যশোর সংবাদদাতা : যশোরে বছরের প্রথম দিনে পৌঁছায়নি চাহিদার ৫ শতাংশ বইও। ৪র্থ শ্রেণির ৩টি বই এবং ৭ম শ্রেণির ৩টি বই সম্বল নিয়ে বছরের প্রথম দিন শুরু হলো শিক্ষার্থীদের। বিগত কয়েকটি বছর শিক্ষার্থীরা বছরের প্রথম দিনে নতুন বইয়ের ঘ্রাণ নিয়ে ঘরে ফিরলেও এবারই তার ব্যতিক্রম। সকাল থেকে শহরের কয়েকটি বিদ্যালয়ে সরেজমিন গিয়ে এ সব তথ্য জানা গেছে। সরকারি শহীদ স্মরণী প্রাথমিক বিদ্যালয়, সরকারি শহীদ স্মৃতি প্রাথমিক বিদ্যালয়, উপশহর মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় এবং সরকারি শিক্ষাবোর্ড মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে তারা এ বছর এখনো নতুন বই পায়নি। এতে তাদের কিছুটা মন খারাপ।
নতুন বইয়ের সঙ্গে বছরের প্রথম দিনটিতে উৎসব করা হয়নি তাদের। নতুন বইয়ের ঘ্রাণ নিতে না পারলেও তারা আশাবাদী, খুব শিগগরিই তারা বই পাবে। ৪র্থ এবং ৭ম শ্রেণির কয়েকজন শিক্ষার্থী জানায়, তারা বাংলা, গণিত ও বিজ্ঞান বই পেয়েছে। শিক্ষকরা তাদের বলেছেন ১৫ তারিখের মধ্যে আরও বই দেওয়া হবে। সরকারি শিক্ষাবোর্ড মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ মো. সাইফ উদ্দীন বলেন, ‘৩য় থেকে ১০ম শ্রেণি পর্যন্ত সাড়ে ১১’শ শিক্ষার্থীর বইয়ের চাহিদার কথা তারা জানালেও ৪র্থ ও ৭ম শ্রেণির ৩টি করে বই পেয়েছন। তবে এই স্কুলটির বিরুদ্ধে অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের অভিযোগ রয়েছে যে, ভর্তি না হলে শিক্ষার্থীদেরকে বই দেওয়া হচ্ছে না।’ উপশহর মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুরাইয়া শিরিন জানান, ‘তাদের ৬ষ্ঠ থেকে ১০ম শ্রেণির মেয়েদের জন্য ৬ হাজার বইয়ের চাহিদা থাকলেও পেয়েছেন ৭ম শ্রেণির জন্যে ৩০০ বই।’ তিনি বলেন, ‘শিক্ষা অফিস জানিয়েছে যখন যে বই আসবে তা দিয়ে দেওয়া হবে শিক্ষার্থীদের জন্যে।’ শিক্ষার্থীরা বলছেন, ‘নতুন বছরের প্রথমে বই না পাওয়ায় একটু খারাপ লাগছে, নতুন বই হাতে পেলে সব ঠিক হয়ে যাবে।’ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. আশরাফুল আলম বলেন, ‘প্রতিদিনই বই আসছে, আজও প্রায় এক লাখ বই রিসিভ করা হয়েছে। জেলায় ১৩ লাখ ৫০ হাজার ৩৬টি বইয়ের চাহিদার বিপরীতে মঙ্গলবার ১ লাখের বেশি বই হাতে পান, আজ সকাল ১১টার মধ্যে আরো এক লাখ বই পেয়েছেন।
এ সব বই ৮টি উপজেলায় বিতরণ করা হয়েছে।’ জেলা শিক্ষা অফিসার মো. মাহফুজুল হোসেন জানান, ‘জেলায় ৬ষ্ঠ থেকে ১০ শ্রেণি পর্যন্ত ৩ লাখ ৭৩ হাজার ৮২৮ জন শিক্ষার্থীদের জন্যে ৪৭ লাখ ৩৯ হাজার ৫৮৬টি বইয়ের চাহিদা রয়েছে। সেখানে গতকাল পর্যন্ত তিনি পেয়েছেন মাত্র ১ লাখ ৮৯ হাজার ৬৫১টি বই। তিনি আশা প্রকাশ করেন ১৫ তারিখের মধ্যেই প্রায় সব বই পেয়ে যাবেন। সাময়িকভাবে বই পেতে বিলম্ব হলেও লেখাপড়ায় ক্ষতি হবে না, কারণ জানুয়ারি মাস হচ্ছে শিক্ষার্থীদের খেলাধূলা ও কো-কারিকুলার সম্পন্ন করার মাস। তেমনই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে স্কুলগুলোতে।’