ঢাকা ০৩:৩৮ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

১৫ বছর ধরে ধুঁকছে পুঁজিবাজার,মার্জিন ঋণ ১৮ হাজার কোটি টাকা

  • আপডেট সময় : ০৮:৫৭:৫৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • ৬ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : পুঁজিবাজারে প্রতিদিনই লেনদেন তলানিতে চলে যাচ্ছে। দরপতনের কারণে পুঁজি হারিয়ে নিঃস্ব হচ্ছেন বিনিয়োগকারীরা। আর এর অন্যতম প্রধান কারণ হিসেবে মার্জিন ঋণ দায়ী বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। তাদের মতে, মার্জিন ঋণ পুঁজিবাজারের জন্য ক্যান্সারে পরিণত হয়েছে। একাধিক সময়ে পুঁজিবাজারের স্থিতিশীলতার জন্য নানা ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হলেও সুফল মিলছে না। প্রতিনিয়ত এই ঋণের বোঝা বাড়ছে।

প্রায় ১৮ হাজার কোটি টাকা মার্জিন ঋণে আটকে গেছে বলে মনে করছেন দেশের পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টরা। বিএসইসি সূত্রে জানা গেছে, ২০২৪ সালের ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই), চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) এবং মার্চেন্ট ব্যাংকে মোট মার্জিন ঋণ প্রায় ১৮ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে ডিএসইর ব্রোকারেজ হাউসগুলো মার্জিন ঋণ দিয়েছে ১১ হাজার ৫৪৫ কোটি টাকা, এরমধ্যে নেগেটিভ ইক্যুইটির প্রিন্সিপাল অ্যামাউন্ট (ঋণাত্মক ইক্যুইটির মূলধন) ৫ হাজার ১৪৪ কোটি টাকা এবং ইন্টারেস্ট (সুদ) ১ হাজার ১৯১ কোটি টাকা। এতে করে ডিএসইর মোট নেগেটিভ ইক্যুইটি হচ্ছে ৬ হাজার ৩৩৬ কোটি টাকা। এর বিপরীতে ডিএসই প্রোভিশন (নিরাপত্তা সঞ্চিতি) করে রেখেছে ১ হাজার ৪৫৮ কোটি টাকা। এদিকে সিএসইর মার্জিন ঋণ ৩৫ কোটি টাকা, এর মধ্যে ঋণাত্মক ইক্যুইটি ২৯ কোটি ৭৮ লাখ টাকা।

মূলধন ৮ কোটি ৬৪ লাখ টাকা এবং সুদ ২১ কোটি ১৪ লাখ টাকা। অন্যদিকে মার্চেন্ট ব্যাংকের সর্বমোট মার্জিন ঋণ ৬ হাজার ৫৪৭ কোটি টাকা, এদের মূল বিনিয়োগসহ সর্বমোট ঋণাত্মক ইক্যুইটি ৪ হাজার ১৫৯ কোটি টাকা। এই টাকার মধ্যে মূল বিনিয়োগ ২ হাজার ৭০৮ কোটি টাকা, ইন্টারেস্ট (সুদ) ১ হাজার ৪৫০ কোটি টাকা। একই সঙ্গে এদের প্রোভিশন (নিরাপত্তা সঞ্চিতি) করা আছে ১ হাজার ২৩৯ কোটি টাকা। সে হিসাবে পুঁজিবাজারে সবগুলো ঋণাত্মক ইক্যুইটি সাড়ে ১০ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। তবে ডিএসই ও মার্চেন্ট ব্যাংক ঋণাত্মক ইক্যুইটি রাইট আপ করার জন্য ২০৩০ সাল পর্যন্ত বিএসইসির কাছে সময় চেয়েছে। এই ঋণাত্মক ইক্যুইটির রিফাইন্যান্সের (পুনঃঅর্থায়ন) জন্য ডিএসই থেকে একটি আবেদন করা হয়েছে। যেটি ইতোমধ্যে বিএসইসির পক্ষ থেকে অর্থ মন্ত্রণালয়ে একটি প্রস্তাবনা দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিএসইসির এক কর্মকর্তা। তিনি বলেন, মার্জিন ঋণ প্রতিদিনই বাড়ছে, এটা আপডেট (হালনাগাদ) হচ্ছে। এটার ম্যানেজমেন্ট (ব্যবস্থাপনা) যদি ঠিক না হয়, তাহলে সমস্যাটা দীর্ঘস্থায়ী থাকবে। মার্জিন ঋণের অবস্থাটা এমন হয়ে দাঁড়িয়েছে খাচ্ছে দাচ্ছে কিন্তু মোটা হতে পারছে না। অনেকটা ক্যান্সারে পরিণত হয়েছে। বিএসইসির ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, বাজারে ঋণাত্মক ইক্যুইটি কেন তৈরি হলো, তার একটি কারণ মার্জিন বিধিমালা সঠিকভাবে প্রয়োগ হয়নি।

