ঢাকা ০৯:৩২ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৮ মে ২০২৫

পাসপোর্টে আর পুলিশ ভেরিফিকেশন লাগবে না: প্রধান উপদেষ্টা

  • আপডেট সময় : ০৫:৩০:০০ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • ৬০ বার পড়া হয়েছে

ডিসি সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি সংগৃহীত

নিজস্ব প্রতিবেদক: পাসপোর্টের জন্য যে পুলিশি যাচাই ব্যবস্থা রয়েছে তা তুলে দেওয়ার কথা জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

তিনি বলেছেন, পাসপোর্ট করতে হলে পুলিশ ভেরিফিকেশন দরকার হয়। আমি জিজ্ঞেস করতে আরম্ভ করলাম, অনেকে হয়তো আগেও করেছে (যাচাইয়ের) কারণটা কী। পাসপোর্ট তো আমার নাগরিক অধিকারের একটা অধিকার। আমি চোর নাকি ডাকাত- সেটা ভিন্নভাবে পুলিশ আমাকে ভিন্নভাবে বিচার করবে।

কিন্তু আমাকে যে জন্মসনদ দিয়েছেন, সেটা কোনো পুলিশ ভেরিফিকেশন দিয়ে করেননি। আমাকে এনআইডি দিয়েছেন- সেটাও কোনো পুলিশ ভেরিফিকেশনের জন্য অপেক্ষা করতে হয়নি; নাগরিক হিসাবে পেয়েছি, এই দেশের নাগরিক। পাসপোর্টও এই দেশের নাগরিকের একটা পরিচয়পত্র। এখানে কোনো পুলিশ ভেরিফিকেশন লাগবে না।

রোববার (১৬ ফেব্রুয়ারি) তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের শাপলা হলে তিন দিনের ডিসি সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিচ্ছিলেন ইউনূস।

তিনি বলেন, আমরা আইন করে দিয়েছি, এখন থেকে পুলিশ ভেরিফিকেশন লাগবে না; সে কথাটা গ্রামেগঞ্জে গিয়েছে কি না।

এ সময় জেলা প্রশাসকরা হাততালি দিলে সরকারপ্রধান বলেন, তালি দেখে মনে হলো, এটা (বার্তা) পৌঁছে নাই। পৌঁছলে তো ‘এটা হ্যাঁ, আমরা জানি তো; এটা আবার বলার দরকার কী…’ আমার বলার কারণে তালি দেওয়ার অর্থ হলো- সুন্দর কাজ হয়েছে তো! তার মানে এ কথা পৌঁছে নাই।

অথচ আমরা এখানে সিদ্ধান্ত নিয়ে বসে আছি বেশ কিছুদিন আগে। এই যে দূরত্ব- এটাও যেন না থাকে। এগুলোর কোনো কারণ নেই; বিনা কারণে মানুষ হয়রানি করা; হয়রানি করাটাই যেন আমাদের ধর্ম। সরকার মানেই মানুষকে হয়রানি করা-এটার থেকে উল্টিয়ে দেওয়া। সরকার ভিন্ন জিনিস, অন্যের অধিকারগুলো দরজায় পৌঁছিয়ে দেওয়াই আমাদের কাজ, এটাই যেন আমরা স্মরণ করি।

জন্মনিবন্ধনের কোনো ‘বাবা-মা’ নেই: প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘অনেক সিদ্ধান্ত ঢাকা থেকে হয়। সেটা কীভাবে জেলা পর্যায়ে বাস্তবায়ন হয় জানা যায় না। যেমন- জন্মনিবন্ধন। এটার কোনো মা-বাবা আছে বলে মনে হয় না। নিয়ম আছে কিন্তু কোনো মা-বাবা নাই।’

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘মধ্য বয়সে কিংবা শেষ বয়সে কোথাও যাওয়া দরকার, পাসপোর্ট করা লাগবে, এজন্য জন্মনিবন্ধন লাগবে। সেই আমলে কে জন্মনিবন্ধন করতো জানা নেই। কিন্তু পাওয়া যায়, পয়সা দিলে ঠিকই চলে আসে। পয়সা দিলে যখন আসে, না দিলেও আসার কথা। এই সিস্টেম আমরা করতে পারছি না কেন, এটা তো আসলে নাগরিকদের অবশ্য প্রাপ্য। সরকার ব্যবস্থা করতে পারে নাই বলে অজুহাত দিলে তো চলবে না। নিশ্চয় ব্যবস্থা আছে। কাজেই আমাদের সে ব্যবস্থা করতে হবে। জন্মসনদ যে যেই বয়সেই চায় তাকে দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। বাংলাদশে জন্ম নেওয়ার দলিল জন্মসনদ। সেটা না হলে এনআইডি পাওয়া যাচ্ছে না, এনআইডি না হলে পাসপোর্ট পাওয়া যাচ্ছে না। রাতারাতি করে ফেলার আশাও আমি করছি না। শুরু তো করতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘পাসপোর্ট করতে পুলিশ ভেরিফিকেশন লাগবে কেন? এটা তো নাগরিক অধিকার। আমরা আইন করে দিয়েছি, এখন থেকে পুলিশ ভেরিফিকেশন লাগবে না। এই কথা গ্রামে পৌঁছাতে হবে। বিনা কারণে এগুলো হয়রানি করে মানুষকে। হয়রানি করা যেন আমাদের ধর্ম। সরকার মানেই হয়রানি করা, এটাকে উল্টে ফেলতে হবে।’

