ঢাকা ১১:৫৭ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারী ২০২৫, ১০ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পাকিস্তানি নম্বর থেকে উড়োজাহাজে বোমা হামলার ভুয়া বার্তায় যা ছিল

  • আপডেট সময় : ০৫:০৮:০৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ২২ জানুয়ারী ২০২৫
  • ২৯ বার পড়া হয়েছে

বুধবার বোমা হামলার হুমকির খবর পাওয়ার পর নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে ফেলা হয় বিমানবন্দর এলাকা। ছবি সংগৃহীত

প্রত্যাশা ডেস্ক: ইতালির রোম থেকে ঢাকায় আসছিল বাংলাদেশ বিমানের একটি নিয়মিত ফ্লাইট বিজি-৩৫৬। বুধবার (২২ জানুয়ারি) সকালে ফ্লাইটটি হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণের কথা ছিল। তবে এর কয়েক ঘণ্টা আগে বাধে বিপত্তি। ফ্লাইটটিতে বোমা থাকার একটি বার্তা পায় বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। এরপর শ্বাসরুদ্ধকর ৬ ঘণ্টা সময় পার করেন সংশ্লিষ্টরা। তবে শেষ পর্যন্ত উড়োজাহাজটিতে তল্লাশি চালিয়ে বোমা বা বোমা জাতীয় কোনো বস্তুর উপস্থিতি পায়নি বোমা নিষ্ক্রিয়কারী দল। দুপুরে বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন কামরুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ফ্লাইটে বোমা থাকার গুজব সম্বলিত বার্তাটি পাঠানো হয় হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে। অপরিচিত একটি পাকিস্তানি নম্বর দিয়ে খোলা হোয়াটসঅ্যাপ একাউন্টটি থেকে বুধবার ভোর সাড়ে ৫টার দিকে বার্তা আসে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কন্ট্রোল রুমে। পরে সেখানকার কর্মরতরা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বিষয়টি অবহিত করেন।

খবর পাওয়ার পরপরই বেবিচক চেয়ারম্যান এয়ারভাইস মার্শাল মঞ্জুর কবীর ভুঁইয়া, বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন কামরুল ইসলামসহ সংশ্লিষ্ট অনেকেই বিমানবন্দরে ছুটে আসেন। শুরু হয় নিরাপত্তা সদস্যদের মোতায়েন। বিমান বাহিনীর একটি বোমা নিষ্ক্রিয় দল, কুইক রেসপন্স ফোর্স, ফায়ার সার্ভিসসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বিভিন্ন বাহিনীর বিপুলসংখ্যক সদস্য ব্যাপক প্রস্তুতি নেন।

সকাল ৯টা ৩৫ মিনিটে ফ্লাইটটি জরুরি অবতরণের পরপরই গ্রুপ ক্যাপ্টেন কামরুল ইসলামের নেতৃত্বে শুরু হয় তৎপরতা। প্রথমে ফ্লাইটের ভেতর থেকে দুই শতাধিক যাত্রী, ক্রুসহ সবাইকে নিরাপদে বের করে সরিয়ে নেওয়া হয়। এরপর শুরু হয় তল্লাশি অভিযান। তবে সেখানে বোমা বা বোমা-জাতীয় কিছু পাওয়া যায়নি। বেলা ১২টার পর এমন ঘোষণার পর স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেন অন্তত দুই শতাধিক কর্মকর্তা-নিরাপত্তা কর্মী।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, হোয়াটসঅ্যাপের ওই বার্তায় বাংলাদেশ ব্মিানের বিজি-৩৫৬ ফ্লাইটটিতে বোমা থাকার কথা বলা হয়। সেটি যেকোনো সময় বিস্ফোরণ ঘটবে বলেও হুঁশিয়ারি করা হয়েছিল।

