ঢাকা ০২:৪৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৪ মার্চ ২০২৫

আপিল করে সুখবর পেলেন মরিনিয়ো

  • আপডেট সময় : ০৭:২৫:০৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ২ মার্চ ২০২৫
  • ১২ বার পড়া হয়েছে

ক্রীড়া ডেস্ক: তুরস্কের ফুটবলে এখন প্রতিদিনই যেন খবরের শিরোনামে জোসে মরিনিয়ো। এবারের খবরটি অবশ্য তার জন্য স্বস্তির পরশ বয়ে এনেছে। আপিল করার পর শাস্তি কমে অর্ধেক হয়েছে ফেনারবাচের কোচের। মরিনিয়োর চার ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা কমিয়ে আনা হয়েছে দুই ম্যাচে। পাশাপাশি উল্লেখযোগ্য হারে কমানো হয়েছে জরিমানার আর্থিক অঙ্কও। ১৬ লাখ ১৭ হাজার লিরা (প্রায় ৪৪ হাজার মার্কিন ডলার) জরিমানা করা হয়েছিল তাকে। সেটা কমিয়ে এখন করা হয়েছে ৫ লাখ ৫৮ হাজার ৫০০ লিরা। গত সোমবার গালাতাসারাইয়ের বিপক্ষে ০-০ ড্র ম্যাচের পর মরিনিয়োর মন্তব্যের জের ধরে বৃহস্পতিবার তাকে এই শান্তি দিয়েছিল তুরস্কের ফুটবল ফেডারেশন।

শাস্তি ঘোষণার সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ফেডারেশন উল্লেখ করেছিল, তুর্কি রেফারির প্রতি ‘অপমানজনক ও আক্রমণাত্মক’ মন্তব্যের জন্য এই শাস্তি দেওয়া হয়েছে। মরিনিয়োর মন্তব্য খেলাধুলার নৈতিকতা ভঙ্গ করেছে, সহিংসতা ও বিশৃঙ্খলা উসকে দিয়েছে এবং সমর্থকদের উত্তেজিত করে তুলতে পারে বলে মনে করে ফেডারেশন। ওই ম্যাচের পর মরিনিয়োর মন্তব্য ঘিরে তোলপাড় চলছে তুরস্কের ফুটবলে। অভিযোগ, পাল্টা অভিযোগ, মামলা, পাল্টা মামলা ঘিরে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দুই ক্লাব এখন যুদ্ধংদেহী অবস্থায় মুখোমুখি। দুই ক্লাবের অনুরোধে ম্যাচটিতে বিদেশি রেফারি আনা হয়। ম্যাচটি পরিচালনা করেন স্লোভেনিয়ার রেফারি স্লাভকো ভিনচিচ। ম্যাচের পর সংবাদ সম্মেলনে মরিনিয়ো বলেন, রেফারিদের কক্ষে গিয়ে তিনি তাদের সঙ্গে দেখা করে এসেছেন। “ম্যাচ শেষে রেফারিদের ড্রেসিং রুমে গিয়েছিলাম আমি। চতুর্থ রেফারিও সেখানে ছিল, যিনি তুরস্কের রেফারি। মূল রেফারিকে (ভিনচিচ) আমি বলেছি, ‘এখানে আসার জন্য ধন্যবাদ।

কারণ বড় একটি ম্যাচে আপনি এসেছেন এবং দায়িত্ব পালন করেছেন।’ এরপর চতুর্থ রেফারির দিকে ঘুরে বলেছি, ‘এই ম্যাচে আপনি রেফারি থাকলে বিপর্যয় হয়ে যেত।’ তাকে যখন এটা বলেছি, আমি আসলে (তুরস্কের) সবাইকেই বুঝিয়েছি, তাদের সহজাত প্রবণতা।” ম্যাচের শুরুর দিকে ফেনারবাচের ১৯ বছর বয়সী ডিফেন্ডার ইউসুফ আকচিচেকের একটি চ্যালেঞ্জ নিয়ে বেশ উত্তেজনা ছড়িয়েছিল। গালাতাসারাইয়ের ডাগআউটের ফুটবলারদের বেশ উত্তেজিত দেখা গিয়েছিল তখন। সেই ঘটনায় আকচিচেককে হলুদ কার্ড না দেখানোয় রেফারি ভিনচিচের প্রশংসা করেন মরিনিয়ো।