এটা প্রয়োগ করার প্রাথমিক দায়িত্ব ছিল স্টক এক্সচেঞ্জের এবং সেকেন্ডারি দায়িত্ব ছিল বিএসইসির। মার্জিন ঋণের যে বাধ্যবাধকতা ছিল, ২০১৩ সাল থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত সেটা প্রয়োগ করতে দেওয়া হয়নি। একটা নোটিফিকেশন (প্রজ্ঞাপন) আছে ৩ এর ৫ ধারায় মার্জিন কল করা, কিন্তু কমিশন মার্জিন কল করতে দেয়নি, মার্জিন কল করতে না দেওয়ায় এটা নিচে নেমে গেছে। মার্জিন ঋণ যখন ১.২৫ এর মধ্যে চলে আসছে তখন সেটা বেচা হয়নি, একই সঙ্গে মার্জিন কল করা হয়নি। সে সময় বিএসইসি থেকে মৌখিকভাবে ‘ফোর্সড সেল’ (জোরপূর্বক বিক্রি) নিষেধ করা হয়েছে। বিধিমালায় বলা হয়, মার্জিন ঋণ যখন ১.৫০ এ নামবে তখন বিনিয়োগকারীকে কল দেওয়া হবে, এরপর ১.২৫-এ নেমে গেলে শেয়ার বিক্রি করে দিতে হবে। অ্যাডজাস্টিং রোল বা বিধিমালা যেটা আছে, এটার সঠিক প্রয়োগ হলে একজন বিনিয়োগকারীর জিরো হওয়ার কোনো আশঙ্কা নেই। ইক্যুইটি ঋণাত্মক হওয়ার প্রশ্নই আসে না।

তবে গত দুই কমিশন মৌখিকভাবে ফোর্স সেল দিতে একাধিকবার নিষেধ করেছিল, যা আজ ক্যান্সারে পরিণত হয়েছে। মার্জিন ঋণ বিধিমালায় বলা আছে, যখনই কোনো গ্রাহকের মার্জিন অ্যাকাউন্টে ইক্যুইটি ডেবিট ব্যালেন্সের ১৫০ শতাংশের নিচে নেমে যায়, তখন গ্রাহককে ইক্যুইটি ১৫০ শতাংশের কম না করার জন্য অতিরিক্ত মার্জিন প্রদানের জন্য অনুরোধ করবেন। বিনিয়োগকারীকে নগদ বা মার্জিনেবল সিকিউরিটি জমা দিয়ে এই অতিরিক্ত মার্জিন পূরণ করতে হবে। কোনো ব্রোকারেজ হাউস গ্রাহকের মার্জিন অ্যাকাউন্টে ইক্যুইটি কোনোভাবেই ডেবিট ব্যালেন্সের ১২৫ শতাংশের নিচে নেমে যেতে দেবে না। একবার ইক্যুইটি এই স্তরের নিচে নেমে গেলে ক্লায়েন্টকে কোনো নোটিশ ছাড়াই ফোর্সড সেল করতে পারবে। বাংলাদেশ পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী সম্মিলিত পরিষদের সভাপতি আতাউল্লাহ নাঈম বলেন, মার্জিন ঋণ পুঁজিবাজার ও বিনিয়োগকারীদের জন্য বর্তমানে গলার কাঁটা হিসাবে পরিগণিত। বছরের পর বছর এই ইস্যুতে বাজার প্রায়শ অস্থির থাকে। এর কারণে ঋণ না নিয়ে যারা ক্যাশ অ্যাকাউন্টে (হিসাব) বিনিয়োগ করেন তারাই বলির পাঁঠা হন।

