ঢাকা ০২:১০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১১ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

রংপুরে মা-মেয়েকে নৃশংসভাবে হত্যা: ‘ঘাতকের’ বাড়ি পুড়িয়ে দিলো স্থানীয়রা

  • আপডেট সময় : ০৮:৪৬:১৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ১০ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • ১০ বার পড়া হয়েছে

গত রোববার বাড়িটিতে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটে

রংপুর প্রতিনিধি: রংপুরের পীরগঞ্জে মা এবং মেয়েকে নৃশংসভাবে হত্যার ঘটনায় বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী অভিযুক্ত ঘাতক আতিকুল ইসলামের বাড়িতে হামলা চালিয়ে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে। এতে পুরো বাড়ি আগুনে ভস্মিভূত হয়েছে।

গত রোববার (৯ ফেব্রুয়ারি) সকালে বাড়িটিতে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটে। পীরগঞ্জ থানার ওসি এম এ ফারুখ ও পীরগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস ইনচার্জ মোকলেসুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

গত ৭ ফেব্রুয়ারি দুপুরে পীরগঞ্জ উপজেলার চতরা ইউনিয়নের বড় বদনাপাড়া গ্রামে একটি মরিচক্ষেত থেকে মাথাবিহীন এক নারীর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে এলাকাবাসীসহ বিভিন্ন মাধ্যমে নিশ্চিত হয় মাথাবিহীন নারীর নাম দেলোয়ারা বেগম তিনি নীলফামারী জেলার জলঢাকা উপজেলার বাসিন্দা। তার বিয়ে হয়েছিল গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে। পরবর্তী সময়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বিচ্ছেদ হয়।

পুলিশ বলছে, দেলোয়ারা বেগমের সঙ্গে ঘাতক পীরগঞ্জ উপজেলার বদনাপাড়া গ্রামের আতিকুল ইসলামের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। তারা দুজনেই স্থানীয় একটি যাত্রা দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিল। তারা বিভিন্ন অনুষ্ঠানে গানবাজনা করতেন।

দেলোয়ারা বেগমকে হত্যার দেড়মাস আগে তার ৫ বছরের শিশু কন্যাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে লাশ মাটিতে পুঁতে রাখা হয়েছিল বলেও জানিয়েছে পুলিশ।

রোববার (৯ ফেব্রুয়ারি) সকালে শিশু সায়মার মরদেহ উদ্ধারের পর বাড়িতে আগুন লাগিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়। এ ঘটনার পর পুলিশ ঘাতক আতিকুল ইসলামকে গ্রেফতার করলে সে পুলিশের কাছে অকপটে দেলোয়ারা বেগম ও তার মিশু কন্যা সায়মাকেও হত্যার কথা স্বীকার করে।

পরে তার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির ওপর ভিত্তি করে ঘাতক আতিকুল ইসলামের বাড়ির কাছে একটি বাগানে মাটিতে পুঁতে রাখা শিশু সায়মার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। সেই সঙ্গে নিহত দেলোয়ারা বেগমের মাথা পীরগঞ্জ উপজেলার করতোয়া নদীর কাছে টোংরাদহ গ্রাম থেকে মাটিতে পুঁতে রাখা অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।

এ ব্যাপারে পীরগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের ইনচার্জ মোকলেছুর রহমান জানান, আগুন লাগার খবর পেয়ে তিনি তাদের সহকর্মীদের নিয়ে ঘটনাস্থল গিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু তার আগেই তিনটি ঘরসহ পুরো বাড়িঘর ভস্মিভূত হয়।

সার্বিক বিষয়ে জানতে পীরগঞ্জ থানার ওসি এম এ ফারুখের সঙ্গে গত রোববার রাতে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, অভিযুক্ত আতিকুল ইসলামের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী ওই নারীর শরীর থেকে খণ্ডিত মাথাও উদ্ধার করা হয়েছে। সেইসঙ্গে দেলোয়ারা বেগমের ৫ বছর বয়সী শিশু কন্যা সায়মার লাশও উদ্ধার করা হয়।

তবে আতিকুল কেন তার কথিত প্রেমিকা দেলোয়ারা বেগম ও তার মেয়ে সায়মাকে নৃশংসভাবে হত্যা করলো, তা জানতে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। মা ও মেয়ে হত্যার ঘটনায় থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে বলেও জানান ওসি।

