ঢাকা ০৯:৫৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫

জাপান দেবে যানবাহনে সৃষ্ট বায়ুদূষণ পরিমাপে ঋণ

  • আপডেট সময় : ০৪:৩৬:১১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • ৯৫ বার পড়া হয়েছে

অর্থনৈতিক ডেস্ক: ঢাকা এবং চট্টগ্রাম নগরীর বায়ুদূষণের উন্নতম কারণ ইঞ্জিনচালিত পরিবহন। এসব পরিবহন দুই নগরীকে কি পরিমাণে দূষিত করছে তা পরিমাপের জন্য দুই শহরের সড়কের পাশে বসবে আধুনিক জাপানি প্রযুক্তি। এক একটি যন্ত্র কিনতে সরকারের খরচ হবে সাড়ে ৭ কোটি টাকার উপরে। এই আধুনিক যন্ত্রের নাম দেয়া হয়েছে এয়ার কোয়ালিটি স্টেশন। এই জন্য জাপান ও বাংলাদেশের মধ্যে একটি চুক্তিসই হয়েছে। প্রকল্প বাস্তবায়নে ৬৪ কোটি ৮৭ লাখ টাকা অনুদান দেবে জাপান।
সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগে বাংলাদেশ ও জাপান সরকারের মধ্যে ‘বিনিময় নোট’ ও ‘অনুদান চুক্তি’ স্বাক্ষরিত হয়। বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব মো. শাহ্রিয়ার কাদের ছিদ্দিকী ‘বিনিময় নোট’ ও ‘অনুদান চুক্তি’ সই করেন। জাপান সরকারের পক্ষে বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত সাইদা শিনচি ‘বিনিময় নোট’ এবং ঢাকায় নিযুক্ত জাইকা’র চিফ রিপ্রেজেন্টেটিভ ইচিগুচি তোমোহিদি ‘অনুদান চুক্তি’ স্বাক্ষর করেন।
প্রকল্পটি পরিবেশ অধিদপ্তর কর্তৃক মার্চ ২০২৫ থেকে জুন ২০২৮ মেয়াদে বাস্তবায়ন করা হবে। প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য হলো ঢাকা ও চট্টগ্রামে যানবাহন থেকে নির্গত দূষিত বায়ুর প্রভাব বিশ্লেষণের জন্য কন্টিনিউয়াস এয়ার মনিটরিং স্টেশন স্থাপন করা। স্টেশন স্থাপনের মাধ্যমে যানবাহনের নির্গমন থেকে উদ্ভূত বায়ু দূষণকারী উপাদান পরিমাপ ও বিশ্লেষণ করা যাবে।
পরিবেশ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, ‘দ্য প্রজেক্ট ফর ইম্প্রুভমেন্ট অব ইক্যুইপমেন্ট ফর এয়ার পলুশন মনিটরিং প্রকল্পের আওতায় এমন উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। মোট ৮টি জাপানি প্রযুক্তির যন্ত্র স্থাপন করা হবে। রাজধানীর উত্তরার হাউজবিল্ডি, বনানী, রামপুরা, যাত্রাবাড়ী ও ধানমন্ডির সড়কের পাশে এই স্টেশন স্থাপন করা হবে। অন্যদিকে চট্টগ্রামের সিডিএ(চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ) এবং বিএসআইর (বাংলাদেশ সেমিকন্ডাক্টর ইন্ডাস্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন) জমিতে দুটি স্টেশন স্থাপন করা হবে। একটি স্টেশনে থাকবে ভ্রাম্যমাণ আদালত। যানবাহন যে সব এলাকায় বেশি সেই সব এলাকায় এটা টহল দেবে। এসব যন্ত্রপাতি ২৪ ঘণ্টা বায়ুর মান দেবে এবং পরিবহন কি পরিমাণে দুই নগরীর দূষণ বাড়াছে তার তথ্য দেবে।
