ঢাকা ১২:০৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ০৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

সিরিয়ার স্বৈরশাসক বাশারের পতন, বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রণে দামেস্ক, অজ্ঞাত গন্তব্যে প্রেসিডেন্ট

  • আপডেট সময় : ০৯:২৯:১২ অপরাহ্ন, রবিবার, ৮ ডিসেম্বর ২০২৪
  • ৪৫ বার পড়া হয়েছে

পতন ঘটেছে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের দীর্ঘ শাসনের। ছবি: এএফপি

প্রত্যাশা ডেস্ক : সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছেন। বিদ্রোহী যোদ্ধাদের রাজধানী দামেস্ক দখলের মুখে রোববার (৮ ডিসেম্বর) সকালে ব্যক্তিগত উড়োজাহাজে দেশ ছাড়েন তিনি।
বাশার আল-আসাদ টানা ২৪ বছর ক্ষমতায় ছিলেন। এর আগে তাঁর বাবা হাফিজ আল-আসাদ টানা ২৯ বছর সিরিয়া শাসন করেন। বাশার আল-আসাদের পালানোর মধ্য দিয়ে সিরিয়ায় ৫৩ বছরের আল-আসাদ পরিবারের শাসনের অবসান হলো। এর আগে গত কয়েক দিনে আলেপ্পো, হোমসসহ সিরিয়ার বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ শহরের নিয়ন্ত্রণ নেন বিদ্রোহীরা। তাঁরা ধীরে ধীরে দামেস্কের দিকে এগোতে থাকেন। গত শনিবার রাতে দামেস্কের উপকণ্ঠে পৌঁছে যান বিদ্রোহীরা। আর রোববার সকালে তাঁরা দামেস্কে ঢুকে পড়েন। বাশার আল-আসাদের বিদেশে পালিয়ে যাওয়ার পর বিদ্রোহীরা দামেস্ককে, সিরিয়াকে ‘মুক্ত’ বলে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেন।
এদিকে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ পদত্যাগের আগে বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর কয়েকজন নেতার সঙ্গে আলোচনা করে শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তরের ব্যাপারে একমত হন। বাশার আল-আসাদের অন্যতম মিত্র রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় রোববার এক বিবৃতিতে এ কথা জানিয়েছে। তবে বাশার কোন দেশে গেছেন বা কোথায় অবস্থান করছেন, সে বিষয়ে বিবৃতিতে কিছু উল্লেখ করা হয়নি। বাশারের দেশ ছাড়ার বিষয়ে আলোচনায়ও রাশিয়া যুক্ত ছিল না। রাশিয়া বিবৃতিতে বলছে, দেশ ছাড়ার আগে বাশার আল-আসাদ বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। ওই বৈঠকে আলোচনার ভিত্তিতে তিনি প্রেসিডেন্ট পদ থেকে পদত্যাগ করে সিরিয়া ছাড়তে সম্মত হন। তিনি বৈঠকে শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তরের দিকনির্দেশনাও দিয়েছেন। সিরিয়ার চলমান পরিস্থিতিতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে সব পক্ষকে সহিংসতা থেকে বিরত হওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে বিবৃতিতে। এতে বলা হয়, ‘আমরা সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে সহিংসতা থেকে বিরত থেকে রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সব সমস্যা সমাধানের আহ্বান জানাই। এই প্রক্রিয়ায় সিরিয়ার সব বিরোধী পক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে রাশিয়া।’
