ক্রীড়া ডেস্ক: রাঞ্জি ট্রফির প্রতি রাউন্ডের একটি বড় ম্যাচ টিভিতে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়। আর দুটি বড় ম্যাচ সরাসরি স্ট্রিমিং করা হয়। সামনের রাউন্ডের এই তিন ম্যাচের মধ্যে ছিল না দিল্লির ম্যাচটি। দিল্লি আর রেলওয়েসের ম্যাচ তো অতটা গুরুত্বপূর্ণ নয়। তবে শেষ মুহূর্তে এই ম্যাচটিই স্ট্রিমিং করার তালিকায় নিয়ে এসেছে ভারতীয় বোর্ড বিসিসিআই। ভিরাট কোহলি যে খেলবেন! ১২ বছরের বেশি সময় পর রাঞ্জি ট্রফিতে পা পড়বে কোহলির, এটা নিয়ে ভারতীয় ক্রিকেটে তোলপাড় কয়েকদিন ধরেই। সেটিরই একটি নমুনা ভারতীয় বোর্ডের এই সিদ্ধান্ত।
শেষ মুহূর্তে তারা পরিবর্তন এনেছে সম্প্রচার পরিকল্পনায়। অনেক আগেই ঠিক করা হয়েছে, রাঞ্জি ট্রফির বৃহস্পতিবার শুরু হতে যাওয়া রাউন্ডের কর্নাটকা ও হারিয়ানা ম্যাচটি টিভিতে সরাসরি দেখানো হবে। পাশাপাশি স্ট্রিমিং অ্যাপেও দেখা যাবে। এখানে কোনো বদল আসেনি। এছাড়া কলকতায় পাঞ্জাব ও বাংলার ম্যাচ এবং বারোদায় জাম্মু ও কাশ্মীরের সঙ্গে বারোদার ম্যাচ সরাসরি স্ট্রিমিং করা হবে। এখানেই পরিবর্তন আনা হয়েছে।
ভারতীয় বোর্ডের একজন কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা পিটিআইকে বলেছেন, “সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়ে গেছে এবং জিওসিনেমা দিল্লির ম্যাচটি সরাসরি স্ট্রিমিং করবে। দিল্লির বাইরে যারা ভিরাট কোহলির ভক্ত, তাদের চিন্তার কারণ নেই। প্রিয় তারকার রাঞ্জি ম্যাচ দেখতে পারবেন তারা।” এর মধ্যেই এই ম্যাচে দর্শকদের মাঠে ঢুকতে কোনো টিকেট লাগবে না বলে ঘোষণা করেছে দিল্লি অ্যান্ড ডিস্ট্রিক্ট ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন। তাদের আশা, অন্তত হাজার দশেক দর্শক থাকবেন মাঠে। এক যুগ পর কোহলির রাঞ্জি ট্রফিতে খেলা নিয়ে দিল্লির ক্রিকেটে তোলপাড় চলছে কয়েক দিন ধরেই।
অনুশীলনে সংবাদকর্মীদের ভিড় জমছে। কোহলি নেটে কতক্ষণ ব্যাট করছেন, কীভাবে ব্যাট করছেন, অনুশীলনে কী কী করছেন, এমনকি প্রিয় ছোলা বাটোরা তাকে দেওয়া হলেও তিনি খাননি, এরকম অনেক রকম খবর উঠে আসছে সংবাদমাধ্যমে। দিল্লির সংবাদমাধ্যমের খবর, ফেরার ম্যাচে তাকে অধিনায়কত্ব করার প্রস্তাব দেওয়া হলেও তিনি রাজি হননি। নিয়মিত অধিনায়ক আয়ুশ বাদোনি নেতৃত্ব দেবেন দলকে।
ভারতীয় ক্রিকেটের গত এক যুগের সবচেয়ে বড় তারকা রাঞ্জি ট্রফিতে সবশেষ খেলেছেন ২০১২ সালের নভেম্বরে, দিল্লির হয়ে উত্তর প্রদেশের বিপক্ষে এই আরুন জেটলি স্টেডিয়ামেই। টেস্ট ক্রিকেটের বাইরে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে তিনি সবশেষ খেলেছেন ২০১৫ সালে ভারতীয় ‘এ’দলের হয়ে অস্ট্রেলিয়া ‘এ’ দলের বিপক্ষে।
রাঞ্জিতে সবশেষ ম্যাচটি খেলার সময় কোহলির টেস্ট অভিজ্ঞতা ছিল স্রেফ ১০ ম্যাচের। ওয়ানডেতে তখন তিনি তারকা হয়ে ওঠার পথে, কিন্তুন টেস্ট ক্যারিয়ার তখনও দুলছে অনিশ্চয়তার দোলায়। সেই তিনি এখন ১২৩ টেস্ট খেলা অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান। এত বছর পর তিনি রাঞ্জি খেলছেন বা খেলতে বাধ্য হচ্ছেন মূলত ভারতীয় বোর্ডের নির্দেশনা মেনে।
ভারতের সবশেষ দুই সিরিজে দেশের মাঠে নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে ও পরে অস্ট্রেলিয়া সফরে তারকা ব্যাটসম্যানদের চরম ব্যর্থতার পর ঘরোয়া ক্রিকেটে খেলার বাধ্যবাধকতা দিয়েছে বিসিসিআই। নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজে ছয় ইনিংসে কোহলি রান করেছিলেন ১৫.৫০ গড়ে ৯৩।
এক ইনিংসে ৭০ রান করলেও বাকি পাঁচ ইনিংস মিলিয়ে করেছিলেন ৯৩ রান। এর আগে বাংলাদেশের বিপক্ষে সিরিজেও চার ইনিংসে তার ছিল না কোনো ফিফটি। সবশেষ অস্ট্রেলিয়া সফরে প্রথম টেস্টে পার্থে সেঞ্চুরি করলেও বাকি ৮ ইনিংস মিলিয়ে তার রান সোট ৯০। বোর্ডের নির্দেশনা মেনে রাঞ্জির ট্রফির গত রাউন্ডেই খেলেছেন রোহিত শার্মা, ইয়াসাসভি জয়সওয়াল, রিশাভ পান্ত, শুবমান গিলরা। চোটের কারণে খেলতে পারেননি কোহলি ও লোকেশ রাহুশ। বৃহস্পতিবার শুরু রাউনেড কর্নাটকার হয়ে খেলবেন রাহুল।