পরিবেশ অধিদপ্তর জানায়, আধুনিক যন্ত্র ২৪ ঘণ্টা ডাটা সরবরাহ করবে। কোন পরিবহন কি পরিমাণে দূষণ করছে। দূষণ রোধে সরকারের করণীয় বিষয়ও নির্ধারণ হবে এর মাধ্যমে। দূষণরোধে পরিবহন খাত পরিবর্তন ও আধুনিকতায় করণীয় বিষয়ে অবগত হতে পারবে সরকার। এরপরে পরিবহন খাতকে ঢেলে সাজাতে পারবে সরকার। পরিবহন খাতে বড় আকারে বিনিয়োগও করতে চায় জাপান। ২০২৫-২৬ অর্থবছরে জাপানি প্রযুক্তি স্থাপনের পর এগুলো ১০ বছর সেবা দেবে।
প্রকল্পের প্রাক্কলিত মোট ব্যয় ১০৮ কোটি ৯৫ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারি অর্থায়ন ৪১ কোটি ১১ লাখ টাকা এবং জাপানি অনুদান ৬৭ কোটি ৮৪ লাখ টাকা। এ প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে রাস্তার পাশের বায়ুর মান পর্যবেক্ষণ করা এবং সড়ক ও পরিবহন সম্পর্কিত দূষণে অবদান মূল্যায়ন করা।
নতুন একটি প্রকল্পের আওতায় পরিবহন থেকে বায়ুদূষণের মাত্রা নিরুপণের জন্য দুটি শহরের রোডসাইড মনিটরিং স্টেশন স্থাপন করা হবে এবং বায়ুদূষণ কমানোর জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। যন্ত্রপাতিগুলো জাপান থেকে আমদানি করা হবে। পরিবহন ছাড়াও অন্যান্য যেসব কারণে বায়ুদূষণ হয় তা নিরুপণ করা এবং বায়ুদূষণের ফলে মানব স্বাস্থ্যের উপর যে প্রতিকূল প্রভাব পড়ে তা নিরুপণ করাসহ বায়ুদূষণ সংক্রান্ত অন্যান্য চ্যালেঞ্জসমূহ চিহ্নিত করে তা সমাধানের কৌশল এবং কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে। প্রকল্পটির ডিপিপি (উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনা) পরিকল্পনা কমিশনের পিইসি (প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটি) সভায় অনুমোদন হয়েছে। সামনের জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় চূড়ান্ত অনুমোদন পেতে যাচ্ছে প্রকল্পটি।
পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক (বায়ুমান ব্যবস্থাপনা) মোহাম্মাদ আব্দুল মোতালিব, প্রকল্পের আওতায় মোট ৮টি আধুনিক জাপানি প্রযুক্তির এয়ার পলুশন মনিটরিং স্টেশন স্থাপন করা হবে। যন্ত্রগুলোর এয়ার কোয়ালিটির ২৪ ঘণ্টা ডাটা দেবে। রোড সাইডের দূষণ কাউন্ট করা হবে। কি পরিমাণে পরিবহন দূষণ করছে তা আইডেন্টিফাই করা হবে। এরপর সরকার পলিসি ঠিক করবে কি করা যায়।