 

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

মব বন্ধ না করলে ডেভিল হিসেবে ট্রিট করবো: উপদেষ্টা মাহফুজ

রংপুরে মা-মেয়েকে নৃশংসভাবে হত্যা: ‘ঘাতকের’ বাড়ি পুড়িয়ে দিলো স্থানীয়রা

আপডেট সময় : ০৮:৪৬:১৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ১০ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

রংপুর প্রতিনিধি: রংপুরের পীরগঞ্জে মা এবং মেয়েকে নৃশংসভাবে হত্যার ঘটনায় বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী অভিযুক্ত ঘাতক আতিকুল ইসলামের বাড়িতে হামলা চালিয়ে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে। এতে পুরো বাড়ি আগুনে ভস্মিভূত হয়েছে।

গত রোববার (৯ ফেব্রুয়ারি) সকালে বাড়িটিতে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটে। পীরগঞ্জ থানার ওসি এম এ ফারুখ ও পীরগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস ইনচার্জ মোকলেসুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

গত ৭ ফেব্রুয়ারি দুপুরে পীরগঞ্জ উপজেলার চতরা ইউনিয়নের বড় বদনাপাড়া গ্রামে একটি মরিচক্ষেত থেকে মাথাবিহীন এক নারীর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে এলাকাবাসীসহ বিভিন্ন মাধ্যমে নিশ্চিত হয় মাথাবিহীন নারীর নাম দেলোয়ারা বেগম তিনি নীলফামারী জেলার জলঢাকা উপজেলার বাসিন্দা। তার বিয়ে হয়েছিল গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে। পরবর্তী সময়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বিচ্ছেদ হয়।

পুলিশ বলছে, দেলোয়ারা বেগমের সঙ্গে ঘাতক পীরগঞ্জ উপজেলার বদনাপাড়া গ্রামের আতিকুল ইসলামের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। তারা দুজনেই স্থানীয় একটি যাত্রা দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিল। তারা বিভিন্ন অনুষ্ঠানে গানবাজনা করতেন।

দেলোয়ারা বেগমকে হত্যার দেড়মাস আগে তার ৫ বছরের শিশু কন্যাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে লাশ মাটিতে পুঁতে রাখা হয়েছিল বলেও জানিয়েছে পুলিশ।

রোববার (৯ ফেব্রুয়ারি) সকালে শিশু সায়মার মরদেহ উদ্ধারের পর বাড়িতে আগুন লাগিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়। এ ঘটনার পর পুলিশ ঘাতক আতিকুল ইসলামকে গ্রেফতার করলে সে পুলিশের কাছে অকপটে দেলোয়ারা বেগম ও তার মিশু কন্যা সায়মাকেও হত্যার কথা স্বীকার করে।

পরে তার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির ওপর ভিত্তি করে ঘাতক আতিকুল ইসলামের বাড়ির কাছে একটি বাগানে মাটিতে পুঁতে রাখা শিশু সায়মার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। সেই সঙ্গে নিহত দেলোয়ারা বেগমের মাথা পীরগঞ্জ উপজেলার করতোয়া নদীর কাছে টোংরাদহ গ্রাম থেকে মাটিতে পুঁতে রাখা অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।

এ ব্যাপারে পীরগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের ইনচার্জ মোকলেছুর রহমান জানান, আগুন লাগার খবর পেয়ে তিনি তাদের সহকর্মীদের নিয়ে ঘটনাস্থল গিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু তার আগেই তিনটি ঘরসহ পুরো বাড়িঘর ভস্মিভূত হয়।

সার্বিক বিষয়ে জানতে পীরগঞ্জ থানার ওসি এম এ ফারুখের সঙ্গে গত রোববার রাতে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, অভিযুক্ত আতিকুল ইসলামের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী ওই নারীর শরীর থেকে খণ্ডিত মাথাও উদ্ধার করা হয়েছে। সেইসঙ্গে দেলোয়ারা বেগমের ৫ বছর বয়সী শিশু কন্যা সায়মার লাশও উদ্ধার করা হয়।

তবে আতিকুল কেন তার কথিত প্রেমিকা দেলোয়ারা বেগম ও তার মেয়ে সায়মাকে নৃশংসভাবে হত্যা করলো, তা জানতে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। মা ও মেয়ে হত্যার ঘটনায় থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে বলেও জানান ওসি।