ঢাকা ০২:৩৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান একযোগে এমপিওভুক্ত করার দাবি

  • আপডেট সময় : ০৫:৪৩:৪১ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • ২৮ বার পড়া হয়েছে

রোববার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ‘সম্মিলিত নন-এমপিও ঐক্য পরিষদ’ এর ব্যানারে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি পালনে শিক্ষকরা। ছবি সংগৃহীত

নিজস্ব প্রতিবেদক: সারাদেশের স্বীকৃতিপ্রাপ্ত সব নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান একযোগে এমপিওভুক্ত করার দাবি জানিয়েছেন শিক্ষকরা।

রোববার (২৩ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ‘সম্মিলিত নন-এমপিও ঐক্য পরিষদ’ এর ব্যানারে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি থেকে এমন দাবি জানানো হয়েছে।

বাংলাদেশ আদর্শ শিক্ষক ফেডারেশনের জেনারেল সেক্রেটারি এ বি এম ফজলুল করিম বলেন, দেশের সব নন-এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করা সময়ের দাবি। শিক্ষার মান উন্নয়ন ও মানবিক কারণে নন-এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো এমপিওভুক্ত করা প্রয়োজন।

সভাপতির বক্তব্যে সংগঠনটির প্রধান সমন্বয়ক অধ্যক্ষ মো. দবিরুল ইসলাম বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তি একটি চলমান প্রক্রিয়া। প্রতিবছর এমপিওভুক্তির জন্য আবেদন নেওয়া হবে। কিন্তু দুঃখের বিষয় গত চার বছর কোনো আবেদন নেওয়া হয়নি। ২০২৫ সালে যদি আবেদন না নেওয়া হয় তাহলে অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাবে। কারণ ২০-২৫ বছর ধরে বিনা বেতনে কেউ চাকরি করতে পারে না।

তিনি বলেন, আমরা মনে করি নন-এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীদের সামাজিক মর্যাদা ও সীমাহীন কষ্টের কথা চিন্তা করা দরকার। সেজন্য, এমপিও নীতিমালা ২০২১ এর সকল শর্ত বাতিল করে সকল নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান একযোগে এমপিওভুক্ত করে শিক্ষকদের দীর্ঘদিনের দুঃখ দুর্দশার অবসান করতে হবে।

প্রধান সমন্বয়ক অধ্যক্ষ মো. নাজমুছ সাহাদাৎ আজাদি বলেন, নন-এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির জন্য বাজেটে ২৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ রয়েছে। এই টাকা দিয়ে অবিলম্বে নন-এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করতে হবে।

দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলমান থাকবে জানিয়ে সাংগঠনিক সমন্বয়ক অধ্যক্ষ মো. মনিমুল হক বলেন, নন-এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বেতন দেওয়াকে রাষ্ট্রের এক নম্বর অগ্রাধিকার হতে হবে। দেশে আন্দোলনরত যতগুলো পেশাজীবী সংগঠন যত দাবি করছে তার মধ্যে নন-এমপিও (বেতন বিহীন) শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বেতন দেওয়া সবচেয়ে যৌক্তিক ও মানবিক দাবি। শিক্ষা মৌলিক অধিকার। শিক্ষকের দায়িত্ব রাষ্ট্রকেই নিতে হবে। শিক্ষায় বিনিয়োগ শ্রেষ্ঠ বিনিয়োগ। শিক্ষকদের জীবনমান উন্নত না হলে দেশপ্রেমিক শিক্ষার্থী তথা আদর্শ নাগরিক গঠন করা সম্ভব নয়। সেজন্য, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমাদের লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।

সব প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় এমপিওভুক্ত করার দাবি: অনতিবিলম্বে সব বিশেষ (অটিস্টিক ও প্রতিবন্ধী) বিদ্যালয়ের স্বীকৃতি ও এমপিওভুক্ত সুনিশ্চিত করাসহ পাঁচ দফা দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় সমন্বয় পরিষদ।

রোববার (২৩ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বাংলাদেশ প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় সমন্বয় পরিষদ আয়োজিত অবস্থান কর্মসূচি থেকে এসব দাবি জানানো হয়।

