অর্থনৈতিক প্রতিবেদক: রাজস্ব আদায়ের কিছু ক্ষেত্রে আগ্রাসী (অ্যাগ্রেসিভ) পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। যেসব ক্ষেত্রে বেশি কড়াকড়ি হচ্ছে, আগামী বাজেটে সেসব ক্ষেত্রে সহজীকরণের বার্তা থাকবে বলে জানিয়েছেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান। রোববার (২৩ ফেব্রুয়ারি) এনবিআর মিলনায়তনে অথোরাইজড ইকোনমিক অপারেটর (এআইও) মডিউলের সংযোজন এবং বাণিজ্য সহজীকরণে ইমপোর্ট-এক্সপোর্ট হাবের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা জানান।
এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, অটোমেশনের ক্ষেত্রে এনবিআর সবার আগে ১৯৯৩ সালে শুরু করেছিল। কিন্তু পরে তা এগোয়নি। ইনকাম ট্যাক্সের ক্ষেত্রে আমরা অনলাইনে শুরু করেছি। কিছু কিছু ক্ষেত্রে বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এক্ষেত্রে অগ্রগতি পর্যালোচনা করে করপোরেট ট্যাক্স অনলাইনে নিয়ে যাব। তিনি বলেন, বিশ্ববাজারে অন্যদের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করতে হলে পুরনো ধ্যান-ধারণা থেকে বের হয়ে আসতে হবে। দীর্ঘদিন ধরে যারা সঠিকভাবে ট্যাক্স দিচ্ছেন, তাদের ওপরই আমাদের চাওয়া-পাওয়া বেশি। এটি ইনকাম ট্যাক্সের ক্ষেত্রে যেমন প্রযোজ্য, তেমনি শুল্ক ও ভ্যাটের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।
যারা সঠিকভাবে ভ্যাট-ট্যাক্স দিচ্ছেন, তাদের সম্মাননা দেওয়া হচ্ছে যাতে অন্যরা অনুপ্রাণিত হন। যে ব্যবসায়ীরা আমদানি-রপ্তানি ক্ষেত্রে সঠিক নিয়ম কানুন মেনে চলেন না, তারা অবৈধ সুযোগ নিতে চান উল্লেখ করে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, এই আমদানিকারকেরা মোংলা ও পানগাঁও বন্দর ব্যবহার করতে চান না। কারণ এই দুই বন্দরে মালামাল কম আসায় পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পরীক্ষা করা হয়। অন্যদিকে চট্টগ্রাম বন্দরে অনেক বেশি মালামাল আসে বলে কাস্টমসকে এড়িয়ে মালামাল খাস করে নেওয়া যায়।
তিনি বলেন, আমদানি রপ্তানিতে প্রয়োজনীয় নিয়ম মেনে চলতে হবে, যাতে বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় করে তৈরি করা রিসোর্স কাজে লাগানো যায়। রাজস্ব বোর্ড থেকে আমরা সেই পথে যাচ্ছি। কমপ্লায়েন্ট আমদানিকারকদের সেই সুবিধা দিতে চাই, যাতে পরীক্ষা ছাড়াই মালামাল ছেড়ে দিতে পারি। পুরোনো কিছু ব্যবসায়ী সব সুবিধা নিয়ে থাকেন।
নতুনরা যাতে এগিয়ে আসতে পারেন, যাতে সব সুযোগ-সুবিধা ভোগ করতে পারেন, আমরা সেই ব্যবস্থা করে রেখেছি। প্রতিবন্ধকতাগুলো দূর করতে শুরু করেছি। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান (বিডা) চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন বলেন, প্রতিশ্রুতি দিয়ে না রাখা সাধারণ ঘটনা। এনবিআর সেখানে ন্যাশনাল সিঙ্গেল উইন্ডো (এনএসআই) ও অথোরাইজড ইকনোমিক অপারেটর্সের (এআইও) মতো দুইটি প্রতিশ্রুতি চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে শুরু করতে যাচ্ছে। বিদেশি বিনিয়োগের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশের সেই ক্ষেত্রে শুধু বাংলাদেশের নিজস্ব বাজারকে বিবেচনা করা হয়। এক্ষেত্রে দৃষ্টি প্রসারিত করার প্রয়োজন। পূর্ব ভারতের সাত রাজ্য ও মিয়ানমারকে বিবেচনায় আনতে হেব। সেজন্য কানেক্টিভিটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে এনবিআরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীরা বক্তব্য দেন।