আতাউল্লাহ নাঈম আরও বলেন, অনেক ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত সম্পর্কের ভিত্তিতে আইনি সীমার বাইরে মার্জিন নেওয়ার কারণেও বাজারে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। সার্বিক দিক বিবেচনায় পুঁজিবাজারের ক্যান্সার, পুঁজিবাজারে থাকার বিষয়টা অবশ্যই প্রশ্নবিদ্ধ। গোষ্ঠীগত স্বার্থেই বর্তমানে মার্জিন ঋণ ইস্যু ব্যবহৃত হচ্ছে। যার দ্রুত অবসান হওয়া অবশ্যই প্রয়োজন। ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ডিবিএ) সভাপতি সাইফুল ইসলাম বলেন, মার্জিন ঋণ পুঁজিবাজারের জন্য ক্যান্সার ডিজিজ। এটা নিরাময় না হলে পুঁজিবাজার ঘুরে দাঁড়ানো মুশকিল। এটা রিমুভ করতে হলে সরকার থেকে প্রণোদনা লাগবে। পৃথিবীর কোথাও রেগুলেটর ফোর্সড সেল বন্ধ করতে পারে না। আমাদের এখানে হয়েছে। এর দায় বিএসইসিসহ উভয় পক্ষের বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

 

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

১৫ বছর ধরে ধুঁকছে পুঁজিবাজার,মার্জিন ঋণ ১৮ হাজার কোটি টাকা

আপডেট সময় : ০৮:৫৭:৫৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক : পুঁজিবাজারে প্রতিদিনই লেনদেন তলানিতে চলে যাচ্ছে। দরপতনের কারণে পুঁজি হারিয়ে নিঃস্ব হচ্ছেন বিনিয়োগকারীরা। আর এর অন্যতম প্রধান কারণ হিসেবে মার্জিন ঋণ দায়ী বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। তাদের মতে, মার্জিন ঋণ পুঁজিবাজারের জন্য ক্যান্সারে পরিণত হয়েছে। একাধিক সময়ে পুঁজিবাজারের স্থিতিশীলতার জন্য নানা ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হলেও সুফল মিলছে না। প্রতিনিয়ত এই ঋণের বোঝা বাড়ছে।

প্রায় ১৮ হাজার কোটি টাকা মার্জিন ঋণে আটকে গেছে বলে মনে করছেন দেশের পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টরা। বিএসইসি সূত্রে জানা গেছে, ২০২৪ সালের ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই), চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) এবং মার্চেন্ট ব্যাংকে মোট মার্জিন ঋণ প্রায় ১৮ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে ডিএসইর ব্রোকারেজ হাউসগুলো মার্জিন ঋণ দিয়েছে ১১ হাজার ৫৪৫ কোটি টাকা, এরমধ্যে নেগেটিভ ইক্যুইটির প্রিন্সিপাল অ্যামাউন্ট (ঋণাত্মক ইক্যুইটির মূলধন) ৫ হাজার ১৪৪ কোটি টাকা এবং ইন্টারেস্ট (সুদ) ১ হাজার ১৯১ কোটি টাকা। এতে করে ডিএসইর মোট নেগেটিভ ইক্যুইটি হচ্ছে ৬ হাজার ৩৩৬ কোটি টাকা। এর বিপরীতে ডিএসই প্রোভিশন (নিরাপত্তা সঞ্চিতি) করে রেখেছে ১ হাজার ৪৫৮ কোটি টাকা। এদিকে সিএসইর মার্জিন ঋণ ৩৫ কোটি টাকা, এর মধ্যে ঋণাত্মক ইক্যুইটি ২৯ কোটি ৭৮ লাখ টাকা।

