ঢাকা ০২:৪৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ০৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

দখলদারের কবলে তারাপুর চা-বাগান

  • আপডেট সময় : ০৭:০৯:৩০ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪
  • ১৮ বার পড়া হয়েছে

সিলেট সংবাদদাতা : দখলদারিত্বে সংকুচিত হয়ে এসেছে সিলেটের ঐতিহ্যবাহী তারাপুর চা বাগান। ২০১৬ সালে প্রকৃত সার্ভে ছাড়া জেলা প্রশাসন থেকে অবৈধ দখলসহ ৩২৩ দশমিক ৮ একর ভূমির দায়িত্ব নেন সেবায়েত পঙ্কজ কুমার গুপ্ত। এখন সেই পরিমাণ ভূমিও নেই তারাপুর বাগানের। অবৈধ দখলদারদের ভয়ংকর সিন্ডিকেটের পেটে তারাপুর বাগান। এ যাবত বাগানের ভূমিতে রয়েছেন ৭২৩ দখলদার। বিগত দিনে এসব দখলদার সরাতে প্রশাসন থেকে অভিযানের নামে কেবল আইওয়াশ হয়েছে, এমন অভিযোগ রয়েছে। জানা গেছে, কাগজে কলমে ৫০০ একরের মধ্যে ৩২৩ দশমিক ৮ একর ভূমির ১৩০ একর বাগানের দখলে আছে। বাকি সব ভূমি বেদখলে এখন। যুগের পর যুগ অবৈধ দখলে নিজস্ব মানচিত্র হারিয়েছে ঐতিহ্যবাহী চা-বাগান। অভিযোগ রয়েছে, শহরের লাগোয়া হওয়াতে ভূমি-খেকোদের চোখ বাগানের ভূমিতে। বিশেষ করে পাঠানটুলাকেন্দ্রিক সিন্ডিকেট যুগের পর যুগ তারাপুর বাগান দখল করে আসছে। স্থানীয় প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ নেতা আবদুর রাজ্জাক খান রাজা মিয়া গংরা তারাপুর বাগানের প্রায় ২৮ কেদার ভূমিতে গড়ে তুলেন ‘পার্কভিউ আবাসিক প্রকল্প’। প্রকল্পের প্লট বিক্রি করেই কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন তারা। এরপর আরো আবাসিক স্থাপনা গড়ে ওঠে আশপাশে। এসব জমি তারাপুর বাগান থেকে বেদখল হয়। রাজনৈতিক নেতাদের অনেকের দখলে রয়েছে তারাপুর বাগানের ভূমি। প্রবাসীদের অনেকে অল্প টাকায় সিন্ডিকেটের কাছ থেকে জায়গা কিনে বসতি গড়েছেন। সিলেটের জেলা প্রশাসক শের মোহাম্মদ মাহবুব মুরাদ বলেন, তারাপুর চা-বাগান নিয়ে উচ্চ আদালতে মামলা রয়েছে। এরপরও অবৈধ দখলের বিষয়ে জেলা প্রশাসনের নজর রয়েছে। ইতোমধ্যে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব)-সহ একটি টিম বাগানের ভূমি পরিদর্শন করে এসেছে। অনুসন্ধানে জানা গেছে, তারাপুর চা বাগানের ভূমি ১৯৮৮ সাল থেকে ক্রমান্বয়ে দখল হয়ে আসছে। ওই বছর চা বাগানটি রাগিব আলীর নিয়ন্ত্রণে যায়। ১৯৯৫ সালে বাগানের জায়গায় গড়ে তোলা হয় মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। বাগানেই স্থাপন করা হয় মদনমোহন কলেজের ক্যাম্পাস ও রাগির রাবেয়া মেডিকেল কলেজের চিকিৎসকদের আবাসিক হোস্টেল, ইন্টারন্যাশনাল ভয়েজ হোস্টেল, যেটি নেপালি হোস্টেল নামে পরিচিত। এ যাবত ৭২৩ জন দখলদার রয়েছেন বাগানের ভূমিতে। ভূমিখেকোরা জাল দলিল বানিয়ে অবৈধ দখল নিয়ে জায়গার মালিকানা দাবি করেন। তাদের অনেকে ভূমির দখল নিয়ে বিক্রি করেছেন অন্যত্র। ভূমি দখলে উল্লেখযোগ্য ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নাম উঠে এসেছে অনুসন্ধানে। তন্মধ্যে জালালাবাদ রাগিব রাবেয়া মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের দখলে ৬ একর, রাগিব রাবেয়া হাসপাতালের নার্সিং হোস্টেলে ৪৫ শতাংশ, সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর দখলে ২ একর ১২ শতাংশে পাকা টিনশেড বাংলোবাড়ি ও খালি জায়গা রয়েছে। এ ছাড়া মদন মোহন কলেজের দখলে রয়েছে এক একর। আওয়ামী লীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ, তার ঘনিষ্ঠজন সাবুল আহমদ, সাইদ আহমদ, গোলাম রব্বানী, শাহিদা আক্তার মুন্নী ও এহছান মিয়ার নামে রয়েছে এক একর ৮০ শতকে পুকুর, দিঘী, ৩টি টিনশেড ঘর ও খালি জায়গা। আলহাজ আবু মিয়ার দখলে এক একর ৬৫ শতকে সাজিদ আলী কমিউনিটি সেন্টার ও মার্কেট, ইলিয়াস আলীর স্ত্রী তাহসিনা রুশদীর লুনার নামে ২৭ শতাংশে টিনশেড বাসা ও খালি জায়গা, সাবেক কাউন্সিলর জগদীশ চন্দ্র দাসের সাড়ে ৫ শতাংশ পাকা ভবন ও খালি জমি, স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুর রাজ্জাক খান রাজা মিয়ার দখলে ৩টি প্লটে ৫৪ শতাংশ পাকা ঘর, পাকা টিনশেড ও দোকান এবং খালি জমি। আওয়ামী লীগের শাব্বির খানের দখলে ৬৬ শতাংশে টিনশেড বাসা ও খালি জায়গা, ৮ শতাংশ খালি জমি, পার্কভিউ আবাসিক এলাকায় সাড়ে ৯ শতাংশে একতলা বাসা রয়েছে। স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা আজিজ খান সজীব গংদের দখলে ২৪, ১৯ ও ৩ শতাংশের ৩টি প্লটে মার্কেট, খালি জায়গা ও টিনশেডের ৫টি ঘর রয়েছে। শাহপরান জামেয়া ইসলামিয়া এতিমখানার দখলে ২ একর ২০ শতক ভূমি, গৌছুল উলুম জামেয়া ইসলামিয়া মাদরাসা পীরমহল্লায় ৪৫ শতাংশ, আব্দুল আহাদ এতিমখানার দখলে ৩০ শতাংশ, পীরমহল্লায় শ্রী শ্রী সৎ সংঘ বিহারের দখলে ৩০ শতাংশ, পান্না লাল চৌধুরী ৬০ শতাংশ, মখবুল হোসেন মজুর নামে ৬৪ শতাংশ, আওয়ামী লীগ নেতা ফজলুর রহমান সমছুর ১৫ শতাংশ, আওয়ামী লীগের হেলাল মিয়া গংয়ের নামে ৬০ শতাংশ, উচমান মিয়ার নামে ৫২ শতাংশ, আব্দুল বারীর নামে ২ একরের টিলা, একজন শীর্ষ রাজনীতিবিদের নামে ১০ শতাংশে ২ তলা দালান, দুসকী এলাকার কলিম উল্লাহর নামে ৯০ শতাংশ,মানিক মিয়ার ৩০ শতাংশে আবাসিকসহ ৮টি দোকান কোটা, আনোয়ার হোসেন ১৬ শতাংশে পাকা ৩ তলা বিল্ডিং, তুরণ মিয়া ৪৮ শতাংশে ১০টি দোকান কোটা ও খালি জায়গা, সাজ্জাদ আলী ১২ শতাংশে রেস্টুরেন্ট, ফার্মেসি ও ৯টি দোকান, একই মালিকের দখলে গ্রিন হিল হোটেল আরও ৬০ শতাংশে খালি জমি রয়েছে। এছাড়া উস্তার আলী ৮০ শতাংশে ৩ তলা বিল্ডিং, মার্কেট, ১৮টি