ঢাকা ০৫:০১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

ঝি ঝি ধরা রহস্যজনক হলেও বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা সহজ

  • আপডেট সময় : ০৩:৪৪:১০ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • ২১ বার পড়া হয়েছে

প্রত্যাশা ডেস্ক: হাতে বা পায়ে ‘ঝি ঝি ধরা’ বিষয়টি নিয়ে আমরা সবাই পরিচিত। সাধারণত পা বা হাতের ওপর লম্বা সময় চাপ পড়লে সাময়িক যে অসাড় অনুভূতি তৈরি হয় সেটিকেই আমরা ঝি ঝি ধরা বলে থাকি। এ উপসর্গটির কেতাবি নাম ‘টেম্পোরারি প্যারেসথেসিয়া’, ইংরেজিতে এটিকে ‘পিনস অ্যান্ড নিডলস’ও বলা হয়ে থাকে।
শরীরের যে অংশে ঝি ঝি ধরে, সেখানে সাময়িক অসাড়তার পাশাপাশি এমন একটি অনুভূতির তৈরি হয় যেন অসংখ্য সুঁই দিয়ে একসঙ্গে ওই অংশে খোঁচা দেওয়া হচ্ছে। তবে সাধারণত কিছুক্ষণের মধ্যেই অসাড়তা এবং খোঁচা লাগার মত অস্বস্তিকর অনুভূতি চলে গিয়ে স্বাভাবিক অনুভূতি ফিরে আসে।

যেভাবে ঝি ঝি ধরতে পারে: সাধারণত মানুষের হাত বা পায়ে ঝি ঝি ধরার বিষয়টি সবচেয়ে বেশি পরিলক্ষিত হয়। দীর্ঘক্ষণ বসা বা শোয়ার পর যদি হাত বা পা এমন অবস্থানে বেশ কিছুক্ষণ থাকে যেখানে সেটির ওপর লম্বা সময় ধরে চাপ পড়ে, তখন ঝি ঝি ধরার সম্ভাবনা থাকে। সাধারণত আমাদের যে ধরনের ঝি ঝি ধরার অভিজ্ঞতা হয়, তা সাময়িক এবং কিছুক্ষণের মধ্যেই ঠিক হয়ে যায়। তবে বিভিন্ন কারণে দীর্ঘ সময় ঝি ঝি ধরার মত ঘটনাও ঘটে থাকে। বিশেষ করে উচ্চ রক্তচাপের রোগীদের বা ডায়বেটিস আক্রান্ত রোগীদের ক্ষেত্রে দীর্ঘসময় কোনো একটি অঙ্গে অসাড়তা অনুভব করার ঘটনা ঘটতে পারে।

স্নায়ুরোগ বিশেষজ্ঞ এসএম সিয়াম হাসান বলেন, ‘মেরুদণ্ডে আঘাতজনিত সমস্যা থেকে ‘সার্ভাইকাল স্পন্ডাইোসিস’ বা ‘লাম্বার স্পন্ডাইলোসিস’-এর ক্ষেত্রে হাতে পায়ে ঝি ঝি ধরার আশঙ্কা থাকে।’ এছাড়া হাতে বা পায়ে রক্ত সঞ্চালন কমে গেলে পরিফেরাল আর্টারাল ডিজিজ হিসেবে ঝি ঝি ধরতে পারে। এ রকম ক্ষেত্রে শরীরের ওই অংশে রক্ত প্রবাহ কমে যাওয়ায় মাংসপেশী দুর্বল হয়ে যাওয়ার কারণে ঝি ঝি ধরে থাকে। ডায়বেটিসের কারণে ডায়বেটিক নিউরোপ্যাথি নামক একটি রোগ হয়, যার কারণে হাত পায়ে ঝি ঝি ধরে।

ঝি ঝি কেন ধরে: ঝি ঝি ধরার অনুভূতিটা আপাতদৃষ্টিতে কিছুটা রহস্যজনক মনে হলেও এর পেছনের বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যাটা খুবই সহজ। আমাদের দেহের সবখানেই অসংখ্য স্নায়ু রয়েছে; যেগুলো মস্তিষ্ক ও দেহের অন্যান্য অংশের মধ্যে তথ্য আদান-প্রদান করতে থাকে।
স্নায়ুরোগ বিশেষজ্ঞ এসএম সিয়াম হাসান বলেন, বসা বা শোয়ার সময় সেসব স্নায়ুর কোনো একটিতে চাপ পড়লে দেহের ওই অংশে রক্ত চলাচলকারী শিরার ওপরও চাপ পড়ে। ফলে শরীরের ওই অংশে রক্ত চলাচল ব্যাহত হয়। এর ফলে ঝি ঝি ধরতে পারে। স্নায়ুতে চাপ পড়ার ফলে শরীরের ওই অংশ থেকে যেসব তথ্য মস্তিষ্কে পৌঁছানোর কথা ছিল, তা বাধাগ্রস্থ হয়। একইসাথে স্নায়ুগুলোও হৃৎপিণ্ড থেকে অক্সিজেন সমৃদ্ধ রক্ত পাওয়া থেকে বিরত থাকে যেহেতু রক্ত সরবরাহকারী শিরার ওপর চাপ পড়ে। এ রকম পরিস্থিতি থেকে যখন চাপ অপসারিত হয়, তখন একসাথে প্রচুর পরিমাণ রক্ত অঙ্গ প্রত্যঙ্গে প্রবাহিত হয় এবং একসাথে প্রচুর পরিমাণ তথ্য মস্তিষ্কে প্রবাহিত হতে শুরু করে।
এই ঝি ঝি ধরা অনুভূতিটিকে তিন ধাপে বিভক্ত করা যায়।

