ঢাকা ০৩:০১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৫, ২৭ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বায়ু দূষণ ও স্মৃতি বিভ্রমের মধ্যে রয়েছে ‘আশ্চর্য যোগসূত্র’

  • আপডেট সময় : ০৬:৪৩:৩২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১০ জানুয়ারী ২০২৫
  • ১১ বার পড়া হয়েছে

প্রযুক্তি ডেস্ক: ডিমেনশিয়ার সঙ্গে বিস্ময়কর যোগসূত্র রয়েছে বায়ু দূষণের- সাম্প্রতিক এক গবেষণায় এমনই দাবি করেছেন গবেষকরা।

ডিমেনশিয়া এমন একটি অবস্থা, যা মানুষের স্মৃতি, চিন্তাভাবনা ও আচরণের ওপর প্রভাব ফেলে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে বয়স্কদের হয় এ রোগ। প্রাথমিকভাবে বয়স্ক প্রাপ্তবয়স্কদের এ রোগ হলেও অল্প বয়স্ক ব্যক্তিরা এর ঝুঁকি থেকে পুরোপুরি বাইরে নন।

এরইমধ্যে ফুসফুস ও হার্টের ওপর বিভিন্ন ক্ষতিকর প্রভাব ফেলার জন্য বায়ু দূষণ পরিচিত। এবার মস্তিষ্কের স্বাস্থ্যের ঝুঁকির সঙ্গেও যোগ হলো এ অবস্থার। সাম্প্রতিক গবেষণায় উঠে এসেছে, ডিমেনশিয়ায় ভূমিকা রাখতে পারে বায়ু দূষণ।

এ গবেষণার কেন্দ্রে রয়েছে ‘পিএম ২.৫’ নামের বায়ুর ছোট কণা, যা খালি চোখে দেখা যায় না। এসব কণা শ্বাসযন্ত্রের সিস্টেমে প্রবেশের জন্য যথেষ্ট ছোট বলে প্রতিবেদনে লিখেছে বিজ্ঞানভিত্তিক সাইট নোরিজ।

এসব কণা বেশিরভাগ সময়ই আসে গাড়ি ও শিল্প কারখানা থেকে আসা দূষণ থেকে। ঝুঁকি তৈরিতে এরইমধ্যে পরিচিতি রয়েছে ‘পিএম ২.৫’-এর। তবে ডিমেনশিয়ার ঝুঁকি বাড়ানোর ক্ষেত্রে এর সম্ভাব্য ভূমিকা সম্প্রতি সামনে এসেছে গবেষণায়।

গবেষণাটি হয়েছে সুইডেনের স্টকহোম শহরে। এ শহরে ১২ বছর ধরে বসবাস করছেন এমন আড়াই হাজারেরও বেশি প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তিকে পর্যবেক্ষণ করে ৩৭৬ জন অংশগ্রহণকারীর মধ্যে ডিমেনশিয়া দেখেছেন গবেষকরা।

অংশগ্রহণকারীদের ‘পিএম ২.৫’-এর সংস্পর্শে আসার বিষয়টি নিবিড়ভাবে পরীক্ষা করেছেন গবেষকরা। একইসঙ্গে তাদের দেহের দুটি মূল পদার্থের দিকেও নজর দিয়েছেন তারা।

মস্তিষ্কের স্বাস্থ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ এ দুটি পদার্থ, যা খাদ্যের ওপর প্রভাব ফেলে। একটি মাংস, মাছ, দুধ, মটরশুটি এবং ডিমের মতো খাবারে পাওয়া যায়। আর অন্যটি প্রাকৃতিকভাবে তৈরি হয় কোষে, যা নির্দিষ্ট ভিটামিনের সাহায্যে দেহেই প্রথম পদার্থে রূপান্তরিত হতে পারে।

অংশগ্রহণকারীদের রক্ত পরীক্ষা ও তাদের জীবনযাপন পদ্ধতির ওপরও জরিপ চালান গবেষকরা। এর মাধ্যমে তাদের স্বাস্থ্য ও অভ্যাসের বিস্তারিত ছবিও সংগ্রহ করেছেন তারা।

গবেষণার ফলাফলে দেখা গেছে, ডিমেনশিয়ায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের ‘পিএম২.৫’-এর মাত্রা ছিল অন্যদের তুলনায় কিছুটা বেশি। ডিমেনশিয়ায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের দেহে এই দুটি গুরুত্বপূর্ণ পদার্থের ভারসাম্যহীন মাত্রাও দেখা গেছে।

অংশগ্রহণকারীদের বয়স, লিঙ্গ, ধূমপানের অভ্যাস ও শিক্ষার মতো বিভিন্ন বিষয় বিবেচনার পর গবেষকরা খুঁজে পেয়েছেন, দেহে পিএম ২.৫ এর সামান্য বৃদ্ধিও ডিমেনশিয়া হওয়ার ঝুঁকি বাড়িয়ে তুলতে পারে ৭০ শতাংশ।

ঠিক কোন উপায়ে বায়ু দূষণ মস্তিষ্কে প্রভাব ফেলে তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে গবেষকরা বলছেন, মস্তিষ্কের প্রদাহ বা অক্সিডেটিভ স্ট্রেসে প্রভাব ফেলতে পারে পিএম ২.৫, যা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মস্তিষ্কের বিভিন্ন কোষের ক্ষতি করতে পারে। এসব জটিল প্রক্রিয়া পুরোপুরিভাবে বুঝতে আরও গবেষণার প্রয়োজন।

