ক্রীড়া ডেস্ক: উইকেটে বল গ্রিপ করছিল কিছুটা। টার্ন তো করছিলই। ওয়েস্ট ইন্ডিজের সামনে শেষ ইনিংসে লক্ষ্য ছিল মোটামুটি বড়। এরপর দল তাকিয়ে ছিল তাইজুল ইসলামের দিকে। দলের সেই দাবি অনুভব করতে পারছিলেন অভিজ্ঞ বাঁহাতি স্পিনার। সেভাবেই তিনি নিজেকে মেলে ধরলেন স্যাবাইনা পার্কের ২২ গজে। ব্যস, দলকে জিতিয়ে ম্যাচ সেরা তিনিই! জ্যামাইকা টেস্টের শেষ ইনিংসে মঙ্গলবার দুর্দান্ত বোলিংয়ে ৫০ রানে ৫ উইকেট শিকার করেন তাইজুল। টেসট ক্যারিয়ারে পঞ্চদশবার পেলেন তিনি এই স্বাদ। ব্যাট হাতে প্রথম ইনিংসে ১৩০ মিনিট ক্রিজে কাটান তিনি, দ্বিতীয় ইনিংসে ৮০ মিনিট। বড় ইনিংস খেলতে পারেননি। তবে ৬৬ বলে ১৬ ও ৫০ বলে ১৪ রানের ইনিংসটি দুটি ম্যাচের প্রেক্ষাপটে ছিল মূল্যবান। ম্যাচ সেরায় তাকে বেছে নেওয়া কারণ হিসেবে বোলিংয়ের পাশাপাশি তার ব্যাটিংয়ের কথাও বললেন সঞ্চালক। টেস্ট ক্যারিয়ারে আগে দুই দফায় ম্যান অব দা ম্যাচ হয়েছিলেন তিনি। একটি মিরপুরে, আরেকটি সিলেটে। দেশের বাইরের দেশে ম্যাচ-সেরা হতে পারলেন তিনি প্রথমবার। তবে এই স্বীকৃতির জন্য নয়, তাইজুল তৃপ্ত মূলত দলের প্রয়োজনের সময় নিজের উপযোগীতা দেখাতে পেরে। আগের টেস্টে দুই ইনিংসে উইকেট নিতে পেরেছিলেন কেবল একটি করে। জ্যামাইকায় তাকে জায়গা না দেওয় হলেও বিস্ময়কর হতো না খুব একটা। তবে উইকেটের সম্ভাব্য আচরণ ভাবনায় রেখেই হয়তো তাকে রেখে দেওয়া হয়। তিনি সেই দাবি মেটান। বল হাতে সব ধরনের পরিস্থিতির চাহিদা পূরণ করতে পেরে তিনি দারুণ খুশি। “আমার বোলিং নিয়ে অবশ্যই বলতে পারেন আমি সন্তুষ্ট। কারণ দলের যখন যেটা চাওয়া ছিল, পূরণ করতে পেরেছি এবং এই ম্যাচে যখন চতুর্থ ইনিংসে বোলিং করতে এসেছি, আমার ওপর সবার একটা বড় চাওয়া ছিল। সেটা সফল করতে পেরেছি এবং এটায় ভালো অনুভব করছি।”
নিজের পারফরম্যান্সের চেয়ে তার বেশি উচ্ছ্বাস দলের জয় নিয়ে। নিয়মিত অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত ও অভিজ্ঞ মুশফিকুর রহিমকে ছাড়া তরুণ এক দল নিয়ে বিরুদ্ধ কন্ডিশনে যেভাবে জিতেছে দল এবং পিছিয়ে পড়েও ড্র করতে পেরেছে সিরিজ, এতে গর্বের উপকরণ পাচ্ছেন তাইজুল। “অবশ্যই আমাদের বাংলাদেশ দলের জন্য এটা অনেক বড় পাওয়া। কারণ, এই দলে বেশ কিছু তরুণ ছেলে ছিল। কিছু লোক ছিল যারা ৮-১০ বছর ধরে খেলছে। তবে দলের বেশির ভাগই ছিল তরুণ। সবার ভালো একটা একটা ছিল এবং সবার মধ্যে ওই ব্যাপারটা ছিল যে, ম্যাচ জিতব। সবাই যে চেষ্টা করেছে, এটা অসাধারণ ও অতুলনীয়।” “কন্ডিশন আমাদের জন্য কঠিন ছিল। বাইরের কন্ডিশনে এসে ম্যাচ জিততে পারাটাও দারুণ ব্যাপার। আমাদের জন্য এটা গর্বের ব্যাপার।” তাইজুলের গর্ব আছে বাংলাদেশের বোলিং আক্রমণ নিয়েও। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বেশির ভাগ সময় ব্যাটিংয়ের কারণেই ধুঁকতে হয় দলকে। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরেই বোলিং আক্রমণ দারুণ ক্ষুরধার। নিজেদেররকে সেখানে বিশ্বসেরাদের কাতারেই রাখেন তিনি। “আমাদের যে পেস আক্রমণ ও স্পিন আক্রমণ এখন আছে, আমরা বেশ কিছুদিন ধরেই খেলে আসছি এবং সবারই ভালো অভিজ্ঞতা হয়েছে। আমরা অবশ্যই বিশ্বের যে কোনো দলের (বোলিং আক্রমণের) সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারব।”
আজকের প্রত্যাশা/কেএমএএ