ঢাকা ০৩:৪০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

পাকিস্তানে পণ্যবাহী ট্রাকের বহরে হামলা, পাঁচ সৈন্যসহ নিহত ৬

  • আপডেট সময় : ০৭:২৯:৫৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • ৬ বার পড়া হয়েছে

বিদেশের খবর ডেস্ক : পাকিস্তানে পণ্যবাহী ট্রাকের বহরে হামলা চালিয়েছে বন্দুকধারীরা। এতে ৬ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে ৫ জন সৈন্য। এছাড়া আহত হয়েছেন আরও অনেকে। হামলার পরে সন্ত্রাসীরা ট্রাকগুলো থেকে পণ্যও লুট করে। গতকাল মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা এএফপি। বার্তাসংস্থাটি বলছে, ২০ জনেরও বেশি বন্দুকধারী পাকিস্তানের একটি অঞ্চলে খাদ্য সরঞ্জাম বহনকারী কয়েক ডজন ট্রাকের একটি কনভয়কে আক্রমণ করেছে এবং ছয় জনকে হত্যার পাশাপাশি ট্রাকগুলো লুট করেছে বলে কর্মকর্তারা মঙ্গলবার জানিয়েছেন। পণ্যবাহী ট্রাকের এই বহরটি সশস্ত্র পাহারায় আফগানিস্তানের সীমান্তবর্তী কুররাম জেলার পারাচিনার শহরে যাচ্ছিল। এই অঞ্চলটি কয়েক দশক ধরে সুন্নি এবং শিয়া মুসলমানদের মধ্যে সহিংসতার কারণে বিপর্যস্ত।

স্থানীয় কর্মকর্তাদের মতে, গত বছরের জুলাই থেকে নতুন করে শুরু হওয়া সংঘাতে প্রায় ২৫০ জন নিহত হয়েছেন। এএফপি বলছে, সর্বশেষ হামলার সময় বন্দুকধারীরা ত্রাণবাহী গাড়িবহরকে রক্ষাকারী নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর গুলিবর্ষণ শুরু করে। এতে একজন ট্রাক চালক নিহত এবং আরও সাতজন আহত হন। এছাড়া আধাসামরিক ইউনিটেও অতর্কিত হামলা করে সন্ত্রাসীরা এবং এতে পাঁচ সেনা নিহত হন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন পুলিশ কর্মকর্তা এএফপিকে বলেছেন, “হামলাকারীরা (সীমান্তরক্ষী বাহিনীর) তিনটি গাড়িতেও আগুন দিয়েছে। একজন নারী পথচারীসহ মোট ১৫ জন আহত হয়েছেন। আর (সীমান্তরক্ষী বাহিনীর) পাঁচজন সদস্যসহ ছয়জন প্রাণ হারিয়েছেন।” ওই কর্মকর্তা বলেন, হামলার পর হেলিকপ্টার গানশিপগুলো পাহাড়ে সন্ত্রাসীদের আস্তানাগুলো লক্ষ্য করে হামলা চালায়।

পাকিস্তানের এই অঞ্চলটি গত কয়েক দশক ধরে সহিংসতার কারণে বিপর্যস্ত। উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশের স্থানীয় সরকার এবং উপজাতীয় নেতারা অতীতে বিভিন্ন সময় যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করলেও শেষ পর্যন্ত সেসব প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। এছাড়া সহিংসতা দমনের লক্ষ্যে জেলার ভেতরে প্রবেশের এবং বাইরে যাওয়ার প্রধান রাস্তাগুলো বন্ধ করে রাখা হয়েছে। সবচেয়ে সাম্প্রতিক শান্তি চুক্তিটি চলতি বছরের ১ জানুয়ারিতে ঘোষণা করা হয়েছিল। কিন্তু তারপরও মাত্র কয়েকদিন পরেই এই অঞ্চলে যাওয়ার পথে একটি ত্রাণবাহী গাড়ির ওপর হামলার ঘটনা ঘটে এবং এতে বেশ কয়েকজন স্থানীয় কর্মকর্তা এবং তাদের নিরাপত্তা রক্ষাকারী সদস্য আহত হয়। পরে প্রাদেশিক রাজধানী পেশোয়ারে মুখ্যমন্ত্রীর সভাপতিত্বে একটি “উচ্চ পর্যায়ের” বৈঠক লোয়ার কুররামে আরেকটি অভিযানের নির্দেশ দেওয়া হয়।

মূলত সুন্নি ও শিয়াদের মধ্যে এই বিরোধ চাষের জমি নিয়ে কয়েক দশকের পুরোনো উত্তেজনা থেকে সৃষ্টি হয়েছে। তবে শিয়া সম্প্রদায়ের সদস্যরা বিশেষভাবে দুর্বল। কারণ প্রয়োজনীয় পরিষেবাগুলো পেতে গন্তব্যে পৌঁছানোর জন্য তাদের অবশ্যই সুন্নি-সংখ্যাগরিষ্ঠ এলাকাগুলোর মধ্য দিয়ে যেতে হবে।

 

 

