ঢাকা ১১:৫৮ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৩১ জানুয়ারী ২০২৫

জমি নিয়ে বিরোধে চাচাকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ

  • আপডেট সময় : ০৬:৩০:৫৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩০ জানুয়ারী ২০২৫
  • ৮ বার পড়া হয়েছে

জয়পুরহাট সংবাদদাতা : জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার জয়হার গ্রামে জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে সাইদুল ইসলাম (৬০) নামে আপন চাচাকে লাঠি ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে ভাতিজা জয়নাল, আয়নাল ও আল আমিনের বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার ভোরে বগুড়ার শহীদ জিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন। এ ঘটনায় নিহতের বড় মেয়ে আয়েশা সিদ্দিকা বাদী হয়ে থানায় চারজনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেছেন। নিহতের পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার জয়হার গ্রামের সাইদুল ইসলামের সঙ্গে তার আপন ভাই শহিদুল ইসলামের মাঠে ২৫ শতক জায়গা নিয়ে দীর্ঘদিন থেকে দ্বন্দ্ব চলছে। সেই ধারাবাহিকতায় বুধবার সকালের দিকে শহিদুল ইসলামের ছেলে জয়নাল ও তার ভাইয়েরা মিলে বিবদমান ওই ২৫ শতক জমিতে গিয়ে আইল দেয়।

পরে বিকালে ওই জমিতে আইল দেওয়াকে কেন্দ্র করে সাইদুল ইসলাম তার ভাতিজাদের সঙ্গে বাকবিতন্ডায় জড়িয়ে পড়েন। একপর্যায়ে ভাতিজা জয়নাল ও তার ভাইয়েরা মিলে ধারালো অস্ত্র ও লাঠি দিয়ে চাচাকে পিটিয়ে গুরুতর জখম করে পালিয়ে যান। এসময় নিহত সাইদুলের স্ত্রী ফিরোজা বেগমের চিৎকারে পরিবার লোকজন ও প্রতিবেশীরা এসে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।

নিহতের স্ত্রী ফিরোজা বেগম বলেন, বুধবার সকালের দিকে আমার ভাসুরের ছেলে জয়নাল, আয়নাল ও তার ছোট ভাই মিলে মাঠে আমাদের জমিতে গিয়ে আইল দিয়ে আসে। পরে তারা বাড়িতে আসলে আমার স্বামী এ নিয়ে ভাতিজা জয়নালের সঙ্গে কথা বলে যে, আমার জমিতে তোমরা কেন আইল দিয়ে এসেছো, তোমরা তো জমি পাবে না। তখন আমার ভাসুরের ছেলে জয়নাল, আয়নাল ও আল আমিন এসে আমার স্বামীকে লাঠি ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর জখম করতে থাকে। এসময় প্রতিবেশীরা ছু্টে এসে মারপিট করতে নিষেধ করলে তখন তারা চলে যায়। নিহতের বড় মেয়ে আয়েশা সিদ্দিকা বলেন, জমির আইল দেওয়াকে কেন্দ্র করে চাচাতো ভাইয়েরা দুপুরের দিকে বাড়িতে ঢুকে প্রথমে চড়-থাপ্পড় মেরে চলে যায়। এরপর বিকালের দিকে পুনরায় তারা লাঠি ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপ দিলে আমার বাবা মাটিতে লুটিয়ে পড়ে যায়। তাতেও ক্ষান্ত না হয়ে তারা বাবার উপরে উঠে পা দিয়ে খ্ুঁচিয়ে খুঁচিয়ে মারে। তখন প্রতিবেশীরা এলে তারা চলে যায়।

পরে আমরা বাবাকে উদ্ধার করে বগুড়া শহীদ জিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বাবা মারা যায়। আমার বাবাকে যারা এভাবে পিটিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করেছে আমি তাদের বিচার চাই, ফাঁসি চাই। অভিযোগের বিষয়ে সাইদুল ইসলামের বাড়িতে গেলে তার বাড়ির গেটে তালা ঝুলানো দেখতে পাওয়া যায়। বাড়িতে তাদের কাউকে না পাওয়ায় তাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। পাঁচবিবি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কাওসার আলী বলেন, এ ঘটনায় নিহতের মেয়ে আয়েশা সিদ্দিকা বাদী হয়ে চারজনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