ছবি সংগৃহীত

পরিষদের অন্যান্য দাবিগুলো হলো-সব বিশেষ বিদ্যালয়ের প্রতিবন্ধীবান্ধব অবকাঠামো সুনিশ্চিত করতে হবে; বিশেষ শিক্ষার্থীদের ন্যূনতম শিক্ষা ভাতা তিন হাজার টাকা নিশ্চিত করতে হবে; শিক্ষার্থীদের মিডডে মিলসহ শিক্ষা উপকরণ, খেলাধুলা সরঞ্জাম প্রদান ও থেরাপি সেন্টার বাস্তবায়ন করতে হবে এবং ছাত্র-ছাত্রীদের ভোকেশনাল শিক্ষা কারিকুলামের আওতায় কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও পুনর্বাসন সুনিশ্চিত করতে হবে।

অবস্থান কর্মসূচি থেকে পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রিমা খাতুন বলেন, ২০১৯ সালের ২০ ডিসেম্বর সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়গুলোর স্বীকৃতি ও এমপিওর জন্য প্রজ্ঞাপন জারি করে এবং অনলাইনে আবেদন গ্রহণ করে। ওই প্রজ্ঞাপনের পরিপ্রেক্ষিতে ২ হাজার ৭৪১টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আবেদন করে। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় প্রাথমিক যাচাই-বাছাই করে ১ হাজার ৭৭২টি আবেদন গ্রহণ করে। পরে বিশেষ শিক্ষা নীতিমালা ২০১৯ এর আলোকে জাতীয় স্বীকৃতি ও এমপিও কমিটি গঠন করে বিদ্যালয়গুলোকে ক, খ, ও গ এই তিন শ্রেণিতে বিভক্ত করে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় কার্যক্রম শুরু করে। যা অত্যন্ত ধীরগতির। ফলে সারাদেশে ৬৩ হাজার শিক্ষক-কর্মচারী অত্যন্ত মানবেতর জীবনযাপন করছে এবং প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ের শিক্ষাক্ষেত্রে বিরূপ প্রভাব পড়ছে।
তিনি বলেন, ইতোপূর্বে স্বীকৃতিপ্রাপ্ত ৫৭টি এবং স্বীকৃতিবিহীন ১ হাজার ৭৭২টি অটিস্টিক ও প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় এমপিও ভুক্তির জন্য অপেক্ষমাণ যা আজ পর্যন্ত কোনো সুরাহা হয়নি। অবস্থান কর্মসূচিতে আরও উপস্থিত ছিলেন- বাংলাদেশ প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় সমন্বয় পরিষদের সভাপতি মো. ইলিয়াস রাজ, সাংগঠনিক সম্পাদক আকুল শেখ, সমন্বয়ক গাউসুল আজম শিমু প্রমুখ।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান একযোগে এমপিওভুক্ত করার দাবি

আপডেট সময় : ০৫:৪৩:৪১ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক: সারাদেশের স্বীকৃতিপ্রাপ্ত সব নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান একযোগে এমপিওভুক্ত করার দাবি জানিয়েছেন শিক্ষকরা।

রোববার (২৩ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ‘সম্মিলিত নন-এমপিও ঐক্য পরিষদ’ এর ব্যানারে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি থেকে এমন দাবি জানানো হয়েছে।

বাংলাদেশ আদর্শ শিক্ষক ফেডারেশনের জেনারেল সেক্রেটারি এ বি এম ফজলুল করিম বলেন, দেশের সব নন-এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করা সময়ের দাবি। শিক্ষার মান উন্নয়ন ও মানবিক কারণে নন-এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো এমপিওভুক্ত করা প্রয়োজন।

সভাপতির বক্তব্যে সংগঠনটির প্রধান সমন্বয়ক অধ্যক্ষ মো. দবিরুল ইসলাম বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তি একটি চলমান প্রক্রিয়া। প্রতিবছর এমপিওভুক্তির জন্য আবেদন নেওয়া হবে। কিন্তু দুঃখের বিষয় গত চার বছর কোনো আবেদন নেওয়া হয়নি। ২০২৫ সালে যদি আবেদন না নেওয়া হয় তাহলে অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাবে। কারণ ২০-২৫ বছর ধরে বিনা বেতনে কেউ চাকরি করতে পারে না।

তিনি বলেন, আমরা মনে করি নন-এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীদের সামাজিক মর্যাদা ও সীমাহীন কষ্টের কথা চিন্তা করা দরকার। সেজন্য, এমপিও নীতিমালা ২০২১ এর সকল শর্ত বাতিল করে সকল নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান একযোগে এমপিওভুক্ত করে শিক্ষকদের দীর্ঘদিনের দুঃখ দুর্দশার অবসান করতে হবে।

