ঢাকা ১১:০৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ০১ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

আরেকটি ব্যাটিং ব্যর্থতায় ক্যারিবিয়ানে হোয়াইটওয়াশড বাংলাদেশ

  • আপডেট সময় : ০৬:৩৫:১২ অপরাহ্ন, শনিবার, ১ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • ৭ বার পড়া হয়েছে

ক্রীড়া ডেস্ক: সফরের শুরু থেকে ব্যাটিং ব্যর্থতার যে ধারা বইছিল, সেই হতাশার স্রোত দেখা গেল শেষ ম্যাচেও। আরও একবার লড়ার মতো রানই করতে পারল না বাংলাদেশ। বোলাররা অবশ্য খর্বশক্তির ওয়েস্ট ইন্ডিজের সঙ্গে লড়াইয়ের চেষ্টা করলেন। কিন্তু সেটা যথেষ্ট হলো না পরাজয় এড়াতে।

সেন্ট কিটসে শেষ টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশকে ৫ উকেটে হারিয়ে তিন ম্যাচের সিরিজ ৩-০ ব্যবধানে জিতে নিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। বাংলাদেশ সময় শনিবার ভোরে শেষ হওয়া ম্যাচে ২০ ওভারে বাংলাদেশ তুলতে পারে মাত্র ১০৪ রান। ম্যাচের ভাগ্য অনেকটা গড়া হয়ে যায় সেখানেই।

ওয়েস্ট ইন্ডিজের একাদশে এ দিন ছিলেন না অধিনায়ক হেইলি ম্যাথিউস, আগের ম্যাচের প্লেয়ার অব দা ম্যাচ কিয়ানা জোসেফ ও কিপার-ব্যাটার শিমেইন ক্যাম্পবেল। নিয়মিত টপ অর্ডারের তিন ব্যাটারকে ছাড়া সহজ রান তাড়ায় একটু ভুগতে হয় ক্যারিবিয়ানদের। তবে ম্যাচ তারা ঠিকই জিতে যায় ৯ বল বাকি রেখে। সিরিজে প্রথমবারের মতো নতুন বল হাতে নিয়ে তিন উইকেট শিকার করেন জেনেলিয়া গ্লাসগো। পরে ব্যাট হাতে ২৫ রানের ইনিংস খেলে প্লেয়ার অব দা ম্যাচ ২১ বছর বযসী এই অলরাউন্ডার। ওয়ার্নার পার্কে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামা বাংলাদেশের শুরুটায় ছিল আশার ঝিলিক। ম্যাচের প্রথম তিন ওভারে বাউন্ডারি আসে চারটি।

এর তিনটিই আসে সোবহানা মোস্তারির জায়গায় সুযোগ পাওয়া মুর্শিদা খাতুনের ব্যাট থেকে। আগে বিদায় নেন মুর্শিদাই। ১২ বলে ১৩ করে আউট হন তিনি চতুর্থ ওভারে। পরের ওভারে দুটি বাউন্ডারিতে পাল্টা আক্রমণের চেষ্টা করেন দিলারা আক্তার। কিন্তু মুর্শিদার মতো তাকেও থামান গ্লাসগো। দুর্দান্ত ইয়র্কারের জবাব পাননি দিলারা (১৬ বলে ২১)। এরপর এক প্রান্তে পড়ে থাকেন নিগার। আরেক প্রান্তে ব্যাটারদের নিয়মিত আসা-যাওয়া চলতে থাকে। ফর্মে থাকা শারমিন আক্তার এবার ফেরেন ১০ বলে ৬ রান করে। দ্রুত রান তোলার আশায় যাকে দলে নেওয়া হয়, সেই তাজ নেহার ১০ রান করেন ১০ বলে। পরের দিকে লতা মণ্ডল, স্বর্ণা আক্তার, ফাহিমা খাতুনরাও বলার মতো কিছু করতে পারেননি। নিগার টিকে ছিলেন শেষ ওভার পর্যন্ত। ৪০ বল খেলে কোনো বাউন্ডারি ছিল না তার ব্যাটে। অবশেষে ইনিংসের শেষ তিন বলে দুটি চার মেরে রান আউট হন তিনি শেষ বলে।

বাংলাদেশ অধিনায়কের ব্যাট থেকে আসে ৪৩ বলে ৩৩ রান।
ক্যারিবিয়ানদের রান তাড়ার শুরুটা মসৃণ ছিল না। হেইলি ম্যাথিউস ও কিয়ানা জোসেফের জায়গায় ওপেন করে সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি জেনাবা জোসেফ ও নেরিসা ক্রাফটন। দ্বিতীয় ওভারে ক্রাফটনকে বোল্ড করেন অফ স্পিনার সুলতানা খাতুন। ১৬ বলে ১০ রান করা জোসেফ স্টাম্পড হন ফাহিমা খাতুনের বলে। সিরিজজুড়ে ঝড়ো ব্যাটিং উপহার দেওয়া ড্রেন্ড্রা ডটিনকে এ দিন দ্রুতই (১২ বলে ১০) থামান লেগ স্পিনার রাবেয়া খান। ব্যাটিং অর্ডারে প্রমোশন পেয়ে তিনে নামা গ্লাসগো কিছুটা এগিয়ে নেন দলকে। তবে তাকেও ২৫ রানে বিদায় করেন সুলতানা। পরের ওভারেই যখন ফাহিমা ফিরিয়ে দেন ম্যান্ডি মাংরুকে, ওয়েস্ট ইন্ডিজের রান তখন ৫ উইকটে ৬১।