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, সিরিয়ার রাশিয়ার সামরিক ঘাঁটিগুলো সর্বোচ্চ সতর্কতায় রাখা হয়েছে। তবে এই মুহূর্তে ঘাঁটিগুলোর জন্য মারাত্মক হুমকি নেই। এর আগে রোববার সকালে সিরিয়ার বিদ্রোহী যোদ্ধারা রাজধানী দামেস্কে ঢুকে পড়ে। সিরিয়ার জ্যেষ্ঠ দুজন সরকারি কর্মকর্তার বরাত দিয়ে রয়টার্স জানায়, বাশার আল-আসাদ একটি উড়োজাহাজে চড়ে দেশ ছেড়েছেন। তবে তাঁর গন্তব্য জানা যায়নি। একনজরে দেখে নেওয়া যাক, স্বৈরশাসক বাশার আল-আসাদের পতন ঘিরে সিরিয়ায় এখন পর্যন্ত যা যা ঘটল-
১১ দিনে সরকারের পতনের সংক্ষিপ্ত ঘটনাক্রম: সিরিয়ার সরকার-বিরোধী বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলো ঘোষণা করেছে যে, তারা বাশার আল-আসাদের শাসনের অবসান ঘটিয়েছে। ১১ দিনের একটি ঝটিকা অভিযানে রাজধানী দামেস্ক দখল করে আসাদকে দেশ ছাড়তে বাধ্য করে। এই অভিযানে সিরিয়ার বিরোধী গোষ্ঠীগুলো ঐতিহাসিক বিজয় অর্জন করেছে। তবে আসাদ সরকারের পতনের পর দেশটির ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক পরিস্থিতি কীভাবে গড়ে উঠবে, তা এখনও অনিশ্চিত। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ভূমিকাও এই পরিস্থিতিকে প্রভাবিত করবে। নিচে আসাদ সরকারের পতনের ধারাবাহিক ঘটনাগুলো তুলে ধরা হলো:
২৭ নভেম্বর: উত্তরাঞ্চলীয় আলেপ্পো প্রদেশে সিরীয় সেনাবাহিনীর ওপর আকস্মিক আক্রমণ শুরু করে বিরোধী বিদ্রোহীরা।
২৮ নভেম্বর: বিরোধীরা আলেপ্পো থেকে দামেস্কের সংযোগকারী প্রধান মহাসড়ক কেটে ফেলে, সরকার বাহিনীর যোগাযোগ ব্যবস্থা বিপর্যস্ত হয়।
২৯-৩০ নভেম্বর: বিরোধী বাহিনী আলেপ্পো শহরে প্রচণ্ড গোলাবর্ষণ চালায় এবং শহরে প্রবেশ করে। তারা বিদ্যুৎগতিতে সরকারি বাহিনীর প্রতিরোধ ভেঙে ফেলে।
রুশ যুদ্ধবিমানগুলো ২০১৬ সালের পর প্রথমবারের মতো আলেপ্পোতে বোমাবর্ষণ করে।
বিরোধীরা একদিনের মধ্যে আলেপ্পোর বেশিরভাগ অংশ এবং উত্তরাঞ্চলের ৮০টিরও বেশি শহর ও গ্রাম দখল করে। রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ ইরান ও তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে এই সংঘাতময় পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
১ ডিসেম্বর: এক দশকেরও বেশি সময় পর সিরীয় সরকার আলেপ্পো শহরের নিয়ন্ত্রণ হারায়। ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি দামেস্ক সফরে আসাদ সরকারের প্রতি দৃঢ় সমর্থনের ঘোষণা দেন।
২ ডিসেম্বর: রাশিয়া ও ইরান ঘোষণা দেয়, তারা আসাদ সরকারের প্রতি ‘নিঃশর্ত সমর্থন’ অব্যাহত রাখবে।
৫ ডিসেম্বর: বিদ্রোহীরা সিরিয়ার চতুর্থ বৃহত্তম শহর হামা দখল করে নেয়। কয়েকদিনের তীব্র লড়াইয়ের পর সরকার বাহিনী শহরটি ছাড়তে বাধ্য হয়।
৬ ডিসেম্বর: বিরোধীরা সিরিয়ার হোমস শহরের কাছে পৌঁছে যায়। হোমসকে ‘বিপ্লবের রাজধানী’ হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