প্রথমত, চাপ প্রয়োগ হওয়ার মিনিট খানেক পর তিন থেকে চার মিনিটের জন্য স্থায়ী হওয়া অস্বস্তিকর অনুভূতি, যেটিকে ‘কমপ্রেশন টিঙ্গলিং বলা হয়। এই অনুভূতিকে অনেকে এমনভাবে বর্ণনা করেছেন যেন, তাদের চামড়ার ভেতরের অংশে পিপড়া দৌড়াদৌড়ি করছিল।
দ্বিতীয় ধাপটি সাধারণত শুরু হয় দশ মিনিট পর। এই ধাপে হাতে বা পায়ে অসাড়তা বোধ হয় এবং যতক্ষণ স্নায়ুর ওপর চাপ থাকে ততক্ষণ এই অনুভূতি থাকে।

তৃতীয় ও শেষ ধাপটি শুরু হয় চাপ অপসারণ করার পর। এই অংশটিকেই ইংরেজিতে ‘পিনস অ্যান্ড নিডলস’ বলা হয়।
প্রথম দুই ধাপের তুলনায় এ ধাপটি অপেক্ষাকৃত বেশি যন্ত্রণাদায়ক। তবে সাধারণত এই ধাপে যন্ত্রণা বা ব্যাথার চেয়ে ভিন্ন ধরণের উত্তেজনা বোধ করে বলেই জানিয়েছেন অধিকাংশ মানুষ। কিছুটা ব্যথা বা যন্ত্রণার অনুভূতি থাকলেও তার পুরোটাই শারীরিক। এ অনুভূতি কিছুক্ষণের মধ্যেই স্তিমিত হয়ে গেলেও ঠিক কোন জায়গায় এই অনুভূতির সূচনা হয়েছিল বা কোথায় শেষ হয়, সেটি নির্দিষ্টভাবে বলতে পারে না মানুষ।
ঝি ঝি ধরলে সাময়িকভাবে অসাড় হয়ে যাওয়া অঙ্গটি টানটান করে রাখলে সাধারণত কিছুক্ষণের মধ্যে দ্রুত ঐ অঙ্গ স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে যায়।
দীর্ঘকালীন প্যারেসথেসিয়া: আমরা যেটিকে ঝি ঝি ধরা বলে থাকি সেটি সাধারণত কিছুক্ষণের মধ্যেই স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসে। তবে বিশেষ ক্ষেত্রে ওই একই ধরনের অনুভূতি লম্বা সময় স্থায়ী হতে পারে। যেসব ক্ষেত্রে এমনটি ঘটতে পারে, তা হলো কেমোথেরাপির মতো চিকিৎসার ক্ষেত্রে; এইচআইভির ওষুধ; খিঁচুনির ওষুধ বা বিভিন্ন ধরণের অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারের ফলে; সিসা বা রেডিয়েশনের মতো বিষাক্ত বস্তুর সংস্পর্শে এলে; পর্যাপ্ত পুষ্টিকর খাবারের অভাব হলে; স্নায়ু ক্ষতিগ্রস্ত হলে, বিশেষ করে কোনো অসুস্থতা বা আঘাতের পর; অতিরিক্ত মদ্যপানের ফলে; বিশেষ ক্ষেত্রে চেতনানাশক ব্যবহারের পর।

কখন চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন; দীর্ঘসময় ঝি ঝি ধরার মতো উপসর্গ থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া উচিত। এসএম সিয়াম হাসানের মতে, ঝি ঝি ধরার মতো উপসর্গ যদি দীর্ঘ সময় ধরে হতে থাকে তাহলে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া প্রয়োজন। এছাড়া কোনো অঙ্গে নিয়মিত ঝি ঝি ধরার ঘটনা ঘটলে বা বারবার ঝি ঝি ধরার ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটলেও চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া উচিত।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

