ঢাকা ০৮:৪২ অপরাহ্ন, সোমবার, ০৩ মার্চ ২০২৫

ট্রাম্প-জেলেনস্কি বিবাদের পর যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে ইউক্রেনের পক্ষে বিক্ষোভ

  • আপডেট সময় : ০৮:৩৮:১৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ২ মার্চ ২০২৫
  • ১৩ বার পড়া হয়েছে

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স যে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির ওপর নাখোশ, ছবিই বলছে তা। ছবি: রয়টার্স

প্রত্যাশা ডেস্ক: হোয়াইট হাউজে ইউক্রেইনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্সের উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ের পর যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন অঞ্চলে ইউক্রেনের সমর্থনে বিক্ষোভ দেখা গেছে।

সাংবাদিকদের সামনে ওভাল অফিসে গত শুক্রবারের ওই বাকবিতণ্ডার পর যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্ক, লস এঞ্জেলেস ও বোস্টনে ইউক্রেইনের সমর্থনে হওয়া বিক্ষোভে শত শত মানুষ অংশ নিয়েছে বলে জানিয়েছে বিবিসি।

ভারমন্টের ওয়েটসফিল্ডের একটি সড়কের পাশে থাকা বিক্ষোভকারীদের হাতে দেখা গেছে ইউক্রেনের সমর্থনে লেখা নানান স্লোগান, প্রতীক, তাও এমন এক সময়ে যখন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স এই রাজ্যটিতে পরিবার নিয়ে ছুটি কাটাতে এসেছিলেন।

মার্কিন গণমাধ্যমগুলো জানায়, ভারমন্টে এই বিক্ষোভের কারণে ভ্যান্স ও তার পরিবারের সদস্যদের আগে থেকে নির্ধারিত স্কি রিসোর্ট থেকে অজ্ঞাত এক স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়।

হোয়াইট হাউজে জেলেনস্কির সঙ্গে ট্রাম্প ও ভ্যান্সের বৈঠকের আগেই ওয়েটসফিল্ডে এই বিক্ষোভের ডাক দেওয়া হয়েছিল, যদিও শনিবারের কর্মসূচিতে থাকা প্ল্যাকার্ড, ব্যানারে ওভাল অফিসের বৈঠকের বিষয়ই বেশি অগ্রাধিকার পেয়েছে।

আমার মনে হয় শুক্রবার হোয়াইট হাউজে যে কাণ্ড হয়েছে তা-ই আরও বেশি মানুষকে আজ বিক্ষোভে টেনে এনেছে, ভারমন্ট পাবলিক রেডিওকে বলেছেন বিক্ষোভ আয়োজন করা ইন্ডিভিজিবল ম্যাড রিভার ভ্যালির জুডি ডেলি। ভ্যান্সই সীমা অতিক্রম করেছিলেন, বলেন বিক্ষোভকারী কোরি গিরক্স।

এদিকে ভ্যান্স পরিবারের সফরের আগে ভারমন্টের রিপাবলিকান গভর্নর ফিল স্কট অতিথিদের প্রতি ‘শ্রদ্ধাশীল থাকতে’ রাজ্যের বাসিন্দাদের আহ্বান জানিয়েছিলেন। অবশ্য কেবল ইউক্রেইনের সমর্থনেই নয়, ট্রাম্প-ভ্যান্সের পক্ষেও ওয়েটসফিল্ডে পাল্টা কর্মসূচি হয়েছে।

এদিকে সরকারি ব্যয় কমাতে ধনকুবের ইলন মাস্ক প্রশাসনজুড়ে যে হুলুস্থুল লাগিয়ে দিয়েছেন, তার প্রতিক্রিয়ায় শনিবার যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে টেসলার দোকানের সামনেও বিক্ষোভ হয়েছে।

টেসলার প্রধান নির্বাহী, ধনকুবের মাস্ক এখন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের অনুরোধে ব্যয় কমাতে খোলা সরকারি দক্ষতা বিভাগ তদারকি করছেন। তার এই ডিপার্টমেন্ট অব গভর্নমেন্ট এফিশিয়েন্সিকে সংক্ষেপে ডিওজিই ডাকা হয়।

এর আগের দিন শুক্রবার ওভাল অফিস এক নজিরবিহীন কাণ্ডের সাক্ষী হয়, ট্রাম্প ও জেলেনস্কির তীব্র বাকবিতণ্ডার। যুদ্ধ বন্ধে জেলেনস্কি রাশিয়ার সঙ্গে কোনো চুক্তি না করলে যুক্তরাষ্ট্র সহায়তা বন্ধ করে দেবে- ট্রাম্পের কাছ থেকে এমন সুস্পষ্ট বার্তা পান ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট।

বিবাদের এক পর্যায়ে জেলেনস্কিকে উদ্দেশ্য করে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, রাশিয়ার আগ্রাসনের পর যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেইনকে যে বিপুল পরিমাণ সামরিক ও রাজনৈতিক সহায়তা দিয়েছে তার জন্য ইউক্রেইনের প্রেসিডেন্ট যথেষ্ট কৃতজ্ঞ নন এবং তিনি (জেলেনস্কি) ‘তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু নিয়ে জুয়া খেলছেন’।

ভ্যান্সও পরে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে অসম্মানজনক আচরণ ও মিডিয়ার সামনে ‘বিতর্ক’ সৃষ্টির অভিযোগ আনেন। এই উত্তপ্ত বৈঠকের পর ইউরোপের অনেক নেতাই কিইভের পক্ষে তাদের দৃঢ় সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছেন। রোববার যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টারমার তার দেশে ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে একটি শীর্ষ সম্মেলনও করতে যাচ্ছেন। এই সম্মেলনে অংশ নিতে জেলেনস্কি এরই মধ্যে লন্ডন পৌঁছেছেন।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