মূলধন ৮ কোটি ৬৪ লাখ টাকা এবং সুদ ২১ কোটি ১৪ লাখ টাকা। অন্যদিকে মার্চেন্ট ব্যাংকের সর্বমোট মার্জিন ঋণ ৬ হাজার ৫৪৭ কোটি টাকা, এদের মূল বিনিয়োগসহ সর্বমোট ঋণাত্মক ইক্যুইটি ৪ হাজার ১৫৯ কোটি টাকা। এই টাকার মধ্যে মূল বিনিয়োগ ২ হাজার ৭০৮ কোটি টাকা, ইন্টারেস্ট (সুদ) ১ হাজার ৪৫০ কোটি টাকা। একই সঙ্গে এদের প্রোভিশন (নিরাপত্তা সঞ্চিতি) করা আছে ১ হাজার ২৩৯ কোটি টাকা। সে হিসাবে পুঁজিবাজারে সবগুলো ঋণাত্মক ইক্যুইটি সাড়ে ১০ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। তবে ডিএসই ও মার্চেন্ট ব্যাংক ঋণাত্মক ইক্যুইটি রাইট আপ করার জন্য ২০৩০ সাল পর্যন্ত বিএসইসির কাছে সময় চেয়েছে। এই ঋণাত্মক ইক্যুইটির রিফাইন্যান্সের (পুনঃঅর্থায়ন) জন্য ডিএসই থেকে একটি আবেদন করা হয়েছে। যেটি ইতোমধ্যে বিএসইসির পক্ষ থেকে অর্থ মন্ত্রণালয়ে একটি প্রস্তাবনা দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিএসইসির এক কর্মকর্তা। তিনি বলেন, মার্জিন ঋণ প্রতিদিনই বাড়ছে, এটা আপডেট (হালনাগাদ) হচ্ছে। এটার ম্যানেজমেন্ট (ব্যবস্থাপনা) যদি ঠিক না হয়, তাহলে সমস্যাটা দীর্ঘস্থায়ী থাকবে। মার্জিন ঋণের অবস্থাটা এমন হয়ে দাঁড়িয়েছে খাচ্ছে দাচ্ছে কিন্তু মোটা হতে পারছে না। অনেকটা ক্যান্সারে পরিণত হয়েছে। বিএসইসির ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, বাজারে ঋণাত্মক ইক্যুইটি কেন তৈরি হলো, তার একটি কারণ মার্জিন বিধিমালা সঠিকভাবে প্রয়োগ হয়নি।

এটা প্রয়োগ করার প্রাথমিক দায়িত্ব ছিল স্টক এক্সচেঞ্জের এবং সেকেন্ডারি দায়িত্ব ছিল বিএসইসির। মার্জিন ঋণের যে বাধ্যবাধকতা ছিল, ২০১৩ সাল থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত সেটা প্রয়োগ করতে দেওয়া হয়নি। একটা নোটিফিকেশন (প্রজ্ঞাপন) আছে ৩ এর ৫ ধারায় মার্জিন কল করা, কিন্তু কমিশন মার্জিন কল করতে দেয়নি, মার্জিন কল করতে না দেওয়ায় এটা নিচে নেমে গেছে। মার্জিন ঋণ যখন ১.২৫ এর মধ্যে চলে আসছে তখন সেটা বেচা হয়নি, একই সঙ্গে মার্জিন কল করা হয়নি। সে সময় বিএসইসি থেকে মৌখিকভাবে ‘ফোর্সড সেল’ (জোরপূর্বক বিক্রি) নিষেধ করা হয়েছে। বিধিমালায় বলা হয়, মার্জিন ঋণ যখন ১.৫০ এ নামবে তখন বিনিয়োগকারীকে কল দেওয়া হবে, এরপর ১.২৫-এ নেমে গেলে শেয়ার বিক্রি করে দিতে হবে। অ্যাডজাস্টিং রোল বা বিধিমালা যেটা আছে, এটার সঠিক প্রয়োগ হলে একজন বিনিয়োগকারীর জিরো হওয়ার কোনো আশঙ্কা নেই। ইক্যুইটি ঋণাত্মক হওয়ার প্রশ্নই আসে না।