বাংলাদেশে উগ্র বাম কমিউনিস্টদের ভোট দিতে দেওয়া হয় ২৯ মিলিয়ন ডলার

ঝি ঝি ধরা রহস্যজনক হলেও বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা সহজ

আপডেট সময় : ০৩:৪৪:১০ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

প্রত্যাশা ডেস্ক: হাতে বা পায়ে ‘ঝি ঝি ধরা’ বিষয়টি নিয়ে আমরা সবাই পরিচিত। সাধারণত পা বা হাতের ওপর লম্বা সময় চাপ পড়লে সাময়িক যে অসাড় অনুভূতি তৈরি হয় সেটিকেই আমরা ঝি ঝি ধরা বলে থাকি। এ উপসর্গটির কেতাবি নাম ‘টেম্পোরারি প্যারেসথেসিয়া’, ইংরেজিতে এটিকে ‘পিনস অ্যান্ড নিডলস’ও বলা হয়ে থাকে।
শরীরের যে অংশে ঝি ঝি ধরে, সেখানে সাময়িক অসাড়তার পাশাপাশি এমন একটি অনুভূতির তৈরি হয় যেন অসংখ্য সুঁই দিয়ে একসঙ্গে ওই অংশে খোঁচা দেওয়া হচ্ছে। তবে সাধারণত কিছুক্ষণের মধ্যেই অসাড়তা এবং খোঁচা লাগার মত অস্বস্তিকর অনুভূতি চলে গিয়ে স্বাভাবিক অনুভূতি ফিরে আসে।

যেভাবে ঝি ঝি ধরতে পারে: সাধারণত মানুষের হাত বা পায়ে ঝি ঝি ধরার বিষয়টি সবচেয়ে বেশি পরিলক্ষিত হয়। দীর্ঘক্ষণ বসা বা শোয়ার পর যদি হাত বা পা এমন অবস্থানে বেশ কিছুক্ষণ থাকে যেখানে সেটির ওপর লম্বা সময় ধরে চাপ পড়ে, তখন ঝি ঝি ধরার সম্ভাবনা থাকে। সাধারণত আমাদের যে ধরনের ঝি ঝি ধরার অভিজ্ঞতা হয়, তা সাময়িক এবং কিছুক্ষণের মধ্যেই ঠিক হয়ে যায়। তবে বিভিন্ন কারণে দীর্ঘ সময় ঝি ঝি ধরার মত ঘটনাও ঘটে থাকে। বিশেষ করে উচ্চ রক্তচাপের রোগীদের বা ডায়বেটিস আক্রান্ত রোগীদের ক্ষেত্রে দীর্ঘসময় কোনো একটি অঙ্গে অসাড়তা অনুভব করার ঘটনা ঘটতে পারে।

স্নায়ুরোগ বিশেষজ্ঞ এসএম সিয়াম হাসান বলেন, ‘মেরুদণ্ডে আঘাতজনিত সমস্যা থেকে ‘সার্ভাইকাল স্পন্ডাইোসিস’ বা ‘লাম্বার স্পন্ডাইলোসিস’-এর ক্ষেত্রে হাতে পায়ে ঝি ঝি ধরার আশঙ্কা থাকে।’ এছাড়া হাতে বা পায়ে রক্ত সঞ্চালন কমে গেলে পরিফেরাল আর্টারাল ডিজিজ হিসেবে ঝি ঝি ধরতে পারে। এ রকম ক্ষেত্রে শরীরের ওই অংশে রক্ত প্রবাহ কমে যাওয়ায় মাংসপেশী দুর্বল হয়ে যাওয়ার কারণে ঝি ঝি ধরে থাকে। ডায়বেটিসের কারণে ডায়বেটিক নিউরোপ্যাথি নামক একটি রোগ হয়, যার কারণে হাত পায়ে ঝি ঝি ধরে।

ঝি ঝি কেন ধরে: ঝি ঝি ধরার অনুভূতিটা আপাতদৃষ্টিতে কিছুটা রহস্যজনক মনে হলেও এর পেছনের বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যাটা খুবই সহজ। আমাদের দেহের সবখানেই অসংখ্য স্নায়ু রয়েছে; যেগুলো মস্তিষ্ক ও দেহের অন্যান্য অংশের মধ্যে তথ্য আদান-প্রদান করতে থাকে।
স্নায়ুরোগ বিশেষজ্ঞ এসএম সিয়াম হাসান বলেন, বসা বা শোয়ার সময় সেসব স্নায়ুর কোনো একটিতে চাপ পড়লে দেহের ওই অংশে রক্ত চলাচলকারী শিরার ওপরও চাপ পড়ে। ফলে শরীরের ওই অংশে রক্ত চলাচল ব্যাহত হয়। এর ফলে ঝি ঝি ধরতে পারে। স্নায়ুতে চাপ পড়ার ফলে শরীরের ওই অংশ থেকে যেসব তথ্য মস্তিষ্কে পৌঁছানোর কথা ছিল, তা বাধাগ্রস্থ হয়। একইসাথে স্নায়ুগুলোও হৃৎপিণ্ড থেকে অক্সিজেন সমৃদ্ধ রক্ত পাওয়া থেকে বিরত থাকে যেহেতু রক্ত সরবরাহকারী শিরার ওপর চাপ পড়ে। এ রকম পরিস্থিতি থেকে যখন চাপ অপসারিত হয়, তখন একসাথে প্রচুর পরিমাণ রক্ত অঙ্গ প্রত্যঙ্গে প্রবাহিত হয় এবং একসাথে প্রচুর পরিমাণ তথ্য মস্তিষ্কে প্রবাহিত হতে শুরু করে।
এই ঝি ঝি ধরা অনুভূতিটিকে তিন ধাপে বিভক্ত করা যায়।

