বিদেশের খবর ডেস্ক :পশ্চিম আফ্রিকার দেশ নাইজেরিয়ায় সশস্ত্র গোষ্ঠীর হামলায় অন্তত ২০ সেনা নিহত হয়েছেন। আইএসআইএল-এর সহযোগী যোদ্ধারা এ হামলা চালিয়েছে বলে খবর। গত শুক্রবার দেশটির উত্তর-পূর্ব বোর্নো রাজ্যের প্রত্যন্ত মালাম-ফাতোরি শহরে একটি সেনা ঘাঁটি লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়। রোববার (২৬ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে আল জাজিরা। বেঁচে যাওয়া একজন সেনা কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছেন, আইএসডব্লিউএপির যোদ্ধারা ট্রাকে করে এসে বোর্নো রাজ্যের ম্যালাম-ফাতোরি শহরে সেনাবাহিনীর ১৪৯ ব্যাটালিয়নে আত্মঘাতী বোমা হামলা চালান।
হামলাটি তিন ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে চলেছিল। হামলায় বেঁচে যাওয়া আরও একজন সেনা বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, হামলাকারীরা সর্বত্র এলোপাতাড়ি গুলি চালিয়েছে। ঘাঁটিতে অবস্থানরত সেনারা আকস্মিক এই হামলার ঘটনায় বিস্মিত হয়ে যান। তিনি বলেন, ‘হামলায় ২০ জন সেনা নিহত এবং বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। ’ সেনাবাহিনীকে সাহায্য করার জন্য নিয়োগ করা স্থানীয় মিলিশিয়ার সদস্য মালাকাকা বুকার বলেছেন, যোদ্ধারা ভবন পুড়িয়ে দিয়েছে, যার ফলে কিছু বাসিন্দা শহর ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছে। শহর ছেড়ে আসা বাসিন্দারা জানিয়েছেন, এদিকে শনিবার রাত পর্যন্ত মালাম-ফাতোরিতে কিছু আক্রমণকারীকে দেখা গেছে। উল্লেখ্য, স্থানীয় সশস্ত্র গোষ্ঠী বোকো হারাম ও পশ্চিম আফ্রিকা প্রদেশে ইসলামিক স্টেটের (আইএস) সহযোগী আইএসডব্লিউএপির যোদ্ধারা বোর্নো রাজ্য থেকে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করে। অতীতে বিভিন্ন সময়ে নিরাপত্তা বাহিনী ও বেসামরিক লোকজনের ওপর এই সশস্ত্র গোষ্ঠীর সদস্যরা হামলা চালিয়েছে। আইএসডব্লিউএপির যোদ্ধাদের হামলায় শত শত মানুষ নিহত ও আরো হাজার হাজার মানুষ বাস্ত্যুচুত হয়েছেন।
৫ বছর ধরে চলা এই সংঘাতে প্রায় ৪০ হাজার মানুষ নিহত হয়েছেন এবং উত্তর-পূর্বে প্রায় দুই মিলিয়ন মানুষ তাদের বাড়িঘর থেকে বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। সহিংসতা প্রতিবেশি দেশ নাইজার, চাদ এবং ক্যামেরুনেও ছড়িয়ে পড়েছে। যার ফলে, সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য একটি আঞ্চলিক বাহিনী তৈরি হয়েছে।
জ্বালানি ট্যাঙ্কার বিস্ফোরণে নিহত ১৮
এদিকে জ্বালানিবাহী একটি ট্যাঙ্কার ট্রাক বিস্ফোরণে নাইজেরিয়ায় ১৮ জন নিহত হয়েছেন। এই ঘটনায় আরও বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। স্থানীয় সময় শনিবার (২৫ জানুয়ারি) নাইজেরিয়ার দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় এনুগু প্রদেশে দুর্ঘটনাটি ঘটে। দেশটির জাতীয় সড়ক নিরাপত্তা সংস্থার বরাতে রোববার (২৬ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে তথ্যটি জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
জ্বালানিবাহী ট্যাঙ্কারটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে অন্য গাড়িগুলোকে ধাক্কা দিলে বিস্ফোরণ ঘটে বলে জানানো হয়েছে প্রতিবেদনে। ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে ফেডারেল রোড সেফটি কর্পসের মুখপাত্র ওলুসেগুন ওগুংবেমাইড গভীর রাতে এক বিবৃতিতে বলেছেন, ট্রাকটির ব্রেকফেল করে এবং চালক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন। ফলে ট্রাকটি এক্সপ্রেসওয়েতে সামনে থাকা বেশ কিছু যানবাহনের মধ্যে বিধ্বস্ত হয়। বিস্ফোরণের পর আগুনে পুড়েই ১৮ জন নিহত হন। তাদের মরদেহ এতোটাই দগ্ধ হয়েছে যে, তাদের পরিচয় শনাক্ত করা সম্ভব নয়। তিনি বলেন, এই ঘটনায় আহত অবস্থায় ১০ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়া আরও তিনজনকে উদ্ধার করা হয়েছে যারা অক্ষত রয়েছেন। প্রসঙ্গত, পশ্চিম আফ্রিকার এই দেশটিতে জ্বালানি ট্যাঙ্কার বিস্ফোরণ এবং সড়ক দুর্ঘটনা বেশ সাধারণ ঘটনা। প্রায় সময়ই রাস্তার খারাপ অবস্থা এবং খারাপভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করা যানবাহনের কারণে এই ধরনের দুর্ঘটনা ঘটে থাকে। সপ্তাহখানেক আগেও দেশটিতে একই ধরনের আরেকটি ঘটনায় প্রায় ১০০ জন প্রাণ হারিয়েছিলেন।


























