ঢাকা ০৯:২১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
জনপ্রশাসন সচিবের ব্রিফিং================

পদমর্যাদা ও আর্থিক সুবিধা পাবেন বঞ্চিত ৭৬৪ সাবেক কর্মকর্তা

  • আপডেট সময় : ০৪:৪০:৫৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৪
  • ৩৮ বার পড়া হয়েছে

রোববার সচিবালয়ে জনপ্রশাসন সচিবের কার্যালয়ের সামনে বেশ কয়েকজন বঞ্চিত কর্মকর্তা তাদের দাবি আদায়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। ছবি সংগৃহীত

নিজস্ব প্রতিবেদক: ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে গত ১৫ বছরে জনপ্রশাসনে বঞ্চিত ৭৬৪ জন সাবেক কর্মকর্তাকে পদমর্যাদা ও আর্থিক সুবিধা দেওয়া হবে। উপসচিব থেকে সচিব পর্যন্ত বিভিন্ন স্তরে এসব কর্মকর্তাকে ‘ভূতাপেক্ষ’ পদোন্নতির সুপারিশ করেছিল অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত এ–সংক্রান্ত একটি কমিটি।
রোববার (১৫ ডিসেম্বর) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে এ কথা জানান। সচিবালয়ে জনপ্রশাসন সচিব যখন সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছিলেন, তখন তাঁর কার্যালয়ের সামনে বারান্দায় বেশ কিছুসংখ্যক বঞ্চিত কর্মকর্তা দাবি আদায়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছিলেন। বঞ্চনা নিরসন কমিটির সুপারিশ ও সরকারের নীতিগত সিদ্ধান্তের কথা উল্লেখ করে জ্যেষ্ঠ সচিব বলেন, ‘চাকরি যাঁরা করেন, তাঁরা জানেন, ন্যুনতম একটি প্রক্রিয়ার ব্যাপার আছে। এ বিষয়ে ঊধ্বর্তন কর্তৃপক্ষের একটি নির্দেশনা লাগবে। তবে ইতিবাচক। চাকরির কিছু বিধিবিধান আছে। এটি মানতে হবে। এর বাইরে যাওয়ার সুযোগ নেই।’ তবে সংক্ষিপ্ত সময়ে এ প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার আশা ব্যক্ত করেন তিনি।
জনপ্রশাসনের জ্যেষ্ঠ সচিব বলেন, ‘এটি ঠিক পদোন্নতি না। এটি হলো সামাজিক মান–মর্যাদা। আর্থিক সুবিধা ও পদ-পদবি দিয়ে একটি সরকারি আদেশ জারি হবে। এর ভিত্তিতে অর্থনৈতিক আদেশে তাঁরা এই টাকা পাবেন। সরকার নীতিগতভাবে একমত। একটু সময়ের ব্যাপার।’
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বিষয়টি ব্যাখ্যা করে সচিব বলেন, ‘পদে বসানো এক বিষয় আর পদমর্যাদা এক বিষয়। এটি হলো ওই পদে মর্যাদা দিয়ে সরকারি আদেশ দেওয়া হবে। হিসাবটি করবে এজি অফিস। তাদের বিজ্ঞানসম্মত নিয়ম আছে।’ পেনশনের ক্ষেত্রেও এই সুবিধা হবে বলে জানান সচিব।