তবে লক্ষ্য এত ছোট ছিল যে, ক্যারিবিয়ানদের খুব বেশি বিপাকে পড়তে হয়নি। শাবিকা গাজনাবি ও জাইদা জেমস বাকি পথটুকুতে দলকে পার করান নির্বিঘ্নে। টি-টোয়েন্টি সিরিজে হোয়াইটওয়াশড হওয়ার আগে ওয়ানডে সিরিজে ২-১ ব্যবধানে হারে বাংলাদেশ। সরাসরি বিশ্বকাপ খেলার লক্ষও পূরণ হয়নি। সব মিলিয়ে ক্যারিবিয়ানে নিগারদের প্রথম দ্বিপাক্ষিক সফর ভুলে যাওয়ার মতোই হলো।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বাংলাদেশ: ২০ ওভারে ১০৪/৮ (দিলারা ২১, মুর্শিদা ১৩, শারমিন ৬, নিগার ৩৩, তাজ ১০, লতা ৫, স্বর্ণা ৩, ফাহিমা ৭, রাবেয়া ১*; জাইদা ৩-০-৭-১, গ্লাসগো ৪-০-১৫-৩, ফ্রেজার ৩-০-৩৭-০, ফ্লেচার ৪-০-১৬-১, মুনিসার ২-০-৯-১, রামহারাক ৪-০-১৯-০)।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ: ১৮.৩ ওভারে ১০৫/৫ (জোসেফ ১০, ক্রাফটন ৫, গ্লাসগো ২৫, ডটিন ১০, শাবিকা ২৭*, মাংরু ১, জাইদা ১৪*; তৃষ্ণা ৩.৩-০-২০-০, সুলতানা ৪-০-৩০-২, রাবেয়া ৪-০-১২-১, ফাহিমা ৪-০-১৪-২, স্বর্ণা ৩-০-২২-০)।
ফল: ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৫ উইকেটে জয়ী।
সিরিজ: তিন ম্যাচ সিরিজে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৩-০তে জয়ী।
প্লেয়ার অব দা ম্যাচ: জেনেলিয়া গ্লাসগো।
প্লেয়ার অব দা সিরিজ: ড্রেন্ড্রা ডটিন।

 

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

আরেকটি ব্যাটিং ব্যর্থতায় ক্যারিবিয়ানে হোয়াইটওয়াশড বাংলাদেশ

আপডেট সময় : ০৬:৩৫:১২ অপরাহ্ন, শনিবার, ১ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

ক্রীড়া ডেস্ক: সফরের শুরু থেকে ব্যাটিং ব্যর্থতার যে ধারা বইছিল, সেই হতাশার স্রোত দেখা গেল শেষ ম্যাচেও। আরও একবার লড়ার মতো রানই করতে পারল না বাংলাদেশ। বোলাররা অবশ্য খর্বশক্তির ওয়েস্ট ইন্ডিজের সঙ্গে লড়াইয়ের চেষ্টা করলেন। কিন্তু সেটা যথেষ্ট হলো না পরাজয় এড়াতে।

সেন্ট কিটসে শেষ টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশকে ৫ উকেটে হারিয়ে তিন ম্যাচের সিরিজ ৩-০ ব্যবধানে জিতে নিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। বাংলাদেশ সময় শনিবার ভোরে শেষ হওয়া ম্যাচে ২০ ওভারে বাংলাদেশ তুলতে পারে মাত্র ১০৪ রান। ম্যাচের ভাগ্য অনেকটা গড়া হয়ে যায় সেখানেই।

ওয়েস্ট ইন্ডিজের একাদশে এ দিন ছিলেন না অধিনায়ক হেইলি ম্যাথিউস, আগের ম্যাচের প্লেয়ার অব দা ম্যাচ কিয়ানা জোসেফ ও কিপার-ব্যাটার শিমেইন ক্যাম্পবেল। নিয়মিত টপ অর্ডারের তিন ব্যাটারকে ছাড়া সহজ রান তাড়ায় একটু ভুগতে হয় ক্যারিবিয়ানদের। তবে ম্যাচ তারা ঠিকই জিতে যায় ৯ বল বাকি রেখে। সিরিজে প্রথমবারের মতো নতুন বল হাতে নিয়ে তিন উইকেট শিকার করেন জেনেলিয়া গ্লাসগো। পরে ব্যাট হাতে ২৫ রানের ইনিংস খেলে প্লেয়ার অব দা ম্যাচ ২১ বছর বযসী এই অলরাউন্ডার। ওয়ার্নার পার্কে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামা বাংলাদেশের শুরুটায় ছিল আশার ঝিলিক। ম্যাচের প্রথম তিন ওভারে বাউন্ডারি আসে চারটি।