দোকান ও খালি জায়গা, ফারুক মিয়া ১২০ শতাংশে কলোনি, খালেদা বেগমের ২৬ শতাংশে ২ তলা বিল্ডিং ও ৪টি দোকান, আব্দুল হাসিম ২৬ শতাংশে দোকান বাসা ও খালি জমি, হাজী মো. রফিক মিয়া ২০ শতাংশে পাকা ৩ তলা ভবন, কামরুন্নেছা ১৭ শতাংশে পাকা ২ তলা ভবন, আব্দুল মনাফের নামে ৫১ শতাংশে পাকা দেয়ালবেষ্টিত খালি জমি, হুমায়ন কবিরের রয়েছে ১৭ শতাংশে সীমানা প্রাচীর দিয়ে টিনের ঘর, মসাইদ আলী দখলে ২৮ শতাংশে, মো. আব্দুল মুকিত চৌধুরী ৩০ শতাংশে টিনশেড কলোনি। এছাড়া সাবেক কাউন্সিলর ইলিয়াস সিসিকের বরাদ্দে গোয়াবাড়িতে বাগানের ভূমিতে ওয়াকওয়ে নির্মাণ করিয়ে আশপাশের ভূমির দখল নেন। আওয়ামী লীগ সরকারের নেতাকর্মীরা ভূমি দখলে সক্রিয় ছিলেন বিগত বছরগুলোতে। তাদের সঙ্গে মিলেমিশে ভূমি দখলে সক্রিয় ছিলেন বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের কতিপয় নেতাকর্মীও। ৫ আগস্ট পটপরিবর্তনের পর তারাপুর বাগানের ভূমি দখলে আরো সক্রিয় হয়ে উঠেছে নতুন একটি চক্র। এ ব্যাপারে তারাপুর চা বাগানের ব্যবস্থাপক রিংকু চক্রবর্তী বলেন, তারাপুর চা বাগানের বেদখল হওয়া ভূমি উদ্ধারে চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। যারা বাগানের ভূমি জবরদখল করেছে তাদের বিরুদ্ধে এ পর্যন্ত ২৬টির বেশি মামলা আদালতে চলমান। বেদখলকৃত ভূমি উদ্ধারের বিষয়টি জেলা প্রশাসনকে অবহিত করা হয়েছে।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

ঢাকায় কাউন্টার থেকে চলবে ২১ কোম্পানির গোলাপী বাস

দখলদারের কবলে তারাপুর চা-বাগান

আপডেট সময় : ০৭:০৯:৩০ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪

সিলেট সংবাদদাতা : দখলদারিত্বে সংকুচিত হয়ে এসেছে সিলেটের ঐতিহ্যবাহী তারাপুর চা বাগান। ২০১৬ সালে প্রকৃত সার্ভে ছাড়া জেলা প্রশাসন থেকে অবৈধ দখলসহ ৩২৩ দশমিক ৮ একর ভূমির দায়িত্ব নেন সেবায়েত পঙ্কজ কুমার গুপ্ত। এখন সেই পরিমাণ ভূমিও নেই তারাপুর বাগানের। অবৈধ দখলদারদের ভয়ংকর সিন্ডিকেটের পেটে তারাপুর বাগান। এ যাবত বাগানের ভূমিতে রয়েছেন ৭২৩ দখলদার। বিগত দিনে এসব দখলদার সরাতে প্রশাসন থেকে অভিযানের নামে কেবল আইওয়াশ হয়েছে, এমন অভিযোগ রয়েছে। জানা গেছে, কাগজে কলমে ৫০০ একরের মধ্যে ৩২৩ দশমিক ৮ একর ভূমির ১৩০ একর বাগানের দখলে আছে। বাকি সব ভূমি বেদখলে এখন। যুগের পর যুগ অবৈধ দখলে নিজস্ব মানচিত্র হারিয়েছে ঐতিহ্যবাহী চা-বাগান। অভিযোগ রয়েছে, শহরের লাগোয়া হওয়াতে ভূমি-খেকোদের চোখ বাগানের ভূমিতে। বিশেষ করে পাঠানটুলাকেন্দ্রিক সিন্ডিকেট যুগের পর যুগ তারাপুর বাগান দখল করে আসছে। স্থানীয় প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ নেতা আবদুর রাজ্জাক খান রাজা মিয়া গংরা তারাপুর বাগানের