নিজস্ব প্রতিবেদক: দেড় যুগ আগে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে চাকরিচ্যুত ৮৫ জন উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাকে চাকরি ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে আপিল বিভাগ।
চাকরিতে বহাল করে তাদের সব সুযোগ-সুবিধা দিতে বলা হয়েছে; এই ৮৫ জনের মধ্যে ইতোমধ্যে মারা যাওয়া তিন কর্মকর্তার পরিবারকে আইন অনুযায়ী প্রাপ্য সব সুবিধা দিতে বলা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করে।
আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী প্রবীর নিয়োগী, সালাউদ্দিন দোলন, রুহুল কুদ্দুস কাজল। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল অনীক আর হক।
গত ২০ ফেব্রুয়ারি আপিল পুনর্বিবেচনার আবেদন শুনানি শেষে রায় ঘোষণার জন্য মঙ্গলবার দিন ঠিক করেছিল আপিল বিভাগ।
মামলার নথি অনুযায়ী যায়, ২০০৫ সালের ৩ সেপ্টেম্বর সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) মাধ্যমে ৩২০ জনকে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা হিসেবে অস্থায়ীভাবে নির্বাচিত করা হয়।
বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সময়ের এই নিয়োগ নিয়ে বিতর্ক উঠলে ২০০৭ সালের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ৩২০ জনের মূল্যায়ন পরীক্ষা নেওয়া হয়। তাদের মধ্যে ৮৫ জনকে একই বছরের ৩ সেপ্টেম্বর চাকরিচ্যুত করা হয়।
এর বিরুদ্ধে চাকরিচ্যুত প্রার্থীরা মামলা করলে ২০০৯ সালের ২৩ মার্চ তা খারিজ করে রায় দেয় প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনাল। এর বিরুদ্ধে তারা আপিল করেন। ২০১০ সালের ১২ এপ্রিল প্রশাসনিক আপিল ট্রাইব্যুনাল ৮৫ কর্মকর্তার আপিল মঞ্জুর করে চাকরিতে পুনর্বহালের পক্ষে রায় দেয়।
প্রশাসনিক আপিল ট্রাইব্যুনালের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ চারটি লিভ টু আপিল করে। সেই পরিপ্রেক্ষিতে আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত ২০১০ সালের ২৯ এপ্রিল আপিল ট্রাইব্যুনালের রায়ের কার্যকারিতা স্থগিত করে এবং বিষয়টি আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠায়।
এর ধারাবাহিকতায় ২০১১ সালে সরকার পৃথক আপিল করে। সরকারের করা আপিলগুলো মঞ্জুর করে ২০২২ সালের ১ সেপ্টেম্বর রায় দেয় আপিল বিভাগ। ওই রায়ে ৮৫ কর্মকর্তাকে চাকরিতে পুনর্বহালের আদেশ দিয়ে প্রশাসনিক আপিল ট্রাইব্যুনালের ২০১০ সালের ১২ এপ্রিল দেওয়া রায় বাতিল করা হয়।
আপিল বিভাগের ২০২২ সালের ১ সেপ্টেম্বর দেওয়া রায় পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে ২০২৩ সালে পৃথক পাঁচটি আবেদন করেন চাকরিচ্যুত ব্যক্তিরা। শুনানি নিয়ে একটি রিভিউ আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আপিল বিভাগ গত বছরের ৬ নভেম্বর তাদের আপিলের অনুমতি দেয়।
সেই সঙ্গে এই আপিলের (রিভিউ আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে উদ্ভূত) সারসংক্ষেপ চার সপ্তাহের মধ্যে দিতে আবেদনকারীপক্ষকে নির্দেশ দেওয়া হয়।
ওই আপিলের সঙ্গে অপর চারটি রিভিউ আবেদনও শুনানিতে রাখার কথা আদেশে বলা হয়। এর ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার রায় দেওয়া হলো।