 

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : prottashasmf@yahoo.com
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

জাপান দেবে যানবাহনে সৃষ্ট বায়ুদূষণ পরিমাপে ঋণ

আপডেট সময় : ০৪:৩৬:১১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

অর্থনৈতিক ডেস্ক: ঢাকা এবং চট্টগ্রাম নগরীর বায়ুদূষণের উন্নতম কারণ ইঞ্জিনচালিত পরিবহন। এসব পরিবহন দুই নগরীকে কি পরিমাণে দূষিত করছে তা পরিমাপের জন্য দুই শহরের সড়কের পাশে বসবে আধুনিক জাপানি প্রযুক্তি। এক একটি যন্ত্র কিনতে সরকারের খরচ হবে সাড়ে ৭ কোটি টাকার উপরে। এই আধুনিক যন্ত্রের নাম দেয়া হয়েছে এয়ার কোয়ালিটি স্টেশন। এই জন্য জাপান ও বাংলাদেশের মধ্যে একটি চুক্তিসই হয়েছে। প্রকল্প বাস্তবায়নে ৬৪ কোটি ৮৭ লাখ টাকা অনুদান দেবে জাপান।
সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগে বাংলাদেশ ও জাপান সরকারের মধ্যে ‘বিনিময় নোট’ ও ‘অনুদান চুক্তি’ স্বাক্ষরিত হয়। বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব মো. শাহ্রিয়ার কাদের ছিদ্দিকী ‘বিনিময় নোট’ ও ‘অনুদান চুক্তি’ সই করেন। জাপান সরকারের পক্ষে বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত সাইদা শিনচি ‘বিনিময় নোট’ এবং ঢাকায় নিযুক্ত জাইকা’র চিফ রিপ্রেজেন্টেটিভ ইচিগুচি তোমোহিদি ‘অনুদান চুক্তি’ স্বাক্ষর করেন।
প্রকল্পটি পরিবেশ অধিদপ্তর কর্তৃক মার্চ ২০২৫ থেকে জুন ২০২৮ মেয়াদে বাস্তবায়ন করা হবে। প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য হলো ঢাকা ও চট্টগ্রামে যানবাহন থেকে নির্গত দূষিত বায়ুর প্রভাব বিশ্লেষণের জন্য কন্টিনিউয়াস এয়ার মনিটরিং স্টেশন স্থাপন করা। স্টেশন স্থাপনের মাধ্যমে যানবাহনের নির্গমন থেকে উদ্ভূত বায়ু দূষণকারী উপাদান পরিমাপ ও বিশ্লেষণ করা যাবে।
পরিবেশ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, ‘দ্য প্রজেক্ট ফর ইম্প্রুভমেন্ট অব ইক্যুইপমেন্ট ফর এয়ার পলুশন মনিটরিং প্রকল্পের আওতায় এমন উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। মোট ৮টি জাপানি প্রযুক্তির যন্ত্র স্থাপন করা হবে। রাজধানীর উত্তরার হাউজবিল্ডি, বনানী, রামপুরা, যাত্রাবাড়ী ও ধানমন্ডির সড়কের পাশে এই স্টেশন স্থাপন করা হবে। অন্যদিকে চট্টগ্রামের সিডিএ(চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ) এবং বিএসআইর (বাংলাদেশ সেমিকন্ডাক্টর ইন্ডাস্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন) জমিতে দুটি স্টেশন স্থাপন করা হবে। একটি স্টেশনে থাকবে ভ্রাম্যমাণ আদালত। যানবাহন যে সব এলাকায় বেশি সেই সব এলাকায় এটা টহল দেবে। এসব যন্ত্রপাতি ২৪ ঘণ্টা বায়ুর মান দেবে এবং পরিবহন কি পরিমাণে দুই নগরীর দূষণ বাড়াছে তার তথ্য দেবে।
পরিবেশ অধিদপ্তর জানায়, আধুনিক যন্ত্র ২৪ ঘণ্টা ডাটা সরবরাহ করবে। কোন পরিবহন কি পরিমাণে দূষণ করছে। দূষণ রোধে সরকারের করণীয় বিষয়ও নির্ধারণ হবে এর মাধ্যমে। দূষণরোধে পরিবহন খাত পরিবর্তন ও আধুনিকতায় করণীয় বিষয়ে অবগত হতে পারবে সরকার। এরপরে পরিবহন খাতকে ঢেলে সাজাতে পারবে সরকার। পরিবহন খাতে বড় আকারে বিনিয়োগও করতে চায় জাপান। ২০২৫-২৬ অর্থবছরে জাপানি প্রযুক্তি স্থাপনের পর এগুলো ১০ বছর সেবা দেবে।
প্রকল্পের প্রাক্কলিত মোট ব্যয় ১০৮ কোটি ৯৫ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারি অর্থায়ন ৪১ কোটি ১১ লাখ টাকা এবং জাপানি অনুদান ৬৭ কোটি ৮৪ লাখ টাকা। এ প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে রাস্তার পাশের বায়ুর মান পর্যবেক্ষণ করা এবং সড়ক ও পরিবহন সম্পর্কিত দূষণে অবদান মূল্যায়ন করা।
নতুন একটি প্রকল্পের আওতায় পরিবহন থেকে বায়ুদূষণের মাত্রা নিরুপণের জন্য দুটি শহরের রোডসাইড মনিটরিং স্টেশন স্থাপন করা হবে এবং বায়ুদূষণ কমানোর জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। যন্ত্রপাতিগুলো জাপান থেকে আমদানি করা হবে। পরিবহন ছাড়াও অন্যান্য যেসব কারণে বায়ুদূষণ হয় তা নিরুপণ করা এবং বায়ুদূষণের ফলে মানব স্বাস্থ্যের উপর যে প্রতিকূল প্রভাব পড়ে তা নিরুপণ করাসহ বায়ুদূষণ সংক্রান্ত অন্যান্য চ্যালেঞ্জসমূহ চিহ্নিত করে তা সমাধানের কৌশল এবং কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে। প্রকল্পটির ডিপিপি (উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনা) পরিকল্পনা কমিশনের পিইসি (প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটি) সভায় অনুমোদন হয়েছে। সামনের জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় চূড়ান্ত অনুমোদন পেতে যাচ্ছে প্রকল্পটি।
পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক (বায়ুমান ব্যবস্থাপনা) মোহাম্মাদ আব্দুল মোতালিব, প্রকল্পের আওতায় মোট ৮টি আধুনিক জাপানি প্রযুক্তির এয়ার পলুশন মনিটরিং স্টেশন স্থাপন করা হবে। যন্ত্রগুলোর এয়ার কোয়ালিটির ২৪ ঘণ্টা ডাটা দেবে। রোড সাইডের দূষণ কাউন্ট করা হবে। কি পরিমাণে পরিবহন দূষণ করছে তা আইডেন্টিফাই করা হবে। এরপর সরকার পলিসি ঠিক করবে কি করা যায়।