নিজস্ব প্রতিবেদক: জুলাই অভ্যুত্থানে আহত হয়ে যারা চিকিৎসাধীন রয়েছেন হাসপাতালে, সেখানেই তাদের ভোটার করে নিচ্ছে নির্বাচন কমিশন।
ঢাকার তিনটি হাসপাতালে এই সেবার পাশাপাশি আহতদের কারও জাতীয় পরিচয়পত্রে (এনআইডি) ভুল থাকলে তা সংশোধনের কাজও সারা হচ্ছে। এর আগে আরও দুই হাসপাতালে এ সেবা দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, নির্বাচন কমিশনের চারজনের একটি দল আহতদের এ সেবা দিচ্ছেন। সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত চলবে এ সেবা।
সেখানে কথা হচ্ছিল নির্বাচন কমিশনের সহকারী প্রোগ্রামার সাহাবুদ্দিনের সঙ্গে। তিনি বলেন, জুলাই বিপ্লবের পরে ইতোমধ্যে আগারগাঁওয়ের চক্ষু হাসপাতাল এবং সেখানকার পঙ্গু হাসপাতালে কাজ করা হয়েছে। আজ পিজি হাসপাতালে কাজ করছি, আগামীকাল ঢাকা মেডিকেল কলেজে কাজ করব।
একইদিন জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটেও এ সেবা দেবেন ইসি কর্মকর্তারা।
আহতদের পাশাপাশি তাদের স্বজনরাও এ সেবা পাচ্ছেন জানিয়ে সাহাবুদ্দিন বলেন, আহতদের সঙ্গে সঙ্গে যিনি রয়েছেন- বাবা-মা, ভাই-বোন, তারাও এ সেবার অন্তর্ভুক্ত হচ্ছেন। যারা এনআইডি কার্ড করেননি এবং হারিয়ে ফেলেছেন অথবা কোনো সংশোধন করছেন তারা এখানে সেবা পাচ্ছেন।
বেলা ১২টার মধ্যে ৩৮ জন নতুন ভোটার তালিকাভুক্ত হওয়ার তথ্য দেন তিনি।
হাসপাতালে ভোটার তালিকাভুক্ত হচ্ছিলেন অভ্যুত্থানে আহত ইসমে আজম। তিনি বলেন, আশুলিয়া থানার সামনে আহত হয়েছিলাম ৬ মাস আগে। এবারই প্রথম ভোটার হচ্ছি।
আজম বলেন, আমি দুইবার আহত হয়েছি। প্রথমবার ২৮ জুলাই আর পরেরবার ৫ আগস্ট। প্রথমবার ছাত্রলীগ মেরেছিল এবং দ্বিতীয়বার পুলিশের গুলি লেগেছিল।
কুমিল্লার দেবিদ্বারের ভোটার মীর আব্দুল গফুর কলেজের শিক্ষার্থী ইয়াসির আরাফাত এনআইডি সংশোধনের কাজ সারছিলেন। আরাফাত জানান, ৪ আগস্ট থেকেই আহত অবস্থায় আছি। ছাত্রলীগের হামলায় কোমরের মাজা ভেঙে গেছে। তারপর থেকে পিজি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি। আজ এনআইডি কার্ডের কিছু ভুল সংশোধন করতে এখানে এসেছি।
এর আগে মঙ্গলবার সকালে নির্বাচন কমিশনের এনআইডি উইংয়ের মহাপরিচালক এ এস এম হুমায়ুন কবির, সিস্টেম ম্যানেজার মুহাম্মদ আশরাফ হোসেন, প্রবাসীর সেবা শাখার পরিচালক আব্দুল মমিন সরকার অন্যরা এ সেবা কার্যক্রম পরিদর্শনে করেন।
ভোটার তালিকা হালনাগাদ করতে বাড়ি বাড়ি গিয়ে নারী, পুরুষ ও হিজড়া জনগোষ্ঠীর ভোটারযোগ্য নাগরিকদের তথ্য সংগ্রহ শুরু হয় সোমবার, যা চলবে ৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত।
২০০৮ সালের ১ জানুয়ারি অথবা তার আগে যাদের জন্ম, যারা বাদ পড়েছেন, তাদের ভোটার তালিকাভুক্তি ও মৃত ভোটারদের তালিকা থেকে বাদ এবং আবাসস্থল পরিবর্তনের কারণে স্থানান্তরের সুযোগ থাকবে এ হালনাগাদে। নিবন্ধনের জন্য এবার ভোটারযোগ্য প্রায় ১৯ লাখ নাগরিকের তথ্য সংগ্রহ হতে পারে বলে মনে করছে ইসি।