এর তিনটিই আসে সোবহানা মোস্তারির জায়গায় সুযোগ পাওয়া মুর্শিদা খাতুনের ব্যাট থেকে। আগে বিদায় নেন মুর্শিদাই। ১২ বলে ১৩ করে আউট হন তিনি চতুর্থ ওভারে। পরের ওভারে দুটি বাউন্ডারিতে পাল্টা আক্রমণের চেষ্টা করেন দিলারা আক্তার। কিন্তু মুর্শিদার মতো তাকেও থামান গ্লাসগো। দুর্দান্ত ইয়র্কারের জবাব পাননি দিলারা (১৬ বলে ২১)। এরপর এক প্রান্তে পড়ে থাকেন নিগার। আরেক প্রান্তে ব্যাটারদের নিয়মিত আসা-যাওয়া চলতে থাকে। ফর্মে থাকা শারমিন আক্তার এবার ফেরেন ১০ বলে ৬ রান করে। দ্রুত রান তোলার আশায় যাকে দলে নেওয়া হয়, সেই তাজ নেহার ১০ রান করেন ১০ বলে। পরের দিকে লতা মণ্ডল, স্বর্ণা আক্তার, ফাহিমা খাতুনরাও বলার মতো কিছু করতে পারেননি। নিগার টিকে ছিলেন শেষ ওভার পর্যন্ত। ৪০ বল খেলে কোনো বাউন্ডারি ছিল না তার ব্যাটে। অবশেষে ইনিংসের শেষ তিন বলে দুটি চার মেরে রান আউট হন তিনি শেষ বলে।

বাংলাদেশ অধিনায়কের ব্যাট থেকে আসে ৪৩ বলে ৩৩ রান।
ক্যারিবিয়ানদের রান তাড়ার শুরুটা মসৃণ ছিল না। হেইলি ম্যাথিউস ও কিয়ানা জোসেফের জায়গায় ওপেন করে সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি জেনাবা জোসেফ ও নেরিসা ক্রাফটন। দ্বিতীয় ওভারে ক্রাফটনকে বোল্ড করেন অফ স্পিনার সুলতানা খাতুন। ১৬ বলে ১০ রান করা জোসেফ স্টাম্পড হন ফাহিমা খাতুনের বলে। সিরিজজুড়ে ঝড়ো ব্যাটিং উপহার দেওয়া ড্রেন্ড্রা ডটিনকে এ দিন দ্রুতই (১২ বলে ১০) থামান লেগ স্পিনার রাবেয়া খান। ব্যাটিং অর্ডারে প্রমোশন পেয়ে তিনে নামা গ্লাসগো কিছুটা এগিয়ে নেন দলকে। তবে তাকেও ২৫ রানে বিদায় করেন সুলতানা। পরের ওভারেই যখন ফাহিমা ফিরিয়ে দেন ম্যান্ডি মাংরুকে, ওয়েস্ট ইন্ডিজের রান তখন ৫ উইকটে ৬১।

তবে লক্ষ্য এত ছোট ছিল যে, ক্যারিবিয়ানদের খুব বেশি বিপাকে পড়তে হয়নি। শাবিকা গাজনাবি ও জাইদা জেমস বাকি পথটুকুতে দলকে পার করান নির্বিঘ্নে। টি-টোয়েন্টি সিরিজে হোয়াইটওয়াশড হওয়ার আগে ওয়ানডে সিরিজে ২-১ ব্যবধানে হারে বাংলাদেশ। সরাসরি বিশ্বকাপ খেলার লক্ষও পূরণ হয়নি। সব মিলিয়ে ক্যারিবিয়ানে নিগারদের প্রথম দ্বিপাক্ষিক সফর ভুলে যাওয়ার মতোই হলো।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বাংলাদেশ: ২০ ওভারে ১০৪/৮ (দিলারা ২১, মুর্শিদা ১৩, শারমিন ৬, নিগার ৩৩, তাজ ১০, লতা ৫, স্বর্ণা ৩, ফাহিমা ৭, রাবেয়া ১*; জাইদা ৩-০-৭-১, গ্লাসগো ৪-০-১৫-৩, ফ্রেজার ৩-০-৩৭-০, ফ্লেচার ৪-০-১৬-১, মুনিসার ২-০-৯-১, রামহারাক ৪-০-১৯-০)।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ: ১৮.৩ ওভারে ১০৫/৫ (জোসেফ ১০, ক্রাফটন ৫, গ্লাসগো ২৫, ডটিন ১০, শাবিকা ২৭*, মাংরু ১, জাইদা ১৪*; তৃষ্ণা ৩.৩-০-২০-০, সুলতানা ৪-০-৩০-২, রাবেয়া ৪-০-১২-১, ফাহিমা ৪-০-১৪-২, স্বর্ণা ৩-০-২২-০)।
ফল: ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৫ উইকেটে জয়ী।
সিরিজ: তিন ম্যাচ সিরিজে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৩-০তে জয়ী।
প্লেয়ার অব দা ম্যাচ: জেনেলিয়া গ্লাসগো।
প্লেয়ার অব দা সিরিজ: ড্রেন্ড্রা ডটিন।