ঢাকা ১২:২৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

দুর্যোগের পূর্বাভাসে সহায়ক হতে পারে ছাগল

  • আপডেট সময় : ০৬:৩৪:০৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৪
  • ২১ বার পড়া হয়েছে

প্রত্যাশা ডেস্ক: ভূমিকম্প ও আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগের পূর্বাভাস দিতে পারে কি পোষা প্রাণীরা? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে নেমেছেন বিজ্ঞানীরা। সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দেখা গেছে, সিসিলি দ্বীপের সক্রিয় আগ্নেয়গিরি মাউন্ট এটনার ঢালে থাকা ছাগলরা অগ্ন্যুৎপাতের আগে অস্থির হয়ে ওঠে ও উঁচু জমিতে যেতে চায় না। এই ঘটনাটি গবেষকদের আরও জোর ধারণা দেয় যে, হয়তো পোষা প্রাণীদের আচরণের মাধ্যমে ভবিষ্যতে দুর্যোগের পূর্বাভাস পাওয়া যেতে পারে।
এই লক্ষ্যে জার্মানির ম্যাক্স প্লাংক ইনস্টিটিউট অব অ্যানিমেল বিহেভিয়ারের বিজ্ঞানীরা একটি নতুন গবেষণা প্রকল্প শুরু করেছেন। এই প্রকল্পে কুকুর ও ছাগলসহ বিভিন্ন পোষা প্রাণী, পাখি এবং পোকামাকড়ের গায়ে ক্ষুদ্র ট্রান্সমিটার লাগানো হবে। এই ট্রান্সমিটারের সাহায্যে মহাকাশে থাকা স্যাটেলাইট থেকে প্রাণীদের চলাফেরা পর্যবেক্ষণ করা যাবে।
ওই গবেষণা শুধু প্রাকৃতিক দুর্যোগের পূর্বাভাসে সীমাবদ্ধ থাকবে না। এর মাধ্যমে পশুদের মধ্যে রোগ ছড়ানো, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব ও প্রাণীদের পরিযানের ধরন সম্পর্কেও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া যাবে।
প্রকল্পের প্রধান গবেষক মার্টিন উইকেলস্কি দ্য গার্ডিয়ানকে বলেন, ‘প্রাণীরা কীভাবে আগাম জানতে পারে দুর্যোগ আসছে, তা আমরা এখনো জানি না। তবে তারা জানে।’ তিনি বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য মহাকাশে ছয়টি স্যাটেলাইটের একটি নেটওয়ার্ক তৈরি করা। এই নেটওয়ার্কের সাহায্যে পৃথিবীর বিভিন্ন প্রাণীর চলাফেরা, স্বাস্থ্য পর্যবেক্ষণের পাশাপাশি প্রাণীরা কীভাবে ভূমিকম্পের মতো প্রাকৃতিক ঘটনার প্রতি সাড়া দেয়, তা আমরা জানতে পারব।’
পশুরা কেন এমন আচরণ করে তা এখনো অস্পষ্ট। উইকেলস্কি মনে করেন, টেকটোনিক প্লেটের নড়াচড়ায় শিলা থেকে আয়ন নির্গত হয়ে বাতাসে মিশতে পারে; যা প্রাণীদের আচরণে প্রভাব ফেলতে পারে।
ট্যাগিং প্রযুক্তির কারণে এখন প্রাণীদের আচরণ পর্যবেক্ষণ অনেক সহজ হয়েছে। ক্ষুদ্র ডিজিটাল ট্রান্সমিটারের সাহায্যে তথ্য সংগ্রহ করে বিশ্লেষণ করা যায়। উদাহরণস্বরূপÑ বন্য শূকরের কানে লাগানো একটি ইলেকট্রনিক ট্যাগের মাধ্যমে গবেষকরা দেখতে পেয়েছেন, অত্যন্ত সংক্রামক আফ্রিকান সোয়াইন ফিভার নামের রোগটি কীভাবে দ্রুতগতিতে গৃহপালিত শূকরে ছড়িয়ে পড়ছে। একই ভাবে জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে প্রাণীদের অভ্যাসগত পরিবর্তন ও দীর্ঘ পরিসরের অভিবাসনও পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।
ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন ফর অ্যানিমেল রিসার্চ ইউজিং স্পেস (ইকারাস) প্রকল্পটি ২০২৩ সালে রাশিয়ার সহযোগিতায় চালু হওয়ার কথা ছিল। তবে ইউক্রেনে রুশ আক্রমণের কারণে তা বিলম্বিত হয়। বর্তমানে নতুন একটি ছোট উপগ্রহ নির্মাণ করা হয়েছে; যা আগামী বছর উৎক্ষেপণের জন্য প্রস্তুত।