প্রধান সমন্বয়ক অধ্যক্ষ মো. নাজমুছ সাহাদাৎ আজাদি বলেন, নন-এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির জন্য বাজেটে ২৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ রয়েছে। এই টাকা দিয়ে অবিলম্বে নন-এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করতে হবে।

দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলমান থাকবে জানিয়ে সাংগঠনিক সমন্বয়ক অধ্যক্ষ মো. মনিমুল হক বলেন, নন-এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বেতন দেওয়াকে রাষ্ট্রের এক নম্বর অগ্রাধিকার হতে হবে। দেশে আন্দোলনরত যতগুলো পেশাজীবী সংগঠন যত দাবি করছে তার মধ্যে নন-এমপিও (বেতন বিহীন) শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বেতন দেওয়া সবচেয়ে যৌক্তিক ও মানবিক দাবি। শিক্ষা মৌলিক অধিকার। শিক্ষকের দায়িত্ব রাষ্ট্রকেই নিতে হবে। শিক্ষায় বিনিয়োগ শ্রেষ্ঠ বিনিয়োগ। শিক্ষকদের জীবনমান উন্নত না হলে দেশপ্রেমিক শিক্ষার্থী তথা আদর্শ নাগরিক গঠন করা সম্ভব নয়। সেজন্য, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমাদের লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।

সব প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় এমপিওভুক্ত করার দাবি: অনতিবিলম্বে সব বিশেষ (অটিস্টিক ও প্রতিবন্ধী) বিদ্যালয়ের স্বীকৃতি ও এমপিওভুক্ত সুনিশ্চিত করাসহ পাঁচ দফা দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় সমন্বয় পরিষদ।

রোববার (২৩ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বাংলাদেশ প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় সমন্বয় পরিষদ আয়োজিত অবস্থান কর্মসূচি থেকে এসব দাবি জানানো হয়।

ছবি সংগৃহীত

পরিষদের অন্যান্য দাবিগুলো হলো-সব বিশেষ বিদ্যালয়ের প্রতিবন্ধীবান্ধব অবকাঠামো সুনিশ্চিত করতে হবে; বিশেষ শিক্ষার্থীদের ন্যূনতম শিক্ষা ভাতা তিন হাজার টাকা নিশ্চিত করতে হবে; শিক্ষার্থীদের মিডডে মিলসহ শিক্ষা উপকরণ, খেলাধুলা সরঞ্জাম প্রদান ও থেরাপি সেন্টার বাস্তবায়ন করতে হবে এবং ছাত্র-ছাত্রীদের ভোকেশনাল শিক্ষা কারিকুলামের আওতায় কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও পুনর্বাসন সুনিশ্চিত করতে হবে।

অবস্থান কর্মসূচি থেকে পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রিমা খাতুন বলেন, ২০১৯ সালের ২০ ডিসেম্বর সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়গুলোর স্বীকৃতি ও এমপিওর জন্য প্রজ্ঞাপন জারি করে এবং অনলাইনে আবেদন গ্রহণ করে। ওই প্রজ্ঞাপনের পরিপ্রেক্ষিতে ২ হাজার ৭৪১টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আবেদন করে। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় প্রাথমিক যাচাই-বাছাই করে ১ হাজার ৭৭২টি আবেদন গ্রহণ করে। পরে বিশেষ শিক্ষা নীতিমালা ২০১৯ এর আলোকে জাতীয় স্বীকৃতি ও এমপিও কমিটি গঠন করে বিদ্যালয়গুলোকে ক, খ, ও গ এই তিন শ্রেণিতে বিভক্ত করে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় কার্যক্রম শুরু করে। যা অত্যন্ত ধীরগতির। ফলে সারাদেশে ৬৩ হাজার শিক্ষক-কর্মচারী অত্যন্ত মানবেতর জীবনযাপন করছে এবং প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ের শিক্ষাক্ষেত্রে বিরূপ প্রভাব পড়ছে।
তিনি বলেন, ইতোপূর্বে স্বীকৃতিপ্রাপ্ত ৫৭টি এবং স্বীকৃতিবিহীন ১ হাজার ৭৭২টি অটিস্টিক ও প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় এমপিও ভুক্তির জন্য অপেক্ষমাণ যা আজ পর্যন্ত কোনো সুরাহা হয়নি। অবস্থান কর্মসূচিতে আরও উপস্থিত ছিলেন- বাংলাদেশ প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় সমন্বয় পরিষদের সভাপতি মো. ইলিয়াস রাজ, সাংগঠনিক সম্পাদক আকুল শেখ, সমন্বয়ক গাউসুল আজম শিমু প্রমুখ।