৭ ডিসেম্বর: বিরোধীরা হোমস দখল করে নেয়। সরকারি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় দামেস্ক থেকে সেনা প্রত্যাহারের খবর অস্বীকার করে। তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোয়ান বলেন, সিরিয়া যুদ্ধ, রক্তপাত ও অশ্রুতে ক্লান্ত হয়ে পড়েছে।
৮ ডিসেম্বর: দামেস্ক আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে সরকারি বাহিনী ও অন্যান্য সেনারা পিছু হটে। বাশার আল-আসাদ দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন বলে খবর পাওয়া যায়। বিরোধীরা দামেস্ক দখল করে আসাদ সরকারের পতনের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয়। শহরের বাসিন্দারা রাস্তায় নেমে আসাদ সরকারের পতন উদযাপন করে। সিরিয়ার প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ আল-জালালি জনগণের পছন্দ করা নেতৃত্বের সঙ্গে সহযোগিতা এবং ক্ষমতা হস্তান্তরে প্রস্তুতির ঘোষণা দেন।
বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রণে দামেস্ক, অজ্ঞাত গন্তব্যে প্রেসিডেন্ট বাশার: সিরিয়ার রাজধানী দামেস্ক দখল করে নিয়েছে বিদ্রোহীরা। তবে বিদ্রোহীরা রাজধানীর কাছাকাছি উপস্থিত হওয়ার মধ্যেই দেশটির প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের দামেস্ক ছাড়ার খবর মিলেছে। সিরিয়া সরকারের দুই শীর্ষ কর্মকর্তার বরাতে রয়টার্স জানিয়েছে, প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ একটি উড়োজাহাজে করে অজ্ঞাত গন্তব্যের উদ্দেশ্যে দামেস্ক ত্যাগ করেছেন। সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস (এসওএইচআর) জানিয়েছে, একটি ব্যক্তিগত বিমানকে দামেস্ক বিমান বন্দর থেকে উড়ে যেতে দেখা গেছে। ধারণা করা হচ্ছে, বিমানটিতে প্রেসিডেন্ট ছিলেন। আসাদের দামেস্ক ত্যাগের পরপরই বিমান বন্দর থেকে সরকারি সেনাদের প্রত্যাহার করা হয় বলেও জানিয়েছে সংস্থাটি। এর আগে থেকেই বিদ্রোহীরা রাজধানীতে ঢুকতে শুরু করেছে বলে খবর আসতে থাকে। সে সময় রাজধানী দামেস্কে সরকারি বাহিনীর উপস্থিতিও দেখা যায়নি। রাজধানীতে ঢোকার আগে দামেস্কের উপকণ্ঠে অবস্থিত দেশটির সবচেয়ে কুখ্যাত ‘সেইদনায়া’ কারাগার থেকে বন্দিদের মুক্ত করে দেয় বিদ্রোহীরা। বড় সামরিক এই কারগারটিতে কয়েক হাজার বন্দি ছিল বলে জানিয়েছে রয়টার্স। মাত্র একদিনের লড়াইয়ের পর রোববার ভোরের দিকে সিরিয়ার আরেকটি মূল শহর হোম এর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার কথা জানায় বিদ্রোহীরা। এরপরই একপ্রকার বিনাবাধায় বিদ্রোহীরা দ্রুতগতিতে রাজধানীর দিকে এগোতে থাকলে দুই যুগ ধরে সিরিয়া শাসন করা প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়ে।
সিরিয়ায় ‘নতুন যুগের সূচনা’ ঘোষণা, প্রতিশোধ না নেওয়ার প্রতিশ্রুতি : সিরিয়ার স্বৈরশাসক প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন এবং সিরিয়া এখন মুক্ত বলে ঘোষণা করেছে দেশটির বিদ্রোহীরা। এর আগে বার্তাসংস্থা রয়টার্স সিরিয়ার দুইজন সিনিয়র কর্মকর্তাকে উদ্ধৃত করে জানান, প্রেসিডেন্ট আসাদ অজানা গন্তব্যের উদ্দেশে রাজধানী দামেস্ক ছেড়ে গেছেন। এই অবস্থায় সিরিয়ায় ‘নতুন