ঢাকা ১১:১২ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

তিব্বতে ‘বিশ্বের বৃহত্তম’ জলবিদ্যুৎ বাঁধ করবে চীন

  • আপডেট সময় : ০৭:৩৪:০২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪
  • ৩১ বার পড়া হয়েছে

প্রত্যাশা ডেস্ক : বিশ্বের বৃহত্তম জলবিদ্যুৎ বাঁধ হতে পারে, তিব্বতে এমন একটি নির্মাণ কাজের অনুমোদন দিয়েছে চীন। তিব্বত মালভূমির পূর্ব পাশে এই উচ্চাভিলাষি প্রকল্পের কাজ শুরু হতে যাচ্ছে। এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে নিম্নপ্রবাহে ভারত ও বাংলাদেশের কোটি কোটি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে বলে রয়টার্সের প্রতিবেদনে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে। রয়টার্স জানায়, চীনের পাওয়ার কনস্ট্রাকশন কর্পোরেশনের ২০২০ সালের হিসাব অনুযায়ী, ইয়ারলুং জাংপো নদীর নিম্ন প্রবাহে এই বাঁধ তৈরি হবে আর এ প্রকল্প থেকে বার্ষিক ৩০ হাজার কোটি কিলোওয়াট-ঘণ্টা বিদ্যুৎ উৎপাদিত হবে। বর্তমানে বিশ্বের বৃহত্তম জলবিদ্যুৎ প্রকল্প হল চীনের মধ্যাঞ্চলীয় থ্রি গর্জেস বাঁধ। এই প্রকল্পের পরিকল্পিত ক্ষমতা বার্ষিক ৮৮২০ কিলোওয়াট-ঘণ্টা। তিব্বতের প্রকল্পটি এর তিনগুণেরও বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্য নিয়ে নকশা করা হবে। বুধবার চীনের রাষ্ট্রায়ত্ত গণমাধ্যম বার্তা সংস্থা সিনহুয়া জানায়, এই প্রকল্পটি চীনের শূন্য কার্বন লক্ষ্য পূরণে বড় ধরনের ভূমিকা রাখবে আর প্রকৌশলের মতো সংশ্লিষ্ট শিল্পগুলোকে উজ্জীবিত করবে এবং তিব্বতে কর্মসংস্থানের ক্ষেত্র প্রসারিত হবে।

ইয়ারলুং জাংপো নদীর একটি অংশ ৫০ কিলোমিটারের একটি ছোট পরিসরের মধ্যদিয়ে নাটকীয়ভাবে ২০০০ মিটার নিচে পড়েছে। এই অংশটিতে বিপুল পরিমাণ জলবিদ্যুৎ উৎপাদনের সম্ভাবনা আছে আর এটি একইসঙ্গে অনন্য প্রকৌশলগত চ্যালেঞ্জ হয়ে আসবে। প্রকৌশলগত খরচসহ এই বাঁধ নির্মাণের সার্বিক ব্যয় থ্রি গর্জেস বাঁধ প্রকল্পকেও পুরোপুরি ছাড়িয়ে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। থ্রি গর্জেস বাঁধ প্রকল্পের ব্যয় হয়েছিল ৩৪৮৩ কোটি ডলার। এই প্রকল্পের কারণে ১৪ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হলেও তাদের সবাইকে পুনর্বাসন করা হয়েছিল। শেষ পর্যন্ত এই প্রকল্পের মোট ব্যয় প্রাক্কলিত বাজেটের চারগুণেরও বেশি হয়ে দাঁড়িয়েছিল। রয়টার্স জানায়, তিব্বতের প্রকল্পের কারণে কতো মানুষ বাস্তুচ্যুত হবে আর এটি স্থানীয় আবাসকে কতোটা ক্ষতিগ্রস্ত করবে কর্তৃপক্ষ তার কোনো ইঙ্গিত দেয়নি। তিব্বত মালভূমির মধ্যে এই অংশটি প্রাকৃতিকভাবে সবচেয়ে বৈচিত্র্যময় ও সমৃদ্ধ। তবে চীনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তিব্বতে জলবিদ্যুৎ প্রকল্পগুলো পরিবেশের ওপর বা নিম্নপ্রবাহে পানি সরবরাহের ক্ষেত্রে বড় ধরনের কোনো প্রভাব ফেলবে না। তাদের এমন দাবি সত্ত্বেও ভারত ও বাংলাদেশ এ বাঁধ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।

এই প্রকল্পের সম্ভাব্য প্রভাবে শুধু স্থানীয় আবাসের পরিবর্তন সাধন হবে এমন নয়, এটি নিম্নপ্রবাহের নদীগুলোর পানি প্রবাহ ও গতিপথকেও প্রভাবিত করবে। ইয়ারলুং জাংপো নদী তিব্বত থেকে বের হওয়ার পর ব্রহ্মপুত্র নাম নিয়ে দক্ষিণে ভারতের অরুণাচল প্রদেশ ও আসাম হয়ে শেষ পর্যায়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। চীন ইতোমধ্যে ইয়ারলুং জাংপোর উচ্চ প্রবাহে জলবিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু করেছে।

এই নদীটি পশ্চিমে মানস সরোবর থেকে উৎপন্ন হয়ে তিব্বতের পূর্ব দিকে প্রবাহিত হয়েছে। নদীর উচ্চ প্রবাহে আরও প্রকল্পের পরিকল্পনা করেছে চীন।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

বাংলাদেশে উগ্র বাম কমিউনিস্টদের ভোট দিতে দেওয়া হয় ২৯ মিলিয়ন ডলার

তিব্বতে ‘বিশ্বের বৃহত্তম’ জলবিদ্যুৎ বাঁধ করবে চীন

আপডেট সময় : ০৭:৩৪:০২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪

প্রত্যাশা ডেস্ক : বিশ্বের বৃহত্তম জলবিদ্যুৎ বাঁধ হতে পারে, তিব্বতে এমন একটি নির্মাণ কাজের অনুমোদন দিয়েছে চীন। তিব্বত মালভূমির পূর্ব পাশে এই উচ্চাভিলাষি প্রকল্পের কাজ শুরু হতে যাচ্ছে। এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে নিম্নপ্রবাহে ভারত ও বাংলাদেশের কোটি কোটি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে বলে রয়টার্সের প্রতিবেদনে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে। রয়টার্স জানায়, চীনের পাওয়ার কনস্ট্রাকশন কর্পোরেশনের ২০২০ সালের হিসাব অনুযায়ী, ইয়ারলুং জাংপো নদীর নিম্ন প্রবাহে এই বাঁধ তৈরি হবে আর এ প্রকল্প থেকে বার্ষিক ৩০ হাজার কোটি কিলোওয়াট-ঘণ্টা বিদ্যুৎ উৎপাদিত হবে। বর্তমানে বিশ্বের বৃহত্তম জলবিদ্যুৎ প্রকল্প হল চীনের মধ্যাঞ্চলীয় থ্রি গর্জেস বাঁধ। এই প্রকল্পের পরিকল্পিত ক্ষমতা বার্ষিক ৮৮২০ কিলোওয়াট-ঘণ্টা। তিব্বতের প্রকল্পটি এর তিনগুণেরও বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্য নিয়ে নকশা করা হবে। বুধবার চীনের রাষ্ট্রায়ত্ত গণমাধ্যম বার্তা সংস্থা সিনহুয়া জানায়, এই প্রকল্পটি চীনের শূন্য কার্বন লক্ষ্য পূরণে বড় ধরনের ভূমিকা রাখবে আর প্রকৌশলের মতো সংশ্লিষ্ট শিল্পগুলোকে উজ্জীবিত করবে এবং তিব্বতে কর্মসংস্থানের ক্ষেত্র প্রসারিত হবে।

ইয়ারলুং জাংপো নদীর একটি অংশ ৫০ কিলোমিটারের একটি ছোট পরিসরের মধ্যদিয়ে নাটকীয়ভাবে ২০০০ মিটার নিচে পড়েছে। এই অংশটিতে বিপুল পরিমাণ জলবিদ্যুৎ উৎপাদনের সম্ভাবনা আছে আর এটি একইসঙ্গে অনন্য প্রকৌশলগত চ্যালেঞ্জ হয়ে আসবে। প্রকৌশলগত খরচসহ এই বাঁধ নির্মাণের সার্বিক ব্যয় থ্রি গর্জেস বাঁধ প্রকল্পকেও পুরোপুরি ছাড়িয়ে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। থ্রি গর্জেস বাঁধ প্রকল্পের ব্যয় হয়েছিল ৩৪৮৩ কোটি ডলার। এই প্রকল্পের কারণে ১৪ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হলেও তাদের সবাইকে পুনর্বাসন করা হয়েছিল। শেষ পর্যন্ত এই প্রকল্পের মোট ব্যয় প্রাক্কলিত বাজেটের চারগুণেরও বেশি হয়ে দাঁড়িয়েছিল। রয়টার্স জানায়, তিব্বতের প্রকল্পের কারণে কতো মানুষ বাস্তুচ্যুত হবে আর এটি স্থানীয় আবাসকে কতোটা ক্ষতিগ্রস্ত করবে কর্তৃপক্ষ তার কোনো ইঙ্গিত দেয়নি। তিব্বত মালভূমির মধ্যে এই অংশটি প্রাকৃতিকভাবে সবচেয়ে বৈচিত্র্যময় ও সমৃদ্ধ। তবে চীনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তিব্বতে জলবিদ্যুৎ প্রকল্পগুলো পরিবেশের ওপর বা নিম্নপ্রবাহে পানি সরবরাহের ক্ষেত্রে বড় ধরনের কোনো প্রভাব ফেলবে না। তাদের এমন দাবি সত্ত্বেও ভারত ও বাংলাদেশ এ বাঁধ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।

এই প্রকল্পের সম্ভাব্য প্রভাবে শুধু স্থানীয় আবাসের পরিবর্তন সাধন হবে এমন নয়, এটি নিম্নপ্রবাহের নদীগুলোর পানি প্রবাহ ও গতিপথকেও প্রভাবিত করবে। ইয়ারলুং জাংপো নদী তিব্বত থেকে বের হওয়ার পর ব্রহ্মপুত্র নাম নিয়ে দক্ষিণে ভারতের অরুণাচল প্রদেশ ও আসাম হয়ে শেষ পর্যায়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। চীন ইতোমধ্যে ইয়ারলুং জাংপোর উচ্চ প্রবাহে জলবিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু করেছে।

এই নদীটি পশ্চিমে মানস সরোবর থেকে উৎপন্ন হয়ে তিব্বতের পূর্ব দিকে প্রবাহিত হয়েছে। নদীর উচ্চ প্রবাহে আরও প্রকল্পের পরিকল্পনা করেছে চীন।