ট্রাম্প-জেলেনস্কি বিবাদের পর যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে ইউক্রেনের পক্ষে বিক্ষোভ

আপডেট সময় : ০৮:৩৮:১৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ২ মার্চ ২০২৫

প্রত্যাশা ডেস্ক: হোয়াইট হাউজে ইউক্রেইনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্সের উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ের পর যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন অঞ্চলে ইউক্রেনের সমর্থনে বিক্ষোভ দেখা গেছে।

সাংবাদিকদের সামনে ওভাল অফিসে গত শুক্রবারের ওই বাকবিতণ্ডার পর যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্ক, লস এঞ্জেলেস ও বোস্টনে ইউক্রেইনের সমর্থনে হওয়া বিক্ষোভে শত শত মানুষ অংশ নিয়েছে বলে জানিয়েছে বিবিসি।

ভারমন্টের ওয়েটসফিল্ডের একটি সড়কের পাশে থাকা বিক্ষোভকারীদের হাতে দেখা গেছে ইউক্রেনের সমর্থনে লেখা নানান স্লোগান, প্রতীক, তাও এমন এক সময়ে যখন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স এই রাজ্যটিতে পরিবার নিয়ে ছুটি কাটাতে এসেছিলেন।

মার্কিন গণমাধ্যমগুলো জানায়, ভারমন্টে এই বিক্ষোভের কারণে ভ্যান্স ও তার পরিবারের সদস্যদের আগে থেকে নির্ধারিত স্কি রিসোর্ট থেকে অজ্ঞাত এক স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়।

হোয়াইট হাউজে জেলেনস্কির সঙ্গে ট্রাম্প ও ভ্যান্সের বৈঠকের আগেই ওয়েটসফিল্ডে এই বিক্ষোভের ডাক দেওয়া হয়েছিল, যদিও শনিবারের কর্মসূচিতে থাকা প্ল্যাকার্ড, ব্যানারে ওভাল অফিসের বৈঠকের বিষয়ই বেশি অগ্রাধিকার পেয়েছে।

আমার মনে হয় শুক্রবার হোয়াইট হাউজে যে কাণ্ড হয়েছে তা-ই আরও বেশি মানুষকে আজ বিক্ষোভে টেনে এনেছে, ভারমন্ট পাবলিক রেডিওকে বলেছেন বিক্ষোভ আয়োজন করা ইন্ডিভিজিবল ম্যাড রিভার ভ্যালির জুডি ডেলি। ভ্যান্সই সীমা অতিক্রম করেছিলেন, বলেন বিক্ষোভকারী কোরি গিরক্স।

এদিকে ভ্যান্স পরিবারের সফরের আগে ভারমন্টের রিপাবলিকান গভর্নর ফিল স্কট অতিথিদের প্রতি ‘শ্রদ্ধাশীল থাকতে’ রাজ্যের বাসিন্দাদের আহ্বান জানিয়েছিলেন। অবশ্য কেবল ইউক্রেইনের সমর্থনেই নয়, ট্রাম্প-ভ্যান্সের পক্ষেও ওয়েটসফিল্ডে পাল্টা কর্মসূচি হয়েছে।

এদিকে সরকারি ব্যয় কমাতে ধনকুবের ইলন মাস্ক প্রশাসনজুড়ে যে হুলুস্থুল লাগিয়ে দিয়েছেন, তার প্রতিক্রিয়ায় শনিবার যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে টেসলার দোকানের সামনেও বিক্ষোভ হয়েছে।

টেসলার প্রধান নির্বাহী, ধনকুবের মাস্ক এখন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের অনুরোধে ব্যয় কমাতে খোলা সরকারি দক্ষতা বিভাগ তদারকি করছেন। তার এই ডিপার্টমেন্ট অব গভর্নমেন্ট এফিশিয়েন্সিকে সংক্ষেপে ডিওজিই ডাকা হয়।

এর আগের দিন শুক্রবার ওভাল অফিস এক নজিরবিহীন কাণ্ডের সাক্ষী হয়, ট্রাম্প ও জেলেনস্কির তীব্র বাকবিতণ্ডার। যুদ্ধ বন্ধে জেলেনস্কি রাশিয়ার সঙ্গে কোনো চুক্তি না করলে যুক্তরাষ্ট্র সহায়তা বন্ধ করে দেবে- ট্রাম্পের কাছ থেকে এমন সুস্পষ্ট বার্তা পান ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট।

বিবাদের এক পর্যায়ে জেলেনস্কিকে উদ্দেশ্য করে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, রাশিয়ার আগ্রাসনের পর যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেইনকে যে বিপুল পরিমাণ সামরিক ও রাজনৈতিক সহায়তা দিয়েছে তার জন্য ইউক্রেইনের প্রেসিডেন্ট যথেষ্ট কৃতজ্ঞ নন এবং তিনি (জেলেনস্কি) ‘তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু নিয়ে জুয়া খেলছেন’।

ভ্যান্সও পরে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে অসম্মানজনক আচরণ ও মিডিয়ার সামনে ‘বিতর্ক’ সৃষ্টির অভিযোগ আনেন। এই উত্তপ্ত বৈঠকের পর ইউরোপের অনেক নেতাই কিইভের পক্ষে তাদের দৃঢ় সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছেন। রোববার যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টারমার তার দেশে ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে একটি শীর্ষ সম্মেলনও করতে যাচ্ছেন। এই সম্মেলনে অংশ নিতে জেলেনস্কি এরই মধ্যে লন্ডন পৌঁছেছেন।