যুগের সূচনা’ ঘোষণা দিয়েছেন বিরোধীরা। একইসঙ্গে প্রতিশোধ না নেওয়ার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন তারা। রোববার (৮ ডিসেম্বর) এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা। সংবাদমাধ্যমটি তার লাইভ আপডেটে জানিয়েছে, সশস্ত্র বিরোধী দল বলছে- “নতুন সিরিয়া” হবে “শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের” স্থান, যেখানে ন্যায়বিচারের জয় হবে এবং সমস্ত সিরিয়ানদের মর্যাদা রক্ষা করা হবে। বিদ্রোহীরা এক বিবৃতিতে বলেছে, “আমরা অন্ধকার অতীতের পাতা উল্টে দিয়ে ভবিষ্যতের জন্য একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচন করছি।”
বিশ্বের প্রতিক্রিয়া: সিরিয়ার স্বৈরশাসক বাশার আল আসাদের ২৪ বছরের শাসনের অবসান হলো বিদ্রোহীদের হাতে। দেশটির গুরুত্বপূর্ণ শহর আলেপ্পো দখল করে প্রথমে চমক দেখায় বিদ্রোহীরা। এরপর একের পর এক শহর দখল করতে থাকে দ্রুত সময়ের মধ্যে। সবশেষ রাজধানী দামেস্ক দখলের মধ্য দিয়ে সিরিয়ার এই শাসকের পতন দেখলো বিশ্ব। তার এই পতনের পর স্বাভাবিকভাবেই বিশ্ব নেতারা নিজেদের মতো করে প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন। হোয়াইট হাউজ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও তার দল সিরিয়ার পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন। এক্ষেত্রে তারা আঞ্চলিক অংশীদারদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন বলেও জানানো হয়েছে। এদিকে ডোনাল্ড ট্রাম্প এক এক্স বার্তায় বলেন, আসাদ চলে গেছেন। তিনি দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন। আসাদের রক্ষাকারী রাশিয়াও তাকে ক্ষমতায় রাখতে এগিয়ে আসেনি। রাশিয়া ও ইরান এখন দুর্বল রাষ্ট্র। ইতালির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আন্তোনিও তাজানি বলেন, সিরিয়ার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে রাখা হচ্ছে। দামেস্কে আমাদের দূতাবাসেও যোগাযোগ রাখছি। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে জরুরি বৈঠক ডাকা হয়েছে বলেও জানান তিনি। সিরিয়ায় জাতিসংঘের নিয়োজিত বিশেষ দূত গেইর পেডারসেন লাখ লাখ সিরীয়র প্রকাশিত স্পষ্ট আকাঙ্ক্ষার ওপর জোর দিয়েছেন। তিনি সিরিয়ার সব নাগরিককে সংলাপ, ঐক্য, আন্তর্জাতিক মানবিক আইন ও মানবাধিকারের প্রতি সম্মান জানানোর আহ্বান জানান। ফিলিপাইন সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে সংযম প্রদর্শন ও সহিংসতা থেকে বিরত থাকার জন্য বেসামরিক নাগরিকদের আহ্বান জানিয়েছে। সূত্র: রয়টার্স
হুমকির মুখে রুশ ঘাঁটি: ইসলামপন্থি বিদ্রোহী গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল-শাম (এইচটিএস) সিরিয়া দখলে নিয়েছে। রোববার (৮ ডিসেম্বর) রাশিয়ার যুদ্ধ ব্লগাররা সতর্ক করেছেন, এতে করে দেশটিতে অবস্থিত কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ দুটি রুশ সামরিক স্থাপনা এবং মধ্যপ্রাচ্যে মস্কোর উপস্থিতি হুমকির মুখে পড়তে যাচ্ছে। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এই খবর জানিয়েছে।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

