ঢাকা ১২:০২ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদের উৎখাতে ট্রাম্পের পরিকল্পনা যুদ্ধ ঘোষণা

  • আপডেট সময় : ০৫:২৫:২৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • ৫ বার পড়া হয়েছে

বিদেশের খবর ডেস্ক: ফিলিস্তিনি গোষ্ঠীগুলো মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের গাজা দখল ও সেখানকার বাসিন্দাদের অন্যত্র স্থানান্তরের পরিকল্পনাকে ‘যুদ্ধ ঘোষণা’ বলে অভিহিত করেছে। তারা বলেছে, এই পরিকল্পনা ফিলিস্তিনিদের তাদের ভূমি থেকে উৎখাত করার লক্ষ্যে তৈরি করা হয়েছে। তুরস্কের সংবাদমাধ্যম টিআরটি ওয়ার্ল্ড এ খবর জানিয়েছে।

ফিলিস্তিনের বেশিরভাগ গোষ্ঠীর সমন্বয়ে গঠিত ন্যাশনাল অ্যান্ড ইসলামিক ফোর্সেস-এর ফলোআপ কমিটি এক বিবৃতিতে বলেছে, ট্রাম্পের সাম্প্রতিক বক্তব্য ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে আমেরিকা-ইহুদিবাদী অংশীদারত্বের আসল চেহারা তুলে ধরে।
কমিটি বলেছে, ট্রাম্পের এই পরিকল্পনা ফিলিস্তিনি জনগণকে গাজা থেকে উৎখাত করার একটি নতুন যুদ্ধ ঘোষণা।
ফিলিস্তিনি গোষ্ঠীগুলো আগামী ২৭ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া আরব শীর্ষ সম্মেলনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে, তারা যেন ট্রাম্পের এই অপরাধমূলক পরিকল্পনা বন্ধে কার্যকর ও প্রত্যক্ষ ভূমিকা রাখে। তারা বলেছে, গাজা, পশ্চিম তীর এবং ইসরায়েলের ভেতরে ফিলিস্তিনি জনগণের দৃঢ়তা ও প্রতিরোধ শক্তিশালী করতে রাজনৈতিক ও বস্তুগত সমর্থন প্রয়োজন।

রোববার এয়ার ফোর্স ওয়ানে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলার সময় ট্রাম্প বলেছিলেন, তিনি গাজা কিনে সেটির মালিকানা নেওয়ার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তিনি প্রস্তাব দিয়েছিলেন, গাজার কিছু অংশ মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য দেশগুলিকে পুনর্গঠনের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হোক।
ট্রাম্পের হুমকি ‘মূল্যহীন’: মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের এই বক্তব্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়, সব আরব দেশ এবং অনেক ইউরোপীয় দেশ দ্বারা ব্যাপকভাবে প্রত্যাখ্যান হয়েছে। হামাসের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেছেন, ট্রাম্পকে মনে রাখতে হবে যে ইসরায়েলি জিম্মিদের ফিরিয়ে আনার একমাত্র উপায় হলো ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতিকে সম্মান করা।

হামাসের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা সামি আবু জুহরি রয়টার্সকে বলেন, ট্রাম্পকে মনে রাখতে হবে যে একটি চুক্তি রয়েছে, যা উভয় পক্ষকে মেনে চলতে হবে এবং এটি জিম্মিদের ফিরিয়ে আনার একমাত্র উপায়। হুমকির ভাষার কোনো মূল্য নেই এবং এটি শুধু বিষয়গুলোকে জটিল করে তোলে।
গাজায় ১৯ জানুয়ারি থেকে একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তি কার্যকর রয়েছে; যা ইসরায়েলের গণহত্যামূলক যুদ্ধকে থামিয়েছে। এই যুদ্ধে ৪৮ হাজার ২০০ মানুষ নিহত হয়েছে এবং গাজাকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে।

গত নভেম্বরে আন্তর্জাতিক ফৌজদারি আদালত (আইসিসি) গাজায় যুদ্ধাপরাধ ও মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের জন্য ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং তার সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে। এ ছাড়া গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধের জন্য আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার আদালতেও (আইসিজে) গণহত্যার মামলা চলছে।
ফিলিস্তিনি নেতারা আশা করছেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের চাপে ট্রাম্পের এই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন বন্ধ হবে এবং ফিলিস্তিনি জনগণের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে।

