ঢাকা ০১:৫৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৮ জানুয়ারী ২০২৫, ৫ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আদিবাসী ছাত্র-জনতার ওপর হামলা গ্রহণযোগ্য নয়: উদীচী

  • আপডেট সময় : ০৮:৪০:৫৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ জানুয়ারী ২০২৫
  • ২১ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক: পাঠ্যবই থেকে ‘আদিবাসী’ শব্দযুক্ত চিত্রকর্ম বাদ দেওয়ার প্রতিবাদে রাস্তায় নামা ছাত্র-জনতার ওপর হামলার ঘটনায় ‘তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ’ জানিয়েছে বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী।

শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) এক বিবৃতিতে সংগঠনটি বলেছে, পুলিশ ও ভুঁইফোড় ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীদের এই হামলা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। ওই হামলার প্রতিবাদে ডাকা কর্মসূচিতে ‘পুলিশি হামলার’ নিন্দাও জানিয়েছে সংগঠনটি।

বিবৃতিতে উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি অধ্যাপক বদিউর রহমান এবং সাধারণ সম্পাদক অমিত রঞ্জন দে বলেন, এই হামলা ঠেকাতে না পারার দায় অন্তর্বর্তী সরকারকে নিতে হবে।

সংগঠনটি মনে করে, হাজার বছর ধরে এই ভূখণ্ডে বসবাস করছেন পাহাড়ি বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষ। তারা এই ভূখণ্ডের আদি বাসিন্দা। তাই তাদের আদিবাসী না বলে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী বা অন্য কোনো নামে অভিহিত করা অন্যায়।

বিবৃতিতে বলা হয়, হামলা করে আন্দোলন দমন ছিল পতিত স্বৈরাচারের স্বাভাবিক চরিত্র। সেই দমনপীড়ন এবং অত্যাচারী শাসনের প্রতিবাদেই জুলাই-আগস্টে রাজপথে নেমে এসেছিল আপামর জনসাধারণ।

ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে বিদায় নেয় ফ্যাসিবাদী সরকার। কিন্তু বর্তমান সরকারও যদি সেই একই পন্থায় আন্দোলন দমনের পথে হাঁটে, তবে তা হবে অভ্যুত্থানের প্রকৃত চেতনার পরিপন্থি। ছাত্র-জনতা যে লক্ষ্যে আত্মদান করেছে, তার সঙ্গেও বিশ্বাসঘাতকতা করার শামিল হবে।

নবম-দশম শ্রেণির বাংলা ভাষার ব্যাকরণ ও নির্মিতি বইয়ের পেছনের প্রচ্ছদে ‘আদিবাসী’ শব্দ সংবলিত একটি চিত্রকর্ম স্থান পেয়েছিল। সেখানে একটি গাছের পাঁচটি পাতায় লেখা ছিল মুসলিম, হিন্দু, খ্রিষ্টান, বৌদ্ধ ও আদিবাসী; পাশে লেখা ছিল ‘পাতা ছেঁড়া নিষেধ’।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী ‘স্টুডেন্ট ফর সভরেন্টি’ ব্যানারে গত ১২ জানুয়ারি এনসিটিবি ঘেরাও করার পর রাতে ওই বইয়ের অনলাইন সংস্করণ থেকে চিত্রকর্মটি সরিয়ে ফেলা হয়।

এর প্রতিবাদে গত বুধবার বেলা ১১টায় পাঠ্যপুস্তক ভবন ঘেরাওয়ের ঘোষণা দেয় ‘সংক্ষুব্ধ আদিবাসী ছাত্রজনতা’ নামে আদিবাসী শিক্ষার্থীদের একটি সংগঠন। পরে ‘স্টুডেন্টস ফর সভরেন্টি’ও একইসময়ে পাঠ্যপুস্তক ভবন ঘেরাও করার ঘোষণা দেয়। নিজ নিজ কর্মসূচি পালনে উভয়পক্ষ বুধবার পাঠ্যপুস্তক ভবনের সামনে পৌঁছালে সংঘর্ষ শুর হয়। এ ঘটনায় ৩৩ জন আহত হয়েছেন বলে দুই সংগঠনের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে। হামলার ঘটনায় আরিফ ও আব্বাস নামের দুইজনকে গ্রেপ্তারের তথ্য দিয়েছে পুলিশ।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

