মির্জাপুর (টাঙ্গাইল) সংবাদদাতা : টাঙ্গাইলের মির্জাপুর পৌর সদরের কলেজ রোডের ৫০ বছরের পুরোনো শহীদ মিনারটি অযত্ন-অবহেলা ও অরিক্ষত অবস্থায় পড়ে আছে। রক্ষণাবেক্ষণ না থাকায় শহীদ মিনারটি একপাশের লোহার রেলিং ভেঙে পড়ে আছে। ঐতিহ্যবাহী এ শহীদ মিনারের যথাযথ মর্যাদা, পবিত্রতা ও ভাবগাম্ভীর্য রক্ষা না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন মির্জাপুরের বীর মুক্তিযোদ্ধাসহ সাধারণ মানুষ।
জানা গেছে, ১৯৫২ সালে ২১ ফেব্ররুয়ারি ভাষা আন্দোলনে নিহতদের স্মরণে শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য ৫০ বছর আগে উপজেলা সদরের কলেজ রোডে ওই শহীদ মিনারটি নির্মাণ করা হয়। নির্মাণের পর থেকে প্রতি বছর ২১ ফেব্রুয়ারি উপজেলা প্রশাসন, রাজনৈতিক দল, সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনসহ শ্রেণি পেশার মানুষ এই শহীদ মিনারে ভাষা শহীদদের স্মরণে ফুলের শ্রদ্ধা নিবেদন করে থাকে। কিন্ত ২০২৩ সালের ১৫ ফ্রেরুয়ারি মির্জাপুর পুরাতন বাসস্ট্যান্ডে নতুন একটি শহীদ মিনার নির্মাণ করেন তৎকালীন সংসদ সদস্য খান আহমেদ শুভ। এরপর থেকে ২১ ফেব্রয়ারি পুরাতন বাসস্ট্যান্ডে নির্মিত শহীদ মিনারে উপজেলা প্রশাসন, রাজনৈতিক দল, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন ও শ্রেণি পেশার মানুষ ওই শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করে থাকে। তারপর থেকে অরক্ষিত হয়ে পড়ে আছে পুরোনো শহীদ মিনারটি। মূল বেদিতে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়ে থাকে নোংরা ময়লা-আবর্জনা, সিগারেটের প্যাকেটসহ অসংখ্য উচ্ছিষ্ট অংশ। আর ময়লা-আবর্জনায় ভরে থাকে চারপাশ। লোহার রেলিং দিয়ে চারপাশে ঘেরাও করা থাকলেও গত কয়েক দিন আগে কে বা কারা রেলিংয়ের একপাশে ভেঙে ফেলে।
সচেতন মহলের দাবি শহীদ মিনারটি বিলুপ্ত করা হোক। অথবা রক্ষণাবেক্ষণ করে এটির সম্মান ও পবিত্রতা রক্ষা করা হোক। মির্জাপুর বাজার বণিক সমিতির সভাপতি গোলাম ফারুক সিদ্দিকী প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট মহলের কাছে দাবি করে বলেন, তারা যেন শহীদ মিনারের মর্যাদা ও পবিত্রতা রক্ষায় জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। মির্জাপুর সরকারি ডিগ্রি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ বীর মুক্তিযোদ্ধা সালাহ উদ্দিন আহমেদ বাবর বলেন, যেহেতু নতুন একটি শহীদ মিনার নির্মাণ করা হয়েছে এবং প্রতি বছর সেখানেই শহীদদের শ্রদ্ধা জানানো হয়। পবিত্রতা ও মর্যাদার কথা চিন্তা করে পুরাতন শহীদ মিনারটি বিলুপ্ত ঘোষণা করে সৌন্দর্য বর্ধনে নতুন কিছু করা যেতে পারে। মির্জাপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) এ.বি.এম আরিফুল ইসলাম বলেন, পৌরসভার সঙ্গে কথা বলে শহীদ মিনারটির যাতে পরিস্কার পরিচ্ছন্ন থাকে এবং পবিত্রতা রক্ষা পায় সে বিষয়ে পদক্ষেপ নেয়া হবে।