ঢাকায় কাউন্টার থেকে চলবে ২১ কোম্পানির গোলাপী বাস

সিরিয়ার স্বৈরশাসক বাশারের পতন, বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রণে দামেস্ক, অজ্ঞাত গন্তব্যে প্রেসিডেন্ট

আপডেট সময় : ০৯:২৯:১২ অপরাহ্ন, রবিবার, ৮ ডিসেম্বর ২০২৪

প্রত্যাশা ডেস্ক : সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছেন। বিদ্রোহী যোদ্ধাদের রাজধানী দামেস্ক দখলের মুখে রোববার (৮ ডিসেম্বর) সকালে ব্যক্তিগত উড়োজাহাজে দেশ ছাড়েন তিনি।
বাশার আল-আসাদ টানা ২৪ বছর ক্ষমতায় ছিলেন। এর আগে তাঁর বাবা হাফিজ আল-আসাদ টানা ২৯ বছর সিরিয়া শাসন করেন। বাশার আল-আসাদের পালানোর মধ্য দিয়ে সিরিয়ায় ৫৩ বছরের আল-আসাদ পরিবারের শাসনের অবসান হলো। এর আগে গত কয়েক দিনে আলেপ্পো, হোমসসহ সিরিয়ার বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ শহরের নিয়ন্ত্রণ নেন বিদ্রোহীরা। তাঁরা ধীরে ধীরে দামেস্কের দিকে এগোতে থাকেন। গত শনিবার রাতে দামেস্কের উপকণ্ঠে পৌঁছে যান বিদ্রোহীরা। আর রোববার সকালে তাঁরা দামেস্কে ঢুকে পড়েন। বাশার আল-আসাদের বিদেশে পালিয়ে যাওয়ার পর বিদ্রোহীরা দামেস্ককে, সিরিয়াকে ‘মুক্ত’ বলে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেন।
এদিকে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ পদত্যাগের আগে বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর কয়েকজন নেতার সঙ্গে আলোচনা করে শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তরের ব্যাপারে একমত হন। বাশার আল-আসাদের অন্যতম মিত্র রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় রোববার এক বিবৃতিতে এ কথা জানিয়েছে। তবে বাশার কোন দেশে গেছেন বা কোথায় অবস্থান করছেন, সে বিষয়ে বিবৃতিতে কিছু উল্লেখ করা হয়নি। বাশারের দেশ ছাড়ার বিষয়ে আলোচনায়ও রাশিয়া যুক্ত ছিল না। রাশিয়া বিবৃতিতে বলছে, দেশ ছাড়ার আগে বাশার আল-আসাদ বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। ওই বৈঠকে আলোচনার ভিত্তিতে তিনি প্রেসিডেন্ট পদ থেকে পদত্যাগ করে সিরিয়া ছাড়তে সম্মত হন। তিনি বৈঠকে শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তরের দিকনির্দেশনাও দিয়েছেন। সিরিয়ার চলমান পরিস্থিতিতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে সব পক্ষকে সহিংসতা থেকে বিরত হওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে বিবৃতিতে। এতে বলা হয়, ‘আমরা সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে সহিংসতা থেকে বিরত থেকে রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সব সমস্যা সমাধানের আহ্বান জানাই। এই প্রক্রিয়ায় সিরিয়ার সব বিরোধী পক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে রাশিয়া।’
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, সিরিয়ার রাশিয়ার সামরিক ঘাঁটিগুলো সর্বোচ্চ সতর্কতায় রাখা হয়েছে। তবে এই মুহূর্তে ঘাঁটিগুলোর জন্য মারাত্মক হুমকি নেই। এর আগে রোববার সকালে সিরিয়ার বিদ্রোহী যোদ্ধারা রাজধানী দামেস্কে ঢুকে পড়ে। সিরিয়ার জ্যেষ্ঠ দুজন সরকারি কর্মকর্তার বরাত দিয়ে রয়টার্স জানায়, বাশার আল-আসাদ একটি উড়োজাহাজে চড়ে দেশ ছেড়েছেন। তবে তাঁর গন্তব্য জানা যায়নি। একনজরে দেখে নেওয়া যাক, স্বৈরশাসক বাশার আল-আসাদের পতন ঘিরে সিরিয়ায় এখন পর্যন্ত যা যা ঘটল-
১১ দিনে সরকারের পতনের সংক্ষিপ্ত ঘটনাক্রম: সিরিয়ার সরকার-বিরোধী বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলো ঘোষণা করেছে যে, তারা বাশার আল-আসাদের শাসনের অবসান ঘটিয়েছে। ১১ দিনের একটি ঝটিকা অভিযানে রাজধানী দামেস্ক দখল করে আসাদকে দেশ ছাড়তে বাধ্য করে। এই অভিযানে সিরিয়ার বিরোধী গোষ্ঠীগুলো ঐতিহাসিক বিজয় অর্জন করেছে। তবে আসাদ সরকারের পতনের পর দেশটির ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক পরিস্থিতি কীভাবে গড়ে উঠবে, তা এখনও অনিশ্চিত। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ভূমিকাও এই পরিস্থিতিকে প্রভাবিত করবে। নিচে আসাদ সরকারের পতনের ধারাবাহিক ঘটনাগুলো তুলে ধরা হলো:
২৭ নভেম্বর: উত্তরাঞ্চলীয় আলেপ্পো প্রদেশে সিরীয় সেনাবাহিনীর ওপর আকস্মিক আক্রমণ শুরু করে বিরোধী বিদ্রোহীরা।
২৮ নভেম্বর: বিরোধীরা আলেপ্পো থেকে দামেস্কের সংযোগকারী প্রধান মহাসড়ক কেটে ফেলে, সরকার বাহিনীর যোগাযোগ ব্যবস্থা বিপর্যস্ত হয়।
২৯-৩০ নভেম্বর: বিরোধী বাহিনী আলেপ্পো শহরে প্রচণ্ড গোলাবর্ষণ চালায় এবং শহরে প্রবেশ করে। তারা বিদ্যুৎগতিতে সরকারি বাহিনীর প্রতিরোধ ভেঙে ফেলে।
রুশ যুদ্ধবিমানগুলো ২০১৬ সালের পর প্রথমবারের মতো আলেপ্পোতে বোমাবর্ষণ করে।
বিরোধীরা একদিনের মধ্যে আলেপ্পোর বেশিরভাগ অংশ এবং উত্তরাঞ্চলের ৮০টিরও বেশি শহর ও গ্রাম দখল করে। রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ ইরান ও তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে এই সংঘাতময় পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
১ ডিসেম্বর: এক দশকেরও বেশি সময় পর সিরীয় সরকার আলেপ্পো শহরের নিয়ন্ত্রণ হারায়। ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি দামেস্ক সফরে আসাদ সরকারের প্রতি দৃঢ় সমর্থনের ঘোষণা দেন।
২ ডিসেম্বর: রাশিয়া ও ইরান ঘোষণা দেয়, তারা আসাদ সরকারের প্রতি ‘নিঃশর্ত সমর্থন’ অব্যাহত রাখবে।
৫ ডিসেম্বর: বিদ্রোহীরা সিরিয়ার চতুর্থ বৃহত্তম শহর হামা দখল করে নেয়। কয়েকদিনের তীব্র লড়াইয়ের পর সরকার বাহিনী শহরটি ছাড়তে বাধ্য হয়।
৬ ডিসেম্বর: বিরোধীরা সিরিয়ার হোমস শহরের কাছে পৌঁছে যায়। হোমসকে ‘বিপ্লবের রাজধানী’ হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
৭ ডিসেম্বর: বিরোধীরা হোমস দখল করে নেয়। সরকারি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় দামেস্ক থেকে সেনা প্রত্যাহারের খবর অস্বীকার করে। তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোয়ান বলেন, সিরিয়া যুদ্ধ, রক্তপাত ও অশ্রুতে ক্লান্ত হয়ে পড়েছে।
