ঢাকা ০৩:১৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

অন্তর্বর্তী সরকার আইনি দলিল ও জনগণের ইচ্ছা দিয়ে সমর্থিত: হাইকোর্ট

  • আপডেট সময় : ০৮:২৩:২৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • ৭ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : অন্তর্র্বতী সরকার আইনি দলিল দিয়ে সমর্থিত, বাংলাদেশের জনগণের ইচ্ছা দিয়ে সমর্থিত— বলে পূর্ণাঙ্গ আদেশে উল্লেখ করেছেন হাইকোর্ট। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর অন্তর্র্বতী সরকার গঠন বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের কাছে পাঠানো রেফারেন্স ও মতামত প্রক্রিয়া নিয়ে করা রিট সরাসরি খারিজের পূর্ণাঙ্গ আদেশে হাইকোর্ট এমন মন্তব্য করেন। চলতি বছরের ১৩ জানুয়ারি বিচারপতি ফাতেমা নজীব ও বিচারপতি শিকদার মাহমুদুর রাজীর হাইকোর্ট বেঞ্চের দেওয়া রায় সম্প্রতি প্রকাশ করা হয়। সুপ্রিম কোর্টের এক আইনজীবীর করা রিটে এ রায় দেন আদালত। গত বছরের ৫ আগস্ট পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যান তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

৬ আগস্ট রাষ্ট্রপতি সংসদ ভেঙে দেন এবং রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন অন্তর্র্বতী সরকার গঠন বিষয়ে সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী সুপ্রিম কোর্টের কাছে মতামত চেয়ে রেফারেন্স পাঠান। সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদে সুপ্রিম কোর্টের উপদেষ্টামূলক এখতিয়ারের বিষয়ে বলা আছে। অনুচ্ছেদটি বলছে, যদি কোনো সময়ে রাষ্ট্রপতির কাছে প্রতীয়মান হয় যে আইনের এমন কোনো প্রশ্ন উত্থাপিত হয়েছে বা উত্থাপনের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে, যা এমন ধরনের ও এমন জনগুরুত্বসম্পন্ন যে, সেই সম্পর্কে সুপ্রিম কোর্টের মতামত নেওয়া প্রয়োজন, তাহলে তিনি (রাষ্ট্রপতি) প্রশ্নটি আপিল বিভাগের বিবেচনার জন্য পাঠাতে পারবেন এবং ওই বিভাগ স্বীয় বিবেচনায় উপযুক্ত শুনানির পর প্রশ্নটি সম্পর্কে রাষ্ট্রপতিকে স্বীয় মতামত জানাতে পারবেন। রাষ্ট্রপতির বিশেষ রেফারেন্সের (১/২৪) পরিপ্রেক্ষিতে তৎকালীন প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন সাত সদস্যের আপিল বিভাগ গত বছরের ৮ আগস্ট মতামত দেন।

অ্যাটর্নি জেনারেলের বক্তব্য শোনা হয়। মতামতে বলা হয়, রাষ্ট্রের সাংবিধানিক শূন্যতা পূরণে জরুরি প্রয়োজনে রাষ্ট্রপতি রাষ্ট্রের নির্বাহী কার্য পরিচালনার জন্য অন্তর্র্বতী ব্যবস্থা হিসেবে প্রধান উপদেষ্টা ও অন্যান্য উপদেষ্টা নিযুক্ত করতে পারবেন। রাষ্ট্রপতি সেভাবে নিযুক্ত প্রধান উপদেষ্টা ও অন্যান্য উপদেষ্টাদের শপথ পাঠ করাতে পারবেন। এর বৈধতা নিয়ে আইনজীবী মোহাম্মদ মহসিন রশিদ গত বছরের ডিসেম্বরে একটি রিট করেন। রিট খারিজ করে হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ আদেশে বলা হয়, বর্তমান অন্তর্র্বতী সরকার কোনো আইনি দলিল দিয়ে সমর্থিত নয় বলে রিট আবেদনকারীর বক্তব্যে এসেছে। উল্লেখ করা প্রাসঙ্গিক যে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি এক অনন্য পরিস্থিতিতে সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদ অনুয়ায়ী উপদেষ্টামূলক মতামত নেন, মতামত অনুযায়ী কাজ করেন। তাই এটি আইনি দলিল দিয়ে সমর্থিত, বাংলাদেশের জনগণের ইচ্ছা দিয়ে সমর্থিত। পূর্ণাঙ্গ আদেশে আরও বলা হয়, ‘২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে যে গণ-অভ্যুত্থান হয়েছিল, তা আমাদের ইতিহাসের অংশ এবং আশা করি আগামী বহু বছর ধরে জনগণ যত্নে থাকবে। ’

রিটটি ভ্রান্ত ধারণা, বিদ্বেষপ্রসূত ও হয়রানিমূলক বলে উল্লেখ করে তা সরাসরি খারিজ করা হয়। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মহসিন রশিদ । সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী এস এম মনিরুল আলম। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অনীক আর হক। সঙ্গে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আখতার হোসেন মো. আবদুল ওয়াহাব।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

