ঢাকা ০৭:৫১ অপরাহ্ন, বুধবার, ০৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

চিন্ময় কৃষ্ণ দাশ কেন জামিন পাবেন না, প্রশ্ন হাই কোর্টের

  • আপডেট সময় : ০৫:৫০:২৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • ১৪ বার পড়া হয়েছে

চিন্ময় কৃষ্ণ দাশ ব্রহ্মচারী-ফাইল ছবি

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাশ ব্রহ্মচারীকে কেন জামিন দেওয়া হবে না- তা জানতে চেয়েছে হাই কোর্ট।

জামিন চেয়ে চিন্ময়ের করা আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি মো. আতোয়ার রহমান ও বিচারপতি আলী রেজার হাই কোর্ট বেঞ্চ মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) এ রুল জারি করে।

জামিন আবেদনের শুনানি করেন আইনজীবী অপূর্ব কুমার ভট্টাচার্য, প্রবীর রঞ্জন হালদার, দুলাল মল্লিক। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন তিন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল অনিক আর হক, আব্দুল জব্বার ভুঁইয়া ও আরশাদুর রউফ।

আসামির আইনজীবী অপূর্ব কুমার ভট্টাচার্য বলেন, চিন্ময়কে কেন জামিন দেওয়া হবে না- তা দুই সপ্তাহের মধ্যে সরকারকে জানাতে বলেছে আদালত।

গত ২ জানুয়ারি চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতে তার জামিন আবেদন খারিজ হয়ে যায়। এ নিয়ে গত ১২ জানুয়ারি হাই কোর্টে অন্তর্বর্তীকালীন জামিন চেয়ে আবেদন করেন চিন্ময়।

এর আগে গত বছরের ২৬ নভেম্বর চিন্ময় দাশের জামিন নাকচ করে দেয় চট্টগ্রামের ষষ্ঠ মহানগর হাকিম আদালত।

ওই আদেশের পর আদালত প্রাঙ্গণে প্রিজন ভ্যান ঘিরে বিক্ষোভ করে সনাতনী সম্প্রদায়ের লোকজন। আড়াই ঘণ্টা পর পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়ে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে চিন্ময় দাশকে কারাগারে নিয়ে যায়।

বিক্ষোভকারীরা আদালত সড়কে রাখা বেশ কিছু মোটরসাইকেল ও যানবাহন ভাঙচুর করে। এরপর আদালতের সাধারণ আইনজীবী ও কর্মচারীরা মিলে তাদের ধাওয়া করে। ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার মধ্যে রঙ্গম কনভেনশন হল সড়কে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে হত্যা করা হয়।

জামিন নামঞ্জুর হওয়ার পর সেদিনই চিন্ময় দাশের আইনজীবীরা ওই আদেশের বিরুদ্ধে রিভিশন চেয়ে আবার জামিন আবেদন করেছিলেন। তবে সেদিন আর শুনানি হয়নি।

গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দেশব্যাপী সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার প্রতিবাদে আট দফা দাবিতে সনাতনী সম্প্রদায়ের মুখপাত্র হিসেবে বক্তব্য দিয়ে আসছিলেন চট্টগ্রামের ইসকন পরিচালিত মন্দির পুণ্ডরীক ধামের অধ্যক্ষ চিন্ময় কৃষ্ণ দাশ ব্রক্ষচারী।

গত ২৫ অক্টোবর চট্টগ্রামের লালদিঘী মাঠে জনসভার পর ৩০ অক্টোবর চট্টগ্রামের কোতোয়ালি থানায় ১৯ জনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা হয়, সেখানে চিন্ময় দাশকেও আসামি করা হয়। জনসভার দিন চট্টগ্রামের নিউ মার্কেট মোড়ে জাতীয় পতাকার উপরে গেরুয়া রঙের আরেকটি পাতাকা টাঙানোর অভিযোগে মামলাটি করেন ফিরোজ খান নামের এক ব্যক্তি।

মামলা হওয়ার এক মাসের মাথায় ২৫ নভেম্বর বিকালে ঢাকার শাহজালাল আর্ন্তজাতিক বিমানবন্দর থেকে তাকে আটক করা হয়। পরে জানানো হয়, কোতোয়ালি থানার ওই মামলায় চিন্ময় দাশকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

এর প্রতিবাদে ঢাকা, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, খুলনা, দিনাজপুর, কক্সবাজারসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় সোমবার গভীর রাত পর্যন্ত বিক্ষোভ চলে।

চিন্ময় দাশকে সেদিন রাতেই ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে নেওয়া হয়। পরদিন আদালতের মাধ্যমে পাঠানো হয় কারাগারে।

২৬ নভেম্বর আদালত এলাকায় সংঘর্ষ, ভাংচুর ও পুলিশের কাজে বাধাদানের ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে তিনটি মামলা করেছে। ওই তিন মামলায় মোট ৭৬ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরো মোট ১৪০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।

এছাড়া আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে হত্যার ঘটনায় তারা বাবা বাদী হয়ে ৩১ জনের নাম উল্লেখ করে হত্যা মামলা করেছেন। এতে অজ্ঞাতনামা আরো ১৫/১৬ জনকে আসামি করা হয়েছে।

পাশাপাশি আলিফের ভাই খানে আলম বাদী হয়ে যানবাহন ভাংচুর ও জনসাধারণের ওপর হামলার ঘটনায় ১১৬ জনকে আসামি করে আরেকটি মামলা করেছেন নগরীর কোতোয়ালি থানায়। এসব মামলায় প্রায় অর্ধশত আসামিকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

