প্রযুক্তি ডেস্ক: কাগজ দিয়ে বায়োডিগ্রেডেবল বা পচনশীল ব্যাটারি বানিয়েছেন গবেষকরা, যা প্রচলিত শক্তি সঞ্চয় ও ব্যবহারের পদ্ধতিতে বিপ্লব ঘটাতে পারে বলে দাবি তাদের।
এ উদ্ভাবনটি করেছে সিঙ্গাপুর ভিত্তিক স্টার্টআপ ‘ফ্লিন্ট’। কোম্পানিটির দাবি, এটি বিশ্বের অন্যতম টেকসই ব্যাটারি। এতে পরিবেশবান্ধব বিভিন্ন উপাদান ব্যবহার করেছেন গবেষকরা। বর্তমান শক্তি সঞ্চয় পদ্ধতির পরিবেশগত বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ ঠেকাতে পারবে এই ব্যাটারি। মাটিতে পুঁতে রাখলে ছয় সপ্তাহের মধ্যেই মিশে যাবে এটি।
ফ্লিন্ট বলেছে, প্রচলিত লিথিয়াম-আয়ন ব্যাটারির মতোই দীর্ঘস্থায়ী কাগজের এই ব্যাটারি। একইসঙ্গে হালকা, সাশ্রয়ী ও দৈনন্দিন জীবনে ব্যবহৃত বিভিন্ন ডিভাইস চার্জিংয়ের জন্য যথেষ্ট কার্যকর।
ফ্লিন্ট ব্যাটারিটিকে ‘যুগান্তকারী বায়োডিগ্রেডেবল ও রিচার্জেবল ব্যাটারি প্রযুক্তি’ হিসাবে বর্ণনা করেছে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে ব্রিটিশ দৈনিক ইন্ডিপেনডেন্ট।
কাগজের টুকরার মধ্যে হাইড্রোজেলের একটি রিং ব্যবহার করে কাজ করে ব্যাটারিটি। এই হাইড্রোজেলের রিংটি এখানে ইলেক্ট্রোলাইট ও বিভাজক হিসাবে কাজ করে। প্রচলিত লিথিয়াম-আয়ন ব্যাটারির উৎপাদন প্রক্রিয়ার সঙ্গে মিল রেখেই ডিজাইন করা হয়েছে এটিকে।
এ সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের লাস ভেগাসে অনুষ্ঠিত কনজিউমার ইলেকট্রনিকস বা সিইএস ইভেন্টে ব্যাটারিটি উন্মোচন করেছে ফিন্ট। কাগজের এই ব্যাটারির আরও উন্নয়ন ও বাণিজ্যিকীকরণের জন্য ২০ লাখ ডলার অনুদান সংগ্রহ করেছে কোম্পানিটি।
ফ্লিন্ট-এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কার্লো চার্লস বলেছেন, এসব ব্যাটারিকে আমরা এমনভাবে তৈরি করেছি যেখানে প্রচলিত বিভিন্ন প্রযুক্তির ঘাটতি রয়েছে সেখানে এটি কার্যকর হতে পারে।
ফ্লিন্টের সহ-প্রতিষ্ঠাতা জেরেমি উই বলেছেন, এরইমধ্যে ২০টিরও বেশি কোম্পানির সঙ্গে আলোচনা করছে স্টার্টআপটি এবং বেশ কয়েকটি বাণিজ্যিক প্রকল্পের কাজের বিষয়ে কথা চলছে তাদের।
এসব কোম্পানির নাম বলেনি ফিন্ট। তবে ধারণা করা হচ্ছে, ভোক্তা ইলেকট্রনিক্স ও বিদ্যুচ্চালিত যানবাহন থেকে শুরু করে প্রতিরক্ষা এবং মহাকাশ বিষয়ক খাতের হতে পারে কোম্পানিগুলো।
আমরা কেবল একটি টেকসই বিকল্প প্রস্তাবই দিচ্ছি না; আমরা টেকসই ব্যাটারির জন্য আরও ভালো, নিরাপদ ও সাশ্রয়ী মূল্যের বিকল্পও সরবরাহ করছি- বলেছেন চার্লস।