৮ ডিসেম্বর: দামেস্ক আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে সরকারি বাহিনী ও অন্যান্য সেনারা পিছু হটে। বাশার আল-আসাদ দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন বলে খবর পাওয়া যায়। বিরোধীরা দামেস্ক দখল করে আসাদ সরকারের পতনের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয়। শহরের বাসিন্দারা রাস্তায় নেমে আসাদ সরকারের পতন উদযাপন করে। সিরিয়ার প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ আল-জালালি জনগণের পছন্দ করা নেতৃত্বের সঙ্গে সহযোগিতা এবং ক্ষমতা হস্তান্তরে প্রস্তুতির ঘোষণা দেন।
বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রণে দামেস্ক, অজ্ঞাত গন্তব্যে প্রেসিডেন্ট বাশার: সিরিয়ার রাজধানী দামেস্ক দখল করে নিয়েছে বিদ্রোহীরা। তবে বিদ্রোহীরা রাজধানীর কাছাকাছি উপস্থিত হওয়ার মধ্যেই দেশটির প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের দামেস্ক ছাড়ার খবর মিলেছে। সিরিয়া সরকারের দুই শীর্ষ কর্মকর্তার বরাতে রয়টার্স জানিয়েছে, প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ একটি উড়োজাহাজে করে অজ্ঞাত গন্তব্যের উদ্দেশ্যে দামেস্ক ত্যাগ করেছেন। সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস (এসওএইচআর) জানিয়েছে, একটি ব্যক্তিগত বিমানকে দামেস্ক বিমান বন্দর থেকে উড়ে যেতে দেখা গেছে। ধারণা করা হচ্ছে, বিমানটিতে প্রেসিডেন্ট ছিলেন। আসাদের দামেস্ক ত্যাগের পরপরই বিমান বন্দর থেকে সরকারি সেনাদের প্রত্যাহার করা হয় বলেও জানিয়েছে সংস্থাটি। এর আগে থেকেই বিদ্রোহীরা রাজধানীতে ঢুকতে শুরু করেছে বলে খবর আসতে থাকে। সে সময় রাজধানী দামেস্কে সরকারি বাহিনীর উপস্থিতিও দেখা যায়নি। রাজধানীতে ঢোকার আগে দামেস্কের উপকণ্ঠে অবস্থিত দেশটির সবচেয়ে কুখ্যাত ‘সেইদনায়া’ কারাগার থেকে বন্দিদের মুক্ত করে দেয় বিদ্রোহীরা। বড় সামরিক এই কারগারটিতে কয়েক হাজার বন্দি ছিল বলে জানিয়েছে রয়টার্স। মাত্র একদিনের লড়াইয়ের পর রোববার ভোরের দিকে সিরিয়ার আরেকটি মূল শহর হোম এর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার কথা জানায় বিদ্রোহীরা। এরপরই একপ্রকার বিনাবাধায় বিদ্রোহীরা দ্রুতগতিতে রাজধানীর দিকে এগোতে থাকলে দুই যুগ ধরে সিরিয়া শাসন করা প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়ে।
সিরিয়ায় ‘নতুন যুগের সূচনা’ ঘোষণা, প্রতিশোধ না নেওয়ার প্রতিশ্রুতি : সিরিয়ার স্বৈরশাসক প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন এবং সিরিয়া এখন মুক্ত বলে ঘোষণা করেছে দেশটির বিদ্রোহীরা। এর আগে বার্তাসংস্থা রয়টার্স সিরিয়ার দুইজন সিনিয়র কর্মকর্তাকে উদ্ধৃত করে জানান, প্রেসিডেন্ট আসাদ অজানা গন্তব্যের উদ্দেশে রাজধানী দামেস্ক ছেড়ে গেছেন। এই অবস্থায় সিরিয়ায় ‘নতুন যুগের সূচনা’ ঘোষণা দিয়েছেন বিরোধীরা। একইসঙ্গে প্রতিশোধ না