“এই ঘটনায় রেফারিকে ধন্যবাদ জানিয়েছি আমি। কারণ, এখানে যদি তুরস্কের কোনো রেফারি থাকত, প্রথম মিনিটেই ওদের এক ফুটবলার যেভাবে ডাইভ দিয়েছে, ওদের বেঞ্চের ফুটবলাররা বাচ্চা ছেলেটির (আকচিচেক) ওপর যেভাবে বানরের মতো লাফালাফি করছিৃ তুর্কি রেফারি থাকলে এসব দেখেই হলুদ কার্ড দিয়ে দিত এক মিনিটেই এবং পাঁচ মিনিট পর তার বদলি কাউকে নামাতে হতো আমাকে।” মরিনিয়োর এসব মন্তব্যের পর সামাজিক মাধ্যমে কড়া প্রতিক্রিয়া জানায় গালাতাসারাই। বর্ণবাদী মন্তব্যের দায়ে ৬২ বছর বয়সী পর্তুগিজ এই কোচের বিরুদ্ধে ফৌজদারি কার্যক্রম শুরুর ঘোষণা দেয় ক্লাবটি। পরে তারা সত্যিই মামলা দায়ের করে। ফেনারবাচে শুরু থেকেই ছিল কোচের পাশে। তারা বিবৃতিতে বলেছিল, মরিনিয়োর মন্তব্যকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করা হয়েছে এবং বিকৃত করা হয়েছে। তারাও পাল্টা ঘোষণায় জানায়, ভিত্তিহীন অভিযোগেরর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পরে তারা ঠিকই মামলা করে। ‘ব্যক্তিগত অধিকারের ওপর আঘাত’ করায় গালাতাসারাই ক্লাবের বিরুদ্ধে ১৯ লাখ ৭ হাজার লিরা “নৈতিক ক্ষতিপূরণের’ মামলা করা হয়। ফেনারবাচে ক্লাব প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ১৯০৭ সালে এবং তাদের প্রতীকে এটা আছে। টাকার অঙ্কটাও সেটির সঙ্গে মিল রেখেই নির্ধারণ করা হয়। তুরস্কের রেফারিদের নিয়ে আপত্তিজনক মন্তব্যের দায়ে আগেও এক দফায় জরিমানা করার পাশাপাশি নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছিল মরিনিয়োকে।

 

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

আপিল করে সুখবর পেলেন মরিনিয়ো

আপডেট সময় : ০৭:২৫:০৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ২ মার্চ ২০২৫

ক্রীড়া ডেস্ক: তুরস্কের ফুটবলে এখন প্রতিদিনই যেন খবরের শিরোনামে জোসে মরিনিয়ো। এবারের খবরটি অবশ্য তার জন্য স্বস্তির পরশ বয়ে এনেছে। আপিল করার পর শাস্তি কমে অর্ধেক হয়েছে ফেনারবাচের কোচের। মরিনিয়োর চার ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা কমিয়ে আনা হয়েছে দুই ম্যাচে। পাশাপাশি উল্লেখযোগ্য হারে কমানো হয়েছে জরিমানার আর্থিক অঙ্কও। ১৬ লাখ ১৭ হাজার লিরা (প্রায় ৪৪ হাজার মার্কিন ডলার) জরিমানা করা হয়েছিল তাকে। সেটা কমিয়ে এখন করা হয়েছে ৫ লাখ ৫৮ হাজার ৫০০ লিরা। গত সোমবার গালাতাসারাইয়ের বিপক্ষে ০-০ ড্র ম্যাচের পর মরিনিয়োর মন্তব্যের জের ধরে বৃহস্পতিবার তাকে এই শান্তি দিয়েছিল তুরস্কের ফুটবল ফেডারেশন।