 

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

দুর্যোগের পূর্বাভাসে সহায়ক হতে পারে ছাগল

আপডেট সময় : ০৬:৩৪:০৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৪

প্রত্যাশা ডেস্ক: ভূমিকম্প ও আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগের পূর্বাভাস দিতে পারে কি পোষা প্রাণীরা? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে নেমেছেন বিজ্ঞানীরা। সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দেখা গেছে, সিসিলি দ্বীপের সক্রিয় আগ্নেয়গিরি মাউন্ট এটনার ঢালে থাকা ছাগলরা অগ্ন্যুৎপাতের আগে অস্থির হয়ে ওঠে ও উঁচু জমিতে যেতে চায় না। এই ঘটনাটি গবেষকদের আরও জোর ধারণা দেয় যে, হয়তো পোষা প্রাণীদের আচরণের মাধ্যমে ভবিষ্যতে দুর্যোগের পূর্বাভাস পাওয়া যেতে পারে।
এই লক্ষ্যে জার্মানির ম্যাক্স প্লাংক ইনস্টিটিউট অব অ্যানিমেল বিহেভিয়ারের বিজ্ঞানীরা একটি নতুন গবেষণা প্রকল্প শুরু করেছেন। এই প্রকল্পে কুকুর ও ছাগলসহ বিভিন্ন পোষা প্রাণী, পাখি এবং পোকামাকড়ের গায়ে ক্ষুদ্র ট্রান্সমিটার লাগানো হবে। এই ট্রান্সমিটারের সাহায্যে মহাকাশে থাকা স্যাটেলাইট থেকে প্রাণীদের চলাফেরা পর্যবেক্ষণ করা যাবে।
ওই গবেষণা শুধু প্রাকৃতিক দুর্যোগের পূর্বাভাসে সীমাবদ্ধ থাকবে না। এর মাধ্যমে পশুদের মধ্যে রোগ ছড়ানো, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব ও প্রাণীদের পরিযানের ধরন সম্পর্কেও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া যাবে।
প্রকল্পের প্রধান গবেষক মার্টিন উইকেলস্কি দ্য গার্ডিয়ানকে বলেন, ‘প্রাণীরা কীভাবে আগাম জানতে পারে দুর্যোগ আসছে, তা আমরা এখনো জানি না। তবে তারা জানে।’ তিনি বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য মহাকাশে ছয়টি স্যাটেলাইটের একটি নেটওয়ার্ক তৈরি করা। এই নেটওয়ার্কের সাহায্যে পৃথিবীর বিভিন্ন প্রাণীর চলাফেরা, স্বাস্থ্য পর্যবেক্ষণের পাশাপাশি প্রাণীরা কীভাবে ভূমিকম্পের মতো প্রাকৃতিক ঘটনার প্রতি সাড়া দেয়, তা আমরা জানতে পারব।’
পশুরা কেন এমন আচরণ করে তা এখনো অস্পষ্ট। উইকেলস্কি মনে করেন, টেকটোনিক প্লেটের নড়াচড়ায় শিলা থেকে আয়ন নির্গত হয়ে বাতাসে মিশতে পারে; যা প্রাণীদের আচরণে প্রভাব ফেলতে পারে।
ট্যাগিং প্রযুক্তির কারণে এখন প্রাণীদের আচরণ পর্যবেক্ষণ অনেক সহজ হয়েছে। ক্ষুদ্র ডিজিটাল ট্রান্সমিটারের সাহায্যে তথ্য সংগ্রহ করে বিশ্লেষণ করা যায়। উদাহরণস্বরূপÑ বন্য শূকরের কানে লাগানো একটি ইলেকট্রনিক ট্যাগের মাধ্যমে গবেষকরা দেখতে পেয়েছেন, অত্যন্ত সংক্রামক আফ্রিকান সোয়াইন ফিভার নামের রোগটি কীভাবে দ্রুতগতিতে গৃহপালিত শূকরে ছড়িয়ে পড়ছে। একই ভাবে জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে প্রাণীদের অভ্যাসগত পরিবর্তন ও দীর্ঘ পরিসরের অভিবাসনও পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।
ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন ফর অ্যানিমেল রিসার্চ ইউজিং স্পেস (ইকারাস) প্রকল্পটি ২০২৩ সালে রাশিয়ার সহযোগিতায় চালু হওয়ার কথা ছিল। তবে ইউক্রেনে রুশ আক্রমণের কারণে তা বিলম্বিত হয়। বর্তমানে নতুন একটি ছোট উপগ্রহ নির্মাণ করা হয়েছে; যা আগামী বছর উৎক্ষেপণের জন্য প্রস্তুত।