আয়নাঘরের পরতে পরতে নির্যাতনের চিহ্ন

অন্তর্বর্তী সরকার আইনি দলিল ও জনগণের ইচ্ছা দিয়ে সমর্থিত: হাইকোর্ট

আপডেট সময় : ০৮:২৩:২৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক : অন্তর্র্বতী সরকার আইনি দলিল দিয়ে সমর্থিত, বাংলাদেশের জনগণের ইচ্ছা দিয়ে সমর্থিত— বলে পূর্ণাঙ্গ আদেশে উল্লেখ করেছেন হাইকোর্ট। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর অন্তর্র্বতী সরকার গঠন বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের কাছে পাঠানো রেফারেন্স ও মতামত প্রক্রিয়া নিয়ে করা রিট সরাসরি খারিজের পূর্ণাঙ্গ আদেশে হাইকোর্ট এমন মন্তব্য করেন। চলতি বছরের ১৩ জানুয়ারি বিচারপতি ফাতেমা নজীব ও বিচারপতি শিকদার মাহমুদুর রাজীর হাইকোর্ট বেঞ্চের দেওয়া রায় সম্প্রতি প্রকাশ করা হয়। সুপ্রিম কোর্টের এক আইনজীবীর করা রিটে এ রায় দেন আদালত। গত বছরের ৫ আগস্ট পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যান তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

৬ আগস্ট রাষ্ট্রপতি সংসদ ভেঙে দেন এবং রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন অন্তর্র্বতী সরকার গঠন বিষয়ে সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী সুপ্রিম কোর্টের কাছে মতামত চেয়ে রেফারেন্স পাঠান। সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদে সুপ্রিম কোর্টের উপদেষ্টামূলক এখতিয়ারের বিষয়ে বলা আছে। অনুচ্ছেদটি বলছে, যদি কোনো সময়ে রাষ্ট্রপতির কাছে প্রতীয়মান হয় যে আইনের এমন কোনো প্রশ্ন উত্থাপিত হয়েছে বা উত্থাপনের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে, যা এমন ধরনের ও এমন জনগুরুত্বসম্পন্ন যে, সেই সম্পর্কে সুপ্রিম কোর্টের মতামত নেওয়া প্রয়োজন, তাহলে তিনি (রাষ্ট্রপতি) প্রশ্নটি আপিল বিভাগের বিবেচনার জন্য পাঠাতে পারবেন এবং ওই বিভাগ স্বীয় বিবেচনায় উপযুক্ত শুনানির পর প্রশ্নটি সম্পর্কে রাষ্ট্রপতিকে স্বীয় মতামত জানাতে পারবেন। রাষ্ট্রপতির বিশেষ রেফারেন্সের (১/২৪) পরিপ্রেক্ষিতে তৎকালীন প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন সাত সদস্যের আপিল বিভাগ গত বছরের ৮ আগস্ট মতামত দেন।

অ্যাটর্নি জেনারেলের বক্তব্য শোনা হয়। মতামতে বলা হয়, রাষ্ট্রের সাংবিধানিক শূন্যতা পূরণে জরুরি প্রয়োজনে রাষ্ট্রপতি রাষ্ট্রের নির্বাহী কার্য পরিচালনার জন্য অন্তর্র্বতী ব্যবস্থা হিসেবে প্রধান উপদেষ্টা ও অন্যান্য উপদেষ্টা নিযুক্ত করতে পারবেন। রাষ্ট্রপতি সেভাবে নিযুক্ত প্রধান উপদেষ্টা ও অন্যান্য উপদেষ্টাদের শপথ পাঠ করাতে পারবেন। এর বৈধতা নিয়ে আইনজীবী মোহাম্মদ মহসিন রশিদ গত বছরের ডিসেম্বরে একটি রিট করেন। রিট খারিজ করে হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ আদেশে বলা হয়, বর্তমান অন্তর্র্বতী সরকার কোনো আইনি দলিল দিয়ে সমর্থিত নয় বলে রিট আবেদনকারীর বক্তব্যে এসেছে। উল্লেখ করা প্রাসঙ্গিক যে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি এক অনন্য পরিস্থিতিতে সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদ অনুয়ায়ী উপদেষ্টামূলক মতামত নেন, মতামত অনুযায়ী কাজ করেন। তাই এটি আইনি দলিল দিয়ে সমর্থিত, বাংলাদেশের জনগণের ইচ্ছা দিয়ে সমর্থিত। পূর্ণাঙ্গ আদেশে আরও বলা হয়, ‘২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে যে গণ-অভ্যুত্থান হয়েছিল, তা আমাদের ইতিহাসের অংশ এবং আশা করি আগামী বহু বছর ধরে জনগণ যত্নে থাকবে। ’

রিটটি ভ্রান্ত ধারণা, বিদ্বেষপ্রসূত ও হয়রানিমূলক বলে উল্লেখ করে তা সরাসরি খারিজ করা হয়। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মহসিন রশিদ । সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী এস এম মনিরুল আলম। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অনীক আর হক। সঙ্গে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আখতার হোসেন মো. আবদুল ওয়াহাব।