শাস্তি ঘোষণার সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ফেডারেশন উল্লেখ করেছিল, তুর্কি রেফারির প্রতি ‘অপমানজনক ও আক্রমণাত্মক’ মন্তব্যের জন্য এই শাস্তি দেওয়া হয়েছে। মরিনিয়োর মন্তব্য খেলাধুলার নৈতিকতা ভঙ্গ করেছে, সহিংসতা ও বিশৃঙ্খলা উসকে দিয়েছে এবং সমর্থকদের উত্তেজিত করে তুলতে পারে বলে মনে করে ফেডারেশন। ওই ম্যাচের পর মরিনিয়োর মন্তব্য ঘিরে তোলপাড় চলছে তুরস্কের ফুটবলে। অভিযোগ, পাল্টা অভিযোগ, মামলা, পাল্টা মামলা ঘিরে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দুই ক্লাব এখন যুদ্ধংদেহী অবস্থায় মুখোমুখি। দুই ক্লাবের অনুরোধে ম্যাচটিতে বিদেশি রেফারি আনা হয়। ম্যাচটি পরিচালনা করেন স্লোভেনিয়ার রেফারি স্লাভকো ভিনচিচ। ম্যাচের পর সংবাদ সম্মেলনে মরিনিয়ো বলেন, রেফারিদের কক্ষে গিয়ে তিনি তাদের সঙ্গে দেখা করে এসেছেন। “ম্যাচ শেষে রেফারিদের ড্রেসিং রুমে গিয়েছিলাম আমি। চতুর্থ রেফারিও সেখানে ছিল, যিনি তুরস্কের রেফারি। মূল রেফারিকে (ভিনচিচ) আমি বলেছি, ‘এখানে আসার জন্য ধন্যবাদ।

কারণ বড় একটি ম্যাচে আপনি এসেছেন এবং দায়িত্ব পালন করেছেন।’ এরপর চতুর্থ রেফারির দিকে ঘুরে বলেছি, ‘এই ম্যাচে আপনি রেফারি থাকলে বিপর্যয় হয়ে যেত।’ তাকে যখন এটা বলেছি, আমি আসলে (তুরস্কের) সবাইকেই বুঝিয়েছি, তাদের সহজাত প্রবণতা।” ম্যাচের শুরুর দিকে ফেনারবাচের ১৯ বছর বয়সী ডিফেন্ডার ইউসুফ আকচিচেকের একটি চ্যালেঞ্জ নিয়ে বেশ উত্তেজনা ছড়িয়েছিল। গালাতাসারাইয়ের ডাগআউটের ফুটবলারদের বেশ উত্তেজিত দেখা গিয়েছিল তখন। সেই ঘটনায় আকচিচেককে হলুদ কার্ড না দেখানোয় রেফারি ভিনচিচের প্রশংসা করেন মরিনিয়ো।

“এই ঘটনায় রেফারিকে ধন্যবাদ জানিয়েছি আমি। কারণ, এখানে যদি তুরস্কের কোনো রেফারি থাকত, প্রথম মিনিটেই ওদের এক ফুটবলার যেভাবে ডাইভ দিয়েছে, ওদের বেঞ্চের ফুটবলাররা বাচ্চা ছেলেটির (আকচিচেক) ওপর যেভাবে বানরের মতো লাফালাফি করছিৃ তুর্কি রেফারি থাকলে এসব দেখেই হলুদ কার্ড দিয়ে দিত এক মিনিটেই এবং পাঁচ মিনিট পর তার বদলি কাউকে নামাতে হতো আমাকে।” মরিনিয়োর এসব মন্তব্যের পর সামাজিক মাধ্যমে কড়া প্রতিক্রিয়া জানায় গালাতাসারাই। বর্ণবাদী মন্তব্যের দায়ে ৬২ বছর বয়সী পর্তুগিজ এই কোচের বিরুদ্ধে ফৌজদারি কার্যক্রম শুরুর ঘোষণা দেয় ক্লাবটি। পরে তারা সত্যিই মামলা দায়ের করে। ফেনারবাচে শুরু থেকেই ছিল কোচের পাশে। তারা বিবৃতিতে বলেছিল, মরিনিয়োর মন্তব্যকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করা হয়েছে এবং বিকৃত করা হয়েছে। তারাও পাল্টা ঘোষণায় জানায়, ভিত্তিহীন অভিযোগেরর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পরে তারা ঠিকই মামলা করে। ‘ব্যক্তিগত অধিকারের ওপর আঘাত’ করায় গালাতাসারাই ক্লাবের বিরুদ্ধে ১৯ লাখ ৭ হাজার লিরা “নৈতিক ক্ষতিপূরণের’ মামলা করা হয়। ফেনারবাচে ক্লাব প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ১৯০৭ সালে এবং তাদের প্রতীকে এটা আছে। টাকার অঙ্কটাও সেটির সঙ্গে মিল রেখেই নির্ধারণ করা হয়। তুরস্কের রেফারিদের নিয়ে আপত্তিজনক মন্তব্যের দায়ে আগেও এক দফায় জরিমানা করার পাশাপাশি নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছিল মরিনিয়োকে।