 

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদের উৎখাতে ট্রাম্পের পরিকল্পনা যুদ্ধ ঘোষণা

আপডেট সময় : ০৫:২৫:২৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

বিদেশের খবর ডেস্ক: ফিলিস্তিনি গোষ্ঠীগুলো মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের গাজা দখল ও সেখানকার বাসিন্দাদের অন্যত্র স্থানান্তরের পরিকল্পনাকে ‘যুদ্ধ ঘোষণা’ বলে অভিহিত করেছে। তারা বলেছে, এই পরিকল্পনা ফিলিস্তিনিদের তাদের ভূমি থেকে উৎখাত করার লক্ষ্যে তৈরি করা হয়েছে। তুরস্কের সংবাদমাধ্যম টিআরটি ওয়ার্ল্ড এ খবর জানিয়েছে।

ফিলিস্তিনের বেশিরভাগ গোষ্ঠীর সমন্বয়ে গঠিত ন্যাশনাল অ্যান্ড ইসলামিক ফোর্সেস-এর ফলোআপ কমিটি এক বিবৃতিতে বলেছে, ট্রাম্পের সাম্প্রতিক বক্তব্য ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে আমেরিকা-ইহুদিবাদী অংশীদারত্বের আসল চেহারা তুলে ধরে।
কমিটি বলেছে, ট্রাম্পের এই পরিকল্পনা ফিলিস্তিনি জনগণকে গাজা থেকে উৎখাত করার একটি নতুন যুদ্ধ ঘোষণা।
ফিলিস্তিনি গোষ্ঠীগুলো আগামী ২৭ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া আরব শীর্ষ সম্মেলনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে, তারা যেন ট্রাম্পের এই অপরাধমূলক পরিকল্পনা বন্ধে কার্যকর ও প্রত্যক্ষ ভূমিকা রাখে। তারা বলেছে, গাজা, পশ্চিম তীর এবং ইসরায়েলের ভেতরে ফিলিস্তিনি জনগণের দৃঢ়তা ও প্রতিরোধ শক্তিশালী করতে রাজনৈতিক ও বস্তুগত সমর্থন প্রয়োজন।

রোববার এয়ার ফোর্স ওয়ানে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলার সময় ট্রাম্প বলেছিলেন, তিনি গাজা কিনে সেটির মালিকানা নেওয়ার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তিনি প্রস্তাব দিয়েছিলেন, গাজার কিছু অংশ মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য দেশগুলিকে পুনর্গঠনের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হোক।
ট্রাম্পের হুমকি ‘মূল্যহীন’: মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের এই বক্তব্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়, সব আরব দেশ এবং অনেক ইউরোপীয় দেশ দ্বারা ব্যাপকভাবে প্রত্যাখ্যান হয়েছে। হামাসের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেছেন, ট্রাম্পকে মনে রাখতে হবে যে ইসরায়েলি জিম্মিদের ফিরিয়ে আনার একমাত্র উপায় হলো ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতিকে সম্মান করা।

হামাসের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা সামি আবু জুহরি রয়টার্সকে বলেন, ট্রাম্পকে মনে রাখতে হবে যে একটি চুক্তি রয়েছে, যা উভয় পক্ষকে মেনে চলতে হবে এবং এটি জিম্মিদের ফিরিয়ে আনার একমাত্র উপায়। হুমকির ভাষার কোনো মূল্য নেই এবং এটি শুধু বিষয়গুলোকে জটিল করে তোলে।
গাজায় ১৯ জানুয়ারি থেকে একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তি কার্যকর রয়েছে; যা ইসরায়েলের গণহত্যামূলক যুদ্ধকে থামিয়েছে। এই যুদ্ধে ৪৮ হাজার ২০০ মানুষ নিহত হয়েছে এবং গাজাকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে।

গত নভেম্বরে আন্তর্জাতিক ফৌজদারি আদালত (আইসিসি) গাজায় যুদ্ধাপরাধ ও মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের জন্য ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং তার সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে। এ ছাড়া গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধের জন্য আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার আদালতেও (আইসিজে) গণহত্যার মামলা চলছে।
ফিলিস্তিনি নেতারা আশা করছেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের চাপে ট্রাম্পের এই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন বন্ধ হবে এবং ফিলিস্তিনি জনগণের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে।