নিজস্ব প্রতিবেদক: দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের কদমতলীর খালপাড়ে তিন কিশোর এক মাস আগেই রূপালী ব্যাংকে ডাকাতির পরিকল্পনা করেছিল। ডাকাতির চেষ্টা করা তিন কিশোরের পরিচয় হয় খেলার মাঠে।ডাকাতিতে নেতৃত্ব দেওয়া লিয়ন মোল্লা এক মাস আগে আরাফাত ও সিফাতকে নিয়ে ডাকাতির পরিকল্পনা করে। একাধিকবার রেকি করে হানা দেয় ব্যাংকে। শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) সকালে থানা ভবনে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন দক্ষিণ কেরানিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাজহারুল ইসলাম।
তিনি জানান, ডাকাতির চেষ্টা করা তিন বন্ধু বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) জানিয়েছিল একজন কিডনি রোগীকে সাহায্য করতে ডাকাতির পরিকল্পনা করে। আমরা বিষয়টির কোনও সত্যতা পাইনি। মূলত তারা আইফোন ও মোটরসাইকেল কিনতে রূপালী ব্যাংকের জিনজিরা শাখায় ডাকাতির পরিকল্পনা করে। ১ মাস থেকেই ডাকাতির জন্য তারা ব্যাংকের ভেতর ও আশপাশে রেকি করে। ঘটনার দিন পরিকল্পনা অনুযায়ী ব্যাংকে ঢুকেই সিসি টিভির ক্যামেরা ভেঙে ফেলে এবং হার্ডডিস্ক নষ্ট করে দেয় তারা।
ওসি মাজহারুল ইসলাম আরও বলেন, ডাকাতির ঘটনার একটি মামলা করা হয়েছে। এ ঘটনার নেপথ্যে কেউ আছে কিনা তা জানতে ২২ বছর বয়সী আসামি নিলয়কে রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে। অন্য দুজনের বয়স ১৮ বছরের কম থাকায় তাদের কিশোর সংশোধনাগারে পাঠানো হবে। মূলত তারা সিনেমা দেখে ডাকাতির জন্য উদ্বুদ্ধ হয়ে এটি করেছে।
এর আগে বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) দুপুর পৌনে একটার দিকে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের রূপালী ব্যাংকের জিনজিরা শাখায় ব্যাংকটিতে ঢুকে ম্যানেজারসহ ১৬ জনকে জিম্মি করে ওই তিন কিশোর। পরে খবর পেয়ে সেনাবাহিনী, পুলিশ, র্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ব্যাংকের ভবনসহ পুরো এলাকা ঘিরে ফেলে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানের একপর্যায়ে বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে আত্মসমর্পণ করে তিন ডাকাত।
আত্মসমর্পণকারীরা হলেন মো. লিয়ন মোল্লা ওরফে নিরব (২২), মো. আরাফাত (১৬) ও সিফাত (১৬)। তারা তিনজনই ওই এলাকার বাসিন্দা। এর মধ্যে নিরবের গ্রামের বাড়ি গোপালগঞ্জে। তিনি আগে সাভার এলাকায় থাকতেন। বাকি দুইজন কেরানীগঞ্জের স্থানীয় বাসিন্দা।
ডাকাতির চেষ্টায় তিন কিশোর আত্মসমর্পণের পর বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে কেরানীগঞ্জ মডেল থানার সভাকক্ষে সংবাদ সম্মেলন করেন ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) আহম্মদ মুঈদ। তিনি বলেছিলেন, ভিডিও গেম ও মুভি দেখে অ্যাডভেঞ্চার হিসেবে ব্যাংকে ডাকাতির চেষ্টা করে তিন কিশোর। একপর্যায়ে তারা ব্যাংকে কর্মরত ১০ কর্মকর্তা ও ৬ গ্রাহককে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ফেলে। পরে তারা ব্যাংকের কাউন্টার থেকে নগদ ১৫ লাখ টাকা লুট করে একটি ব্যাগে রাখে। একই সঙ্গে আরও তিন লাখ টাকা তিনজনের প্যান্টের পকেটে রাখে। আটক করার পর তাদের কাছে ১৮ লাখ নগদ টাকা ও চারটি খেলনা পিস্তল ও দুটি দেশীয় ছুরি পাওয়া যায়।