প্রায় ২৮ কেদার ভূমিতে গড়ে তুলেন ‘পার্কভিউ আবাসিক প্রকল্প’। প্রকল্পের প্লট বিক্রি করেই কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন তারা। এরপর আরো আবাসিক স্থাপনা গড়ে ওঠে আশপাশে। এসব জমি তারাপুর বাগান থেকে বেদখল হয়। রাজনৈতিক নেতাদের অনেকের দখলে রয়েছে তারাপুর বাগানের ভূমি। প্রবাসীদের অনেকে অল্প টাকায় সিন্ডিকেটের কাছ থেকে জায়গা কিনে বসতি গড়েছেন। সিলেটের জেলা প্রশাসক শের মোহাম্মদ মাহবুব মুরাদ বলেন, তারাপুর চা-বাগান নিয়ে উচ্চ আদালতে মামলা রয়েছে। এরপরও অবৈধ দখলের বিষয়ে জেলা প্রশাসনের নজর রয়েছে। ইতোমধ্যে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব)-সহ একটি টিম বাগানের ভূমি পরিদর্শন করে এসেছে। অনুসন্ধানে জানা গেছে, তারাপুর চা বাগানের ভূমি ১৯৮৮ সাল থেকে ক্রমান্বয়ে দখল হয়ে আসছে। ওই বছর চা বাগানটি রাগিব আলীর নিয়ন্ত্রণে যায়। ১৯৯৫ সালে বাগানের জায়গায় গড়ে তোলা হয় মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। বাগানেই স্থাপন করা হয় মদনমোহন কলেজের ক্যাম্পাস ও রাগির রাবেয়া মেডিকেল কলেজের চিকিৎসকদের আবাসিক হোস্টেল, ইন্টারন্যাশনাল ভয়েজ হোস্টেল, যেটি নেপালি হোস্টেল নামে পরিচিত। এ যাবত ৭২৩ জন দখলদার রয়েছেন বাগানের ভূমিতে। ভূমিখেকোরা জাল দলিল বানিয়ে অবৈধ দখল নিয়ে জায়গার মালিকানা দাবি করেন। তাদের অনেকে ভূমির দখল নিয়ে বিক্রি করেছেন অন্যত্র। ভূমি দখলে উল্লেখযোগ্য ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নাম উঠে এসেছে অনুসন্ধানে। তন্মধ্যে জালালাবাদ রাগিব রাবেয়া মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের দখলে ৬ একর, রাগিব রাবেয়া হাসপাতালের নার্সিং হোস্টেলে ৪৫ শতাংশ, সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর দখলে ২ একর ১২ শতাংশে পাকা টিনশেড বাংলোবাড়ি ও খালি জায়গা রয়েছে। এ ছাড়া মদন মোহন কলেজের দখলে রয়েছে এক একর। আওয়ামী লীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ, তার ঘনিষ্ঠজন সাবুল আহমদ, সাইদ আহমদ, গোলাম রব্বানী, শাহিদা আক্তার মুন্নী ও এহছান মিয়ার নামে রয়েছে এক একর ৮০ শতকে পুকুর, দিঘী, ৩টি টিনশেড ঘর ও খালি জায়গা। আলহাজ আবু মিয়ার দখলে এক একর ৬৫ শতকে সাজিদ আলী কমিউনিটি সেন্টার ও মার্কেট, ইলিয়াস আলীর স্ত্রী তাহসিনা রুশদীর লুনার নামে ২৭ শতাংশে টিনশেড বাসা ও খালি জায়গা, সাবেক কাউন্সিলর জগদীশ চন্দ্র দাসের সাড়ে ৫ শতাংশ পাকা ভবন ও খালি জমি, স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুর রাজ্জাক খান রাজা মিয়ার দখলে ৩টি প্লটে ৫৪ শতাংশ পাকা ঘর, পাকা টিনশেড ও দোকান এবং খালি জমি। আওয়ামী লীগের শাব্বির খানের দখলে ৬৬ শতাংশে টিনশেড বাসা ও খালি জায়গা, ৮ শতাংশ খালি জমি, পার্কভিউ আবাসিক এলাকায় সাড়ে ৯ শতাংশে একতলা বাসা রয়েছে। স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা আজিজ খান সজীব গংদের দখলে ২৪, ১৯ ও ৩ শতাংশের ৩টি প্লটে মার্কেট, খালি জায়গা ও টিনশেডের ৫টি ঘর রয়েছে। শাহপরান জামেয়া ইসলামিয়া এতিমখানার দখলে ২ একর ২০ শতক ভূমি, গৌছুল উলুম জামেয়া ইসলামিয়া মাদরাসা পীরমহল্লায় ৪৫ শতাংশ, আব্দুল আহাদ এতিমখানার দখলে ৩০ শতাংশ, পীরমহল্লায় শ্রী শ্রী সৎ সংঘ বিহারের দখলে ৩০ শতাংশ, পান্না লাল চৌধুরী ৬০ শতাংশ, মখবুল হোসেন মজুর নামে ৬৪ শতাংশ, আওয়ামী লীগ নেতা ফজলুর রহমান সমছুর ১৫ শতাংশ, আওয়ামী লীগের হেলাল মিয়া গংয়ের নামে ৬০ শতাংশ, উচমান মিয়ার নামে ৫২ শতাংশ, আব্দুল বারীর নামে ২ একরের টিলা, একজন শীর্ষ রাজনীতিবিদের নামে ১০ শতাংশে ২ তলা দালান, দুসকী এলাকার কলিম উল্লাহর নামে ৯০ শতাংশ,মানিক মিয়ার ৩০ শতাংশে আবাসিকসহ ৮টি দোকান কোটা, আনোয়ার হোসেন ১৬ শতাংশে পাকা ৩ তলা বিল্ডিং, তুরণ মিয়া ৪৮ শতাংশে ১০টি দোকান কোটা ও খালি জায়গা, সাজ্জাদ আলী ১২ শতাংশে রেস্টুরেন্ট, ফার্মেসি ও ৯টি দোকান, একই মালিকের দখলে গ্রিন হিল হোটেল আরও ৬০ শতাংশে খালি জমি রয়েছে। এছাড়া উস্তার আলী ৮০ শতাংশে ৩ তলা বিল্ডিং, মার্কেট, ১৮টি দোকান ও খালি জায়গা, ফারুক মিয়া ১২০ শতাংশে কলোনি, খালেদা বেগমের ২৬ শতাংশে ২ তলা বিল্ডিং ও ৪টি দোকান, আব্দুল হাসিম ২৬ শতাংশে দোকান বাসা ও খালি জমি, হাজী মো. রফিক মিয়া ২০ শতাংশে পাকা ৩ তলা ভবন, কামরুন্নেছা ১৭ শতাংশে পাকা ২ তলা ভবন, আব্দুল মনাফের নামে ৫১ শতাংশে পাকা দেয়ালবেষ্টিত খালি জমি, হুমায়ন কবিরের রয়েছে ১৭ শতাংশে সীমানা প্রাচীর দিয়ে টিনের ঘর, মসাইদ আলী দখলে ২৮ শতাংশে, মো. আব্দুল মুকিত চৌধুরী ৩০ শতাংশে টিনশেড কলোনি। এছাড়া সাবেক কাউন্সিলর ইলিয়াস সিসিকের বরাদ্দে গোয়াবাড়িতে বাগানের ভূমিতে ওয়াকওয়ে নির্মাণ করিয়ে আশপাশের ভূমির দখল নেন। আওয়ামী লীগ সরকারের নেতাকর্মীরা ভূমি দখলে সক্রিয় ছিলেন বিগত বছরগুলোতে। তাদের সঙ্গে মিলেমিশে ভূমি দখলে সক্রিয় ছিলেন বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের কতিপয় নেতাকর্মীও। ৫ আগস্ট পটপরিবর্তনের পর তারাপুর বাগানের ভূমি দখলে আরো সক্রিয় হয়ে উঠেছে নতুন একটি চক্র। এ ব্যাপারে তারাপুর চা বাগানের ব্যবস্থাপক রিংকু চক্রবর্তী বলেন, তারাপুর চা বাগানের বেদখল হওয়া ভূমি উদ্ধারে চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। যারা বাগানের ভূমি জবরদখল করেছে তাদের বিরুদ্ধে এ পর্যন্ত ২৬টির বেশি মামলা আদালতে চলমান। বেদখলকৃত ভূমি উদ্ধারের বিষয়টি জেলা প্রশাসনকে অবহিত করা হয়েছে।