তবে গত দুই কমিশন মৌখিকভাবে ফোর্স সেল দিতে একাধিকবার নিষেধ করেছিল, যা আজ ক্যান্সারে পরিণত হয়েছে। মার্জিন ঋণ বিধিমালায় বলা আছে, যখনই কোনো গ্রাহকের মার্জিন অ্যাকাউন্টে ইক্যুইটি ডেবিট ব্যালেন্সের ১৫০ শতাংশের নিচে নেমে যায়, তখন গ্রাহককে ইক্যুইটি ১৫০ শতাংশের কম না করার জন্য অতিরিক্ত মার্জিন প্রদানের জন্য অনুরোধ করবেন। বিনিয়োগকারীকে নগদ বা মার্জিনেবল সিকিউরিটি জমা দিয়ে এই অতিরিক্ত মার্জিন পূরণ করতে হবে। কোনো ব্রোকারেজ হাউস গ্রাহকের মার্জিন অ্যাকাউন্টে ইক্যুইটি কোনোভাবেই ডেবিট ব্যালেন্সের ১২৫ শতাংশের নিচে নেমে যেতে দেবে না। একবার ইক্যুইটি এই স্তরের নিচে নেমে গেলে ক্লায়েন্টকে কোনো নোটিশ ছাড়াই ফোর্সড সেল করতে পারবে। বাংলাদেশ পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী সম্মিলিত পরিষদের সভাপতি আতাউল্লাহ নাঈম বলেন, মার্জিন ঋণ পুঁজিবাজার ও বিনিয়োগকারীদের জন্য বর্তমানে গলার কাঁটা হিসাবে পরিগণিত। বছরের পর বছর এই ইস্যুতে বাজার প্রায়শ অস্থির থাকে। এর কারণে ঋণ না নিয়ে যারা ক্যাশ অ্যাকাউন্টে (হিসাব) বিনিয়োগ করেন তারাই বলির পাঁঠা হন।

আতাউল্লাহ নাঈম আরও বলেন, অনেক ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত সম্পর্কের ভিত্তিতে আইনি সীমার বাইরে মার্জিন নেওয়ার কারণেও বাজারে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। সার্বিক দিক বিবেচনায় পুঁজিবাজারের ক্যান্সার, পুঁজিবাজারে থাকার বিষয়টা অবশ্যই প্রশ্নবিদ্ধ। গোষ্ঠীগত স্বার্থেই বর্তমানে মার্জিন ঋণ ইস্যু ব্যবহৃত হচ্ছে। যার দ্রুত অবসান হওয়া অবশ্যই প্রয়োজন। ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ডিবিএ) সভাপতি সাইফুল ইসলাম বলেন, মার্জিন ঋণ পুঁজিবাজারের জন্য ক্যান্সার ডিজিজ। এটা নিরাময় না হলে পুঁজিবাজার ঘুরে দাঁড়ানো মুশকিল। এটা রিমুভ করতে হলে সরকার থেকে প্রণোদনা লাগবে। পৃথিবীর কোথাও রেগুলেটর ফোর্সড সেল বন্ধ করতে পারে না। আমাদের এখানে হয়েছে। এর দায় বিএসইসিসহ উভয় পক্ষের বলেও তিনি উল্লেখ করেন।