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

আইন-বিবেক অনুযায়ী ডিসিদের কাজ করার নির্দেশনা আইন উপদেষ্টার

পাকিস্তানে পণ্যবাহী ট্রাকের বহরে হামলা, পাঁচ সৈন্যসহ নিহত ৬

আপডেট সময় : ০৭:২৯:৫৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

বিদেশের খবর ডেস্ক : পাকিস্তানে পণ্যবাহী ট্রাকের বহরে হামলা চালিয়েছে বন্দুকধারীরা। এতে ৬ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে ৫ জন সৈন্য। এছাড়া আহত হয়েছেন আরও অনেকে। হামলার পরে সন্ত্রাসীরা ট্রাকগুলো থেকে পণ্যও লুট করে। গতকাল মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা এএফপি। বার্তাসংস্থাটি বলছে, ২০ জনেরও বেশি বন্দুকধারী পাকিস্তানের একটি অঞ্চলে খাদ্য সরঞ্জাম বহনকারী কয়েক ডজন ট্রাকের একটি কনভয়কে আক্রমণ করেছে এবং ছয় জনকে হত্যার পাশাপাশি ট্রাকগুলো লুট করেছে বলে কর্মকর্তারা মঙ্গলবার জানিয়েছেন। পণ্যবাহী ট্রাকের এই বহরটি সশস্ত্র পাহারায় আফগানিস্তানের সীমান্তবর্তী কুররাম জেলার পারাচিনার শহরে যাচ্ছিল। এই অঞ্চলটি কয়েক দশক ধরে সুন্নি এবং শিয়া মুসলমানদের মধ্যে সহিংসতার কারণে বিপর্যস্ত।

স্থানীয় কর্মকর্তাদের মতে, গত বছরের জুলাই থেকে নতুন করে শুরু হওয়া সংঘাতে প্রায় ২৫০ জন নিহত হয়েছেন। এএফপি বলছে, সর্বশেষ হামলার সময় বন্দুকধারীরা ত্রাণবাহী গাড়িবহরকে রক্ষাকারী নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর গুলিবর্ষণ শুরু করে। এতে একজন ট্রাক চালক নিহত এবং আরও সাতজন আহত হন। এছাড়া আধাসামরিক ইউনিটেও অতর্কিত হামলা করে সন্ত্রাসীরা এবং এতে পাঁচ সেনা নিহত হন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন পুলিশ কর্মকর্তা এএফপিকে বলেছেন, “হামলাকারীরা (সীমান্তরক্ষী বাহিনীর) তিনটি গাড়িতেও আগুন দিয়েছে। একজন নারী পথচারীসহ মোট ১৫ জন আহত হয়েছেন। আর (সীমান্তরক্ষী বাহিনীর) পাঁচজন সদস্যসহ ছয়জন প্রাণ হারিয়েছেন।” ওই কর্মকর্তা বলেন, হামলার পর হেলিকপ্টার গানশিপগুলো পাহাড়ে সন্ত্রাসীদের আস্তানাগুলো লক্ষ্য করে হামলা চালায়।

পাকিস্তানের এই অঞ্চলটি গত কয়েক দশক ধরে সহিংসতার কারণে বিপর্যস্ত। উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশের স্থানীয় সরকার এবং উপজাতীয় নেতারা অতীতে বিভিন্ন সময় যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করলেও শেষ পর্যন্ত সেসব প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। এছাড়া সহিংসতা দমনের লক্ষ্যে জেলার ভেতরে প্রবেশের এবং বাইরে যাওয়ার প্রধান রাস্তাগুলো বন্ধ করে রাখা হয়েছে। সবচেয়ে সাম্প্রতিক শান্তি চুক্তিটি চলতি বছরের ১ জানুয়ারিতে ঘোষণা করা হয়েছিল। কিন্তু তারপরও মাত্র কয়েকদিন পরেই এই অঞ্চলে যাওয়ার পথে একটি ত্রাণবাহী গাড়ির ওপর হামলার ঘটনা ঘটে এবং এতে বেশ কয়েকজন স্থানীয় কর্মকর্তা এবং তাদের নিরাপত্তা রক্ষাকারী সদস্য আহত হয়। পরে প্রাদেশিক রাজধানী পেশোয়ারে মুখ্যমন্ত্রীর সভাপতিত্বে একটি “উচ্চ পর্যায়ের” বৈঠক লোয়ার কুররামে আরেকটি অভিযানের নির্দেশ দেওয়া হয়।

মূলত সুন্নি ও শিয়াদের মধ্যে এই বিরোধ চাষের জমি নিয়ে কয়েক দশকের পুরোনো উত্তেজনা থেকে সৃষ্টি হয়েছে। তবে শিয়া সম্প্রদায়ের সদস্যরা বিশেষভাবে দুর্বল। কারণ প্রয়োজনীয় পরিষেবাগুলো পেতে গন্তব্যে পৌঁছানোর জন্য তাদের অবশ্যই সুন্নি-সংখ্যাগরিষ্ঠ এলাকাগুলোর মধ্য দিয়ে যেতে হবে।