আদিবাসী ছাত্র-জনতার ওপর হামলা গ্রহণযোগ্য নয়: উদীচী

আপডেট সময় : ০৮:৪০:৫৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ জানুয়ারী ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক: পাঠ্যবই থেকে ‘আদিবাসী’ শব্দযুক্ত চিত্রকর্ম বাদ দেওয়ার প্রতিবাদে রাস্তায় নামা ছাত্র-জনতার ওপর হামলার ঘটনায় ‘তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ’ জানিয়েছে বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী।

শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) এক বিবৃতিতে সংগঠনটি বলেছে, পুলিশ ও ভুঁইফোড় ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীদের এই হামলা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। ওই হামলার প্রতিবাদে ডাকা কর্মসূচিতে ‘পুলিশি হামলার’ নিন্দাও জানিয়েছে সংগঠনটি।

বিবৃতিতে উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি অধ্যাপক বদিউর রহমান এবং সাধারণ সম্পাদক অমিত রঞ্জন দে বলেন, এই হামলা ঠেকাতে না পারার দায় অন্তর্বর্তী সরকারকে নিতে হবে।

সংগঠনটি মনে করে, হাজার বছর ধরে এই ভূখণ্ডে বসবাস করছেন পাহাড়ি বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষ। তারা এই ভূখণ্ডের আদি বাসিন্দা। তাই তাদের আদিবাসী না বলে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী বা অন্য কোনো নামে অভিহিত করা অন্যায়।

বিবৃতিতে বলা হয়, হামলা করে আন্দোলন দমন ছিল পতিত স্বৈরাচারের স্বাভাবিক চরিত্র। সেই দমনপীড়ন এবং অত্যাচারী শাসনের প্রতিবাদেই জুলাই-আগস্টে রাজপথে নেমে এসেছিল আপামর জনসাধারণ।

ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে বিদায় নেয় ফ্যাসিবাদী সরকার। কিন্তু বর্তমান সরকারও যদি সেই একই পন্থায় আন্দোলন দমনের পথে হাঁটে, তবে তা হবে অভ্যুত্থানের প্রকৃত চেতনার পরিপন্থি। ছাত্র-জনতা যে লক্ষ্যে আত্মদান করেছে, তার সঙ্গেও বিশ্বাসঘাতকতা করার শামিল হবে।

নবম-দশম শ্রেণির বাংলা ভাষার ব্যাকরণ ও নির্মিতি বইয়ের পেছনের প্রচ্ছদে ‘আদিবাসী’ শব্দ সংবলিত একটি চিত্রকর্ম স্থান পেয়েছিল। সেখানে একটি গাছের পাঁচটি পাতায় লেখা ছিল মুসলিম, হিন্দু, খ্রিষ্টান, বৌদ্ধ ও আদিবাসী; পাশে লেখা ছিল ‘পাতা ছেঁড়া নিষেধ’।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী ‘স্টুডেন্ট ফর সভরেন্টি’ ব্যানারে গত ১২ জানুয়ারি এনসিটিবি ঘেরাও করার পর রাতে ওই বইয়ের অনলাইন সংস্করণ থেকে চিত্রকর্মটি সরিয়ে ফেলা হয়।

এর প্রতিবাদে গত বুধবার বেলা ১১টায় পাঠ্যপুস্তক ভবন ঘেরাওয়ের ঘোষণা দেয় ‘সংক্ষুব্ধ আদিবাসী ছাত্রজনতা’ নামে আদিবাসী শিক্ষার্থীদের একটি সংগঠন। পরে ‘স্টুডেন্টস ফর সভরেন্টি’ও একইসময়ে পাঠ্যপুস্তক ভবন ঘেরাও করার ঘোষণা দেয়। নিজ নিজ কর্মসূচি পালনে উভয়পক্ষ বুধবার পাঠ্যপুস্তক ভবনের সামনে পৌঁছালে সংঘর্ষ শুর হয়। এ ঘটনায় ৩৩ জন আহত হয়েছেন বলে দুই সংগঠনের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে। হামলার ঘটনায় আরিফ ও আব্বাস নামের দুইজনকে গ্রেপ্তারের তথ্য দিয়েছে পুলিশ।