ঢাকা ০৩:৫১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৫, ২৭ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
ফিন্যান্সিয়াল টাইমসের প্রতিবেদন

১০ কোটি টাকায় মাল্টার পাসপোর্ট নিতে চেয়েছিলেন টিউলিপের চাচি ও চাচাতো বোন

  • আপডেট সময় : ০৫:৫৭:৩১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১০ জানুয়ারী ২০২৫
  • ১৫ বার পড়া হয়েছে

টিউলিপ সিদ্দিকের চাচা তারিক জামিল সিদ্দিক ও তার স্ত্রী শাহীন সিদ্দিক। ছবি বাংলাদেশ পলিটিকো থেকে সংগৃহীত

প্রত্যাশা ডেস্ক: টিউলিপ সিদ্দিকের পর এবার তার চাচি ও চাচাতো বোনের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। ব্রিটিশ সংবামাধ্যম ফিন্যান্সিয়াল টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৫ সালে প্রায় ১০ কোটি টাকা খরচ করে ইউরোপের দেশ মাল্টার পাসপোর্ট নেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন টিউলিপ সিদ্দিকের চাচী শাহীন সিদ্দিক ও তার চাচাতো বোন বুশরা সিদ্দিক। কিন্তু তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়ায় দেশটি তাদের পাসপোর্ট দেয়নি।

এই শাহীন সিদ্দিকের স্বামী হলেন তারিক জামিল সিদ্দিক, যিনি বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিরাপত্তাবিষয়ক উপদেষ্টা ছিলেন। এদিকে, নিজেদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ নিয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি শাহীন ও বুশরা সিদ্দিক।

শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে ফিন্যান্সিয়াল টাইমস জানিয়েছে, ২০১৩ সালে নিজের একার জন্য মাল্টার পাসপোর্টের আবেদন করেছিলেন শাহীন সিদ্দিক।

ওই সময় মাল্টার পাসপোর্ট দেওয়ার কাজটি করতো যুক্তরাজ্যভিক্তিক প্রতিষ্ঠান হ্যানলি অ্যান্ড পার্টনার্স। অভিবাসন সংশ্লিষ্ট এই প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশে প্রকাশিত সংবাদের ভিত্তিতে শাহীন সিদ্দিক ‘প্রচ্ছায়া’ নামের একটি কোম্পানির নামে ঢাকার মূল্যবান সরকারি জমি কুক্ষিগত করা তথ্য পায়। আর শাহীন তার পাসপোর্টের উল্লেখ করে বলেছিলেন, তিনি কোম্পানিটির চেয়ারম্যান। আর এই কারণে তাকে পাসপোর্ট দেয়নি প্রতিষ্ঠানটি।
প্রথমবার প্রচ্ছায়ার কথা উল্লেখ করে পাসপোর্ট না পাওয়ায় ২০১৫ সালে দ্বিতীয়বারের আবেদনে শাহীন সিদ্দিক দাবি করেন, চট্টগ্রামের ‘দ্য আর্ট প্রেস প্রাইভেট লিমিটেড’ নামের একটি কোম্পানির পরিচালক তিনি। যেটি ১৯২৬ সালে তার বাবা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তবে এই কোম্পানি নিয়ে সন্তষ্ট না হওয়ায় তাকে ও তার মেয়েকে ওই সময় আর পাসপোর্ট দেওয়া হয়নি।
২০১৫ সালে মাল্টার পাসপোর্ট পেতে যথাক্রমে ৬ লাখ ৫০ হাজার ও ২৫ হাজার পাউন্ড খরচ করতে হতো শাহীন ও তার মেয়ে বুশরাকে। এরসঙ্গে ফি হিসেবে আরও ৭০ হাজার পাউন্ড নিত হেনলি। আবেদনের অংশ হিসেবে শাহীন কুয়ালামপুরের একটি ব্যাংকে ২৭ লাখ ৬০ হাজার ৪০৯ ডলার দেখিয়েছিলেন। ১১ বারে এই অর্থ তার ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জমা হয়েছিল। তবে এসব অর্থের উৎস কী ছিল, তা স্পষ্ট নয়।

শেখ হাসিনার পতনের পর গত অক্টোবরে তারিক জামিল সিদ্দিক ও তার স্ত্রী শাহীন সিদ্দিকের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দের নির্দেশ দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। তাছাড়া, তারিক সিদ্দিকের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুন্যাল।

এদিকে, তারিক সিদ্দিকী ও তার স্ত্রী শাহীন সিদ্দিকীর মেয়ে ওই সময় স্টুডেন্ট ভিসায় লন্ডনে পড়াশোনা করছিলেন। তিনি তার ঠিকানা দিয়েছিলেন গ্র্যান্ড গোথিক ভবনের তৃতীয় তলার ফ্ল্যাট, যেটি টিউলিপের লন্ডনের কিংস ক্রস ফ্লাটের খুব কাছে অবস্থিত। এই ফ্লাটটি ২০০৪ সালে টিউলিপকে উপহার দিয়েছিলেন ব্রিটিশ বাংলাদেশি ব্যবসায়ী। তিনি কেন টিউলিপকে এত দামী ফ্ল্যাট উপহার দিয়েছিলেন, সেটি নিয়ে ধোয়াশা রয়েছে।
বুশরা লন্ডনে পড়াশোনা শেষে জেপি মর্গান ব্যাংকে কয়েকদিন চাকরি করেন। এরপর চাকরি ছেড়ে দেন। ২০১৮ সালে উত্তর লন্ডনের গোল্ডার্স গ্রিনে ১ দশমিক ৯ মিলিয়ন ইউরোতে পাঁচ বেডরুমের একটি ফ্ল্যাট কেনেন তিনি। এই অর্থও তাকে তার বাবা-মা দিয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

