ঢাকা ০২:৫৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫, ২ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পাঁচ বছর ধরে যৌন নির্যাতনের শিকার দলিত কিশোরী, অভিযুক্ত ৬৪

  • আপডেট সময় : ০৭:৩২:৩২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ জানুয়ারী ২০২৫
  • ৯ বার পড়া হয়েছে

বিদেশের খবর ডেস্ক : ভারতের কেরালায় এক দলিত কিশোরীকে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে ৬৪ জনের বিরুদ্ধে। কিশোরী অভিযোগ, ১৩ বছর বয়স থেকে এ পর্যন্ত পাঁচ বছর ধরে এই নির্যাতন চলেছে। পুলিশ এ মামলায় এখন পর্যন্ত ২৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। আটককৃতরা কাস্টডিতে আছে।

তবে তারা এখনও জনসমক্ষে কোনও বিবৃতি দেয়নি। ১৭ থেকে ৪৭ বছর বয়সী অভিযুক্তদের মধ্যে ওই কিশোরীর প্রতিবেশী, ক্রীড়া কোচ ও তার বাবার বন্ধুরা রয়েছেন বলে বিবিসি-কে জানিয়েছে পুলিশ। সম্প্রতি এক বেসরকারি সংস্থা ওই দলিত কিশোরীর এলাকা পরিদর্শনে গিয়েছিল। বাড়ি বাড়ি গিয়ে নানা বিষয়ে খোঁজ নিচ্ছিল তারা।

সেসময় নির্যাতিতা কিশোরীর বাড়িতেও তারা যায়। তখনই বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে। এর পরই শিশুকল্যাণ কমিটিকে বিষয়টি জানায় বেসরকারি সংস্থাটি। পাশাপাশি অভিযোগও দায়ের করা হয়। এরপরই বিষয়টি তদন্তে নামে পুলিশ। নির্যাতিতার বয়ান রেকর্ড করে তারা। কিশোরীর কাউন্সেলিং করানো হয়। তখন সে পুরো ঘটনা জানায়। নির্যাতিতার দাবি, তার যখন ১৩ বছর বয়স, এক প্রতিবেশী প্রথম তার শ্লীলতাহানি করে। কেবল তা-ই নয়, তাকে জোর করে পর্নোগ্রাফি দেখতেও বাধ্য করে।

এরপর ক্রীড়া প্রশিক্ষক তাকে যৌন হেনস্থা করেন এবং প্রশিক্ষক সেই ঘটনার ভিডিও করে সেগুলো ছড়িয়ে দেন। বার বার এমন ঘটনার শিকার হয়ে মানসিক অবসাদে ভুগতে শুরু করেন কিশোরী। তার পরেও নানা জনের হাতে তিনি যৌন হেনস্থার শিকার হয়েছেন গত পাঁচ বছর ধরে। এ সময়ের মধ্যে তিনবার গণধর্ষণের শিকার হওয়ার অভিযোগও করেছেন এই কিশোরী। তদন্তে নেমে পুলিশ ৬৪ জনের হদিস পায়। যারা এ ঘটনায় জড়িত ছিল বলে অভিযোগ।

ভারতে নিম্নবর্ণ ও উপজাতি সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে অপরাধ রোধে তফসিলি জাতি ও উপজাতি নির্যাতন প্রতিরোধ আইনসহ বিভিন্ন ভারতীয় আইনে পুলিশ প্রায় ১৮টি মামলা দায়ের করেছে। তবে দলিতদের নিরাপত্তা আইন থাকা সত্ত্বেও ভারতে ব্যাপক বৈষম্যের শিকার হয় তারা। ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তা নন্দকুমার এস বিবিসি হিন্দিকে বলেন, “ যেহেতু ওই নারী নাবালিকা বয়সেই নির্যাতনের শিকার হয়েছে। সেকারণে যৌন নির্যাতন থেকে শিশু সুরক্ষা আইনেও মামলা দায়ের করা হয়েছে।” বিবিসি লিখেছে, যেহেতু বিষয়টি এখনও তদন্তনাধীন, তাই প্রয়োজনে আরও নতুন মামলা দায়ের করা হতে পারে। ঘটনা তদন্তের জন্য ২৫ সদস্যের একটি টিম গঠন করা হয়েছে।

কিশোরীকে যৌন নির্যাতন করা ব্যাক্তিরা তার বাবার ফোনের মাধ্যমে তার সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন। কিশোরী ওই মোবাইলেই অভিযুক্তদের পরিচয় সংরক্ষণ করেছিলেন। পুলিশ এখন সেই মোবাইলের সূত্র ধরেই অভিযুক্তদের সন্ধান করছে। তবে কিশোরীর পরিবার প্রথমদিকে নির্যাতনের অভিযোগ সম্পর্কে অবগত ছিল না বলে জানা গেছে। ভুক্তভোগী ওই কিশোরীকে এখন নিরাপত্তা স্বার্থে সিডব্লিউসির একটি আশ্রয়কেন্দ্রে স্থানান্তরিত করা হয়েছে।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