হোয়াটসঅ্যাপ বার্তাটি ছিল কালো ব্যাকগ্রাউন্ডের একটি ইমেজ এবং তাতে সাদা অক্ষরে লেখা ছিল, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট বিজি ৩৫৬ (রোম থেকে ঢাকা), যার আনুমানিক অবতরণের সময় রাত ৮টা ৪০ মিনিট। উড়োজাহাজটিতে এই মুহূর্তে ৩৪ কেজি ওজনের বিস্ফোরক রয়েছে বলেও ওই ক্ষুদে বার্তায় দাবি করা হয়। একইসঙ্গে সতর্ক থাকারও পরামর্শ দেওয়া হয় বার্তাটিতে।
এ ঘটনা প্রসঙ্গে বেবিচক চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মঞ্জুর কবীর ভুঁইয়া বলেন, আমাদের নিরাপত্তা যে কত সুসংহত, সেটা আমরা আজ বুঝিয়ে দিয়েছি। আমাদের প্রতিটি সদস্য আন্তরিকভাবে পরিস্থিতি মোকাবিলা করেছেন।
তিনি বলেন, এ ধরনের সংবাদ পাওয়ার পরপরই আমি নিজেসহ সব কর্মকর্তাকে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করি। কোনো কিছু না পাওয়া গেলেও আমরা প্রতিটি তথ্যকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করি। নিরাপত্তার ব্যাপারে আমরা সবসময়ই জিরো টলারেন্স।

ভুয়া তথ্যদাতা শনাক্ত হলে ব্যবস্থা: ইতালির রোম থেকে ঢাকায় আসা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি উড়োজাহাজে নিরাপত্তা হুমকি ‘মিথ্যা সংবাদের ভিত্তিতে হয়েছে’ বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। বিষয়টি নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নে তিনি বলেছেন, এটা একটা মিথ্যা সংবাদ। কোনো কিছু তো হয়নি। মিথ্যা সংবাদের ভিত্তিতে হয়েছে; (সংবাদদাতাদের) শনাক্ত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। শনাক্ত করা গেলেই আইনের আওতায় আনা হবে।

বুধবার (২২ জানুয়ারি) বিকালে রাজধানীর খামার বাড়িতে কৃষি বিপণন অধিদপ্তর ও কৃষি তথ্য সার্ভিস পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে কথা বলেন উপদেষ্টা।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

দাভোসে জাতিসংঘ মহাসচিবের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার সাক্ষাৎ

পাকিস্তানি নম্বর থেকে উড়োজাহাজে বোমা হামলার ভুয়া বার্তায় যা ছিল

আপডেট সময় : ০৫:০৮:০৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ২২ জানুয়ারী ২০২৫

প্রত্যাশা ডেস্ক: ইতালির রোম থেকে ঢাকায় আসছিল বাংলাদেশ বিমানের একটি নিয়মিত ফ্লাইট বিজি-৩৫৬। বুধবার (২২ জানুয়ারি) সকালে ফ্লাইটটি হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণের কথা ছিল। তবে এর কয়েক ঘণ্টা আগে বাধে বিপত্তি। ফ্লাইটটিতে বোমা থাকার একটি বার্তা পায় বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। এরপর শ্বাসরুদ্ধকর ৬ ঘণ্টা সময় পার করেন সংশ্লিষ্টরা। তবে শেষ পর্যন্ত উড়োজাহাজটিতে তল্লাশি চালিয়ে বোমা বা বোমা জাতীয় কোনো বস্তুর উপস্থিতি পায়নি বোমা নিষ্ক্রিয়কারী দল। দুপুরে বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন কামরুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ফ্লাইটে বোমা থাকার গুজব সম্বলিত বার্তাটি পাঠানো হয় হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে। অপরিচিত একটি পাকিস্তানি নম্বর দিয়ে খোলা হোয়াটসঅ্যাপ একাউন্টটি থেকে বুধবার ভোর সাড়ে ৫টার দিকে বার্তা আসে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কন্ট্রোল রুমে। পরে সেখানকার কর্মরতরা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বিষয়টি অবহিত করেন।