‘মাইনাস টু’ আশা কখনো পূরণ হবে না

ফিন্যান্সিয়াল টাইমসের প্রতিবেদন

১০ কোটি টাকায় মাল্টার পাসপোর্ট নিতে চেয়েছিলেন টিউলিপের চাচি ও চাচাতো বোন

আপডেট সময় : ০৫:৫৭:৩১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১০ জানুয়ারী ২০২৫

প্রত্যাশা ডেস্ক: টিউলিপ সিদ্দিকের পর এবার তার চাচি ও চাচাতো বোনের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। ব্রিটিশ সংবামাধ্যম ফিন্যান্সিয়াল টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৫ সালে প্রায় ১০ কোটি টাকা খরচ করে ইউরোপের দেশ মাল্টার পাসপোর্ট নেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন টিউলিপ সিদ্দিকের চাচী শাহীন সিদ্দিক ও তার চাচাতো বোন বুশরা সিদ্দিক। কিন্তু তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়ায় দেশটি তাদের পাসপোর্ট দেয়নি।

এই শাহীন সিদ্দিকের স্বামী হলেন তারিক জামিল সিদ্দিক, যিনি বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিরাপত্তাবিষয়ক উপদেষ্টা ছিলেন। এদিকে, নিজেদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ নিয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি শাহীন ও বুশরা সিদ্দিক।

শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে ফিন্যান্সিয়াল টাইমস জানিয়েছে, ২০১৩ সালে নিজের একার জন্য মাল্টার পাসপোর্টের আবেদন করেছিলেন শাহীন সিদ্দিক।

ওই সময় মাল্টার পাসপোর্ট দেওয়ার কাজটি করতো যুক্তরাজ্যভিক্তিক প্রতিষ্ঠান হ্যানলি অ্যান্ড পার্টনার্স। অভিবাসন সংশ্লিষ্ট এই প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশে প্রকাশিত সংবাদের ভিত্তিতে শাহীন সিদ্দিক ‘প্রচ্ছায়া’ নামের একটি কোম্পানির নামে ঢাকার মূল্যবান সরকারি জমি কুক্ষিগত করা তথ্য পায়। আর শাহীন তার পাসপোর্টের উল্লেখ করে বলেছিলেন, তিনি কোম্পানিটির চেয়ারম্যান। আর এই কারণে তাকে পাসপোর্ট দেয়নি প্রতিষ্ঠানটি।
প্রথমবার প্রচ্ছায়ার কথা উল্লেখ করে পাসপোর্ট না পাওয়ায় ২০১৫ সালে দ্বিতীয়বারের আবেদনে শাহীন সিদ্দিক দাবি করেন, চট্টগ্রামের ‘দ্য আর্ট প্রেস প্রাইভেট লিমিটেড’ নামের একটি কোম্পানির পরিচালক তিনি। যেটি ১৯২৬ সালে তার বাবা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তবে এই কোম্পানি নিয়ে সন্তষ্ট না হওয়ায় তাকে ও তার মেয়েকে ওই সময় আর পাসপোর্ট দেওয়া হয়নি।
২০১৫ সালে মাল্টার পাসপোর্ট পেতে যথাক্রমে ৬ লাখ ৫০ হাজার ও ২৫ হাজার পাউন্ড খরচ করতে হতো শাহীন ও তার মেয়ে বুশরাকে। এরসঙ্গে ফি হিসেবে আরও ৭০ হাজার পাউন্ড নিত হেনলি। আবেদনের অংশ হিসেবে শাহীন কুয়ালামপুরের একটি ব্যাংকে ২৭ লাখ ৬০ হাজার ৪০৯ ডলার দেখিয়েছিলেন। ১১ বারে এই অর্থ তার ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জমা হয়েছিল। তবে এসব অর্থের উৎস কী ছিল, তা স্পষ্ট নয়।

শেখ হাসিনার পতনের পর গত অক্টোবরে তারিক জামিল সিদ্দিক ও তার স্ত্রী শাহীন সিদ্দিকের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দের নির্দেশ দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। তাছাড়া, তারিক সিদ্দিকের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুন্যাল।

এদিকে, তারিক সিদ্দিকী ও তার স্ত্রী শাহীন সিদ্দিকীর মেয়ে ওই সময় স্টুডেন্ট ভিসায় লন্ডনে পড়াশোনা করছিলেন। তিনি তার ঠিকানা দিয়েছিলেন গ্র্যান্ড গোথিক ভবনের তৃতীয় তলার ফ্ল্যাট, যেটি টিউলিপের লন্ডনের কিংস ক্রস ফ্লাটের খুব কাছে অবস্থিত। এই ফ্লাটটি ২০০৪ সালে টিউলিপকে উপহার দিয়েছিলেন ব্রিটিশ বাংলাদেশি ব্যবসায়ী। তিনি কেন টিউলিপকে এত দামী ফ্ল্যাট উপহার দিয়েছিলেন, সেটি নিয়ে ধোয়াশা রয়েছে।
বুশরা লন্ডনে পড়াশোনা শেষে জেপি মর্গান ব্যাংকে কয়েকদিন চাকরি করেন। এরপর চাকরি ছেড়ে দেন। ২০১৮ সালে উত্তর লন্ডনের গোল্ডার্স গ্রিনে ১ দশমিক ৯ মিলিয়ন ইউরোতে পাঁচ বেডরুমের একটি ফ্ল্যাট কেনেন তিনি। এই অর্থও তাকে তার বাবা-মা দিয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।