ঢাকা ০১:১৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২০ অগাস্ট ২০২৫

‘আমরা ন্যায় চাই’ কেবল স্লোগান নয়, এটি মূলনীতি হওয়া উচিত: প্রধান বিচারপতি

  • আপডেট সময় : ০৯:০১:২৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৬ ডিসেম্বর ২০২৪
  • ৭৮ বার পড়া হয়েছে

শুক্রবার সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি ভবনে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় আইন অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের কাউন্সিলে বক্তব্য রাখেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ। ছবি সংগৃহীত

নিজস্ব প্রতিবেদক: প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ মনে করেন, জীবনে সব কাজের মূল নীতি হওয়া উচিত ‘ন্যায় চাই’।
শুক্রবার (৬ ডিসেম্বর) সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি ভবনে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় আইন অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের কাউন্সিলে বক্তব্য রাখার সময় তিনি এ কথা বলেন। সুপ্রিম কোর্টের এক বিজ্ঞপ্তিতে লেখা হয়, প্রধান বিচারপতি ২০২৪ সালের জুলাই-অগাস্টের ছাত্র আন্দোলনের শহীদের স্মরণ করে বলেন, “তাদের স্লোগান ‘আমরা ন্যায় চাই’ আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে ন্যায়বিচার কেবল একটি স্লোগান নয়, এটি এমন একটি মূলনীতি যা আমাদের কাজ এবং জীবনে প্রতিফলিত হওয়া উচিত।” প্রধান বিচারপতির পদ কেবল একটি নেতৃত্বের ভূমিকা নয়, বরং এটি একটি পবিত্র দায়িত্ব বলে তিনি মনে করেন। এ প্রসঙ্গে বিচার বিভাগীয় সংস্কারের রোডম্যাপ ঘোষণার কথা উল্লেখ করেন রেফাত আহমেদ। এই রোডম্যাপের মাধ্যমে বিচার বিভাগের স্বতন্ত্র সচিবালয় প্রতিষ্ঠা, যা প্রশাসনিক স্বায়ত্তশাসন নিশ্চিত করবে; বিচারপতি নিয়োগ পরিষদ গঠন, যা স্বচ্ছতা এবং মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ নিশ্চিত করবে; সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল পুনঃস্থাপন, যা বিচার বিভাগের স্বাধীনতা পুনরুদ্ধার করবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি। প্রধান বিচারপতি বলেন, “ন্যায়বিচারের সুযোগ নিশ্চিত করার জন্য, আমি আইনগত সহায়তার জন্য সক্ষমতা পরীক্ষা এবং আর্থিক সক্ষমতা পরীক্ষা প্রবর্তন করেছি। এই পদক্ষেপটি নিশ্চিত করে যে যারা নিজে আইনগত প্রক্রিয়া পরিচালনা করতে অক্ষম, তাদের প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করা হবে।” রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়েরও ভূয়সী প্রশংসা করেন প্রধান বিচারপতি। তিনি বলেন, “এর শ্রেণিকক্ষ এবং হলগুলো জাতির অনেক উজ্জ্বল ব্যক্তিত্ব, যেমন শিক্ষাবিদ, বিচারপতি এবং মানবাধিকারের প্রবক্তাদের গড়ে তুলেছে। এটি এক উৎকর্ষতার আলোকবর্তিকা, যা বহু প্রজন্মকে ন্যায়বিচারের জন্য লড়াই করতে অনুপ্রাণিত করেছে। “রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বহু অর্জনের মধ্যে এর প্রাক্তন ছাত্রদের বিচার বিভাগ এবং আইন পেশায় অবদান বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য; সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবীরা, যারা অনেকেই এই বিশ্ববিদ্যালয়ের গর্বিত প্রাক্তন শিক্ষার্থী, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা এবং ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে মুখ্য ভূমিকা পালন করছেন।”
অনুষ্ঠানের শুরুতে মুক্তিযুদ্ধের শহীদের পাশাপাশি ১৯৬৯ সালের গণ আন্দোলনে প্রাণ উৎসর্গ করা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. শামসুজ্জোহাকেও স্মরণ করেন প্রধান বিচারপতি। তিনি বলেন, “১৯৬৯ সালের অস্থির সময়ে তার আত্মত্যাগ আমাদের ন্যায়বিচারের সংগ্রামের মূল্যবোধকে মনে করিয়ে দেয়। “ড. শামসুজ্জোহা আমার পরিবারের সঙ্গেও একটি গভীর সংযোগ স্থাপন করেছিলেন। আমার বাবা-মা তার প্রতি সম্মান এবং অনুপ্রেরণার কথা প্রায়ই বলতেন। তার জীবন আমাদের শিখিয়ে দেয় যে আইন পেশা কেবল পেশা নয়, এটি ন্যায় প্রতিষ্ঠার একটি অঙ্গীকার।” রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদের উত্তরাধিকার বহনকারীদের মাঝে বক্তব্য দেওয়া বিরাট সম্মান ও গৌরবের উল্লেখ করে প্রধান বিচারপতি বলেন, “দীর্ঘ দশক ধরে এই প্রতিষ্ঠানটি জাতিকে নেতৃত্ব দেওয়ার, জনগণকে সেবা দেওয়ার এবং বাংলাদেশের ন্যায়বিচার ও সাম্যের সাধনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনকারী ব্যক্তিত্ব তৈরি করেছে। “প্রতিষ্ঠানের প্রাক্তন শিক্ষার্থী হিসেবে আপনাদের উপর ন্যায়বিচার, সমতা এবং মানবাধিকারের আদর্শ রক্ষা করার গুরুদায়িত্ব রয়েছে।”