খবর পাওয়ার পরপরই বেবিচক চেয়ারম্যান এয়ারভাইস মার্শাল মঞ্জুর কবীর ভুঁইয়া, বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন কামরুল ইসলামসহ সংশ্লিষ্ট অনেকেই বিমানবন্দরে ছুটে আসেন। শুরু হয় নিরাপত্তা সদস্যদের মোতায়েন। বিমান বাহিনীর একটি বোমা নিষ্ক্রিয় দল, কুইক রেসপন্স ফোর্স, ফায়ার সার্ভিসসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বিভিন্ন বাহিনীর বিপুলসংখ্যক সদস্য ব্যাপক প্রস্তুতি নেন।

সকাল ৯টা ৩৫ মিনিটে ফ্লাইটটি জরুরি অবতরণের পরপরই গ্রুপ ক্যাপ্টেন কামরুল ইসলামের নেতৃত্বে শুরু হয় তৎপরতা। প্রথমে ফ্লাইটের ভেতর থেকে দুই শতাধিক যাত্রী, ক্রুসহ সবাইকে নিরাপদে বের করে সরিয়ে নেওয়া হয়। এরপর শুরু হয় তল্লাশি অভিযান। তবে সেখানে বোমা বা বোমা-জাতীয় কিছু পাওয়া যায়নি। বেলা ১২টার পর এমন ঘোষণার পর স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেন অন্তত দুই শতাধিক কর্মকর্তা-নিরাপত্তা কর্মী।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, হোয়াটসঅ্যাপের ওই বার্তায় বাংলাদেশ ব্মিানের বিজি-৩৫৬ ফ্লাইটটিতে বোমা থাকার কথা বলা হয়। সেটি যেকোনো সময় বিস্ফোরণ ঘটবে বলেও হুঁশিয়ারি করা হয়েছিল।

হোয়াটসঅ্যাপ বার্তাটি ছিল কালো ব্যাকগ্রাউন্ডের একটি ইমেজ এবং তাতে সাদা অক্ষরে লেখা ছিল, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট বিজি ৩৫৬ (রোম থেকে ঢাকা), যার আনুমানিক অবতরণের সময় রাত ৮টা ৪০ মিনিট। উড়োজাহাজটিতে এই মুহূর্তে ৩৪ কেজি ওজনের বিস্ফোরক রয়েছে বলেও ওই ক্ষুদে বার্তায় দাবি করা হয়। একইসঙ্গে সতর্ক থাকারও পরামর্শ দেওয়া হয় বার্তাটিতে।
এ ঘটনা প্রসঙ্গে বেবিচক চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মঞ্জুর কবীর ভুঁইয়া বলেন, আমাদের নিরাপত্তা যে কত সুসংহত, সেটা আমরা আজ বুঝিয়ে দিয়েছি। আমাদের প্রতিটি সদস্য আন্তরিকভাবে পরিস্থিতি মোকাবিলা করেছেন।
তিনি বলেন, এ ধরনের সংবাদ পাওয়ার পরপরই আমি নিজেসহ সব কর্মকর্তাকে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করি। কোনো কিছু না পাওয়া গেলেও আমরা প্রতিটি তথ্যকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করি। নিরাপত্তার ব্যাপারে আমরা সবসময়ই জিরো টলারেন্স।

ভুয়া তথ্যদাতা শনাক্ত হলে ব্যবস্থা: ইতালির রোম থেকে ঢাকায় আসা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি উড়োজাহাজে নিরাপত্তা হুমকি ‘মিথ্যা সংবাদের ভিত্তিতে হয়েছে’ বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। বিষয়টি নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নে তিনি বলেছেন, এটা একটা মিথ্যা সংবাদ। কোনো কিছু তো হয়নি। মিথ্যা সংবাদের ভিত্তিতে হয়েছে; (সংবাদদাতাদের) শনাক্ত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। শনাক্ত করা গেলেই আইনের আওতায় আনা হবে।

বুধবার (২২ জানুয়ারি) বিকালে রাজধানীর খামার বাড়িতে কৃষি বিপণন অধিদপ্তর ও কৃষি তথ্য সার্ভিস পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে কথা বলেন উপদেষ্টা।