প্রথমত, চাপ প্রয়োগ হওয়ার মিনিট খানেক পর তিন থেকে চার মিনিটের জন্য স্থায়ী হওয়া অস্বস্তিকর অনুভূতি, যেটিকে ‘কমপ্রেশন টিঙ্গলিং বলা হয়। এই অনুভূতিকে অনেকে এমনভাবে বর্ণনা করেছেন যেন, তাদের চামড়ার ভেতরের অংশে পিপড়া দৌড়াদৌড়ি করছিল।
দ্বিতীয় ধাপটি সাধারণত শুরু হয় দশ মিনিট পর। এই ধাপে হাতে বা পায়ে অসাড়তা বোধ হয় এবং যতক্ষণ স্নায়ুর ওপর চাপ থাকে ততক্ষণ এই অনুভূতি থাকে।

তৃতীয় ও শেষ ধাপটি শুরু হয় চাপ অপসারণ করার পর। এই অংশটিকেই ইংরেজিতে ‘পিনস অ্যান্ড নিডলস’ বলা হয়।
প্রথম দুই ধাপের তুলনায় এ ধাপটি অপেক্ষাকৃত বেশি যন্ত্রণাদায়ক। তবে সাধারণত এই ধাপে যন্ত্রণা বা ব্যাথার চেয়ে ভিন্ন ধরণের উত্তেজনা বোধ করে বলেই জানিয়েছেন অধিকাংশ মানুষ। কিছুটা ব্যথা বা যন্ত্রণার অনুভূতি থাকলেও তার পুরোটাই শারীরিক। এ অনুভূতি কিছুক্ষণের মধ্যেই স্তিমিত হয়ে গেলেও ঠিক কোন জায়গায় এই অনুভূতির সূচনা হয়েছিল বা কোথায় শেষ হয়, সেটি নির্দিষ্টভাবে বলতে পারে না মানুষ।
ঝি ঝি ধরলে সাময়িকভাবে অসাড় হয়ে যাওয়া অঙ্গটি টানটান করে রাখলে সাধারণত কিছুক্ষণের মধ্যে দ্রুত ঐ অঙ্গ স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে যায়।
দীর্ঘকালীন প্যারেসথেসিয়া: আমরা যেটিকে ঝি ঝি ধরা বলে থাকি সেটি সাধারণত কিছুক্ষণের মধ্যেই স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসে। তবে বিশেষ ক্ষেত্রে ওই একই ধরনের অনুভূতি লম্বা সময় স্থায়ী হতে পারে। যেসব ক্ষেত্রে এমনটি ঘটতে পারে, তা হলো কেমোথেরাপির মতো চিকিৎসার ক্ষেত্রে; এইচআইভির ওষুধ; খিঁচুনির ওষুধ বা বিভিন্ন ধরণের অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারের ফলে; সিসা বা রেডিয়েশনের মতো বিষাক্ত বস্তুর সংস্পর্শে এলে; পর্যাপ্ত পুষ্টিকর খাবারের অভাব হলে; স্নায়ু ক্ষতিগ্রস্ত হলে, বিশেষ করে কোনো অসুস্থতা বা আঘাতের পর; অতিরিক্ত মদ্যপানের ফলে; বিশেষ ক্ষেত্রে চেতনানাশক ব্যবহারের পর।

কখন চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন; দীর্ঘসময় ঝি ঝি ধরার মতো উপসর্গ থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া উচিত। এসএম সিয়াম হাসানের মতে, ঝি ঝি ধরার মতো উপসর্গ যদি দীর্ঘ সময় ধরে হতে থাকে তাহলে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া প্রয়োজন। এছাড়া কোনো অঙ্গে নিয়মিত ঝি ঝি ধরার ঘটনা ঘটলে বা বারবার ঝি ঝি ধরার ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটলেও চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া উচিত।