা করে এবং জলকামান প্রয়োগ করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
পরে তারা একাধিকবার শাহবাগ মোড় অবরোধ করলে একইভাবে তাদের সড়িয়ে দেওয়া হয়। তারা নিয়োগ নিশ্চিতের দাবিতে শাহবাগের জাতীয় জাদুঘরের সামনে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি পালন করছিলেন।