রংপুর প্রতিনিধি: বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে আবু সাঈদ হত্যায় সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭১ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন।
রোববার (৫ জানুয়ারি) দুপুরে ১০৯তম সিন্ডিকেট সভা শেষে এ তথ্য জানান বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক শওকাত আলী।
তিনি বলেন, জুলাই বিপ্লবের প্রথম শহীদ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী আবু সাঈদ হত্যার ঘটনায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ১০৯তম সিন্ডিকেট সভায় শৃঙ্খলা কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী, ১৫ জনের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ৩৩ জনকে দুই সেমিস্টার ড্রপ এবং ২৩ জনকে এক সেমিস্টার ড্রপের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সিন্ডিকেট।
তিনি জানান, আন্দোলনে শিক্ষার্থী নিপীড়নের ঘটনায় জড়িতদের বেশিরভাগই ছাত্রলীগের নেতাকর্মী।
এ ছাড়া হামলার সঙ্গে জড়িত শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সাময়িক বহিষ্কার করে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। কিন্তু নোটিশের জবাব না আসায় আগামী সিন্ডিকেটের তাদেরকে পূর্ণাঙ্গ বহিষ্কারের জন্য বিষয়টি উঠানো হবে বলেও সিন্ডিকেট সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে।
উপাচার্য বলেন, একই সঙ্গে ২০১৮ সালে প্রণীত বিধিমালা অনুযায়ী আবু সাঈদ হত্যার ঘটনায় অভিযুক্তদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে তাকে সমর্থন দিয়েছে সিন্ডিকেট সদস্যরা।
১০৯তম সিন্ডিকেট সভায় ছাত্র সংসদ নির্বাচনের আগে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো ধরনের অভ্যন্তরীণ নির্বাচন হবে না। ছাত্র সংসদ নির্বাচনের রোডম্যাপ তৈরির কমিটিও করা হয়েছে বলেও জানান উপাচার্য।
আবু সাঈদ নিহতের ঘটনায় ২৩ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে জড়িতদের (শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারী) চিহ্নিত ও শাস্তির ধরন নির্ধারণের জন্য প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদের ডিন অধ্যাপক মো. মিজানুর রহমানকে আহŸায়ক করে তিন সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।
এর আগে আবু সাঈদ নিহতের দুই দিন পর ১৮ জুলাই তৎকালীন উপাচার্য অধ্যাপক মো. হাসিবুর রশিদ বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক মতিউর রহমানকে আহŸায়ক করে তথ্য অনুসন্ধান কমিটি গঠন করেছিলেন। পরে সরকার পতন ও উপাচার্য পদত্যাগ করায় আন্দোলনকারীদের তোপের মুখে এই তথ্য অনুসন্ধান কমিটি পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়।
আবু সাঈদের বাড়ি রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার বাবনপুর গ্রামে। গত বছরের ১৬ জুলাই বৈষমবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ নম্বর গেইটের সামনে গুলিতে নিহত হন তিনি।
ফটকটি পরে ‘শহীদ আবু সাঈদ গেইট’ নামকরণ করেন শিক্ষার্থীরা। আবু সাঈদ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক ছিলেন।