চিন্ময় কৃষ্ণ দাশ কেন জামিন পাবেন না, প্রশ্ন হাই কোর্টের

আপডেট সময় : ০৫:৫০:২৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাশ ব্রহ্মচারীকে কেন জামিন দেওয়া হবে না- তা জানতে চেয়েছে হাই কোর্ট।

জামিন চেয়ে চিন্ময়ের করা আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি মো. আতোয়ার রহমান ও বিচারপতি আলী রেজার হাই কোর্ট বেঞ্চ মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) এ রুল জারি করে।

জামিন আবেদনের শুনানি করেন আইনজীবী অপূর্ব কুমার ভট্টাচার্য, প্রবীর রঞ্জন হালদার, দুলাল মল্লিক। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন তিন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল অনিক আর হক, আব্দুল জব্বার ভুঁইয়া ও আরশাদুর রউফ।

আসামির আইনজীবী অপূর্ব কুমার ভট্টাচার্য বলেন, চিন্ময়কে কেন জামিন দেওয়া হবে না- তা দুই সপ্তাহের মধ্যে সরকারকে জানাতে বলেছে আদালত।

গত ২ জানুয়ারি চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতে তার জামিন আবেদন খারিজ হয়ে যায়। এ নিয়ে গত ১২ জানুয়ারি হাই কোর্টে অন্তর্বর্তীকালীন জামিন চেয়ে আবেদন করেন চিন্ময়।

এর আগে গত বছরের ২৬ নভেম্বর চিন্ময় দাশের জামিন নাকচ করে দেয় চট্টগ্রামের ষষ্ঠ মহানগর হাকিম আদালত।

ওই আদেশের পর আদালত প্রাঙ্গণে প্রিজন ভ্যান ঘিরে বিক্ষোভ করে সনাতনী সম্প্রদায়ের লোকজন। আড়াই ঘণ্টা পর পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়ে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে চিন্ময় দাশকে কারাগারে নিয়ে যায়।

বিক্ষোভকারীরা আদালত সড়কে রাখা বেশ কিছু মোটরসাইকেল ও যানবাহন ভাঙচুর করে। এরপর আদালতের সাধারণ আইনজীবী ও কর্মচারীরা মিলে তাদের ধাওয়া করে। ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার মধ্যে রঙ্গম কনভেনশন হল সড়কে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে হত্যা করা হয়।

জামিন নামঞ্জুর হওয়ার পর সেদিনই চিন্ময় দাশের আইনজীবীরা ওই আদেশের বিরুদ্ধে রিভিশন চেয়ে আবার জামিন আবেদন করেছিলেন। তবে সেদিন আর শুনানি হয়নি।

গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দেশব্যাপী সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার প্রতিবাদে আট দফা দাবিতে সনাতনী সম্প্রদায়ের মুখপাত্র হিসেবে বক্তব্য দিয়ে আসছিলেন চট্টগ্রামের ইসকন পরিচালিত মন্দির পুণ্ডরীক ধামের অধ্যক্ষ চিন্ময় কৃষ্ণ দাশ ব্রক্ষচারী।

গত ২৫ অক্টোবর চট্টগ্রামের লালদিঘী মাঠে জনসভার পর ৩০ অক্টোবর চট্টগ্রামের কোতোয়ালি থানায় ১৯ জনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা হয়, সেখানে চিন্ময় দাশকেও আসামি করা হয়। জনসভার দিন চট্টগ্রামের নিউ মার্কেট মোড়ে জাতীয় পতাকার উপরে গেরুয়া রঙের আরেকটি পাতাকা টাঙানোর অভিযোগে মামলাটি করেন ফিরোজ খান নামের এক ব্যক্তি।

মামলা হওয়ার এক মাসের মাথায় ২৫ নভেম্বর বিকালে ঢাকার শাহজালাল আর্ন্তজাতিক বিমানবন্দর থেকে তাকে আটক করা হয়। পরে জানানো হয়, কোতোয়ালি থানার ওই মামলায় চিন্ময় দাশকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

এর প্রতিবাদে ঢাকা, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, খুলনা, দিনাজপুর, কক্সবাজারসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় সোমবার গভীর রাত পর্যন্ত বিক্ষোভ চলে।

চিন্ময় দাশকে সেদিন রাতেই ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে নেওয়া হয়। পরদিন আদালতের মাধ্যমে পাঠানো হয় কারাগারে।

২৬ নভেম্বর আদালত এলাকায় সংঘর্ষ, ভাংচুর ও পুলিশের কাজে বাধাদানের ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে তিনটি মামলা করেছে। ওই তিন মামলায় মোট ৭৬ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরো মোট ১৪০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।

এছাড়া আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে হত্যার ঘটনায় তারা বাবা বাদী হয়ে ৩১ জনের নাম উল্লেখ করে হত্যা মামলা করেছেন। এতে অজ্ঞাতনামা আরো ১৫/১৬ জনকে আসামি করা হয়েছে।

পাশাপাশি আলিফের ভাই খানে আলম বাদী হয়ে যানবাহন ভাংচুর ও জনসাধারণের ওপর হামলার ঘটনায় ১১৬ জনকে আসামি করে আরেকটি মামলা করেছেন নগরীর কোতোয়ালি থানায়। এসব মামলায় প্রায় অর্ধশত আসামিকে গ্রেফতার করে পুলিশ।