এর আগে গত মঙ্গলবার জনপ্রশাসনে পদোন্নতিবঞ্চিত অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের আবেদন পর্যালোচনা কমিটি তাঁদের প্রতিবেদন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে জমা দিয়েছে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় গত ১৬ সেপ্টেম্বর সাবেক অর্থসচিব এবং বিশ্বব্যাংকে বাংলাদেশের সাবেক বিকল্প নির্বাহী পরিচালক জাকির আহমেদ খানকে আহ্বায়ক করে পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছিল। আওয়ামী লীগের আমলে ২০০৯ সাল থেকে গত ৪ আগস্ট পর্যন্ত সময়ে সরকারি চাকরিতে নানাভাবে বঞ্চনার শিকার এবং এ সময়ের মধ্যে অবসরে যাওয়া কর্মকর্তাদের আবেদন পর্যালোচনা করে সুপারিশ প্রণয়নের জন্য এ কমিটি গঠন করা হয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্রের তথ্য, নির্ধারিত সময়ে মারা যাওয়া কর্মকর্তাদের পক্ষে তাঁদের পরিবারের সদস্যদের করা ১৯টি আবেদনসহ মোট ১ হাজার ৫৪০টি আবেদন জমা পড়েছিল। এর মধ্যে ১৩টি আবেদন নানা কারণে কমিটির আওতার বাইরে ছিল। ফলে কমিটি বাকি ১ হাজার ৫২৭টি আবেদন যাচাই-বাছাই করে সুপারিশ তৈরি করেছে। আবেদনগুলো যাচাই-বাছাইয়ে কমিটি ২৮টি সভা করে পুঙ্খানুপুঙ্খ বিচার-বিশ্লেষণের মাধ্যমে সুপারিশ প্রণয়ন করেছে, যা প্রধান উপদেষ্টার কাছে জমা দেওয়া হয়েছে।
জানা গেছে, কমিটি সচিব পদে ১১৯ জন, গ্রেড-১ (সচিবের সমান বেতন গ্রেড) এ ৪১ জন, অতিরিক্ত সচিব পদে ৫২৮ জন, যুগ্ম সচিব পদে ৭২ জন ও উপসচিব পদে চারজনকে পদোন্নতির সুপারিশ করেছে। যেহেতু তাঁরা অবসরে গেছেন, সে জন্য তাঁদের ‘ভূতাপেক্ষ’ পদোন্নতি দেওয়া যেতে পারে বলে সুপারিশ করে কমিটি। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ৭৬৪ কর্মকর্তার মধ্যে কমিটি ৯ জনকে চার ধাপ, ৩৪ জনকে তিন ধাপ, ১২৬ জনকে দুই ধাপ ও ৫৯৫ জনকে এক ধাপ পদোন্নতি দেওয়ার সুপারিশ করেছে। সরকারি একটি সূত্র আনুমানিক হিসেবের ভিত্তিতে জানিয়েছে, এসব কর্মকর্তাকে আর্থিক সুবিধা দেওয়ার জন্য ৫০ থেকে ৬০ কোটি টাকার মতো লাগতে পারে।

 

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

ডিসেম্বর ধরেই নির্বাচনের সব ধরনের প্রস্তুতি নিচ্ছে ইসি

জনপ্রশাসন সচিবের ব্রিফিং================

পদমর্যাদা ও আর্থিক সুবিধা পাবেন বঞ্চিত ৭৬৪ সাবেক কর্মকর্তা

আপডেট সময় : ০৪:৪০:৫৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক: ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে গত ১৫ বছরে জনপ্রশাসনে বঞ্চিত ৭৬৪ জন সাবেক কর্মকর্তাকে পদমর্যাদা ও আর্থিক সুবিধা দেওয়া হবে। উপসচিব থেকে সচিব পর্যন্ত বিভিন্ন স্তরে এসব কর্মকর্তাকে ‘ভূতাপেক্ষ’ পদোন্নতির সুপারিশ করেছিল অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত এ–সংক্রান্ত একটি কমিটি।
রোববার (১৫ ডিসেম্বর) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে এ কথা জানান। সচিবালয়ে জনপ্রশাসন সচিব যখন সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছিলেন, তখন তাঁর কার্যালয়ের সামনে বারান্দায় বেশ কিছুসংখ্যক বঞ্চিত কর্মকর্তা দাবি আদায়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছিলেন। বঞ্চনা নিরসন কমিটির সুপারিশ ও সরকারের নীতিগত সিদ্ধান্তের কথা উল্লেখ করে জ্যেষ্ঠ সচিব বলেন, ‘চাকরি যাঁরা করেন, তাঁরা জানেন, ন্যুনতম একটি প্রক্রিয়ার ব্যাপার আছে। এ বিষয়ে ঊধ্বর্তন কর্তৃপক্ষের একটি নির্দেশনা লাগবে। তবে ইতিবাচক। চাকরির কিছু বিধিবিধান আছে। এটি মানতে হবে। এর বাইরে যাওয়ার সুযোগ নেই।’ তবে সংক্ষিপ্ত সময়ে এ প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার আশা ব্যক্ত করেন তিনি।
জনপ্রশাসনের জ্যেষ্ঠ সচিব বলেন, ‘এটি ঠিক পদোন্নতি না। এটি হলো সামাজিক মান–মর্যাদা। আর্থিক সুবিধা ও পদ-পদবি দিয়ে একটি সরকারি আদেশ জারি হবে। এর ভিত্তিতে অর্থনৈতিক আদেশে তাঁরা এই টাকা পাবেন। সরকার নীতিগতভাবে একমত। একটু সময়ের ব্যাপার।’
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বিষয়টি ব্যাখ্যা করে সচিব বলেন, ‘পদে বসানো এক বিষয় আর পদমর্যাদা এক বিষয়। এটি হলো ওই পদে মর্যাদা দিয়ে সরকারি আদেশ দেওয়া হবে। হিসাবটি করবে এজি অফিস। তাদের বিজ্ঞানসম্মত নিয়ম আছে।’ পেনশনের ক্ষেত্রেও এই সুবিধা হবে বলে জানান সচিব।

