বিনোদন প্রতিবেদক: সিলেট ওসমানী বিমানবন্দরে প্রস্তুত ছিল বিমান। বেশ কয়েকজন যাত্রীর সঙ্গে হাজির হন এক রহস্যময় নারী। মেরুন মখমলের কোট, কালো প্যান্ট। পায়ে কালো স্নিকার, চোখে কালো চশমা। খয়েরি ওড়নায় কান মাথা গলা পেচানো। সঙ্গে ল্যাভেন্ডার রঙের ককপিট লাগেজ। তখনও কেউ বোঝেননি তিনি কে, কোত্থেকে এলেন!
শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) সকাল ১০টায় সিলেট থেকে যুক্তরাজ্যের হিথরো বিমানবন্দরের উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়ার কথা বাংলাদেশ বিমানের বিজি ২০১ ফ্লাইটটির। ওই বিমানের যাত্রী ছিলেন তিনি। নাম নাসরিন আক্তার। তার বেশভূষায় সন্দেহ হয় ইমিগ্রেশন পুলিশের। তাকে আটকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। গোয়েন্দা পুলিশ বুঝে ফেলেন, তিনি আর কেউ নন, ঢালিউড অভিনেত্রী নিপুণ আক্তার! তার আর লন্ডন যাওয়া হয় না। ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ তাকে বিমানে উঠতে দেননি। হস্তান্তর করেছেন ইমিগ্রেশন পুলিশের কাছে।
জানা গেছে, যুক্তরাজ্য যাওয়ার উদ্দেশে ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ব্যবহার করেননি নিপুণ। বরং ঢাকা থেকে সড়কপথে সিলেট বিমানবন্দর হয়ে যুক্তরাজ্যে যেতে চেয়েছিলেন। সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের একটি সূত্র জাগো নিউজকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছে। জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থার (এনএসআই) আপত্তির মুখে তাকে আটকে দেওয়া হয়েছে। তবে একটি গণমাধ্যমের কাছে পুরো ঘটনাটি অস্বীকার করে নিপুণ জানিয়েছেন, তিনি এখন বনানীর বাসায়।
সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পরিচালক হাফিজ আহমদ বলেন, ‘সিলেট ওসমানী বিমানবন্দর থেকে আজ (শুক্রবার) সকাল ১০টায় বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইটে করে যুক্তরাজ্যে যাওয়ার জন্য বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশনে গিয়েছিলেন অভিনেত্রী নিপুণ আক্তার। এ সময় গোয়েন্দা সংস্থার আপত্তির কারণে তাকে আটকে দেওয়া হয়। পরে তাকে ইমিগ্রেশন পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।’
সিলেট মহানগর পুলিশের উপকমিশনার (গণমাধ্যম) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম জানান, নিপুণ আক্তারকে যুক্তরাজ্যগামী ফ্লাইট থেকে অফলোড করা হয়েছে। যদিও সিলেট মহানগর পুলিশের কাছে তার নামে কোনো মামলা নেই। তিনি নিশ্চিত করেন যে, সিলেট থেকে যুক্তরাজ্যে যাওয়ার জন্য নিপুণ সড়কপথে সিলেটে গিয়েছিলেন। পরে তিনি বিমানবন্দর থেকে সড়কপথে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেন।
গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না নিপুণের। ধারণা করা হচ্ছিল, গোপনে দেশ ছেড়েছেন তিনি। তবে আজ সিলেট বিমানবন্দরে তার আটকের ঘটনায় প্রমাণিত হলো এতদিন তিনি দেশেই ছিলেন।
বিগত সরকারের আমলে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে সক্রিয় ছিলেন নিপুণ। বিভিন্ন প্রচারণামূলক অনুষ্ঠানের নিয়মিত মুখ ছিলেন তিনি। বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনে জিততে আওয়ামী লীগের প্রভাব খাটিয়েছেন বলে বিভিন্ন সময়ে অভিযোগ উঠেছিল নিপুণের বিরুদ্ধে।