আজকের প্রত্যাশা/কেএমএএ

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

‘আমরা ন্যায় চাই’ কেবল স্লোগান নয়, এটি মূলনীতি হওয়া উচিত: প্রধান বিচারপতি

আপডেট সময় : ০৯:০১:২৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৬ ডিসেম্বর ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক: প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ মনে করেন, জীবনে সব কাজের মূল নীতি হওয়া উচিত ‘ন্যায় চাই’।
শুক্রবার (৬ ডিসেম্বর) সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি ভবনে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় আইন অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের কাউন্সিলে বক্তব্য রাখার সময় তিনি এ কথা বলেন। সুপ্রিম কোর্টের এক বিজ্ঞপ্তিতে লেখা হয়, প্রধান বিচারপতি ২০২৪ সালের জুলাই-অগাস্টের ছাত্র আন্দোলনের শহীদের স্মরণ করে বলেন, “তাদের স্লোগান ‘আমরা ন্যায় চাই’ আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে ন্যায়বিচার কেবল একটি স্লোগান নয়, এটি এমন একটি মূলনীতি যা আমাদের কাজ এবং জীবনে প্রতিফলিত হওয়া উচিত।” প্রধান বিচারপতির পদ কেবল একটি নেতৃত্বের ভূমিকা নয়, বরং এটি একটি পবিত্র দায়িত্ব বলে তিনি মনে করেন। এ প্রসঙ্গে বিচার বিভাগীয় সংস্কারের রোডম্যাপ ঘোষণার কথা উল্লেখ করেন রেফাত আহমেদ। এই রোডম্যাপের মাধ্যমে বিচার বিভাগের স্বতন্ত্র সচিবালয় প্রতিষ্ঠা, যা প্রশাসনিক স্বায়ত্তশাসন নিশ্চিত করবে; বিচারপতি নিয়োগ পরিষদ গঠন, যা স্বচ্ছতা এবং মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ নিশ্চিত করবে; সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল পুনঃস্থাপন, যা বিচার বিভাগের স্বাধীনতা পুনরুদ্ধার করবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি। প্রধান বিচারপতি বলেন, “ন্যায়বিচারের সুযোগ নিশ্চিত করার জন্য, আমি আইনগত সহায়তার জন্য সক্ষমতা পরীক্ষা এবং আর্থিক সক্ষমতা পরীক্ষা প্রবর্তন করেছি। এই পদক্ষেপটি নিশ্চিত করে যে যারা নিজে আইনগত প্রক্রিয়া পরিচালনা করতে অক্ষম, তাদের প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করা হবে।” রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়েরও ভূয়সী প্রশংসা করেন প্রধান বিচারপতি। তিনি বলেন, “এর শ্রেণিকক্ষ এবং হলগুলো জাতির অনেক উজ্জ্বল ব্যক্তিত্ব, যেমন শিক্ষাবিদ, বিচারপতি এবং মানবাধিকারের প্রবক্তাদের গড়ে তুলেছে। এটি এক উৎকর্ষতার আলোকবর্তিকা, যা বহু প্রজন্মকে ন্যায়বিচারের জন্য লড়াই করতে অনুপ্রাণিত করেছে। “রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বহু অর্জনের মধ্যে এর প্রাক্তন ছাত্রদের বিচার বিভাগ এবং আইন পেশায় অবদান বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য; সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবীরা, যারা অনেকেই এই বিশ্ববিদ্যালয়ের গর্বিত প্রাক্তন শিক্ষার্থী, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা এবং ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে মুখ্য ভূমিকা পালন করছেন।”
অনুষ্ঠানের শুরুতে মুক্তিযুদ্ধের শহীদের পাশাপাশি ১৯৬৯ সালের গণ আন্দোলনে প্রাণ উৎসর্গ করা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. শামসুজ্জোহাকেও স্মরণ করেন প্রধান বিচারপতি। তিনি বলেন, “১৯৬৯ সালের অস্থির সময়ে তার আত্মত্যাগ আমাদের ন্যায়বিচারের সংগ্রামের মূল্যবোধকে মনে করিয়ে দেয়। “ড. শামসুজ্জোহা আমার পরিবারের সঙ্গেও একটি গভীর সংযোগ স্থাপন করেছিলেন। আমার বাবা-মা তার প্রতি সম্মান এবং অনুপ্রেরণার কথা প্রায়ই বলতেন। তার জীবন আমাদের শিখিয়ে দেয় যে আইন পেশা কেবল পেশা নয়, এটি ন্যায় প্রতিষ্ঠার একটি অঙ্গীকার।” রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদের উত্তরাধিকার বহনকারীদের মাঝে বক্তব্য দেওয়া বিরাট সম্মান ও গৌরবের উল্লেখ করে প্রধান বিচারপতি বলেন, “দীর্ঘ দশক ধরে এই প্রতিষ্ঠানটি জাতিকে নেতৃত্ব দেওয়ার, জনগণকে সেবা দেওয়ার এবং বাংলাদেশের ন্যায়বিচার ও সাম্যের সাধনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনকারী ব্যক্তিত্ব তৈরি করেছে। “প্রতিষ্ঠানের প্রাক্তন শিক্ষার্থী হিসেবে আপনাদের উপর ন্যায়বিচার, সমতা এবং মানবাধিকারের আদর্শ রক্ষা করার গুরুদায়িত্ব রয়েছে।”

আজকের প্রত্যাশা/কেএমএএ