জমি নিয়ে বিরোধে চাচাকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ

আপডেট সময় : ০৬:৩০:৫৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩০ জানুয়ারী ২০২৫

জয়পুরহাট সংবাদদাতা : জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার জয়হার গ্রামে জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে সাইদুল ইসলাম (৬০) নামে আপন চাচাকে লাঠি ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে ভাতিজা জয়নাল, আয়নাল ও আল আমিনের বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার ভোরে বগুড়ার শহীদ জিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন। এ ঘটনায় নিহতের বড় মেয়ে আয়েশা সিদ্দিকা বাদী হয়ে থানায় চারজনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেছেন। নিহতের পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার জয়হার গ্রামের সাইদুল ইসলামের সঙ্গে তার আপন ভাই শহিদুল ইসলামের মাঠে ২৫ শতক জায়গা নিয়ে দীর্ঘদিন থেকে দ্বন্দ্ব চলছে। সেই ধারাবাহিকতায় বুধবার সকালের দিকে শহিদুল ইসলামের ছেলে জয়নাল ও তার ভাইয়েরা মিলে বিবদমান ওই ২৫ শতক জমিতে গিয়ে আইল দেয়।

পরে বিকালে ওই জমিতে আইল দেওয়াকে কেন্দ্র করে সাইদুল ইসলাম তার ভাতিজাদের সঙ্গে বাকবিতন্ডায় জড়িয়ে পড়েন। একপর্যায়ে ভাতিজা জয়নাল ও তার ভাইয়েরা মিলে ধারালো অস্ত্র ও লাঠি দিয়ে চাচাকে পিটিয়ে গুরুতর জখম করে পালিয়ে যান। এসময় নিহত সাইদুলের স্ত্রী ফিরোজা বেগমের চিৎকারে পরিবার লোকজন ও প্রতিবেশীরা এসে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।

নিহতের স্ত্রী ফিরোজা বেগম বলেন, বুধবার সকালের দিকে আমার ভাসুরের ছেলে জয়নাল, আয়নাল ও তার ছোট ভাই মিলে মাঠে আমাদের জমিতে গিয়ে আইল দিয়ে আসে। পরে তারা বাড়িতে আসলে আমার স্বামী এ নিয়ে ভাতিজা জয়নালের সঙ্গে কথা বলে যে, আমার জমিতে তোমরা কেন আইল দিয়ে এসেছো, তোমরা তো জমি পাবে না। তখন আমার ভাসুরের ছেলে জয়নাল, আয়নাল ও আল আমিন এসে আমার স্বামীকে লাঠি ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর জখম করতে থাকে। এসময় প্রতিবেশীরা ছু্টে এসে মারপিট করতে নিষেধ করলে তখন তারা চলে যায়। নিহতের বড় মেয়ে আয়েশা সিদ্দিকা বলেন, জমির আইল দেওয়াকে কেন্দ্র করে চাচাতো ভাইয়েরা দুপুরের দিকে বাড়িতে ঢুকে প্রথমে চড়-থাপ্পড় মেরে চলে যায়। এরপর বিকালের দিকে পুনরায় তারা লাঠি ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপ দিলে আমার বাবা মাটিতে লুটিয়ে পড়ে যায়। তাতেও ক্ষান্ত না হয়ে তারা বাবার উপরে উঠে পা দিয়ে খ্ুঁচিয়ে খুঁচিয়ে মারে। তখন প্রতিবেশীরা এলে তারা চলে যায়।

পরে আমরা বাবাকে উদ্ধার করে বগুড়া শহীদ জিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বাবা মারা যায়। আমার বাবাকে যারা এভাবে পিটিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করেছে আমি তাদের বিচার চাই, ফাঁসি চাই। অভিযোগের বিষয়ে সাইদুল ইসলামের বাড়িতে গেলে তার বাড়ির গেটে তালা ঝুলানো দেখতে পাওয়া যায়। বাড়িতে তাদের কাউকে না পাওয়ায় তাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। পাঁচবিবি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কাওসার আলী বলেন, এ ঘটনায় নিহতের মেয়ে আয়েশা সিদ্দিকা বাদী হয়ে চারজনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।