নিজস্ব প্রতিবেদক: জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক এ এস এম আমানুল্লাহ বলেছেন, ‘জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে আমরা শিক্ষা দিচ্ছি কিন্তু কোয়ালিটি নেই। কোয়ালিটির নেই, কারণ কোনো মনিটরিং নেই, এখানে প্রশিক্ষিত শিক্ষক নেই। ৮-১০ হাজার টাকা বেতনে অনার্স পড়াচ্ছে। যত্রতত্র অনার্স-মাস্টার্স খুলে দিয়ে বসে আছে।’
মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
অধ্যাপক এ এস এম আমানুল্লাহ বলেন, ‘জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যবসায় শিক্ষায় ২০০ ছাত্রছাত্রীকে ২ জন শিক্ষক পড়াচ্ছেন, আর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ৩০ জন শিক্ষক। আপনি এখন থেকে আর কী আশা করতে পারেন। এখনও শিক্ষার্থীরা ঠিকে আছে, এখান থেকে প্রায় ৬০-৭০ শতাংশ চাকরি পাচ্ছে। সেটাই তো বেশি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আপনি তৃতীয় শ্রেণির প্রাথমিকের একজন শিক্ষক দিয়ে প্রথম শ্রেণির নাগরিক তৈরি করবেন, এটা তো হয় না। একজন শিক্ষক অর্নাস-মাস্টার্সে পড়াচ্ছেন কিন্তু আপনি তাকে এমপিও দিচ্ছেন না। যদি এমপিও না দেন, তাহলে তাকে কলেজে নিলেন কেন? হয়তো ১০-১৫ লাখ টাকা ঘুষ নিয়ে লোভ দেখিয়ে চাকরি দেওয়া হয়েছে। এখন এমপিও দিতে পারছেন না।’
উপাচার্য বলেন, ‘গতকাল ছেলে-মেয়েরা অটোপাসের জন্য এসেছিল। তারা বলছে, স্যার আমরা এক সাবজেক্ট ফেল করছি, আমাদের অটোপাস দিতে হবে। তখন আমি বললাম তোমরা কিছুদিন অপেক্ষা করো, গ্রেস দেওয়া যায় কিনা আমরা দেখবো। বলতে না বলতে দেখি সাদা কাগজের মতো পকেট থেকে কী বের করছে। বের করেই দেখি কাফনের কাপড় পরে আমার সামনে শুয়ে আছে।’
তিনি বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা খাতা পুনর্মূল্যায়ন ব্যবস্থা ছিল না। শুধু পুনর্নিরীক্ষণের ব্যবস্থা ছিল। পুনর্মূল্যায়নের ব্যবস্থা করার পরে দেখি ৫৪ শতাংশ শিক্ষার্থী নতুন করে পাশ করেছে। তাহলে শিক্ষকরা কীভাবে খাতা দেখলেন? সব কিছু একটা এলোমেলো অবস্থার মধ্যে আছে।
নতুন স্বাধীনতার কথা উল্লেখ করে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বলেন, ‘আমাদের ছেলেমেয়েরা নতুন স্বাধীনতা উপহার দিয়েছে। আমাদের ভিশন ও মিশন যদি এবারও ঠিক না করতে পারি তাহলে তো মুশকিল। আমরা আবার কবে ভিশন ও মিশন ঠিক করব, আমি জানি না।’