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

পাসপোর্টে আর পুলিশ ভেরিফিকেশন লাগবে না: প্রধান উপদেষ্টা

আপডেট সময় : ০৫:৩০:০০ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক: পাসপোর্টের জন্য যে পুলিশি যাচাই ব্যবস্থা রয়েছে তা তুলে দেওয়ার কথা জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

তিনি বলেছেন, পাসপোর্ট করতে হলে পুলিশ ভেরিফিকেশন দরকার হয়। আমি জিজ্ঞেস করতে আরম্ভ করলাম, অনেকে হয়তো আগেও করেছে (যাচাইয়ের) কারণটা কী। পাসপোর্ট তো আমার নাগরিক অধিকারের একটা অধিকার। আমি চোর নাকি ডাকাত- সেটা ভিন্নভাবে পুলিশ আমাকে ভিন্নভাবে বিচার করবে।

কিন্তু আমাকে যে জন্মসনদ দিয়েছেন, সেটা কোনো পুলিশ ভেরিফিকেশন দিয়ে করেননি। আমাকে এনআইডি দিয়েছেন- সেটাও কোনো পুলিশ ভেরিফিকেশনের জন্য অপেক্ষা করতে হয়নি; নাগরিক হিসাবে পেয়েছি, এই দেশের নাগরিক। পাসপোর্টও এই দেশের নাগরিকের একটা পরিচয়পত্র। এখানে কোনো পুলিশ ভেরিফিকেশন লাগবে না।

রোববার (১৬ ফেব্রুয়ারি) তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের শাপলা হলে তিন দিনের ডিসি সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিচ্ছিলেন ইউনূস।

তিনি বলেন, আমরা আইন করে দিয়েছি, এখন থেকে পুলিশ ভেরিফিকেশন লাগবে না; সে কথাটা গ্রামেগঞ্জে গিয়েছে কি না।

এ সময় জেলা প্রশাসকরা হাততালি দিলে সরকারপ্রধান বলেন, তালি দেখে মনে হলো, এটা (বার্তা) পৌঁছে নাই। পৌঁছলে তো ‘এটা হ্যাঁ, আমরা জানি তো; এটা আবার বলার দরকার কী…’ আমার বলার কারণে তালি দেওয়ার অর্থ হলো- সুন্দর কাজ হয়েছে তো! তার মানে এ কথা পৌঁছে নাই।

অথচ আমরা এখানে সিদ্ধান্ত নিয়ে বসে আছি বেশ কিছুদিন আগে। এই যে দূরত্ব- এটাও যেন না থাকে। এগুলোর কোনো কারণ নেই; বিনা কারণে মানুষ হয়রানি করা; হয়রানি করাটাই যেন আমাদের ধর্ম। সরকার মানেই মানুষকে হয়রানি করা-এটার থেকে উল্টিয়ে দেওয়া। সরকার ভিন্ন জিনিস, অন্যের অধিকারগুলো দরজায় পৌঁছিয়ে দেওয়াই আমাদের কাজ, এটাই যেন আমরা স্মরণ করি।

জন্মনিবন্ধনের কোনো ‘বাবা-মা’ নেই: প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘অনেক সিদ্ধান্ত ঢাকা থেকে হয়। সেটা কীভাবে জেলা পর্যায়ে বাস্তবায়ন হয় জানা যায় না। যেমন- জন্মনিবন্ধন। এটার কোনো মা-বাবা আছে বলে মনে হয় না। নিয়ম আছে কিন্তু কোনো মা-বাবা নাই।’

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘মধ্য বয়সে কিংবা শেষ বয়সে কোথাও যাওয়া দরকার, পাসপোর্ট করা লাগবে, এজন্য জন্মনিবন্ধন লাগবে। সেই আমলে কে জন্মনিবন্ধন করতো জানা নেই। কিন্তু পাওয়া যায়, পয়সা দিলে ঠিকই চলে আসে। পয়সা দিলে যখন আসে, না দিলেও আসার কথা। এই সিস্টেম আমরা করতে পারছি না কেন, এটা তো আসলে নাগরিকদের অবশ্য প্রাপ্য। সরকার ব্যবস্থা করতে পারে নাই বলে অজুহাত দিলে তো চলবে না। নিশ্চয় ব্যবস্থা আছে। কাজেই আমাদের সে ব্যবস্থা করতে হবে। জন্মসনদ যে যেই বয়সেই চায় তাকে দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। বাংলাদশে জন্ম নেওয়ার দলিল জন্মসনদ। সেটা না হলে এনআইডি পাওয়া যাচ্ছে না, এনআইডি না হলে পাসপোর্ট পাওয়া যাচ্ছে না। রাতারাতি করে ফেলার আশাও আমি করছি না। শুরু তো করতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘পাসপোর্ট করতে পুলিশ ভেরিফিকেশন লাগবে কেন? এটা তো নাগরিক অধিকার। আমরা আইন করে দিয়েছি, এখন থেকে পুলিশ ভেরিফিকেশন লাগবে না। এই কথা গ্রামে পৌঁছাতে হবে। বিনা কারণে এগুলো হয়রানি করে মানুষকে। হয়রানি করা যেন আমাদের ধর্ম। সরকার মানেই হয়রানি করা, এটাকে উল্টে ফেলতে হবে।’