নেওয়ার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন তারা। রোববার (৮ ডিসেম্বর) এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা। সংবাদমাধ্যমটি তার লাইভ আপডেটে জানিয়েছে, সশস্ত্র বিরোধী দল বলছে- “নতুন সিরিয়া” হবে “শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের” স্থান, যেখানে ন্যায়বিচারের জয় হবে এবং সমস্ত সিরিয়ানদের মর্যাদা রক্ষা করা হবে। বিদ্রোহীরা এক বিবৃতিতে বলেছে, “আমরা অন্ধকার অতীতের পাতা উল্টে দিয়ে ভবিষ্যতের জন্য একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচন করছি।”
বিশ্বের প্রতিক্রিয়া: সিরিয়ার স্বৈরশাসক বাশার আল আসাদের ২৪ বছরের শাসনের অবসান হলো বিদ্রোহীদের হাতে। দেশটির গুরুত্বপূর্ণ শহর আলেপ্পো দখল করে প্রথমে চমক দেখায় বিদ্রোহীরা। এরপর একের পর এক শহর দখল করতে থাকে দ্রুত সময়ের মধ্যে। সবশেষ রাজধানী দামেস্ক দখলের মধ্য দিয়ে সিরিয়ার এই শাসকের পতন দেখলো বিশ্ব। তার এই পতনের পর স্বাভাবিকভাবেই বিশ্ব নেতারা নিজেদের মতো করে প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন। হোয়াইট হাউজ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও তার দল সিরিয়ার পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন। এক্ষেত্রে তারা আঞ্চলিক অংশীদারদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন বলেও জানানো হয়েছে। এদিকে ডোনাল্ড ট্রাম্প এক এক্স বার্তায় বলেন, আসাদ চলে গেছেন। তিনি দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন। আসাদের রক্ষাকারী রাশিয়াও তাকে ক্ষমতায় রাখতে এগিয়ে আসেনি। রাশিয়া ও ইরান এখন দুর্বল রাষ্ট্র। ইতালির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আন্তোনিও তাজানি বলেন, সিরিয়ার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে রাখা হচ্ছে। দামেস্কে আমাদের দূতাবাসেও যোগাযোগ রাখছি। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে জরুরি বৈঠক ডাকা হয়েছে বলেও জানান তিনি। সিরিয়ায় জাতিসংঘের নিয়োজিত বিশেষ দূত গেইর পেডারসেন লাখ লাখ সিরীয়র প্রকাশিত স্পষ্ট আকাঙ্ক্ষার ওপর জোর দিয়েছেন। তিনি সিরিয়ার সব নাগরিককে সংলাপ, ঐক্য, আন্তর্জাতিক মানবিক আইন ও মানবাধিকারের প্রতি সম্মান জানানোর আহ্বান জানান। ফিলিপাইন সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে সংযম প্রদর্শন ও সহিংসতা থেকে বিরত থাকার জন্য বেসামরিক নাগরিকদের আহ্বান জানিয়েছে। সূত্র: রয়টার্স
হুমকির মুখে রুশ ঘাঁটি: ইসলামপন্থি বিদ্রোহী গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল-শাম (এইচটিএস) সিরিয়া দখলে নিয়েছে। রোববার (৮ ডিসেম্বর) রাশিয়ার যুদ্ধ ব্লগাররা সতর্ক করেছেন, এতে করে দেশটিতে অবস্থিত কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ দুটি রুশ সামরিক স্থাপনা এবং মধ্যপ্রাচ্যে মস্কোর উপস্থিতি হুমকির মুখে পড়তে যাচ্ছে। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এই খবর জানিয়েছে।