এর আগে গত মঙ্গলবার জনপ্রশাসনে পদোন্নতিবঞ্চিত অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের আবেদন পর্যালোচনা কমিটি তাঁদের প্রতিবেদন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে জমা দিয়েছে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় গত ১৬ সেপ্টেম্বর সাবেক অর্থসচিব এবং বিশ্বব্যাংকে বাংলাদেশের সাবেক বিকল্প নির্বাহী পরিচালক জাকির আহমেদ খানকে আহ্বায়ক করে পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছিল। আওয়ামী লীগের আমলে ২০০৯ সাল থেকে গত ৪ আগস্ট পর্যন্ত সময়ে সরকারি চাকরিতে নানাভাবে বঞ্চনার শিকার এবং এ সময়ের মধ্যে অবসরে যাওয়া কর্মকর্তাদের আবেদন পর্যালোচনা করে সুপারিশ প্রণয়নের জন্য এ কমিটি গঠন করা হয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্রের তথ্য, নির্ধারিত সময়ে মারা যাওয়া কর্মকর্তাদের পক্ষে তাঁদের পরিবারের সদস্যদের করা ১৯টি আবেদনসহ মোট ১ হাজার ৫৪০টি আবেদন জমা পড়েছিল। এর মধ্যে ১৩টি আবেদন নানা কারণে কমিটির আওতার বাইরে ছিল। ফলে কমিটি বাকি ১ হাজার ৫২৭টি আবেদন যাচাই-বাছাই করে সুপারিশ তৈরি করেছে। আবেদনগুলো যাচাই-বাছাইয়ে কমিটি ২৮টি সভা করে পুঙ্খানুপুঙ্খ বিচার-বিশ্লেষণের মাধ্যমে সুপারিশ প্রণয়ন করেছে, যা প্রধান উপদেষ্টার কাছে জমা দেওয়া হয়েছে।
জানা গেছে, কমিটি সচিব পদে ১১৯ জন, গ্রেড-১ (সচিবের সমান বেতন গ্রেড) এ ৪১ জন, অতিরিক্ত সচিব পদে ৫২৮ জন, যুগ্ম সচিব পদে ৭২ জন ও উপসচিব পদে চারজনকে পদোন্নতির সুপারিশ করেছে। যেহেতু তাঁরা অবসরে গেছেন, সে জন্য তাঁদের ‘ভূতাপেক্ষ’ পদোন্নতি দেওয়া যেতে পারে বলে সুপারিশ করে কমিটি। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ৭৬৪ কর্মকর্তার মধ্যে কমিটি ৯ জনকে চার ধাপ, ৩৪ জনকে তিন ধাপ, ১২৬ জনকে দুই ধাপ ও ৫৯৫ জনকে এক ধাপ পদোন্নতি দেওয়ার সুপারিশ করেছে। সরকারি একটি সূত্র আনুমানিক হিসেবের ভিত্তিতে জানিয়েছে, এসব কর্মকর্তাকে আর্থিক সুবিধা দেওয়ার জন্য ৫০ থেকে ৬০ কোটি টাকার মতো লাগতে পারে।