 

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

‘মাইনাস টু’ আশা কখনো পূরণ হবে না

বায়ু দূষণ ও স্মৃতি বিভ্রমের মধ্যে রয়েছে ‘আশ্চর্য যোগসূত্র’

আপডেট সময় : ০৬:৪৩:৩২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১০ জানুয়ারী ২০২৫

প্রযুক্তি ডেস্ক: ডিমেনশিয়ার সঙ্গে বিস্ময়কর যোগসূত্র রয়েছে বায়ু দূষণের- সাম্প্রতিক এক গবেষণায় এমনই দাবি করেছেন গবেষকরা।

ডিমেনশিয়া এমন একটি অবস্থা, যা মানুষের স্মৃতি, চিন্তাভাবনা ও আচরণের ওপর প্রভাব ফেলে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে বয়স্কদের হয় এ রোগ। প্রাথমিকভাবে বয়স্ক প্রাপ্তবয়স্কদের এ রোগ হলেও অল্প বয়স্ক ব্যক্তিরা এর ঝুঁকি থেকে পুরোপুরি বাইরে নন।

এরইমধ্যে ফুসফুস ও হার্টের ওপর বিভিন্ন ক্ষতিকর প্রভাব ফেলার জন্য বায়ু দূষণ পরিচিত। এবার মস্তিষ্কের স্বাস্থ্যের ঝুঁকির সঙ্গেও যোগ হলো এ অবস্থার। সাম্প্রতিক গবেষণায় উঠে এসেছে, ডিমেনশিয়ায় ভূমিকা রাখতে পারে বায়ু দূষণ।

এ গবেষণার কেন্দ্রে রয়েছে ‘পিএম ২.৫’ নামের বায়ুর ছোট কণা, যা খালি চোখে দেখা যায় না। এসব কণা শ্বাসযন্ত্রের সিস্টেমে প্রবেশের জন্য যথেষ্ট ছোট বলে প্রতিবেদনে লিখেছে বিজ্ঞানভিত্তিক সাইট নোরিজ।

এসব কণা বেশিরভাগ সময়ই আসে গাড়ি ও শিল্প কারখানা থেকে আসা দূষণ থেকে। ঝুঁকি তৈরিতে এরইমধ্যে পরিচিতি রয়েছে ‘পিএম ২.৫’-এর। তবে ডিমেনশিয়ার ঝুঁকি বাড়ানোর ক্ষেত্রে এর সম্ভাব্য ভূমিকা সম্প্রতি সামনে এসেছে গবেষণায়।

গবেষণাটি হয়েছে সুইডেনের স্টকহোম শহরে। এ শহরে ১২ বছর ধরে বসবাস করছেন এমন আড়াই হাজারেরও বেশি প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তিকে পর্যবেক্ষণ করে ৩৭৬ জন অংশগ্রহণকারীর মধ্যে ডিমেনশিয়া দেখেছেন গবেষকরা।

অংশগ্রহণকারীদের ‘পিএম ২.৫’-এর সংস্পর্শে আসার বিষয়টি নিবিড়ভাবে পরীক্ষা করেছেন গবেষকরা। একইসঙ্গে তাদের দেহের দুটি মূল পদার্থের দিকেও নজর দিয়েছেন তারা।

মস্তিষ্কের স্বাস্থ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ এ দুটি পদার্থ, যা খাদ্যের ওপর প্রভাব ফেলে। একটি মাংস, মাছ, দুধ, মটরশুটি এবং ডিমের মতো খাবারে পাওয়া যায়। আর অন্যটি প্রাকৃতিকভাবে তৈরি হয় কোষে, যা নির্দিষ্ট ভিটামিনের সাহায্যে দেহেই প্রথম পদার্থে রূপান্তরিত হতে পারে।

অংশগ্রহণকারীদের রক্ত পরীক্ষা ও তাদের জীবনযাপন পদ্ধতির ওপরও জরিপ চালান গবেষকরা। এর মাধ্যমে তাদের স্বাস্থ্য ও অভ্যাসের বিস্তারিত ছবিও সংগ্রহ করেছেন তারা।

গবেষণার ফলাফলে দেখা গেছে, ডিমেনশিয়ায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের ‘পিএম২.৫’-এর মাত্রা ছিল অন্যদের তুলনায় কিছুটা বেশি। ডিমেনশিয়ায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের দেহে এই দুটি গুরুত্বপূর্ণ পদার্থের ভারসাম্যহীন মাত্রাও দেখা গেছে।

অংশগ্রহণকারীদের বয়স, লিঙ্গ, ধূমপানের অভ্যাস ও শিক্ষার মতো বিভিন্ন বিষয় বিবেচনার পর গবেষকরা খুঁজে পেয়েছেন, দেহে পিএম ২.৫ এর সামান্য বৃদ্ধিও ডিমেনশিয়া হওয়ার ঝুঁকি বাড়িয়ে তুলতে পারে ৭০ শতাংশ।

ঠিক কোন উপায়ে বায়ু দূষণ মস্তিষ্কে প্রভাব ফেলে তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে গবেষকরা বলছেন, মস্তিষ্কের প্রদাহ বা অক্সিডেটিভ স্ট্রেসে প্রভাব ফেলতে পারে পিএম ২.৫, যা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মস্তিষ্কের বিভিন্ন কোষের ক্ষতি করতে পারে। এসব জটিল প্রক্রিয়া পুরোপুরিভাবে বুঝতে আরও গবেষণার প্রয়োজন।