পাঁচ বছর ধরে যৌন নির্যাতনের শিকার দলিত কিশোরী, অভিযুক্ত ৬৪

আপডেট সময় : ০৭:৩২:৩২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ জানুয়ারী ২০২৫

বিদেশের খবর ডেস্ক : ভারতের কেরালায় এক দলিত কিশোরীকে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে ৬৪ জনের বিরুদ্ধে। কিশোরী অভিযোগ, ১৩ বছর বয়স থেকে এ পর্যন্ত পাঁচ বছর ধরে এই নির্যাতন চলেছে। পুলিশ এ মামলায় এখন পর্যন্ত ২৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। আটককৃতরা কাস্টডিতে আছে।

তবে তারা এখনও জনসমক্ষে কোনও বিবৃতি দেয়নি। ১৭ থেকে ৪৭ বছর বয়সী অভিযুক্তদের মধ্যে ওই কিশোরীর প্রতিবেশী, ক্রীড়া কোচ ও তার বাবার বন্ধুরা রয়েছেন বলে বিবিসি-কে জানিয়েছে পুলিশ। সম্প্রতি এক বেসরকারি সংস্থা ওই দলিত কিশোরীর এলাকা পরিদর্শনে গিয়েছিল। বাড়ি বাড়ি গিয়ে নানা বিষয়ে খোঁজ নিচ্ছিল তারা।

সেসময় নির্যাতিতা কিশোরীর বাড়িতেও তারা যায়। তখনই বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে। এর পরই শিশুকল্যাণ কমিটিকে বিষয়টি জানায় বেসরকারি সংস্থাটি। পাশাপাশি অভিযোগও দায়ের করা হয়। এরপরই বিষয়টি তদন্তে নামে পুলিশ। নির্যাতিতার বয়ান রেকর্ড করে তারা। কিশোরীর কাউন্সেলিং করানো হয়। তখন সে পুরো ঘটনা জানায়। নির্যাতিতার দাবি, তার যখন ১৩ বছর বয়স, এক প্রতিবেশী প্রথম তার শ্লীলতাহানি করে। কেবল তা-ই নয়, তাকে জোর করে পর্নোগ্রাফি দেখতেও বাধ্য করে।

এরপর ক্রীড়া প্রশিক্ষক তাকে যৌন হেনস্থা করেন এবং প্রশিক্ষক সেই ঘটনার ভিডিও করে সেগুলো ছড়িয়ে দেন। বার বার এমন ঘটনার শিকার হয়ে মানসিক অবসাদে ভুগতে শুরু করেন কিশোরী। তার পরেও নানা জনের হাতে তিনি যৌন হেনস্থার শিকার হয়েছেন গত পাঁচ বছর ধরে। এ সময়ের মধ্যে তিনবার গণধর্ষণের শিকার হওয়ার অভিযোগও করেছেন এই কিশোরী। তদন্তে নেমে পুলিশ ৬৪ জনের হদিস পায়। যারা এ ঘটনায় জড়িত ছিল বলে অভিযোগ।

ভারতে নিম্নবর্ণ ও উপজাতি সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে অপরাধ রোধে তফসিলি জাতি ও উপজাতি নির্যাতন প্রতিরোধ আইনসহ বিভিন্ন ভারতীয় আইনে পুলিশ প্রায় ১৮টি মামলা দায়ের করেছে। তবে দলিতদের নিরাপত্তা আইন থাকা সত্ত্বেও ভারতে ব্যাপক বৈষম্যের শিকার হয় তারা। ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তা নন্দকুমার এস বিবিসি হিন্দিকে বলেন, “ যেহেতু ওই নারী নাবালিকা বয়সেই নির্যাতনের শিকার হয়েছে। সেকারণে যৌন নির্যাতন থেকে শিশু সুরক্ষা আইনেও মামলা দায়ের করা হয়েছে।” বিবিসি লিখেছে, যেহেতু বিষয়টি এখনও তদন্তনাধীন, তাই প্রয়োজনে আরও নতুন মামলা দায়ের করা হতে পারে। ঘটনা তদন্তের জন্য ২৫ সদস্যের একটি টিম গঠন করা হয়েছে।

কিশোরীকে যৌন নির্যাতন করা ব্যাক্তিরা তার বাবার ফোনের মাধ্যমে তার সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন। কিশোরী ওই মোবাইলেই অভিযুক্তদের পরিচয় সংরক্ষণ করেছিলেন। পুলিশ এখন সেই মোবাইলের সূত্র ধরেই অভিযুক্তদের সন্ধান করছে। তবে কিশোরীর পরিবার প্রথমদিকে নির্যাতনের অভিযোগ সম্পর্কে অবগত ছিল না বলে জানা গেছে। ভুক্তভোগী ওই কিশোরীকে এখন নিরাপত্তা স্বার্থে সিডব্লিউসির একটি আশ্রয়কেন্দ্রে স্থানান্তরিত করা হয়েছে।